#রং_বদল
#IH_Iman_Haque
#পর্ব_০৩
আচ্ছা তুমি কি বিয়ের আগে কারো সঙ্গে প্রেম করেছো?
আমি প্রেম করি নি কখনো,সবসময় পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্হ ছিলাম?তবে একটা ছেলেকে ক্লাস ১০ এ থাকতে প্রথম দেখায় ক্রাস খেয়েছিলাম।কিন্তু কখনো তাকে বলার সাহস হয় নি তাই বলাও হয় নাই।যাকে বলে এক তর্ফা প্রেম।
ও তাই এখনো ভালোবাসো নাকি ওই তোমার ক্রাসকে।
যার সাথে কোন সম্পর্ক তৈরি হয় নি ,তাকে মনে রেখে কি লাভ?আমাদের ইসলাম ধর্মে বিয়ের আগে প্রেম- ভালোবাসা করা হারাম।এটা ভেবেই আমি কারো সাথে প্রেম-ভালোবাসায় জড়ায় নি।আমি চাইতাম আমার বিয়ের পরে স্বামীর সাথে প্রেম করবো,সেই জন্য কারো সাথে প্রেম করি নি।আচ্ছা আপনি আমাকে ভালোবাসবেন না,স্ত্রীর অধিকার দিবে না।
তোমাকে যখন বিয়ে করছি তখন তোমাকে আঁকড়ে ধরে তো বাঁচতে হবে।ভালো না বেসে কই যাবো,বউ তো একটাই।
ইসলাম ধর্মে যে বলা হয়েছে বিয়ের আগে প্রেম-ভালোবাসা করা হারাম এটা কতো জনে মানে,অন্যের কথা কি বলবো তোমাকে,আমি তো প্রেম-ভালোবাসায় জড়িয়েছিলাম।আমিও হারাম কাজ করেছি?
আগে কি করছেন,সেটা আমি শুনতে চাই না,আমি চাই আপনি আগের সব কিছু ভূলে গিয়ে আমাকে আপন করে মেনে নেন।আর আল্লাহ্ বান্দার এমন কোন পাপ নাই যে ক্ষমা করেন না।ক্ষমা চাইতে হলে আগে তোমাকে ওয়াদা করতে হবে,এমন ভাবে ওয়াদা করতে হবে যেনো পরে আর ওই ধরনের পাপ কাজ না হয়,তাহলে আল্লাহ্ নীর্চিত বান্দার যতো বড় পাপ হোক না কেনো ক্ষমা করবে।
আর যেনো এমন হারাম কাজ না হয় আল্লাহ্ সেই তওফিক দান করুক।তুমি এখন আমার স্ত্রী তাই তোমাকে ভালো বাসা আমার কর্তব্য।আগে কি করছি সেটা ছিলো আমার অতীত,এখন তুমি আমার বর্তমান-ভবিষ্যৎ। বাকি জীবনটা তোমাকে নিয়ে বাঁচতে চাই।
আমার না, তোমাকে প্রথম দেখায় ভালো লেগে গেছিলো।কিন্তু বলার সাহস হয় নাই,কথায় আছে না মেয়েদের বুক ফাঁটে তো মুখ ফাঁটে না।তেমনি হয়েছে আমার কিন্তু এখন না বলে কোন উপাই পাচ্ছিলাম না।আচ্ছা আমাকে তোমার ভালো লাগে নিই।
তোমাকে ভালো না লাগলে,বিয়ে করতাম কি বলো?তোমাকেও আমার অনেক ভালো লেগেছে।আর একটা বিষয় লক্ষ্য করেছি সেটা হচ্ছে,তোমার মাঝে আমার প্রাক্তনকে খুজে পাই।তোমার কথার ধরন,তোমার বড় বড় চূল,বড় বড় চোখ এদমে প্রথম দেখায় তোমাকে আমার প্রাক্তন মনে করেছিলাম।হুবাহুফ তোমার সাথে মিল আছে আমার প্রাক্তনের।
যদি তোমার প্রাক্তন এর মতো আমাকে দেখতে লাগে, তাহলে প্রাক্তনকে যেমন এখনো ভালো বাসো তেমনি আমাকে ভালো বাসবে,প্রাক্তনকে ভূলে গিয়ে ।
আচ্ছা বলো তো আমার কি দেখে তোমার আমাকে পছন্দ হয়েছে?
তোমার বড় বড় চূলগুলো আমার খুবেই পছন্দ হয়েছে।একটা নারীর সৌন্দর্য বৃদ্ধি হয় একমাত্র চূলের জন্য,এক কথাই মেয়েদের সৌন্দর্যের মূল উৎস হচ্ছে চূল।চূল না থাকলে মেয়ের কোন চিন্ন থাকবে না।
তাহলে আপনারো চূল দেখে আমাকে পছন্দ হয়েছে।
আমি সব সময় চাইতাম আমার বউ এর অনেক লম্বা চূল হবে আর ইচ্ছাও ছিলো যে মেয়ের লম্বা চূল থাকবে তাকে বিয়ে করবো।কাউকে পছন্দ করতে হলে একটা কারনে যথেষ্ট।পছন্দ করার জন্য হাজারো কারন লাগে না।
আচ্ছা একটা প্রশ্ন করি,
হুম করো,
যদি কখনো তোমার প্রাক্তন ফিরে আসে তাহলে কি আমাকে ছেড়ে দিবে নাকি?
প্রাক্তন ফিরে আশা মোটেও সম্ভব না, কারন কবেই ঈমান নামে একটা ছেলে তার জীবনে ছিলো সেটা ভূলেই গেছে।আর প্রাক্তন কখনো ফিরে আসে না,যদিও ফিরে আসে তাহলে ঠিক বুঝে নিবে,সে একদিন স্বার্থের জন্য তোমাকে ছেড়ে গেয়েছিলো আবারো ফিরে এসেছে তোমার কাছে স্বার্থের জন্য ।প্রাক্তন ফিরে আসলেও কখনো মেনে নিবো না,মনে মনে ভালো বাসলেও বাহিরে প্রকাশ করার মাধ্যম থাকবে না,তখন থাকবে দুইজনার পথ আলাদা আলাদা।দুইটি পথ কখনো এক হয় না,তাই প্রাক্তনকে মেনে নেওয়ার প্রশ্নই আশে না।
তাহলে তো আমার স্বামী কখনো ছেড়ে যাবে না আমাকে।
ছেড়ে যাওয়ার জন্য এই বন্ধন নয় রে পাগলী।বিয়ের বন্ধন হচ্ছে আল্লাহ্ হাতে লেখা একটা সম্পর্ক যা দুইজন মানুষ সারা জীবন পাশে থাকার প্রেরণা বুঝলে,তাই হাত ছাড়ার জন্য বিয়ে করি না।
আচ্ছা শুনো না,প্রায় তো রাত ১:৩০ বেজে গেলো এখন ঘুমাই না বউ।
আপনি এতো ঘুম ঘুম করেন কেনো,জীবনে ঘুমার অনেক দিন পাবেন তাই আজকের এই রাতটা না ঘুমিয়ে জেগে থেকে পার করে দেই।একটাই তো রাত,হাজার রাত জেগে থাকতে বলি নি।আমার সাথে কি কথা বলতে ভালো লাগতেছে না তোমার?
বউ এর সাথে কথা বলতে কার না ভালো লাগে।যদি আরো নতুন বউ হয়,তাহলে তো কোন কথায় নাই।কিন্তু অবুঝ দুটো আঁখি মানতেছে না।সালা বোকা চোখ পাশে সুন্দরী বউ থাকতেও চোখে ঘুম আসে।
তুমি তো দেখতেছি ভালোই গুছিয়ে কথা বলতে পারো।অনেক সুন্দর লাগতেছে তোমার কথাগুলো।
আমি জানি না,কতোটা গুছিয়ে কথা বলতে পারি।আচ্ছা তুমি কি জানো স্বামী-স্ত্রী পাশে বসে গল্প করা সুন্নত?আমাদের নবি(সাঃ) অবশর টাইমে ওনার স্ত্রীদের সাথে আলাপ আলোচনা করতেন।আবার স্ত্রী কপালে চুমু দেওয়াও সুন্নত।দেখছো আল্লাহ্ কতো সুন্দর একটা সম্পর্ক তৈরি করে দিয়েছে যা করে শুধু শোয়াব আর শোয়াব।
স্ত্রীদের কপালে চুমু দেওয়া যদি সুন্নত হয়ে থাকে তাহলে আপনি আমাকে এখনো চুমু দেন নাই কেনো।
একদিনে তো আর সব কিছু হয় না ধীরে ধীরে সব হবে।
তাও অবস্য ঠিক।আর একটা প্রশ্ন,
প্রথম থেকেই তো প্রশ্ন করতেই আছো এখন তো প্রশ্ন করা বাদ দিয়ে ঘুমাও,
আর একটা প্রশ্ন করবো তারপর ঘুমাবো,
ওকে বলো,
আমরা কয়টা সন্তান নিবো,
বিয়ের একদিন না যেথে সন্তানের স্বপ্ন দেখতেছো তুমি আবার এখনো বাসর করতেই পারি নি তাতে।
বাসর হই নি তো কি হয়েছে সন্তানের স্বপ্ন দেখতে পারবো না?বিয়ে যখন হয়েছে বাসর করা যাবে,আগে আমি সুস্হ হই।এই অবস্হায় তো আর বাসর করা যাবে না।
স্বপ্ন দেখা ভালো কিন্তু,
কোন কিন্তু নয় এখন বলেন কয়টা সন্তান নিবো আমরা।
একটা সংসারে দুইটা বাচ্চা হলে সুখে সংসার হয়।তাই আমরাও না হয় দুইটা বাচ্চা নিবো।
আচ্ছা তুমি এতো ভালো কেনো বলো তো।
আমি ভালো এটা তো কখনো কেউ বলে নিই।
কেউ বলে নি তো কি হয়েছে,আমি বলতেছি তোমার বউ?
বউ যখন বলেছে তখন বিশ্বাস করা যায় আমি ভালো।
হুম,তাহলে আমরা দুইটা বাচ্চা নিবো।একটা মেয়ে আর একটা ছেলে।আচ্ছা যদি প্রথমে আমাদের ছেলে হয় তখন,
হুম আল্লাহ্ যেটা দিবে ওটাই নিবো ছেলে/মেয়ে হোক। এখন আর কোন কথা না,অনেক রাত হয়েছে ঘুমাও।
হুম এখন ঘুমানোর প্রয়োজন অনেক গল্প করেছি আমার ঘুম পেয়েছে।
আচ্ছা আমি তোমাকে জরিয়ে ধরে ঘুমাই,
জরিয়ে ধরবেন কিন্তু আমার শরীর যে, নাপাক আছে যদি তুমি আমাকে জরিয়ে ধরো তাহলে তো তোমারো শরীর নাপাক হবে।
কে বলেছে রে পাগলী তোমাকে জরিয়ে ধরলে আমারো শরীর নাপাক হবে।
কেনো আমি শুনেছি,
তুমি অন্যদের শুনা কথা শুনে ভয় পাচ্ছো তাহলে শুনো,আমাদের নবী (সাঃ) তার স্ত্রীর পিরিয়ড হওয়ার পরেও , সেই স্ত্রীর উচূর উপরে মাথা দিয়ে শুয়ে কোরআন শরীফ পাঠ করেছিলেন তখন তো নবী(সাঃ) এর শরীর নাপাক হতো না,তাই অন্যদের কথা শুনে কোনকিছু করা যাবে না,নিজেকে সেটা যাচাই-বাচাই করে দেখতে হবে কথাটা ঠিক না ভূল।
যদি তোমার কথা ঠিক হয়ে থাকে তাহলে আমাকে জরিয়ে ধরে ঘুমাতে পারো কোন সমস্যা নাই।
হুম।(তারপর আমি জান্নাতুনকে জরীয়ে ধরে ঘুমানোর চেষ্টা করতেছি )
এখনো অনেক পরিবার আছে যে বাড়ির বউ এর পিরিয়ড হলে কোন কিছু করতে দেওয়া হয় না।তারা এটা জানে বা মানে একটা মেয়ের পিরিয়ড হলে,সেই মেয়ে যেটা স্পর্শ করবে সেই নাপাক হবে কিন্তু আমাদের এটা ভূল ধারনা।আমরা চলি সমাজের কিছু ভূল রীতি-নীতির প্রচারে।একটা মেয়ের পিরিয়ড হলে সর্বপ্রথম আমাদের সবার কাজ হলো তাকে সাপোর্ট দেওয়া তাকে শান্তনা দেওয়া,তা না করে আরো তাদের আমরা ভয় দেখাই।এটা হবে,ওটা হবে বলে ভয় দেখাই।
(আসসালামুআলাইকুম সবাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বেন। আল্লাহ্ যেনো আমাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার তউফিক দান করুক।)
#চলবে,,,?