#রৌদ্দুরে_প্রেমের_বৃষ্টি
#সূচনা_পর্ব
#রুবাইদা_হৃদি(sheikh ridy rahman)
কবুল বলার ঠিক একটু আগে কোথা থেকে কাব্য ভাইয়া পাগলের মতো দৌড়ে এসে বিয়ের ভরা আসরে আমার সামনে হাঁপাতে হাঁপাতে বলল,
–‘তুই আমার অনাগত বাচ্চার মা হয়ে কিভাবে পারলি বিয়ের আসরে বসতে?’
সবাই কাব্য ভাই আর আমার মুখের উপর তাকিয়ে আছে৷ বিষ্ময়ে আমার মুখ হা হয়ে গিয়েছে৷ পাশে থেকে বাবা অবাক হয়ে কাব্য ভাইয়ার কাছে এসে নিচু স্বরে বলল,
–‘মানে,কি বলছিস কাব্য?’
–‘নীতু আমার বিয়ে করা বউ সাথে আমার অনাগত বাচ্চার মা৷’
কাব্য ভাইয়ের সোজাসাপ্টা কথা শুনে বাবা আমার দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,
–‘নীতু কাব্য যা বলছে তা সত্যি?’
বাবার কথায় মুখ তুলে কিছু বলবো সেই সাহস যোগাতে পারলাম না৷ লজ্জায় আমার মাথা কাটা যাচ্ছে৷ কাব্য ভাই এতো বড় একটা মিথ্যা কথা কিভাবে বলতে পারলো৷ সে কি জানে না!তার এই কথার জন্য আমার বিয়েটা ভেংগে যাবে৷ কাব্য ভাই আমার সামনে এসে হাত ধরে উঠিয়ে বাবার সামনে নিয়ে বলল,
–‘ও কি বললে মামু,বলবে তো এই রিপোর্ট!’
আমার হাত ছেড়ে ফাইল থেকে রিপোর্ট বের করে বাবার হাতে দিয়ে মুখে লাজুক হাসি টেনে বলল,
–‘দেখো মামু তুমি নানাভাই হতে চলেছো!আর আমি বাবা৷’
বাবা রিপোর্ট দেখে সবার সামনে ঠাস করে একটা চড় লাগিয়ে দিলো আমার গালে৷ আমি গালে হাত দিয়ে কান্না করে বললাম,
–‘বাবা,কাব্য ভাইয়া মিথ্যা কথা বলছেন! সত্যিই আমি কিছু জানি না৷ উনি মিথ্যা বলছে বিশ্বাস করো আমার কথা৷’
কাব্য ভাইয়া জিনিয়াকে ডেকে বলল,
–‘এই জিনিয়া আমি কি মিথ্যা বলছি? তুই তো আমাদের বিয়ের সাক্ষী৷’
জিনিয়া দুদিকে মাথা দুলিয়ে হ্যাঁ বলতেই আমি ওর দিকে রাগী চোখে তাকালাম৷ আমার বাবা আর কারো কথা না বিশ্বাস করলেও তার ছোট মেয়ের কথা অনায়াসে বিশ্বাস করে নিবে৷ মনে মনে আরেকটা চড় খাওয়ার প্রস্তুতি নিতেই বাবা গম্ভীর মুখে বলল,
–‘আমি আর কিছু শুনতে চাই না৷ এই মূহুর্তে এই মেয়েকে নিয়ে আমার সামনে থেকে তুই চলে যাবি কাব্য৷ আজ থেকে আমার একটাই মেয়ে আর সেটা হচ্ছে জিনিয়া৷’
আমি কাব্য ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে মিনমিনে গলায় বললাম,’আপনার সাথে আমার কবে বিয়ে হয়েছে কাব্য ভাই?আর এই ভুয়া রিপোর্ট এনে সবার সামনে মিথ্যা বলছেন কেন?’
বাবা আর কাব্য ভাইয়াকে আমি জমের মতো ভয় পাই৷ আর আজ দুজন মানুষের সাথেই লড়তে হবে তাও কাব্য ভাইয়ার মিথ্যা নিয়ে৷ ভয়ে ভয়ে কাব্য ভাইয়া আর বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে ঢোক গিলে আবারও বললাম,
–‘প্রমাণ দিন কাব্য ভাই৷’
কাব্য ভাইয়া আবারও ফাইল থেকে কাগজ বের করে আমার হাতে দিয়ে বলল,
–‘ছয় মাস আগে নিজে জোর করে আমাকে বিয়ে করে এখন প্রমাণ চাচ্ছিস নীতু?’
কাবিনের কাগজ যেখানে বড় বড় করে কনের জায়গায় “আফরা হুমায়রা নিতু”নামটা জ্বল জ্বল করছে আর সাইন টা আমার দেওয়া কিন্তু আমি তো এমন কোনো কাগজে সাইন করি নি৷আর বরের জায়গায় “কাব্য মেহরাজ”৷বাবা আমার কাছে থেকে পেপার টা নিয়ে চিল্লিয়ে বলল,
–‘আমার মান সম্মান আর কিছু ধুলোয় মিশানোর বাকি আছে তোর?এখুনি আমার বাড়ি থেকে বের হয়ে যা৷’
যার সাথে আমার বিয়ে হচ্ছিলো সে বাবাকে অনেক কিছু বলে বরযাএী সহ রাগে ফুসতে ফুসতে বেরিয়ে যাওয়ার আগে আমার সামনে এসে শাসিয়ে বলল,
–‘এইভাবে বিয়ের ভরা আসরে অপমান না করলেও পারতে নীতু তোমার এই অপমানের শোধ আমি নেব৷’
–‘শোধ নিন আর না নিন!আমার বউ আর অনাগত বাচ্চাকে নিয়ে আমায় যেতে দিন৷’ কাব্য ভাইয়ের গা জ্বালানো কথা শুনে “আমির” রেগে বেড়িয়ে যায়৷ কাব্য ভাই আমার হাত ধরে সবার সামনে দিয়ে নিয়ে আসে৷
__________________________
গাড়িতে বসে কান্না করে যাচ্ছি আমি৷ আর কাব্য ভাই ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি চালাচ্ছেন৷ আমার জীবন তচনচ করে দিয়ে আবার গানও শুনছেন তিনি৷ আমি যে পাশে বসে আছি এইদিকে তার কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই৷ আমি জোরে জোরে কান্না করতে করতে বললাম,
–‘আপনি এতো বড় মিথ্যা না বললেও পারতেন কাব্য ভাই৷ আপনার জন্য আজ বাবা সবার কাছে অপমানিত হয়েছে৷ আমাকে সবাই নিচু চোখে দেখছে৷ আপনি এমন মিথ্যা কেন বললেন৷ আমি কি ক্ষতি করেছি আপনার?’
কাব্য ভাইয়া গানের সাউন্ড আরো বাড়িয়ে দিয়ে বলল,
–‘কিছু কি বলছিস তুই?আরো জোরে বল, আমি শুনতে পাচ্ছি না৷’
তার এমন আচরণ দেখে রেগে গান বন্ধ করে চিল্লিয়ে বললাম,
–‘আপনার কোনো কমনসেন্স আছে?আপনি এমনটা কেন করলেন৷ বাবার চোখে আমায় অপরাধী বানিয়ে দিয়ে এখন ফাজলামি করছেন আমার সাথে? আপনি আমার জীবন টা শেষ করে দিয়েছেন৷’
কাব্য ভাইয়া উত্তর না দিয়ে জোরে ব্রেক করলেন৷ সাহস নিয়ে কথা বলার পর এখন তার দিকে মুখ তুলে তাকাতে সাহস হচ্ছে না আমার৷ অনেকক্ষণ তার সাড়া শব্দ না পেয়ে চোখ তুলে তাকিয়ে দেখি সে গাড়িতে নেই৷ আশেপাশের তাকাতে দেখি তাদের বাসায় এসে পড়েছি৷ আর সে বাড়ির ভেতর ঢুকছে৷ পিছন ফিরে আমার উদ্দেশ্য বললেন,
–‘বাড়িতে ঢুকতে চাইলে গাড়ি থেকে নেম আয়৷ আর যদি গাড়িতে থাকতে চাস তাহলে গাড়ির লক টা আটকে দিস ভালো মতো৷ বলা তো যায় না চোর টোর এসে তোকে সহ আমার গাড়ি নিয়ে যাবে৷ তোকে নিলে কোনো সমস্যা নেই৷ তবে এইটা আব্বুর গাড়ি বুঝিস’ই তো এতো দামী গাড়ি চুরি হলে আমার বাপ নিশ্চয় হার্ট অ্যাটাক করবে৷’
তার কথা শুনে মনে হচ্ছে আমি নিজে উনার সাথে জোর করে এসেছি৷ ইচ্ছা হচ্ছে কিছু একটা দিয়ে উনার মাথা ফাটিয়ে দিই৷গা ছাড়া ভাব করছে এখন এতো বড় মিথ্যা বলে৷ আমি জোরে গাড়ির দরজা ধাক্কা মেরে খুলে নেমে পড়ি৷ উনি এতোক্ষণে গেটের কাছে পৌছে গিয়েছেন৷ আমি উনার পাশে দাড়াতেই কলিং বেল চাপলেন উনি৷ কিছুক্ষণ দাড়াতেই দরজা খুলে দিতেই অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখি…………
চলবে……..
#রৌদ্দুরে_প্রেমের_বৃষ্টি
#পার্ট:২
#রুবাইদা_হৃদি(Sheikh ridy rahman)
–‘আম্মু তোমার বউমা আর অনাগত নাতি নাতনি কে নিয়ে এসেছি।’
কাব্য ভাইয়ের কথা শুনে ফুপি তার গালে একটা চড় লাগিয়ে দিলেন। কাব্য ভাইয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখি সে গালে হাত দিয়ে ফুপির দিকে তাকিয়ে আছে। ফুপি রেগে বললেন,
–‘তোর সাহস কি করে হয় আমাকে আগে না জানানোর?ফাজিল ছেলে যা ইচ্ছা তাই করিস তুই৷ আমার বাড়ি থেকে বের হয়ে যা এখুনি৷’
কাব্য ভাইয়া ফুপির হাত ধরে ইনোসেন্ট ভাবে বললেন,
–‘আম্মু সিরিয়াসলি বলছি,আমার কোনো দোষ নেই৷ প্লিজ ক্ষমা করে দাও৷’
ফুপি আমার দিকে হাসি হাসি মুখ নিয়ে তাকাতে আমি তার পাশে গিয়ে বলি,
–‘ফুপি বিশ্বাস করো! তোমার ছেলে মি…..
–‘হ্যাঁ!হ্যাঁ আম্মু সবাইকে মিষ্টি পাঠিয়ে দিবে তুই চিন্তা করিস না৷ আম্মু ওকে রুমে নিয়ে যাও ওর অনেক ক্ষিদে পেয়েছে গাড়িতে বললো৷’
কাব্য ভাই আমার কথার মাঝে থামিয়ে সুন্দর করে আরো মিথ্যা বলে দিলো৷ ফুপিও তার ছেলের কথা শুনে মহা আনন্দে আমাকে ভেতরে নিয়ে গেলো৷ সবাই কাব্য ভাইয়ের কথা বিশ্বাস করছে কি করে?কেও আমার কথা শোনার প্রয়োজন বোধ করেছেই না৷ শাড়ি আর গয়নার ভারে আমার অবস্থা নাজেহাল৷ ফুপি আমাকে একগাদা কুর্তি আর সালোয়ার কামিজ দিয়ে ফ্রেশ হতে বলে চলে গেলেন৷ আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে এই সব গুলো কাপড় আমাকে বাবা নিজে বিয়ের আগে কিনে দিয়েছিলো৷ আজ পৃথিবীর সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ঘটনা আমার সাথেই ঘটছে মনে হচ্ছে৷
কাব্য ভাইয়ের পাশের রুমে আমাকে ফুপি রেখে গেছে৷ বিয়ের আগে এই বাসায় বেড়াতে আসলে এই রুমটা আমার জন্য বরাদ্দ থাকতো। বেডের সাইডে টেবিলে তাকিয়ে আমি আবারো অবাক হয়ে যাই৷ সেখানে আমার অনার্সের সমস্ত বই৷ বই গুলো আমি আমার বাড়ির টেবিলে রেখে দিয়েছিলাম বিয়ের পর নিয়ে যাবো বলে৷ নিশ্চয়ই আমি সপ্ন দেখছি৷ নিজের হাতে নিজেই চিমটি কেটে পরখ করতেই ব্যাথায় কুকড়ে উঠলাম৷ হাত পা ছড়িয়ে চিৎকার করে কাঁদার তীব্র ইচ্ছা হতেই ডাইনিং রুম থেকে ফুপি আমাকে খাওয়ার জন্য ডাকছে শুনতে পেলাম৷
বাড়িতে আজ ফুপি কাব্য ভাইয়া আর আমি ছাড়া কেও নেই৷ আঙ্কেল ব্যাবসার কাজে ঢাকা গিয়েছে আর কবিতা আপু শশুর বাড়ি৷ কাব্য ভাই আমার সামনে বসে আরামসে গরুর হাড় চিবোচ্ছে৷ ডাইনিং টেবিলে আমি নামক একটা মানুষ আছে সে দিকে তার কোনো দ্রুক্ষেপ নেই৷ ফুপি আমার পাশে বসে খাচ্ছে আর গল্প করছে৷ তাদের কারো কোনো হেলদোল নেই এতো বড় একটা ঘটনা ঘটে গেলো৷ আমি ইচ্ছা করে পানির গ্লাস জোরে রাখতে কাব্য ভাইয়া একবার তাকিয়ে ফুপিকে উদ্দেশ্য করে বললেন,
–‘আম্মু, তোমার ভাইয়ের মেয়েকে বলো ঠাস করে গ্লাস না রাখতে৷ ভেঙে গেলে এর টাকা দিবে কে?’
ফুপি রাগ দেখিয়ে বললেন,
–‘ওর পিছে না লাগলে হয় না তোর? খেতে এসেছিস চুপচাপ খেয়ে উঠে চলে যা৷এতো বড় একটা ঘটনা ঘটে গেলো তাতে ওর কোনো আক্ষেপ’ই নেই৷’
ফুপির কথা শুনে আবেগে কান্না পেয়ে গেলো আমার৷ হু হু করে কেদে উঠে বললাম,
–‘ফুপি একমাএ তুমি’ই বুঝতে পেরেছ৷ কত বড় একটা ঘটনা ঘটে গেলো কেও কোনো কিছুই বলছে না৷ আর উনি গা ছাড়া ভাব করে আছে৷’
ফুপি আমার পিঠে হাত বুলিয়ে বললেন,
–‘তুই জানিস ঘটনা? তোকে কাব্য বলেছে?’
কাব্য ভাইয়া চেয়ার ঠেলে উঠে দাঁড়িয়ে আরেকটুকরো মাংস উঠিয়ে মুখে পুড়ে বললেন,
–‘আম্মু তোমার সিরিয়ালের সময় হয়ে গেছে৷’
আমি আর কিছু বলবো তার আগেই ফুপি উঠে যেতে যেতে বলল,
–‘নীতু আম্মু কাদিস না৷ ঘটনা আমি পরে শুনবো এখন আয় আমার সাথে সিরিয়াল দেখবি৷’
ফুপি মনোযোগ সহকারে সিরিয়াল দেখছে৷ আজ সব কিছু বিরক্তি লাগছে৷ ফোন টাও সঙ্গে আনি নি৷ এইবার অনার্স প্রথম বর্ষে উঠেছি আমি৷ আর কাব্য ভাইয়া হাইয়ার স্টাডিজ-এর জন্য জার্মান যাওয়ার ট্রায় করছেন৷ উনার সম্পর্কে আমার ধারণা একটুও নেই বললেই চলে৷ সাদা রঙের সুঠাম দেহের একজন সাদা ভাল্লুক ও বলা যায়৷ ক্রাশ খাওয়ার মতো সম্পর্ক তার সাথে আমার কোনো কালেই ছিলো না৷ তাকে দেখে দূরে দূরে থাকাই একমাএ লক্ষ্য ছিলো আমার৷ এই ব্যাটা যেখানে সেখানে আমার বাশ দিতে পিছপা হয় না৷ আজকের ঘটনা নিসন্দেহে আমাকে ফাসানোর জন্য তার প্ল্যান মনে হচ্ছে আমার৷ অসহ্য লোক একটা৷
–‘আমায় বকা দেওয়া শেষ হলে এখান থেকে উঠে ঘরে চলে যা৷ আম্মুর সাথে পারসোনাল কথা আছে আমার৷’
ভাবনার মাঝেই তার অপমান জনক কথা শুনে রেগে উঠে চলে আসতেই ফুপি বললেন,
–‘ওর সামনে আবার কিসের পারসোনাল কাব্য?নীতু যেভাবে বসে ছিলি সেইভাবেই বসে থাক৷ এক পা ও নড়বি না তুই৷’
আমি শান্ত কন্ঠে এগিয়ে যেতে যেতে বললাম,
–‘আমার ঘুম পেয়েছে ফুপি৷ উনার পারসোনাল কথা নিয়ে উনি থাক৷ কারো কথায় বা বিয়েতে ইন্টারফেয়ার করা আমার স্বভাবের মধ্যে পড়ে না৷’
রাগে কান্না পাচ্ছে আমার৷ সব কিছু এলোমেলো লাগছে৷ আমার সাথে হচ্ছেটা কি আজ?
___________________________________
দেয়ালে থাকা ঘড়ির টিক টিক আওয়াজে তাকিয়ে দেখি রাত ১ঃ৩০ বাজে৷ আমার চোখে ঘুম ধরা দিচ্ছে না৷ বাইরে বোধহয় মেঘ সেজেছে হালকা ঠান্ডা বাতাস জানালার পর্দা ভেদ করে আমার শরীরে এসে লাগছে৷ মনের মাঝে হাজারো প্রশ্নের বেড়াজালে আষ্ঠেপৃষ্টে জড়িয়ে যাচ্ছে৷ সবাই অস্বাভাবিক হয়েও স্বাভাবিক৷ অস্থির পায়ে হেটে বেড়াচ্ছি ঘরের সমস্ত জায়গা৷ হটাৎ গিটারের টু টাং আওয়াজে ভয় পেয়ে যাই৷ কাব্য ভাইয়ের গিটার আছে মনে পড়তেই স্বস্তি পাই৷ আমার রুমের লাগোয়া বারান্দায় থেকে আসছে মনে হচ্ছে আওয়াজ টা৷ ধীরপায়ে এগিয়ে যেতেই দেখি কেও নেই৷ এমনিতেই টেনশনে মরে যাচ্ছি তার উপর ভয়৷ আবারও আওয়াজ আসতেই কেপে উঠি৷ সাহস করে আশেপাশে তাকাতে দেখি কাব্য ভাইয়ার বারান্দা থেকে আওয়াজ আসছে৷ রাতের গভীরে শব্দ দূরে হলেও মনে হয় ঘরের বাইরে হচ্ছে৷ বাইরে থেকে আলো আসায় দেখতে পেলাম কাব্য ছাই রঙের টি শার্ট পড়ে গিটার হাতে বসে আছে৷ তার দৃষ্টি বাইরে কিছু একটা গভীর মনযোগ দিয়ে ভাবছেন উনি৷ আমার ঘুম হারাম করে উনি গিটার বাজাচ্ছেন মনের সুখে৷ আমার বারান্দায় থেকে উনার বারান্দায় যাওয়া যায় অনায়াসে৷ আমি দেয়াল টপকে দাড়াতেই ধপ করে শব্দ হলো৷ আমার উপস্থিতি দেখে উনার কোনো হেলদোল হলো না৷ উনায় দেখে মনে হচ্ছে উনি জানতেন আমি আসবো৷ আমি রেগে তাকে বললাম,
–‘এইসব কি হচ্ছে কাব্য ভাইয়া?’
উনি ভাবেলাশীন ভাবে গিটারে আওয়াজ তুলে বললেন,
–‘কোথায় কি হচ্ছে!’
আমি তেতে উঠে বললাম,
–‘আপনি কি আমায় ভালোবাসেন?এইজন্য এই মিথ্যা নাটক?’
উনি নীরব দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে হুট করে উঠে একদম আমার মুখের সামনে উনার মুখ এনে দাড়ালেন৷ আমি পিছিয়ে যেতেই আবার আমার দিকে ঝুকে……….
চলবে……..
ভুল গুলো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন সকলে