লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-০৪

0
1137

#লীলা_বোর্ডিং_১২১৫
খন্ডঃ০৪

শায়লা ফিক করে হেসে উঠে বলল, কেউ না হইয়েও রিক্সার হুড তুলে, গায়ের সাথে গা লাগিয়ে বইসে একটা মাইয়্যের হাত ধরার অভ্যেস আপনার আছে বুঝি?

খাইরুল সাহেব শায়লার হাত ছেড়ে দিয়ে দুজনের মাঝে চার আঙুলে দূরত্ব তৈরি করে বলল, আমি আন্দাজও করতে পারিনি তুমি এত শক্ত কথা এত সহজে, হাসতে হাসতে বলতে পারো। পড়াশুনা কতটুকু?

শায়লা রিক্সার হুড নামিয়ে দেয়।চুলের গোছাটা কাঁধের একপাশে এনে নরম গলায় বলল, কঠিন কথা সহজ কইরে বলতি গেলে বুঝি পড়াশুনা জানা লাগে?

-না লাগে না হয়তো, তবে তুমি অদ্ভুত বিস্ময় জানো তো। তোমাকে পুকুর ভেবে তল মাপতে যে রশি ফেললাম সেটা তোমার তল খুঁজে পাচ্ছে না । এমনটা তো অন্তত তোমার বেলায় হবার সুযোগ ছিল না, ছিল কি? আচ্ছা বাদ দাও তো এসব কথা। তোমার ডে-কেয়ারের কাজটা কেমন লাগছে?

ভালোই তো লাগছে। একগাদা বাচ্চার সাথে খেলছি, হাসছি, খাচ্ছি, কাঁদছি। এর চাইয়্যে শান্তির কাজ আমার জন্য আর কী হতি পারতো বলেন?

-কাঁদছো! কেন?

ঐটে তো কথার কথা। আপনার শরীরের খবর কন, বড় মাইয়্যেটা না কানাডা যাবে শুনিছিলাম, তিনি গিয়েছেন?

– না, যাবে সামনের মাসেই। তুমি লুকাচ্ছ কিছু?

এইতো চইলে আসলাম, এমনিই বাবা নানা কথা শুনতি হয় দেরি করে ফেরায়। আমি আইজকে গিলাম, নিজের খেয়াল রাখবেন৷

-তুমি বেশ অভিনয় জানো, খুব সুন্দর করে অভিনয় করতে জানো শায়লা।

শায়লা দু কদম এগিয়ে গিয়েছিল বোর্ডিং এর গেটের দিকে, আবার ফিরে এলো রিক্সার কাছে। খাইরুল সাহেবের চোখের দিকে তাকিয়ে ঠোঁটে মিথ্যে হাসি এনে শান্ত গলায় বলল, মাইয়্যে মানুষের চোখে, ঠোঁটে, শরীর বাঁকে, চুলের ডগায় অভিনয় থাকে৷ এ আর নতুন কী?

শায়লা আর দাঁড়ায় না, বোর্ডিং এর দিকে হনহনিয়ে হাঁটা শুরু করে। খাইরুল সাহেব একলা রিক্সা থেকে শায়লার চলে যাওয়া দেখে। এই মেয়েটা দিনদিন বড্ড বেশি সুন্দর হয়ে উঠছে তার কাছে। বয়সের দোষে? খাইরুল সাহেব নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করে।

শায়লা রুমে ঢুকতেই দেখে বোর্ডিং এর সবাই তাদের রুমে ভীড় জমিয়েছে। সবাই মিলে কেয়াদের বিয়ে ভাঙার গল্প শুনছে, আজকের সংবাদপত্রেও তাদের বিয়ে ভাঙার কথা আসায় সবাই কেয়ার কথা বিশ্বাস করে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনে চলেছে। শায়লা কাপড় বদলাতে বাথরুমে ঢুকে যায়। আয়নার দিকে তাকাতেই শায়লার চোখ বেয়ে টপটপ করে পানি পড়তে শুরু করে, কাজল চোখ বেয়ে কাজলে পানি চিবুক চুঁইয়ে গড়িয়ে পড়ে। না, শায়লা আর সময় নেয় না। ঝমাঝম চোখেমুখে পানি ছিটিয়ে দিয়ে, কাপড় বদলে নিয়ে বেরিয়ে আসে। কানিজ শায়লাকে বাথরুম থেকে বের হতে দেখেই কাছে ডেকে নিয়ে সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিল। সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে হাই হ্যালো জানালেও জান্নাত উঠে এসে শায়লাকে জড়িয়ে ধরে বলল, আপনি খুব সুন্দর আপু, একদম আমার মামাতো বোনের মতো দেখতে। আপনি ডে-কেয়ারে জব করেন, না?

-হ্যাঁ, ওখান থেকেই ফেরা। নাম কী তোমার?

জান্নাত।

তা তুমি এই গরমের মাঝেও ফুল হাতা জামা পরেছ যে? গরম লাগছে না?

জান্নাতের উত্তর দেবার আগেই কেয়া আগ বাড়িয়ে বলল, ওরে আপা! কী আর কমু, এই জান্নাত বাইরে গেলে হাতের মোজা, পায়ের মোজা ছাড়া বাইর হইবে না। চোখ দুইডাও দ্যাখতে পারবেন না। সে পর্দার ব্যাপারে খুব শক্ত। তয় মাঝেমধ্যে সে আশিক বানায়া গান দেইখা ইমরান হাশমির মতো জামাই চায়, হে হে হে।

জান্নাত ভ্রু কুঁচকে, মুখ গোমড়া করে কানিজের দিকে তাকিয়ে বলল, আপু্! ওরে কিছু বলবা না তুমি?

কানিজ মিথ্যে শাসনের সুরে বলল, এই কেয়া! এসব কী? ও তোদের মত ওসব দেখে? এসব বলবি না আর একদম৷

কেয়া কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল তার আগেই তার ফোন বেজে উঠল। কেয়া সবাইকে ইশারায় চুপ করতে বলে ফোনকল রিসিভ করতেই ওপাশ থেকেই ভরাট গলায় এক পুরুষ বলে উঠল,

– হ্যালো! তোমার কোনো খোঁজখবর নেই কেন? ফোন দিলে পাওয়া যায় না।

হ্যালো বাবু! আর বইলো না, সামনেই সেমিস্টার ফাইনাল, টেবিল রেখে উঠার সময়ও পাই না।

-ওহ আচ্ছা আচ্ছা। তা আগামীকাল আসবে না? এক্সাম তো সামনের মাসে৷

না বাবু, আমি খুব সরি। যেতে পারব না। কাল আমাদের বোর্ডিং এর জান্নাতের বিয়ে, হুট করেই বিয়ে করছে ওরা। ফ্যামিলি জানে না, তাই যা করার আমাদের করতে হবে। আমরা পরে মিট করে তোমার বার্থডে সেলিব্রেট করব, আচ্ছা?

ফোনের ওপাশ থেকে আহত গলায় কেবল অস্ফুট স্বরে শোনা গেল, “আচ্ছা রাখি এখন”।

ফোন রাখতেই সবাই হো হো করে একসাথে হেসে উঠল। জান্নাত ক্ষেপে গিয়ে বলল, কেয়া তুই এত মিথ্যা কথা কেন বলিস? আর আমারে জড়ালি কেন?

কেয়া ফোনটা চার্জে লাগাতে লাগাতে বলল, আরে আর কী কমু দুঃখের কথা। হালায় আমার বার্থডেতে পঁচিশ হাজার টাকা দিয়া মোবাইল গিফট করলো, এহন আমি টাকা পামু কোনহান দিয়া? আব্বা যা দেয় তা মাসের পনেরো দিন যাইতে না যাইতেই শেষ কইর‍্যে দেই। তাই মিছা কথা কইতে হইল। বলদের বলদ, তুই একখান টেডি দে, নাইলে দেড় দুই হাজারে কিছু দে। না! হালা জমিদারি দেহাইবে। না, এর লগে আর চলে না, বেরেক-আপ করতে হইবে।

রুবাইয়া চোখ উলটিয়ে বলল, চাইলেই ব্রেকাপ করা যায়? কী বলে করবি?

কেয়া শয়তানি হাসি হেসে বলল, ধুর ছেমড়ি, বেরেক-আপ তো ডাইল ভাত মোর ধারে। বেইন্যাকালে ফোন দিমু, ও ঘুম দিয়া ওডে দেরি কইর‍্যে। ব্যাস ফোন ধরবে না, বেরেক-আপ।

জুঁই অবাক হয়ে বলল, উনি মানবেন এতে?

-ও মানার কে? মোর ইচ্ছে হইছে তাই মামলা ঢিশমিশ।

কানিজ শ্রাবণীর মাথায় টোকা দিয়ে বলল, নে,ওর পা ধুয়ে পানি খা গাধা মেয়ে কোথাকার। তুই সারদিন ভ্যা ভ্যা করে এক শাওনের জন্য কাঁদিস।

আড্ডার মাঝেই দরজায় টোকা পড়ল। পরিচিত গলায় কেউ একজন দরজার কাছ থেকে বলল, আমি আসতে পারি?

কেয়া লাফিয়ে উঠে বলল, এই লীলা আপা আইছে! বাইরে খাড়াইয়া আছেন কেন, ভিতরে আহেন আপা।

বোর্ডিং মালিক লীলা হালদা ঘরে ঢুকতেই সবাই একসাথে হইহট্টগোল শুরু করে দিল। লীলা হালদার বোর্ডিং মালিক হলেও তার আচার-আচরণ বন্ধুর ন্যায়। সে মাসে এক দুবার আসে, সারা রাত আড্ডা দেয় বোর্ডিং এর মেয়েদের সাথে। সারা রাত চা, নুডুলস, খিচুড়ি, মুভি দেখা, লুডু প্রতিযোগিতা, আড্ডাবাজি চলে। ভোর হতেই লীলা হালদার বিদায় নিয়ে চলে যায়, আবার মাসখানেক পর তার দেখা মেলে। বস্তুত বোর্ডিং এর সবাই লীলা হালদারের অপেক্ষায় থাকে মনেমনে।

লীলা চেয়ারে বসে বলল, কানিজ! আমি পত্রিকায় তোদের বিয়ে ভাঙার নিউজ দেখেই ছুটে এলাম। নিউজে তোদের ছবি না থাকলেও যখন দেখলাম কেয়া, শ্রাবণী আর রুবাইয়ার নাম আছে তখন নিশ্চিত হলাম পৃথিবীর বুকে এমন কলিজাওয়ালা মেয়ে আমার বোর্ডিং এ ছাড়া আর কোথাও নেই।

রুবাইয়া ভেবেছিল তার লীলা হালদার এই সংবাদ জানতে পারলে তার খবর করে ছাড়বে৷ অথচ উল্টো হলো। রুবাইয়া মনেমনে বেশ খুশিই হলো।

কানিজ একগাল হেসে বলল, আর বইলেন না আপা। হারামজাদা আমারে প্রচুর জ্বালা দিয়েছে। বিরাট বড়সড় একটা ক্ষত তৈরি হয়েছিল ওর আঘাতে। আজকে শান্তি।

লীলা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল, উচিত কাজ করেছিস রে। এমনই করা উচিত এদের সাথে। আচ্ছা যাই হোক, রাতে খাবি কী তোরা? বাসায় খাসি কেনা আছে দুটো, একটা আনতে বলি?

সবাই একসাথে চিৎকার করে বলে উঠল, আনো আনো।

শিরিন আপা মেয়েদের চিৎকার শুনে ছুটে এলো। শিরিন আপাকে দেখামাত্রই সবাই চুপ হয়ে গেল। শিরিন আপা চোখ থেকে চশমা খুলে নিয়ে চোয়াল শক্ত করে বলল, কী হচ্ছে এখানে? এটা তো খেলার মাঠ না, অনেকে ঘুমাচ্ছে। আর লীলা! তুই থাকতে এমন অসভ্যতা করছে কেন এরা?

লীলা হালদার মিথ্যে ধমক দিয়ে বলল, এই মেয়েরা এমন চিৎকার করলে হবে! অন্যদের ডিস্ট্রাব করা যাবে না তো।

শিরিন আপা বুঝতে পারে লীলা মিথ্যে শাসন করছে মেয়েদের। শিরিন আপা তার ঘরের দিকে যাবার আগে বলে গেল লীলা যেন তার রুমে যায় একবার।

শিরিন আপা চলে যেতেই লীলা বলল, আচ্ছা এবার আর চিল্লাপাল্লা না। ড্রাইভারকে ফোন দিয়ে বলছি খাসি কেটেকুটে এখানে নিয়ে আসতে। আচ্ছা তোরা আমারে একটা বুদ্ধি দে তো, আমি কোন কূল-কিনারা পাচ্ছি না।

কানিজ চেয়ার নিয়ে লীলা হালদারের দিকে খানিকটা সরে এসে বলল, কী বুদ্ধি লাগবে বলো।

-আমি মাস ছয়েক আগে সামনের বিল্ডিংটা কিনেছিলাম। এখন রাজউক থেকে বলছে বিল্ডিং এ কোনো কাজ করা যাবে না, এটা নাকি রিস্কি হয়ে যাবে তাহলে। অথচ রুমগুলো খুব ছোটছোট,ফ্যামিলি ভাড়া দেবার মতো না, মহিলা হোস্টেল বানানোর মতোও না। কী করা যায় বল তো?

কেয়া মুচকি হেসে বলল, এইডা তো একছের সোজা। হোনেন আপা। ব্যাচেলর ভাড়া দেন। ব্যাচেলররা মোল্লা ব্যাডার বিয়া করা প্রথম পক্ষের বউয়ের লাহান হয়। যা কইবেন তাই শুনব, এরা ঘর পাইলেই খুশি। ভাড়া কম নেওয়াও লাগবে না। মনে করেন আমরা আমাগো বোর্ডিং এর ছাদে প্রতিদিন উইঠা চুল আঁচড়ালাইম, কাপড় নাড়তে উঠলাম, একটু আড্ডা দিলাম। ব্যাস, পোলারা জীবনেও যাইতে চাইবে না আপনার বাসা ছাইড়া। কেমন বুদ্ধি দিলাম?

লীলা হেসে বলল, তোর মাথায় এই ছেলে ছাড়া আর কিছু আসে না কেন?

সবাই একসাথে হো হো করে হেসে উঠল লীলার কথা শুনে।

কদিন ধরে গরমটা বেশিই পড়ছে। রুবাইয়া টিএসসিতে এসে বসেছে অনেক্ষণ ধরেই। হাতে থাকা চা ঠান্ডা হয়ে গেছে, রুবাইয়া টেরও পায়নি। গরমে, দুঃশ্চিন্তায় রুবাইয়া ঘেমে একাকার। সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারছে না সে। বেশ ঘোরে চলে গিয়েছিল, ঘোর কাটে মোনার ফোনে। মোনা ফোন দিয়ে রুবাইয়াকে ডেকে নিয়ে একসাথে বোর্ডিং এ ফিরেছে। পথে মোনা বেশ কবার রুবাইয়াকে জিজ্ঞেস করেছে রুবাইয়া কী নিয়ে ভাবছে, রুবাইয়া এড়িয়ে গিয়েছে।

ভাতের প্লেট নিয়ে অনেক্ষণ ধরে বসে আছে রুবাইয়া। ভাত ঠান্ডা হয়ে এসেছে। কানিজ টের পায় রুবাইয়া কিছু একটা হয়েছে। কানিজ রুবাইয়ার মাথায় হাত রাখতেই রুবাইয়া কেঁপে ওঠে। কানিজ আদুরে ঢঙে বলল, কী হয়েছে রে সোনা? কোনো সমস্যা?

রুবাইয়া উপর-নিচে মাথা নাড়ে।

কী হয়েছে? আপুকে বলা যায়?

-আপু, সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। খুব বড় মানসিক যন্ত্রণায় আছি।

কী সিদ্ধান্ত?

– পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বাসায় আগামীকাল রাতে দুটো মেয়ে পাঠাতে বলেছে। পার্টির সভাপতি মিরাজ ভাই ফোন দিয়ে বলেছে আমি যেন আগামীকাল সন্ধ্যায় ওদের পাঠিয়ে দেই। এটা পুরনো কালচার আমাদের পলিটিক্সে, আমি জানতাম। তবে আমাকেই যে ফেস করতে হবে জানতাম না।

তোরা বললেই মেয়েরা যাবে?

-হু, মেয়েরা রেডি থাকে। নেতাদের কাছে গেলেই ওদের পদ দেবে, আমার নামেও সুপারিশ করে আসবে ওরা।

মেয়ারা রেডি থাকলে, তারা নিজ ইচ্ছেই যেতে চাইলে তোর আপত্তি কেন?

-আমার বিবেকে বাধছে আপু। এই নোংরা সিস্টেম আমি মানতে পারছি না। আবার আমি বের হতেও পারছি না। আমার স্বপ্ন তো এই রাজনীতি ঘিরেই৷ কী করব বলো তো?

আমি কী বলব বল সোনা৷ তুই দেখ তোর মন দিনশেষে কোনটাকে সায় দেয়। মন দিনশেষে যেটা করতে বলবে সেটাই করিস।

-আচ্ছা, দেখি কী হয়।

চন্দ্রিমা উদ্যানের এক কোণায় এসে বসেছে জুঁই আর সাকিব। জুঁই টিফিন বাটিটা সাকিবের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল, দেখো তোমার প্রিয় ভুনা খিচুড়ি আর খাসির মাংস।

সাকিব বাটি খুলতেই খিচুড়ির ঘ্রাণ নেকে এসে লাগল। সাকিবের মুখ জুড়ে মিহি খুশির আভা দেখা দিল। সাকিব জুঁইয়ের দিকে তাকিয়ে বলল, তুমি নিশ্চয়ই খাওনি? তোমার মিল আমার জন্য নিয়ে এসেছ, তাই না?

-আরে না। কাল লীলা আপা এসেছিলেন। আস্ত খাসি জবাই দিয়েছিল, আমরা খেয়ে কূল পাই না, এত মাংস! তুমি খাও, আমি তোমার খাওয়া দেখি। ওহ! পিঁয়াজ, শসা কেটে এনেছিলাম, হাত ধোও দিচ্ছি।

সাকিব বাটিটা রেখে জুঁইয়ের হাত বুকের কাছে টেনে নিয়ে ধরা গলায় বলল, এভাবে আর কত? বোর্ডিং এ ভালো কিছু রান্না হলেই নিজে না খেয়ে আমার জন্য নিয়ে আসো, কেন এমন করো? এত ধৈর্য কোথাও পাও , বেকার একটা ছেলেকে বছরের পর বছর ভালোবেসে যাবার ধৈর্য?

-বেকার ছেলেটা যখন টিউশনের টাকা থেকে বাড়ি টাকা পাঠানোর পর নিজের জন্য একটা৷ শার্ট না কিনে আমার জন্য সাবান, ক্রিম কেনে তখন বেকার ছেলেটা ধৈর্য কোথায় পায়? আমিও সেখান থেকে পায়৷ ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে খাও শিগগিরি।

বিসিএসটা হয়ে গেলে এই অভাবের ভালোবাসা থাকবে না দেখো।

– উঁহু, ভালোবাসায় অভাব আসা জরুরি। অভাবে ভালোবাসার খোলস শক্ত হবে কি না সেটা ভালোবাসার একটা পরিণতি দেখার আগে খুব জরুরি। পরিণতির পর ভালোবাসা তখন আর জানালা দিয়ে পালায় না। এখন খাও তো।

লেখকঃBorhan uddin

চলবে….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে