পর্ব-০৮
#মেঘের_আড়ালে_চন্দ্রলোকিত💖
#লেখিকা-লামিয়া রহমান মেঘলা
অতিত,
মেয়েটা একটা ম্যাম সাথে বেঞ্চ এর বাইরে আসে,
ম্যাম আগে আগে হাঁটছে মেয়েটা পেছন পেছন,
মেয়েটা আমানের সামনে গিয়ে থমকে দাঁড়ায়,
আমানের ভিশন কাছে গিয়ে চোখে চোখ রাখে,
— আপনাকে আজ ভুল প্রমাণিত না করলে আমার নাম ও জান্নাতুল মেঘ নয়।
— দেখা যাক কি হয় মিস মেঘ।
( মেয়েটা আসলে মেঘ ই ছিল।
মেঘ সেদিন আমানকে ভালো করে দেখতে পেরেছিল না কারন আমান ছিল মাস্ক এ আর আমানের দৃষ্টিতে মেঘের ছবি এতো গাড়ো ভাবে গেথে গেছে যে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ভুলতে পারবে না সে )
ম্যাম রুমে গিয়ে মেঘকে চেক করে কিন্তু কোথদও কিছু পায় না।
মেঘের সব কিছুই ভালো করেই চেক করা হয়,
স্কুলের ম্যাম বেরিয়ে আসে,
— স্যার ওনার কাছে কিছু নেই।
— কেমন চেক করেছেন আপনি? আমি নিজে দেখেছি ওর কাছে ছিল।
— স্যার সরি বাট আমি সহ আরও ৩ জন ম্যাম চেক করেছি কেউ ই কিছু পাই নি।
আমানের মাথায় বাজ পরে,
— কি মিস্টার ম্যাজিস্ট্রেট।
প্রসাশন পকেটে রেখেছেন বলে আমার পরিক্ষার বেশ ভালোই হলো এখন বিনা লেখায় প্লাস পেয়ে যাবো
মেঘ বাকা হেসে আমান কে পাস কেটে চলে আসে।
এতে আমানের অপমান হয় বেশ অনেকটাই।
আমানের প্রচুর রাগ হচ্ছিল। কিন্তু সে নিজেকে কন্ট্রোল করে সেন্টার থেকে বেরিয়ে আসে,
রাস্তা দিয়ে ভাবতে ভাবতে,
— আমি নিজে ওকে দেখলাম আমি কিভাবে ভুল হলাম।
সেদিন আমানের ঘুম হয় না।
রাতে আমান স্কুলের প্রধান কে কল করে,
— আসসালামু আলাইকুম স্যার,
— ওয়া আলাইকুম সালাম।
আপনাদের স্কুলে কি সিসিটিভি আছে,
— জি স্যার আছে সব গুলো রুমেই আছে,
— ওহ আমি ত আগে জানতাম না।
— কেন স্যার কোন সমস্যা?
— নাহ আসলে
আমার একটা ফেবার করবেন?
— জি স্যার অবশ্যই।
— আজ ৩ ঘন্টা পরিক্ষার সিসিটিভি ফুটেজ চাই আমার,
পুরো টা।
— স্যার কতো নাম্বার রুমের ?
— ২০৩ নাম্বার রুমের ,
— জি স্যার ঠিক আছে ,
কিছুক্ষণ এর মাঝেই প্রধান শিক্ষক আমান কে ফুটেজ সেন্ড করে,
আমান খেয়াল করে পুরোটা দেখে,
তখন যা হয়েছিল,
— মেঘ,
মেঘের বেস্ট ফ্রেন্ড লিয়া মেঘকে ডাকে তার সিট মেঘের পেছনেই ছিল,
— কি।
— দোস্ত এটা লুকিয়ে দে প্লিজ একটু পর ম্যাজিস্ট্রেট আসবে তার পর কি হবে আমি ধরা খেয়ে যাবো,
— লিয়া তুই এগুলো তুই কি করে কি
— সরি মেঘ প্লিজ দোস্ত হেল্প প্লিজ,
তুই ত জানিস আমার বিয়ে হয়ে গেছে আমার স্বামী যদি জানে আমি এটা করেছি ও আমায় মেরেই ফেলবে ছেড়ে দিবে আমায়,
— লিয়া কিন্তু,
–দোস্ত প্লিজ।
লিয়া কেঁদেই দিছে,
মেঘ সেটা নিয়ে লুকায়,
সবি দৃশ্যমান,
এখন কথা হলো নকল টা ছিল গেল টা কোথায়,
আমান আরও ধ্যান সহকারে দেখতো শুরু করে,
আমান যে দেখেছে তা সত্যি,
মেঘ যখন আমানের কাছে গিয়ে কথাগুলো বলে,
— আজ আপনাকে ভুল প্রমাণিত না করলে আমার নামও জান্নাতুল মেঘ না।
তখনি মেঘ ওই কাগজ টা আমানের পকেটে ঢুকিয়ে রাখে,
আমানের চোখ কপালে উঠে যায়,
আমান নিজের পরে থাকা কোর্ট এর পকেট চেক করে আর কাগজ টা পেয়ে যায়,
— কি সাংঘাতিক এই মেয়েটা৷
আমানের ভিশন রাগ হয়,
–আজ এই প্রথম তোমার জন্য আমি হ্যারাজ হলাম।
অপেক্ষা করো তোমায় আমি ছাড়ছি না।
আমানের পয়েন্ট ছিল,
মেঘ অন্যায় করে নি কিন্তু অন্যায় কে প্রশ্রয় দিয়েছে এটার জন্য ই রাগ হয়েছিল৷
বর্তমান,
আমান সবটা বলে,
–আসলে অনেক যিদ বসে গেছিল তাই আমি সত্যি ভিশন বাজে কাজটা করে ফেলেছি আমার বোঝা উচিত ছিল যে অন্যায় তুমি করোই নি সে দিন সেটার শাস্তি পেতে হতো তোমায়,
ছোট থেকে কখনো নিচু হতে শিখি নি ত তাই তোমার করা অপমান টা গেথে ছিল মনে
আমানের কথায় মেঘের কাছে সব পরিষ্কার হয়ে যায়,
নেঘ মাথা নিচু করে বসে আছে,
সত্যি ত সে দিন লোকটাকে অপমান ই করা হয়েছিল এক প্রকার,
–আম সরি, (মেঘ)
–তুমি সরি বলো না সরি আমার বলা উচিত।
তোমার জীবন টদই উল্টো পাল্টা করে দিলাম।
–আপনি কি আমায় সত্যি পছন্দ করেন না।
আমান চুপ হয়ে থাকে কোন কথা নেই তার মুখে,
–শুধু মাত্র এই জন্য আমায় বিয়ে করলেন যে আমায় কষ্ট দিতে পারবেন
আমান তখনো চুপ।
–নিরাবতা সম্মতির লক্ষ্যন জানেন কি?
আমান মেঘের দিকে তাকায়,
— সমস্যা নেই যাকে ভালোবাসা যায় না তার সাথে আর যাই হোক সংসার করা যায় না আর সেখানে ভালোবাসা ত দুরে থাক আপনি ত পছন্দ ই করেন না আমায়।
আমাদের ত ডিভোর্স আগে থেকেই হওয়া ছিল তাই না৷
আমি চলে যাচ্ছি।
ভালো থাকবেন আপনার ঔষধ গুলো মাকে বলে দিয়েন৷
এখন ত রাত, আমি একটা মেয়ে আমার পক্ষে ত যাওয়া সম্ভব না এখন
পছন্দ মতো কাউকে বিয়ে করে নিয়েন৷
আনার অস্তিত্ব আপনার জীবনে আর থাকবে না।
চিন্ত করবেন না আমার মা বাবাকে আমি বলব আমি নিজেই তাকে ছেড়ে এসেছি এই বয়সে সংসার আমার জন্য না৷
মেঘের গলা আটকে আসছে কথা গুলো বলতে গিয়ে কিন্তু বলতে হচ্ছে একটা ছেলেকে আটকে রেখে ত লাভ নেই নিজের জন্য,
মেঘ উল্টো পাশে শুয়ে অঝরে নিঃশব্দে কাঁদতে থাকে,
আমানের বুকে কেউ পাথর বেঁধে দিয়েছে এমন মনে হচ্ছে তার,
কিন্তু হয়ত এটাই এখন ভালো হবে মেঘের জন্য,
— ( শুধু ভালো লাগে না ভিশন ভালো ও বসি মেঘ কিন্তু আমার সাথে তোমায় ও সেই একি রিস্ক এ ফেলতে চাই না আমি দুরে থাকো আমি বেঁচে থাকলে তুমি শুধু আমারি হবে ) আমান মনে মনে কথা গুলো বলে,
চোখ বন্ধ করে নেয়,
সে দিন দু’জনের ঘুম হয় না৷ ।
পরের দিন সকালে,
মেঘ নামাজ পড়েই ব্যাগ নিয়ে বাসায় চলে আসে,তখন আমান ও ঘুম ছিল
এতো সকালে মেঘকে দেখে মেঘের মা ভিশন অবাক,
– -কিরে মেঘ তুই।
— কেন মা এটা আমার বড়ি না।
— হ্যাঁ এটা তোর বাড়ি কিন্তু হটাৎ জামাই আসে নি?
— নাহ জামাই কেন আসবে
আমি তোমার জামাই এর সাথে আর সংসার করবো না।
মেঘ কথাটা বলে নিজের রুমে চলে যায়,
মেঘের মা মেঘের পেছন পেছন আসে মেয়েকে ডাকে কিন্তু কোন কজ হয়না তাই চলে আসে,
— মেয়েটা কি বললো অর্নি।
— বুঝতেছি না ভাবি ওর কিছু হয়েছে সারাকে ফেব করি,
সারার মা সারাকে ফোন করে,
সারা সব শুনে অবাক,
সকাল থেকে মেঘকে দেখে নি ভেবেছে হয়ত কোথাও আছে কিন্তু এটা ত আরেক কথা,
সদরা তার শ্বাশুড়ি মায়ের কাছে যায়,
–কি বলো বউ মা।
ওদের মাঝে কিছু হয়েছে,
–এটা ত ভাইয়াই ভালো বলতে পারবে মা
–আমান কে ডাকো,
কিছুক্ষণ এর মাঝে আমন নিচে আসে,
–কি হয়েছে আমান।
–কি হবে মা।
–মেঘ ও বাড়ি কেন চলে গেছে কাউকে কিছু না বলে কিভাবে চলে গেল তুমি কিছু বলো নি কেন ওকে
চলবে,