রাব্বাতুল বাইত পর্ব-১২ এবং শেষ পর্ব

0
4161

#গল্প_রাব্বাতুল_বাইত
#লেখক_হানিফ_সরকার_শান্ত
#পর্বঃ১২__শেষ_পর্ব

অভি সবার জন্য মিষ্টি আর ফাতিহাকে প্রপোজ করার জন্য ফুল নিয়ে বাসায় ফিরে। নিজের রুমে গিয়ে যা দেখে তা দেখে পায়ের নিচের মাটি সরে যায়।

অভি রুমে গিয়ে দেখে পুরো রুম সুন্দর করে গুছানো। ফাতিহা বিছানায় শুয়ে আছে। ফাতিহার বার্থডের দিন অভি ফাতিহাকে যে নীল শাড়ি টা গিফট করে ছিল।
পুরো বিছানা এলোমেলো।

অভি ফুল গুলো নিয়ে বিছানা বসে ফাতিহাকে ডাকে। ফাতিহা ফাতিহা এই দেখ তোমার জন্য কি নিয়ে এসেছি। ফাতিহা ফাতিহা উঠ। ফাতিহা কোনো কথা বলে না। ফাতিহা উঠে দেখ আমি আমি বিসিএস ক্যাডার হয়ে গেছি। অভি ফাতিহার শরীরলে হাত দেয় দেখে পুরো শরীর ঠান্ডা। নাকের ডগায় হাত দেয় দেখে দেখে শ্বাস নিশ্বাস বন্ধ। শ্বাস নিশ্বাস ফেলে না। ফাতিহা বলে চিৎকার দেয় অভি। ফাতিহা তোমার কী হলো কথা বল ফাতিহা। ফাতিহা তুমি আমার সাথে কথা বলবে না। ফাতিহা তুমি না হাদিস বলে আমার ভুল গুলো দরিয়ে দিতে আজ হাদিস বলে আমার ভুল গুলো ধরিয়ে দিবে না। ফাতিহা আজ আর তোমার সামনে রিয়ার কথা বলব না ডিভোর্সের কথা বলব না। ফাতিহা উঠ আমার সাথে কথা বল। ফাতিহা তুমি না বলে ছিলে আমি তোমাকে ঘুম পারিয়ে দেওয়ার জন্য। আজকে তো আমি তোমাকে ঘুম পারিয়ে দেয়নি তা হলে তুমি ঘুমিয়ে আছ কেন? অভি কান্না করতে করতে বলে কথা গুলো। অভি বিছানার পাশে পড়ে থাকতে দেখে একটা চিঠি। অভি চিঠি টা খুলে দেখে চিঠিতে লেখা আছে

