লাভ টর্চার❤ Part-8

0
3990

#লাভ_টর্চার❤
#Part-8
#Nusrat_Jahan_Abida
.
.
রেস্টুরেন্টের কর্ণারের একটা চেয়ারে বসে আছি। পাশের চেয়ারে মেধা বসে রাগে ফুসফাস করছে। বান্ধবীর পাত্র দেখতে আসার মতো কাজ সে করতে নারাজ। এই নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ যাবৎ রাগারাগি করছে সে। শেষে না পেরে সঙ্গে আসতে হয়েছে তাকে। আর তার জন্যি এই ফুসফাসানি। তবে আমার খেয়াল এই দিকে নয়! আমার খেয়াল হলো দু টেবিল পরে থাকা শুভ্র ভাইয়ার উপর, যে কিনা ঝাড়ুর সাথে গপসপ করছে। যাই হোক, কিছুক্ষণ আগে সামনে একটা মানুষ এসে বসেছে, পাত্র মেবি তিনি!
.
.
পাত্র মুখে দীর্ঘ হাসি এঁকে বলল,
– হাই, গার্লস!
.
.
মেধা মুখ বাঁকিয়ে বলল,
– হাই!
.
.
আমিও হালকা হাসি টেনে হাই বললাম। ছেলেটা দেখতে খারাপ না, তবে শুভ্র ভাইয়ার মতোও না। আমার দিকে একনজর তাকিয়ে বলল,
– তাহলে আপনি পাত্রী।
– জি।
.
.
উত্তর দিতে দিতে শুভ্র ভাইয়ার দিকে তাকাতেই দেখলাম তিনি ঝাড়ুর সাথে হেসেখেলে কথা বলছে। মন তো চাচ্ছে টেবিলে রাখা পানিটা মাথাই ঢালি! এতো হাসার কি আছে বুঝি না!
.
.
সামনে থাকা পাত্র মানে তাসিন আমাকে উদ্দেশ্য করে একটার পর একটা কথা বলেই যাচ্ছে। কিন্তু আমার নজর এখনো শুভ্র ভাইয়ার দিকে। অনেক হয়েছে #Jealousy_Game! এখন হবে #Just_Ingore! দেখি আমার অবহেলা কিভাবে সহ্য করে এখন!
.
.
শুভ্র ভাইয়ার থেকে চোখ সরিয়ে এবার তাসিনের দিকে তাকালাম। তাসিন হালকা হেসে জিজ্ঞেস করলো,
– সব তো বললাম! আর কিছু কি জানা বাকি আছে!
.
.
আমিও উত্তরে একটা হাসি দিয়ে বললাম,
– না! আপনি কিছু জানতে চাইলে বলুন!
.
.
তাসিন মুখের হাসি বজায় রেখে বলল,
– আমার যা জানা দরকার তা আমার জানা হয়ে গেছে। এখন বলুন, আপনাকে আপনার পছন্দ হয়েছে?
.
.
একনজর শুভ্র ভাইয়ার দিকে তাকালাম। না, তিনি ঝাড়ুর সাথে বেশ খুশিই আছে। আমি তাহলে কেন কষ্ট পাবো! না, পাবো না আমি কষ্ট! বুকে পাথর রেখেই বললাম,
– জি, আপনার?
.
.
তাসিনের মুখের হাসিটা আরো দীর্ঘ হলো। হাসি মুখে বলল,
– তা তো বাসায় গিয়েই জানবেন! চলি, তাহলে!
.
.
তাসিন উঠে দাঁড়াতেই আমরাও উঠে দাঁড়ালাম। তাসিনকে বিদায় দিয়ে এক নজর শুভ্র ভাইয়ার টেবিলে চোখ দিলাম। পরক্ষণেই চোখ সরিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে পা বাড়ালাম।
.
.
রিকশায় বসে আছি। মেধা তখন থেকে বলেই যাচ্ছে যে, বিয়েতে হ্যাঁ করলাম কেন! আমি তো শুভ্র ভাইয়াকে পছন্দ করি!
.
.
মেধার কথা শুনতে শুনতে এক পর্যায়ে বললাম,
– উনি আমাকে পছন্দ করে? জানি না। আমি অন্য সবার মতো না যে পছন্দ করি বলে সারা জীবন নষ্ট করে দিবো। আর তিনি পছন্দ করতেন তাহলে বিয়ে আটকাতেন, ঝাড়ুর সাথে ইটিসপিটিস না! তার জন্য আমি কেন অপেক্ষা করে মরবো! বল! তার কি কোন দায়িত্ব নেই!
.
.
মেধা মাঝখানে বলল,
– কিন্তু…
.
.
ওকে বাধা দিয়ে বললাম,
– আমি যা চেষ্টা করার করেছি! আর পারবো না। বাকিটা শুভ্র ভাইয়ার উপর! তিনি যদি কিছু না করে তাহলে তার রাস্তা আলাদা, আমার রাস্তা আলাদা।
.
.
কথাটা বলেই চুপচাপ বসে পড়লাম। বলতে সহজ হলেও করতে সহজ সহজ না। আমার ভিতরে কি চলছে তা আমিই জানি!
.
.
বাসায় এসে চুপচাপ নিজের রুমে চলে গেলাম। সবাই অনেক জিজ্ঞেস করেছে যে ওখানে কি হয়েছে, কিন্তু কারোই উত্তর দিই নি। এখন আমার একা থাকা প্রয়োজন।
.
.
রুমে গিয়ে বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে রইলাম। চোখ থেকে জলধারা ক্রমশ পড়েই যাচ্ছে। হাত দিয়ে চোখ মুছতে নিলাম হঠাৎ অনুভব করলাম পিছনে কেউ আছে। তাড়াতাড়ি চোখ মুছে উঠে বসতেই দেখলাম শুভ্র ভাইয়া দাঁড়িয়ে আছে। নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে মুখে হাসি এঁকে বললাম,
– কিছু বলবেন!
.
.
শুভ্র ভাইয়া আমার চোখে চোখ রেখে বললো,
– কিছু না বলার বাকি আছে!
.
.
শুভ্র ভাইয়ার চোখ ক্রমশ জ্বালিয়ে দিচ্ছে আমাকে। শেষে সহ্য করতে না পেরে চোখ সরিয়ে নিলাম। শুভ্র ভাইয়া শুকনো হেসে বললো,
– রেস্টুরেন্টে দেখতে গিয়েছিলাম তুই কি করিস! তো হ্যাঁ করে দিলি, তাই না?
.
.
শুভ্র ভাইয়ার কথায় মাথা নিচু করে রাখলাম। কি উত্তর দিবো বুঝতে পারছি না। শুভ্র ভাইয়া হয়তো আমার নিশ্চুপ থাকা ভাষাই বুঝতে পেরেছে, তাই শুকনো হাসি দিয়ে বলল,
– বুঝলাম। খুশি থাকিস।
.
.
কথাটা বলে এক সেকেন্ডের জন্যও অপেক্ষা করলেন না। সোজা রুম থেকে বের হয়ে গেলেন। তাহলে কি শুভ্র ভাইয়া ভেবেছিলো আমি বাধা দিবো! তবে কি #লাভ_টর্চার করতে গিয়ে নিজেই শুভ্র ভাইয়াকে নিজের থেকে দূর করে দিলাম!
.
.
Continue…………………..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে