#রং_বদল
#IH_Iman_Haque
#পর্ব_১১
জান্নাতুন তুমি কি জানো একজন আদর্শ স্ত্রীর স্বামীর উপরে তার দায়িত্ব- কর্তব্য গুলো কি?
না তো,আমি জানি না,
তাহলে শুনো একজন আদর্শ স্ত্রীর কর্তব্যগুলো কি?
একজন আদর্শ স্ত্রীর কর্তব্যের মূল হলো স্বামীর প্রতি তার দায়িত্ব। তার উপর তার স্বামীর অধিকার অনেক বড়, যা তার পিতা-মাতার অধিকারের চেয়েও বেশি। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলার অধিকারের (হকের) পরেই তার অধিকারের শ্রেষ্ঠত্বের অবস্থান। আর এই অধিকারের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণে এসেছে আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
﴿ٱلرِّجَالُ قَوَّٰمُونَ عَلَى ٱلنِّسَآءِ بِمَا فَضَّلَ ٱللَّهُ بَعۡضَهُمۡ عَلَىٰ بَعۡضٖ﴾ [ سُورَةُ النِّسَاءِ: 34 ]
“পুরুষ নারীর কর্তা, কারণ আল্লাহ তাদের এককে অপরের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন…” – ( সূরা আন-নিসা: ৩৪ )
সুতরাং সে তার (স্ত্রীর) ব্যাপারে দায়বদ্ধ ও তার পরিচালক এবং তার সকল বিষয়ের তত্ত্বাবধায়ক। আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
« لا يصلح لبشر ان يسجد لبشر ولو صلح لبشر ان يسجد لبشر لأمرت المرأة ان تسجد لزوجها من عظم حقه عليها ». ( رواه أحمد ).
“কোন মানুষের জন্য কোন মানুষকে সিজদা করা সঠিক নয়; আর কোন মানুষের জন্য কোন মানুষকে সিজদা করা যদি সঠিক হত, তবে আমি নারীকে নির্দেশ দিতাম তার স্বামীকে সিজদা করার জন্য; কেননা তার উপর তার স্বামীর বিরাট অধিকার (হক) রয়েছে।”
উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
« أيما امرأة ماتت وزوجها عنها راض دخلت الجنة ». ( رواه الترمذي و ابن ماجه ).
“নারীদের যে কেউ মারা যাবে এমতাবস্থায় যে তার স্বামী তার উপর সন্তুষ্ট, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।”
তাহলে আমিও একজন আদর্শ বান স্ত্রী হতে চাই।
তাহলে উপরে যেগুলো বললাম সব গুলো মেনে চললেই হতে পারবে ।যদি একজন আদর্শ স্ত্রী হতে পারো স্বামীর কাছে, তাহলে পরোকালে জান্নাত নির্ধারিত ।
ওকে আমি চেষ্ট করবো ইনসাআল্লাহ্ সব আল্লাহ্ ও নবী(সাঃ)এর বাণীগুলো।
আচ্ছা একটা কথা বলি জান্নাতুন তোমাকে রাগ করবে না,তো।
আচ্ছা বলো,স্বামীর কথায় কি কেউ রাগ করে নাকি?
তোমার খালাতো বোন কি যেনো নাম তার?
কেনো মনি,
বিকালে কি ওই মেয়ের দাড়ায় আমার কাছে কফি পাঠিয়েছিলে?
হুম কেনো তোমার সাথে কি ফাজলামি করছে আবার নাকি?
আরে না,কিন্তু ও আমাকে আজকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছে।আমি তো ওই মেয়ের কথা শুনে অবাক হয়ে গেছিলাম।ওকে বুঝাতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমাকে বলে একদিনের টাইম দিলাম ভেবে উত্তর দিবেন।
কি ও তোমাকে প্রেমের প্রোস্তাব দিয়েছে,ওর বড় বোনে স্বামী কে,ওকে আজকে আমি মেরে ফেলবো?
আরে রাগ করো কেনো ছোট মানুষ ভূল করতেই পারে ওকে ভালো করে বুঝালে সব বুঝবে।
ওকে আমি শেষ করে দিবো আমার বাসায় থেকে আমার স্বামী কে প্রেমের নিবেদন দেয়।এরে আমি কি যে করবো আমি ভেবে পাচ্ছি না,
কিছু করতে হবে না শুনো,মাথা ঠান্ডা করো সব কিছুতে রাগ করলে ফলাফল ভালো আসে না।কিছু কিছু কাজে মাথা ঠান্ডাও রাখতে হয়।আর একজন মমিন ব্যক্তিদের ধর্য্য হচ্ছে মহত গুন।আল্লাহ্ বলেছেন,,আমার বান্দারার তোমরা ধর্য্য ধারন করো,যে ব্যক্তি ধর্য্য ধারন করতে পারবে তার সাথে আমি আছি।সেই জন্য আমাদের ধর্য্য ধারন করে মনিকে বুঝিয়ে বললে হবে।
ওকে তোমার কথা শুনে আমি চূপ রইলাম না হলে আমি ওকে মেরে ফেলতাম।
এতো ভালোবাসো আমাকে।
হুম নিজের চেয়েও বেশি ভালোবাসি তোমাকে।সেই জন্য তো ওর উপর এতো রাগ হচ্ছে।
বুঝতে পারছি আমার বউ আমাকে অনেক ভালোবাসে।কখনো আবার ভূল বুঝে ছেড়ে চলে যেও না।
এদেহে প্রান থাকতে কখনো তোমাকে ছেড়ে যাবো না।(জরিয়ে ধরে বলতেছি)
আচ্ছা বউ শুনো না,আজকে আমাদের কি হওয়ার কথা ছিলো?
কেনো কিছু কি হওয়ার ছিলো নাকি?
এত তাড়াতাড়ি ভূলে গেলে চলবে,আমাদের না আজকে বাসর হওয়ার কথা ছিলো।
হুম ছিলো তো,কিন্তু আমার লজ্জা করে যে।
ধূর কি যে বলো বউ,স্বামী-স্ত্রীর মাঝে লজ্জা থাকতে নেই।আচ্ছা শুনো আজকে তুমি সেই দিনের মতো নতুন বউ সেজে বিছানায় বসে থাকবে ।আমি এসে তোমার ঘোমটা তুলবো,
ঠিক আছে কিন্তু এখন বউ সাজার জিনিস কই পাবো।
রুমে যা আছে তাই দিয়ে সেজে বসে থাকো দশ মিনিট পরে আমি আসতেছি।
ঠিক আছে।
আমি সোজা রুমের বাহিরে এসে বেলকনিতে এসে দাড়িয়ে আছি।ভাবতেছি কখন রুমে যাবো আর বাসর করবো,
বউ তো সাজতে বললো কিন্তু শাড়ি কই পাবো।হঠাৎ করে মনে পড়লো আমার এক বন্ধু আমাকে নীল শাড়ি গিফ্ট করেছিলো কখনো পড়া হয় নি, আজকে মনে হয় শাড়িটা উপকারে আসবে।আমি আলমারিতে গিয়ে শাড়িটা বাহির করলাম।তারপর শাড়িটা পড়ে নিলাম কোনমতো করে,মুখে হাল্কা মেকাপ করলাম তারপর দৌড়িয়ে গিয়ে বিছানায় ইয়া বড় ঘোমটা দিয়ে বসে রইলাম।
কি বেপার দশমিনিট পার হয়ে গেলো,রুমে এখন যাবো কি?না একটা মেসেজ করে দেখি বউকে, কি বলে?তারপর বউ এর ফোনে মেসেজ দিলাম,
“” বউ আমি কি রুমে যাবো?””
প্রায় দুই মিনিট পরে উত্তর আসলো,
“” রুমে আসো তুমি।””
এই কথা শুনে এক মিনিট ও দাড়িয়ে থাকি নি বেলকনিতে।সোজা রুমের ভিতরে ঢুকে পড়লাম।তারপর ভিতর থেকে দরজাটা লাগিয়ে দিলাম।ধীরে ধীরে আগাচ্ছি,যতো সামনে যাচ্ছি যতোই হার্ডবিট বাড়তেছে আবার ভয়ও লাগতেছে।কেনো যে এমন হচ্ছে বুঝতেছি না,এভাবে আমি একদম বিছানার কাছে চলে আসলাম,দেখতেছি নতুন বউ এর মতো জান্নাতুন বিছানায় বসে আছে।হঠাৎ করে জান্নাতুন বিছানা থেকে নেমে এসে আমার পা ধরে সালাম করতেছে,আমি আমার পা দুটো সরিয়ে নিয়ে বলতেছি,
বউ তোমার স্থান আমার পায়ে না,আমার বুকে তোমার স্থান।(নিচ থেকে তুলে বলতেছি )
আমি আর কথা না বলে আবারো বিছানায় এসে ঘোমটা দিয়ে বসে পড়লাম।
এটা কি হলো আমার সাথে কথা না বলে আবার বিছানায় চলে গেলো?ও বুঝতে পারছি আমাকে গিয়ে ঘোমটা তুলতে হবে নতুন বউ বলে কথা।তারপর আমি বিছানার উপরে গিয়ে বউ এর ঘোমটা উপরে তুলে দিলাম,
মাস্আল্লাহ্ আমার বউকে অনেক সুন্দর লাগতেছে।
আমি এই কথা শুনে লজ্জায় মাথা নিচ করে আছি।
বউ তুমি লজ্জা পেয়ে মাথা নিচ করে থেকে না,চলো আমরা নতুন জীবনে পা রাখি।
আগে চলুন আল্লাহ্ কাছে দুইরাকাত নফল নামাজ পড়ে আসি তারপর নতুন জীবন শুরু করি।
ওকে।তারপর আমরা দুইজনে দুইরাকাত নফল নামাজ পড়ে আল্লাহ্ কাছে দোয়া করলাম।আমার জানা মতে প্রতিটা ভালো কাজ করার আগে নফল দুইরাকাত নামাজ প ড়ে আল্লাহ্ কাছে দোয়া করা উত্তম।যদি এমন করি তাহলে আল্লাহ্ র রহমত আমাদের উপরে পরবে।
নামাজ পড়া শেষ করে আবারো দুইজনা বিছানায় চলে আসলাম।
বউ এবার শুরু করা যাগ,
তুমি কি করবা সেটা তোমার বেপার?
এটা কি আমার একার কাজ?
না, দুইজনারী
তাহলে বলতেছো কেনো,
ওকে তুমি আগে রুমে লাইট অফ করে দেও।
তারপর আমি তাড়াতাড়ি লাইট ওফ করে আসলাম।তারপর শুরু হয়ে গেলো যুদ্ধ।আর কিছু বলবো না,এটা কোন যুদ্ধ আপনারা ভালো করে যানেন তাই কিছু আর বলবো না। আর যদি ইতিহাস পড়া ইচ্ছা থাকে বিবাহ করে ইতিহাস পড়েন।
সকালে ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো চোখে মুখে পানির ছিটার কারনে।চোখ খুলে দেখি বউ আমার আয়নার সামনে দাড়িয়ে বড় বড় চূলগুলো ঝাড়তেছে।চূল ঝাড়ার পানিতাহলে আমার মুখে এসে পড়তেছিলো।আমি বিছানা থেকে উঠে সোজা জান্নাতুলকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলাম।জান্নাতুন এর শরীর থেকে সুন্দর একটা ঘ্রান আসতেছে,মাতাল করে তুলতেছে।
সকাল সকাল এগুলো কি শুরু করে দিলে?কালেকে তো রাতে অনেক যুদ্ধ করলে তবুই শখ মিটে নি।
এতো সুন্দর বউ ঘরে থাকলে এতো তাড়াতাড়ি কিভাবে শখ মিটে বলো।
ছাড়ো তো যাও আগে গোসল করে এসো।তোমার গোসল করা এখন ফরজ।আগে গোসল করে এসো তারপর কতো শখ আছে মিটিও ওকে।
সত্যি তো,
হুম সত্যি রে বাবা যাও আগে গোসল করে এসো।কি পাগল স্বামী আমার?
আমি জান্নাতুন এর ঠোঁটে জোড় করে একটা চুমু দিয়ে পালিয়ে আসলাম বাথরুমে।প্রথমে চুমু দিতে দিচ্ছিলোই না তাই জোড় করে ঠোঁটে চুমু দিয়ে পালিয়ে আসলাম।এটা অবস্য সবাই জানেন রাতে আপনার স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক করলে সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথমে আপনাকে গোসল করতে হবে।সাধানত এই গোসলকে ফরজ করে দিয়েছেন আল্লাহ্ তায়ালা।তাই প্রতিটা স্বামী-স্ত্রীকে গোসল করতেই হবে।
গল্পটা আর বেশি বড় করবো না,পাঠকদের তেমন সাড়া পাচ্ছি না।আমি বুঝতেছিনা ইসলামিক জিনিসগুলো তুলে ধরার জন্য কি পাঠক দের সাড়া কম পাচ্ছি নাকি?যদি এমন হয়ে থাকে তাহলে আর গল্পের মাঝে তুলে ধরবো না,পরের পর্ব থেকে।
চলবে