প্রিয় –স্বামী

আশা করি আপনি অনেক খুশিতে আছেন।কারণ আপনি আজকে থেকে বিসিএস ক্যাডার হয়ে গেছেন। আমি জানতাম আপনি বিসিএস ক্যাডার হতে পারবেন।আমি আল্লাহর কাছে সব সময় মোনাজাতে চাইতাম আপনি যাতে পারেন। আপনি আজকে জানতে চাইছিলেন না আপনি বিসিএস ক্যাডার হলো কী গিফট চাই আমি কোনো গিফট চাই না। আমি আপনার একটা গিফট দিয়ে গেলাম আপনি আমাকে আপনার জীবনের পথের একটা কাটা ভেবে ছিলেন আপনি আমার কাছে মুক্তি ছেয়ে ছিলেন না আপনাকে মুক্তি দিয়ে গেলাম। প্রতি টা মেয়ে যতটা আশা স্বপ্ন নিয়ে নিজের স্বামীর বাড়িতে আসে। ঠিক ততটা স্বপ্ন আশা নিয়ে আমিও এসে ছিলাম। আপনি যখন আমার সামনে ডিভোর্সের কথা বলতে তখন আমার অনেক কষ্ট লাগত। কিন্তু কাওকে বলতে পারতাম। আব্বা মারা যাওয়ার পরে নিজেকে পৃথিবীতে খুব একা লাগত। মনে হতো পৃথিবীতে আমি খুব একা হয়ে গেছি। ভেবে ছিলাম আপনাকে আপন করে সারাটা জীবন পার করে দেব। আপনার মা আমার আমাকে নিজের আম্মার অভাব টা পূরণ করেছে বুঝতে দেয়নি আম্মার অভাব। মুবাসিরা আমাকে বুঝতে দেয় নি বোনের অভাব। আমি সারা জীবন আপনার বউ হয়ে থাকতে চেয়ে ছিলাম। কিন্তু পারলাম না। আমি আপনাকে ডিভোর্স দিতে রাজি হয়ে ছিল কারন আমি আর মুবাসিরা গিয়ে ছিলাম সেই দিন ডাক্তার বলে ছিল আমার ব্লাড ক্যান্সার।আমি বড়জোর ১০ –১৫ দিন বাঁচব। ডাক্তার বলেছে আমার পেটের বাচ্চা টাও মারা গেছে। সেই দিন আমি মুবাসিরা আর ডাক্তার রোকেয়াকে বলে ছিলাম এই কথা যেন কেও না জানতে পারে আমাকে কথা দেওয়ার জন্য বলে ছিলাম তাই আপনাদের কেও বলে নি। আমি যদি আপনাকে বলতাম আমি আর মাত্র ১০–১৫ দিন বাঁচব তা হলে আপনি হইতো আমাকে শেষ সময়ে আমাকে একটু দয়া করে ভালোবাসতেন।কিন্তু আমি আপনার করোনা ভালোবাসা েপতে চাই নি।। আপনার মাকে বলেনি কারণ ওনি আমাকে কত আশা করে নিজের বাড়ির বউ করে নিয়ে এসে ছিলেন। যদি আমি বলি আমি আর বেশি দিন বাঁচব আম্মা অনেক কষ্ট পেতেন তাই আম্মাকে কিছু বলিন। আমার আব্বাকে দেওয়া কথা রাখতে পারিনি। আপনার মা লায়লা চৌধুরীকে দেওয়া কথা আমি রাখতে পারিনি। আম্মা বলেছিলেন আপনার এলোমেলো জীবন টাকে ঠিক করতে কিন্তু আমি পারিনি। চৌধুরী বাড়ির #রাব্বাতুল_বাইত হয়ে থাকতে চেয়ে ছিলাম কিন্তু পারিনি। আমাকে মাপ করবেন আপনার সাথে যদি কোনো খারাপ ব্যবহার করে থাকি।

ইতি
আপনার গ্রামের ক্ষেত বউ
ফাতিহা

তারপর মামার কি হয়ে ছিল মা…..? তার পরে তোর মামা আর একটা মাস বেঁচে ছিল। তর মামা খেতে বসলেও মনে হত ফাতিহাকে কাওয়াতে হবে। ঘুমাতে গেলে মনে হতো ফাতিহাকে ঘুম পারিয়ে দিতে হবে। নামাজ পড়ার আগে মনে হত ফাতিহাকে চুমু দিতে হবে। ভাবি মারা যাওয়ার একমাস পরে তর মামা একটা
রোড এক্সিডেনটে মারা যায়।

মা তা হলে নানুর কি হল..? তোর নানুর লায়লা চৌধুরী এখন মানষিক ভারসাম্য হারিয়ে আজ পাগল। তর নানু এখনো খুঁজে বেড়া তার ঘরের #রাব্বাতুল_বাইত
মা এখনো খুঁজে বেড়ায় তার সাজানো গুছানো সংসার।

যার জন্য আজ আমি মুবাসিরা আজকে এত পরিবর্তন। যে আমাদের পুরো পরিবার টাকে ইসলামি পরিবার বানিয়ে ফেলে ছিল। যে ছিল আমাদের #রাব্বাতুল_বাইত [[ ঘরের রাণী ]]]

মা তুই তোর মামির মতো হওয়ার চেষ্টা করবি।যে পরিবারে যাবি সেই পরিবারের #রাব্বাতুল_বাইত হয়ে থাকবি।

সমাপ্ত

আসসালামু আলাইকুম,,,,,,,,, আমি #লেখক_হানিফ_সরকার_শান্ত আপনাদের এই গল্পটা লেখে শিক্ষা দিতে ছেয়েছি
এই গল্পের শিক্ষনীয় বিষয় গুলো হল……….. 👇�

১/ একজন ইসলামিক পরিবারে নারী কেমন হওয়ার উচিত তা এই গল্পে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি

২/ একজন স্বামী যতই খারাপ হোক একজন নারীর কাছে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত।

৩/ একজন ইসলামি নারী পরিবারকে কতটা সুন্দর করে রাখতে পারে আর হবে। তা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

৪/ সময় থাকতে সময়ে মূল্য দিতে শিখুন। যে আপনার ভালো চাই থাকে তাকে কখনো কষ্ট দিবেন না। আপনার জীবনে ফাতিহার মতো এমন একজন মানুষ তাকলে তাকে ভালোবাসুন। অভির মতো এমন ভুল করবেন না। সময় থাকতে সেই মানুষ টাকে আপন করে নিন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে