লুকোচুড়ি ভালোবাসা ?পর্বঃ- ৩০

0
1893

লুকোচুড়ি ভালোবাসা ?পর্বঃ- ৩০
#লেখিকাঃ-তানজিনা আক্তার মিষ্টি

–বউ ও বউ আজ কি তোমার রান্না হবে নাকি না খেয়েই থাকতে হবে আমাকে। আজকে আমাদের বিবাহিত জীবনের প্রথম দিন আর আজকেই এই রকম শাস্তি পাচ্ছি। এগারোটা বেজে গেছে পেটে আমার ইদুর দৌড়াদৌড়ি করছে আর পারছি না।

পেটে হাত দিয়ে রাজ রান্না ঘরের দরজায় কাছে এসে এই ধরনের কথা বলে যাচ্ছে। মিষ্টি একবার রাগী চোখে পেছনে ফিরতেই কথা অফ করে খিদে পেয়েছে বুঝাচ্ছে যা দেখে মিষ্টির আর ও রাগ হচ্ছে। নিজের দোষে রান্নায় লেট হয়েছে এখন তাকেই কথা শুনাচ্ছে। আমার জন্য নাকি রান্না লেট হচ্ছে অসভ্য লোক একটা।
ঠিক সময় ই রান্না করতে এসেছিলাম কিন্তু মাঝখানে রাজ পাকনামো করতে এসেছিল। সে নাকি রান্না করবে তার খুব ইচ্ছে আমাক রান্না করে খাওয়ানোর আমি মানা করা সও্রে ও জোর করে রান্না করতে লাগে আমাকে দাড়া করিয়ে রেখে।

–মিষ্টি তুমি চুপ করে দাড়িয়ে থাকো রান্না আমি করবো ওকে।

–এটা কিন্তু বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে। আপনি কি ভাবে রান্না করবেন আগে কি কখনো করেছেন রান্না। আপনি পারবেন না প্লিজ সরুন আমাকে করতে দেন।

–তোমার আমাকে কি মনে হয় আমি কিছু পারি না হুম এটা ঠিক আগে করিনি কিন্তু পারবো ট্রাই করলেই সব পারবো।

–পারবেন না, এটা মেয়েদের কাজ আপনি পারবেন না।

–আর কোন কথা না চুপ করে থাকো আমি বলেছি যেহেতু করবোই।
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
তারপর শুরু হলো যুদ্ধ সেকি যুদ্ধ দেখছি আর হাসছি কি করবো এমন সব কাণ্ড ঘটছে সামনে যে শত চেষ্টা করে থামতে পারছি না। পেট ধযে হাসছি হঠাৎ হাসা অফ করে মুখ চেপে ধরে আছি রাজ আগুন চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। রাজ রান্না করছে রুটি করবে তার আগে ডিম ভাজতে গিয়ে সেটা করাইতে দিতে যাবে তার আগে ফাটাতে গিয়ে দুটো নিচ ফেলে দিছে কড়াই পযর্ন্ত গেল না। আবার যখন ডিম ফাটাতে যাবে সেটা নিজের শরীরে সিটটিয়ে আসে।

–আমাকে দিন পারবেন না মাঝখানে থেকে তিনটা ডিম নষ্ট করলেন। দেন আপনি পারবেন না বললাম না অযথা চেষ্টা করছেন।

–না দরকার নেই ডিম ভাজবোই না রুটি করবো এখন এটা সহজ আছে এটা পারবো।

–পারবেন না।

–পারবো।

ফোন বের করে ইউটিউব এ দেখছে কি করে বানাতে হয় দেখা শেষ হলে শুরু হয় আটা খুজা। অবশেষে আমি দেখিয়ে দেয় আটা টা একটু উপরেই ছিলো আমি কখনো হাত দিয়ে পারি নি কারণে আমার থেকে খুব উপরে কিন্তু রাজের প্রবলেম হবে না রাজ অনায়াসে আটা পেরে ফেলল। অনেক লম্বা রাজ তাই সমস্যা হলো না কিন্তু প্রবলেম হলো একটু পর যা দেখে আমি না পারি গড়াগড়ি দিয়ে হাসতে। রাজ ময়দার কৌটা নিয়ে ধপাস করে নিচে পরে গেছে আর আটা সব মাথায় উপরে পরেছে ফলে পুরো শরীর সাদা হয়ে গেছে।
রাজ নিচে পরে তো বেকুবের ভতো বসে আছে।এমন কিছুর জন্য একটু ও প্রস্তুত ছিলোনা।

–হা হা হা ? ??

–স্টপ ইট মিষ্টি তুমি হাসছো আমার এই অবস্থা দেখে তোমার কি একটু মায়া হচ্ছে না আমার জন্য একটু ও ভালোবাস না আমাকে। তুমি একটু হেল্প করলে কি এই অবস্থা হতো আমার।

–হাসির ঠেলায় কথা বলতে পারছিনা তবুও অনেক কষ্ট নিজের শান্ত করতে চাইলাম। রাজ রেগে ফাইয়ার হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে আমি কিছু বলতে পারছি না হা হা করে হেসেই যাচ্ছি।
কিন্তু হাসতে বেশিক্ষণ পারলাম না রাজের কাণ্ড দেখে নিজে হাসি অফ করে দৌড়ে দিতে লাগলাম। রাজ নিজের শরীর থেকে ময়দা নিয়ে আমার মুখে একটু লাগাতেই দৌড়ে পালাতে লাগলাম।

–এখন পালাচ্ছো কেন? দাড়াও আমাকে দেখে হাসা না এখন তোমাকে ও আমার মতো হতে হবে।

–আপনি আপনার দোষ এ ফেসেছেন আমি তো না কলেছিলাম ই।

–মিষ্টি স্টপ ইট,

–নো

সারা ঘর দৌড়াদৌড়ি করছে মিষ্টি আর পেছনে রাজ। মিষ্টি হঠাৎ পেছনে তাকিয়ে দেখে কেউ নেই রাজ নেই মিষ্টি নিজের রুমে চলে এসেছে তাই খাট বসে বুকে হাত দিয়ে জোরে জোর শ্বাস নিচ্ছে মিষ্টি। এতো হাসছে আবার দৌড়াতে হয়েছে তাই হাপিয়ে গেছে। চোখ বন্ধ করে শ্বাস নিচ্ছে মিষ্টি হঠাৎ তারাতারি করে চোখ মেলল, কেউ গালে, গলায়, হাতে কিছু ডলছে দেখি রাজ ছুটার চেষ্টা করে পারলাম না।

–এখন হাসো দুজন এক রকম হয়ে গেছি ম্যাচিং বর বউ তাই না।

বলেই রাজ চোখ পিট মারলো আমি গাল ফুলিয়ে অন্য দিকে তাকালাম।

খাবার টেবিলে বসে আছি। রাজ আমাক খাবার ধরতে দিচ্ছে না নিজেই একা বেরে নিচ্ছে। এক প্রেলেটে আমি ভেবেছিলাম আমাকে ও বেরে দেবে কি অসভ্য নিজের খাবার বারছে খালি আমি রেগে তাকিয়া আছি একাই খাবে তাহলে আমাকে কি খেতে ও দেবে না।

রাগ কষ্ট নিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছি এভাবে নিজের জন্য বারতে পারলো আমার ও তো খিদে পেয়েছে সে কি বুঝে না। আমাকে বেরে নিতে ও দিল না।

–হা করো।

হা করো শুনেই রাজের দিকে তাকালাম আমার দিকে খাবার ধরে রেখেছে। কি রিয়াকশন করবো বুঝতে পারছি না। আবার রাজ কে ভুল বুঝছিলাম ইসস অথচ রাজ তার যোগ্য না সে তো আমার জন্য এতো করছে কিন্তু আমি বারবার ভুল বুঝছি।নিজের প্রতি রাগ হয়ে ছোখ দিয়ে জল গরিতে পরতেই রাজ চোখের পানি মুছে দিলো।

— কি হলো কাদছো কেন আবার কি হলো?

–জানি না শুধু জানি আমি আপনার যোগ্য না। এতো ভুল কেন বুঝি আপনাকে এতো ভালোবাসেন এতো ভাবেন আমাকে নিয়ে আর আমি আপনাকে বারবার ভুল ভাবি।

রাজ জোর করে আমাকে খাইয়ে দিলো। নিজে একটু ও খেল না তাই আমি আবার রাজকে একটু খাইয়ে দিলাম বিকেলে ছাদে বসে গল্প করলাম মামুনি একবার ফোন দিয়েছিলো কাল চলে আসবে।

সত্যি এতো ভালো সময় আমি কখনো কাটাইনি খুব ভালো কেটেছে আজ সময় দিনটা।

.
.

–আন্টি কেমন আছেন?

–আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। তুমি কেমন আছো?

–ভালো। আন্টি বিয়ে ব্যাপার টা কি হলো পাপ্পা কে পাঠাবো কাল।

–কাল রাজের সাথে তো কিছু কথা হয় নি আমি তো বাসার নাই কাল গিয়ে কথা বলে নেই আগে।

–রাজের সাথে বলার কি দরকার? ও তো রাজিই আপনি বিয়ের ডেট আইমিন এনগেজমেন্টের ডেট ফাইনাল করেন।

–আচ্ছা দেখছি মা আমাকে একটু ভাবতে দাও।

–আন্টি আমি সত্যি রাজকে ছাড়া বাচবো না খুব ভালোবাসি ওকে প্লিজ কিছু করেন।

চলবে❤

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে