লুকোচুড়ি ভালোবাসা?পর্বঃ- ৩৩

0
1810

লুকোচুড়ি ভালোবাসা?পর্বঃ- ৩৩
#লেখিকাঃতানজিনা_আক্তার_মিষ্টি

পুরো বাসা আত্মীয় স্বজন এ ভরপুর। কি জন্য এতো কিছুর আয়োজন তা না জানা রাজ ও মিষ্টি। রাজ ও জানে না আর মিষ্টি ও রাজের ওই কথা গুলো শুনার পর থেকে লজ্জা পেয়ে আর মামুনি কে বলতে পারেনি সত্যি যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে জিগ্গেস করে আর লজ্জা পেতে চায় না মিষ্টি। লজ্জা ভয় যাই পাক না কেন মনেমনে চাইছে রাজের কথা গুলো যেন সত্যি হয়। তাহলে রাজকে পাওয়া হবে আর আমাদের বিয়ের কথা ও চাপা পরে যাবে। রাজকে তো বিশ্বাস নেই সবাই রাজি না হলে তখন আমাকে তোয়াক্কা না করে বিয়ের ব্যাপারটা না তুলে বসে। আর আমি চাইনা এমন কিছু হোক তাহলে মামুনি এতো ভালোবাসা আর থাকবে না আমার প্রতি যতই হোক এমন বিয়ে কেউ মেনে নেয় না। আর আমার মা জানলে তো আমাকে কি যে করবে বলবে লেখা পড়া করতে পাঠিয়েছিলাম আর তুমি বিয়ে করে বসে আছিস। সবাই ভুল বুঝে দূরে ঠেলে দেবে না এমন কিছু কখনো হতে দেওয়া যাবে না।

পাচঁটা বাজে,,
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে আছে মিষ্টি কাজ কাম সব শেষ এখন শুধু সবার আশার পালা। গায়ে কাটা দিয়ে আসছে মামুনিরা আমাকে নিয়ে রাজকে ভাবছে। এটা কেন জানি বিশ্বাস হচ্ছে না মনে মনে ভয় হচ্ছে না জানি হয়। আনন্দ ও হচ্ছে সাথে মনটা কূ ডাকছে খারাপ কিছু হবে মনে হচ্ছে খুশি হতে চাইছি কিন্তু খুশি হতে পারছি না। ভেজা চুপ ছেড়ে আয়নার সামনে গিয়ে দাড়িয়ে নিজকে দেখতে লাগলো মিষ্টি আমি কি রাজের জন্য পারফেক্ট আজকে ওর জন্য আমাকে সাজতে হবে খুব করে যেন রাজ তার মিষ্টির থেকে চোখ সরাতে না পারে। রাজ কাল রাতেই বলে রেখেছে আজ যেন ভালো করে সাজ গোজ করে নিচে যায়। ড্রেস ও রাজ সকালেই নিয়ে এসেছে কেউ তা জানে না লুকিয়ে আমি পরতে বাদ সেধে ছিলাম কিন্তু সে বলে আজকে না সেজে গেলে আমার খবর করে দিবে। এই ড্রেস পরলে মামুনিরা তো জিগ্গেস করবে এটা কোথায় পেলাম। চিন্তা মাথায় এলে ও রাজের জন্য ভয় করে পরতে মন স্থির করলাম।
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
রাজ সাদার মাঝে গোল্ডেন কালারের কাজের একটা গাউন এনেছে। লম্বা হাতা ফুল অনেক সুন্দর জামা টা এমন জামা আগে কখনো আমার পরা হয় নি। রাজকে বলেছি ছিলাম এসব পরে তো আমি অবস্থ না এগুলো কেন এনেছে আমার জন্য ও বলেছে। অভস্থ না হলেও পরতে হবে আজকে যদি সত্যি আববু আমাদের বিয়ের সারপ্রাইজ দেয় তাহলে সবার সাথে তোমাকে আমার উডবি বলে পরিচয় করে দিবে তখন সবাই যখন দেখবে তুমি ভালো কিছু পরো নি তখন সবাই অন্য ভাবে তাকিয়ে দেখবে। আর আমি চাইনা আমার বউ কোথায় এ নিচু হোক সব জায়গায় তোমাকে উচো হতে হবে বুঝেছো। রাজের কথা গুলো আমার খুব ভালো লেগেছে আমাকে রেডি হতে বলে আবার স্টেশনে মা আর মিনা কে আনতে গেছে। মামুনির জরাজরি তে আজকে আসবে আবার কাল সকালেই চলে যাবে মিনার আজ এক্মাম নেই আজ কাল ও নেই পরশো আছে। গনিত পরিক্ষা তাই দুই দিন অফ তাই আসতে পারবে তারা।

–আপু

মিনার আওয়াজ কানে আসতে মিষ্টি ড্রেস টা রেখে দিলো এসে আবার কতো কথায় না বলে উঠে কে জানে মিনা দৌড়ে এসে আমাকে জরিয়ে ধরলো।

–আপু আমি তো সেই খুশি তোর আর ভাইয়া বিয়ে ওফফফ বলে বুঝাতে পারবো না কতো খুশি হয়েছি আমি সারা রাস্তায় আমি কেমন করেছি জানিস না কখন তোর আর ভাইয়ারসাথে দেখা হবে আমার।

–ছার তো এভাবে কেউ ধরে ছার আমাকে।

বলেই মিষ্টি জোরে ছারিয়ে নিলো নিজেকে।

–আপু তুই একটু ও ভালো না আমাকে একটুও ভালোবাসিস না। আমি তোদের জন্য এতো কিছু করলাম আর এখন এভাবে ইগনোর করছিস।

–কি করছিস তুই? আর কি ইগনোর করলাম।

–এই যে ভাইয়া বিজি বলে চলে গেল তুই কথা বলছিস না একটু ধরলাম তাতেও ফুসকা পরলো। ভাইয়া যখন ধরে তখন তো ঠিকই ভালো লাগে বোন ধরলেই এমন বিহেভ তাই না।

–মিনা মাইর রাগাবো কিন্তু এসব কি বলছিস ছোট ছোটর মতো থাক। দেখছিস না আমি চিন্তিত আর তুমি এসব ফাউল কথা বলে আমার মাথা খাচ্ছিস।

— চিন্তিত কেন কি হ য়েছে।

–জানি না রে আমার মন কু ডাকছে কিছু একটা ঘটবে সেটা ভালো না খারাপ বুঝতে পারছি না।

–অবশ্যই ভালো কিছু হবে।তুই নেগেটিভ কিছু মাথায় আনিস সবাই নিচে এসে গেছে মনে হয় চিৎকার কানে আসছে তুই এখন ও কিছু করীস নি রেডি হও তারাতারি। ও মাই গড সো সুইট ড্রেস এটা নিশ্চয়ই ভাইয়া এনে দিয়েছে তাই না আপু।

–হুম।

–চল তোকে রেডি করে দেয়।

মিষ্টি মন মানতে না চাইলেও রেডি হতে রাজি হলো। ড্রেস পরে এসে হালকা সাজতে লাগলো আয়নার সামনে দাড়িয়ে কিন্তু হালকা সাজতে দিলো না মিনা। পাকনামো শুরু করে দিলো ও রেডি করে দেবে না করলে ও শুনবে না তাই বাধ্য হয়ে ই বসলাম ওর পাশে ও কিন্তু বলে দিলাম বেশি গরজিয়াস যেন না সাজায়। রাজি হলো বেশি গরজিয়াস সাজাবেনা। ওই দিন শাড়ির পরিয়েছিল অনেক বেশি গরজিয়াস হয়েছিল আজকে যেন তেমন না হয়।

আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজেকে দেখছি এতোটা সুন্দর কি আমি। নিজেকে চেনে যাচ্ছে না অন্য রকম লাগছে একদম। সুন্দর লাগছে অনেক।

–কি কেমন সাজিয়েছি বল তো আজকে শুধু ভাইয়া না পার্টির সবাই হা করে তাকিয়ে থাকবে তোর দিকে।

আমি কিছু বলতে যাবো ওমনি রাজ রুমে প্রবেশ করে ও তো দরজায় কাছে এসেই হা করে তাকিয়ে আছে চোখে যেন পলকই পরছে না। আমি ওর দিকে তাকিয়ে আর ও হা হয়ে যায় আমার ড্রেস এর সাথে ম্যাচিং করে পরেছে রাজকে ও খুব সুন্দর লাগছে। আমি আর রাজ দুজন দুজনের দিকে হা করে তাকিয়ে আছি মাঝে মিনা চিৎকার করে উঠলো আর দুজনেই নিজেদের সামলে নিলাম।

–আপনার বউ কে কেমন সাজিয়েছি বলেন।

–বিউটিফুল শালিকা। আজ তো চোখ সরানো দায় হয়ে পরবে।

–তা তো হবে আমার গিফট দেন এখন এতো কষ্ট করে আপনার বউকে যে সাজালাম।

–গিফট ওকে যাও পরে দিয়ে দেবো এখন তোমার নিচে আসো।

বলেই রাজ নিচে চলে গেল।

.
.

মিষ্টি আর মিনা নিচে সবার মাঝে দাঁড়িয়ে ছিলো মিনা হঠাৎ কোথায় যেন চলে যায় এখন মিষ্টি একাই আছে নানা মানুষের ভীড় সব মুখ অপরিচিত কাউকে চিনি না। রাজকে ও আর দেখি নি কোথায় আছে কে জানে এখানে একা সবার মাঝে কেমন জানি লাগছে। সবাই পার্টি মেন কারণে টা জানতে আগ্রহী হয়ে আছে সবাই কানা ঘোষা করছে কি জন্য এই পার্টি কিন্তু এখন ও বলে নি। কি জন্য পার্টি ভাবতে ভয় করছে কতো কিছু ভেবে রেখেছে রাজ এখন যদি অন্য কিছু হয় তখন কি হবে।

হঠাৎ কাধেঁ কারো ছোঁয়া পেলাম বুঝে উঠার আগেই এক হাতে জরিয়ে ধরলো আমাকে। ভয় পেয়ে গেলাম কে কিন্তু কিছু ক্ষণের মাঝে ভ য় থেকে বের হলাম এটা রাজ। আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিচ্ছি। এবার খেয়াল এখানে তো আম্মু মামুনি সবাই আছে যদি এভাবে আমাদের দেখে নেয় কী হবে।

–আপনি আমাকে এভাবে সবার মাঝে জরিয়ে ধরেছেন কেন? সবাই কি ভাববে ছারুন

–কিছু ভাববে না এখন কিছু ভাবলে ও একটু পর সবাই বুঝে যাবে। ওই দেখে আববু স্টেজে যাচ্ছে কারণেটা কি বলবে এখন ই।

–আপনি এতো সিউর কেন হচ্ছেন এটা তো নাও হতে পারে।

–কারণ আছে।

–কী কারণ বলেন। আমার ভয় করছে খুব।

–আমি আছি না তোমার পাশে ভয় কিসের। আমি যেহেতু বলছি তো আজকে তোমার আর আমার জন্য স্পেশাল দিন সো রেডি ফর ইউ। মুখ গোমড়া করে লাখছো কেন হাসো তোমার মুখ এমন থাকলে আমার কি ভালো লাগে বলতো।

মিষ্টি গোমড়া মুখ করে স্টেজের দিকে তাকাল আন্কেল মাইক হাতে নিয়ে আছে এখনই বলা শুরু করবে। মিষ্টির হাত পা কাপছে শরীরে কাটা দিয়ে উঠছে কি বলবে কে জানে। রাজ এখন ও এক হাতে জরিয়ে ধরে আছে। আমি চোখ বন্ধ করে নিজেকে শান্ত করতে চাইছি। হঠাৎ গালে নরম কি অনুভব করলাম সঙ্গে সঙ্গে চোখ মেলে তাকালাম। রাজের দিকে রেগে তাকালাম একে তে জরিয়ে ধযে আছে এখন আবার এতো সবার মাঝে চুমু খেলো আশেপাশের সবার দিকে তাকালাম না কেউ দেখে নি সবাই স্টেজের দিকে মনোযোগ।

আন্কেল বলতে লাগলো,,

—– লেডিস এন্ড জেন্টরম্যান্ড সবাই অনেক আগ্রহ নিয়ে আছেন যে আজকের এই পার্টিটি কি জন্য। আপনারা কেউ জানেন না এই পার্টির মূল কারণ এখন সবাইকে বলবো আসল কারণ টা কী আমার একমাএ ছেলে রাজ আজ তার এনগেজমেন্ট।

মিষ্টি এইটুকু শুনেই রাজের দিকে তাকালো। রাজের কথাই সত্যি তাহলে রাজ চোখের ইশারায় জিগ্গেস করলো কী মিষ্টি কিছু না বলে সামনে তাকালো।

.

এদিকে মারিয়া লাল রঙের গাউন পরে এসেছে। ও তো খুশিতে আত্ম হারা হয়ে আছে। একাই এসেছে ওর আববু ও আসে নি। কাউক চায় না ও একাই রাজকে নিজের করে নিবে। র্পালারে সাজতে সাজতে লেট হয়ে গেছে তারাতারি ভেতরে ঢুকে আসে এসেই রাজকে খুজতে লাগে কিন্তু পায় না সামনে এগিয়ে স্টেজের দিকে খেয়াল ও শব্দ কিনে আসে এনাউজমেন্ট করছে। মারিয়া তো সেই আনন্দ নিয়ে দুই কদম এগিয়ে যা দেখে রেগে উঠে রাজ মিষ্টি কে জরীয়ে ধরে দাড়িয়ে আছে তা চোখে পরে দাত কিড়মিড় করে বলে,
এই ধরাই শেষ আর একসাথে থাকতে পারবে না তোমার।
বলেই স্টেজের কাছে যায়। এখন ওর আর রাজের এনগেজমেন্টের কথা এনাউজমেন্ট হবে হাসি মুখ করে তাকিয়ে আছে।

চলবে❤

[ মিষ্টি আর রাজ কে আলাদা কলে দিলে কেমন হবে]

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে