মেঘের আড়ালে চন্দ্রলোকিত পর্ব-০৬

0
1183

পর্ব-০৬
#মেঘের_আড়ালে_চন্দ্রলোকিত💖
#লেখিকা-লামিয়া রহমান মেঘলা

এদিকে,
–আমি যা করছি তা কি ঠিক?
ওকে কি আমার বলে দেওয়া উচিত কেন আমি ওর উপর রেগে।
কিন্তু ও।
নাহ এসব আর ভাবা উচিত না।
আজ রাতের ওর সাথে কথা বলব।
–স্যার। গাড়ি রেডি আপনি আসুন।
হটাৎ গর্ড এর কথায় আমান পেছনে ফিরে,
–হুম আসছি,
আমান চলে আসে,
আমান এসে দেখে তার ড্রাইভার বসে আছে,
–তোমার না আজ বাসায় যাবার কথা হোসেন (আমানের ড্রাইভার)
–জি স্যার কিন্তু এখন শহরে পৌঁছাতে রাতে হয়ে যাবে আপনার আমি পৌঁছে দি আপনাকে।
— না থাক তোমার স্ত্রী হয়ত অপেক্ষা করছে হোসেন।
কাল ত তোমাদের বিবাহ বার্ষিকী
হোসেন আমনের কথা শুনে হেসে দেয়,
— আপনি অনেক খেয়াল রাখেন স্যার ম্যাম নিশ্চিত আপনার মতো স্বামী পেয়ে অনেক শুখি।
আসি স্যার ধন্যবাদ,
হোসেন চলে যায়,
আমান হোসনেরে শেষের কথাটা বার বার শুনতে পাচ্ছে,
— ম্যাম নিশ্চিত আপনার মতো স্বামী পেয়ে অনেক শুখি।
সত্যি কি মেঘ শুখি,
এটা সত্যি আমনের জানা নেই,
আমান গাড়িতে উঠে গাড়ি চালানো শুরু করলো,
বেশ অনেল সময় পর শহরে পৌঁছে যায় আমান,
রাস্তায় এক ফুলের দোকানে যায়,
— এখানে কি অর্কিড ফুল পাওয়া যাবে

— স্যার এই সময়ে এসে এই ফুলটা খুজতেছে?
— হ্যাঁ আছে।
— না স্যার।
— ওহ সাদা গোলাপ আর হলুদ গোলাপ দিয়ে একটা মাথার ক্রাউন বানিয়ে দিন
— ওকে স্যার,
লোকটা তার বাড়ির বাগানের তাজা ফুল দিয়ে আমান কে ক্রাউন বানিয়ে দেয়
কিছু পানি ছিটিয়ে দেয় যাতে ওগুলো মরা মরা না হয়,
আমান বিল পে করে চলে আসে,
মনের মাঝে এক আলাদা ভালোলাগা কাজ করছে আজ৷
মেয়েটাকে এই সব কষ্ট থেকে মুক্তি দিবে,
আমান চলে আসে সেখান থেকে,
,
,
রাত প্রায় ১১ টা,
অনেকটা রাত এখন।
মেঘের ঘুম আসছে না আমানের ফোন টাও বন্ধ,
মেঘের চিন্তা হচ্ছে।
সবাই খেয়ে চলে গেছে মেঘ বসে আছে আমনের জন্য,
মেঘ জানে না কেন ভিশন ভালো লাগা কাজ করেছে তার জন্য,
ভালো লাগে না কিছু।
মেঘ বসে আছে হটাৎ তার ফোনটা বেজে ওঠে,
মেঘ ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখে কোন অচেনা নাম্বার,
মেঘ ফোনটা পিক করে
— আসসালামু আলাইলুম।
— ওয়া আলাইলুম সালাম।
আপনি কি মিস্টার আমন খানের স্ত্রী৷ মিসেস খান?
— জি আপনি কে বলছেন?
— আমি ডক্টর জেরিন।
আপু আমান খান হটাৎ এক্সিডেন্ট করছে উনি ***** হসপিটালে আছেন আমি এই হসপিটালের ডক্টর আপনি প্লিজ জলদি আসুন।
কথাটা শুনে
মেঘের পৃথিবী টা যেন হটাৎ থমকে গেল
কিছু একটা হয়েছে কি হয়েছে সব শব্দ গুলো যেন বন্ধ হয়ে গেছে।
মেঘ দৌড়ে সারার রুমে যায়,
— ভাইয়া।
— কি হয়েছে মেঘ। (আরিফ)
— ভাইয়া আমান এক্সিডেন্ট করেছে জলদি চলুন।
আরিফ থ হয়ে যায়,
— কি বলছো মেঘ কি করে কি৷
তুমি শান্ত হও চলো আমরা যাচ্ছি।
— ভাইয়া জলদি।
— মেঘ কিছু হবে না চল (সারা)
সারা, মেঘ আর আরিফ রওনা হয়,
অনিলা বেগম আর অর্ক খান ও পেছনের গাড়িতে আছে,
হসপিটালে পৌঁছে মেঘ দৌড়ে কাউন্টারে যায়,
— আমন খান কোথায়?
— ম্যাম ডক্টর জেছির সাথে কথা বলুন।
মেঘ দৌড়ে যায়,
— মিসেস খান।
— উনি কোথায়।
— মিসেস খন ওনার অপারেশন শুরু করতে হবে প্রয়োজন ব্লাড,
আপনি প্লিজ ও + ব্লাড জোগাড় করেন।
আর বর্ন সাইন করতে হবে।
মেঘ পুরো ভেঙে পরে,
— ডক্টর আমাকে দিন আমি জোগাড় করছি আপনি প্লিজ অপারেশন শুরু করুন।
— ওকে।
ডক্টর চলে যায়,
আরিফ রক্ত জোগাড় করে ফেলে,
মেঘ কাঁদতে আছে ভিশন কষ্ট হচ্ছে তার৷
সারা সামলে পারছে না মেঘকে,
সামলানো হয়ত সম্ভব ও না।
— মেঘ তুই ত অসুস্থ ছিলি।
তুই এমন করছিস কেন সোনা তুই খাস ও নি।
— আমার ভালো লাগছে না সারা।
— বুঝতেছি ভালো কি আমাদট লাগছে তুই শান্ত হ।
এরি মাঝে মেঘ সারার পরিবার ও হাজির হসপিটালে,
আমনের এক্সিডেন্ট টা হলো কি করে ফ্লাসব্যাল,
আমান ফুলের ক্রাউন টা হাতে গাড়িতে বসে,
সেটাকে রেখে গাড়ি স্টার্ট দিতে যাওার সময় ই হটাৎ পেছন থেকে কোন একটা ট্রাক এসে ধাক্কা দেয়
ট্রাক টা এমন ভাবে ধাক্কা দেয় আমামের গাড়িটা গুড়ো গুড়ো হয়ে যায়।
আমান চাপা খায়,
গাড়িটা উল্টে যায়,
তখন আমান নিচে পরে,
আর তার মাথায় ও আঘাত পায়,
সবাই জড়ো হয়ে যায় তখনি ডক্টর জেছি পাশ দিয়ে যায়, আমানকে ওই অবস্থায় দেখে নিজের হসপিটালে নিয়ে আসে,
আমানের ফোনটার অবস্থা ও ভালো না তাও বহুত কষ্টে ডায়লেরে প্রথম নাম্বার টা দেখে,
সেটা হলো মিসেস খান নামে সেভ করা তার মানে এটা হয়ত আমানের স্ত্রী এটা ভেবেই ডক্টর জেছি তাকে ফোন দেয়,
বর্তমান,
আমানের অবস্থা ভালো না আরিফ রক্ত দিছে ডক্টর কে ডক্টর তাদের সম্পূর্ণ চেষ্টা করছে,
কিন্তু বুঝতে পারছে না শেষে কি হবে।
মেঘ ভেঙে পরেছে আমানের মা ও,
ছেলের এই অবস্থা চোখে দেখার নয়৷
কিন্তু গাড়িটার এক্সিডেন্ট টা সাধারণ কিছু ছিল না।
কেউ আমানের গাড়িকে ইচ্ছে করে এক্সিডেন্ট করিয়েছে,
কিন্তু কেন কেই বা আমানকে ইচ্ছে করে মারতে চাইবে,
সত্যি টা অজানা থাক,
,
,
সেই রাত কাটিয়ে পরের দিন সকাল হলো,
মেঘ কিছু খায় নি এখনো,
কাদতে আছে,
এক জন এসে আমানের গাড়ি থেকে পাওয়া জিনিস গুলো দিয়ে যায়,
সেখানে ফুলের ক্রাউনের টুকরো গুলো স্পষ্ট,
মেঘ ওগুলো দেখে আরও বেশি কান্না করে দেয়,
মানুষ টা হয়ত কাল ওকে কিছু বলতে চেয়েছিল কিন্তু হয়ত ওপর ওয়ালা চায় নি আমান মেঘকে কিছু বলুক,
এভাবে মেঘের শ্বাস কষ্ট ও বেড়ে যাচ্ছে,
কিছু না খাওয়ার কারনে সে দুর্বল,
আমানের মা নিজের দুঃখ ভুলে ছেলের বউকে বুঝাচ্ছে,
সারা ও বুঝাচ্ছে কিন্তু মেঘ বুঝতে চাইছে না।
— মেঘ প্লিজ একটু খেয়ে নে,
— সারা প্লিজ,
— মেঘ মা প্লিজ

— মা প্লিজ আমার ভালো লাগছে না।
— ভালো কারোর ই লাগছে না কিন্তু তুমি না খেলে আরও অসুস্থ হয়ে পরবা তখন কি হবে মা।
,
ওদের কথার মাঝেই ডক্টর আসে,
— মিসেস খান মিস্টার খান ঠিক আছেন আলহামদুলিল্লাহ,
আপনারা তার সাথে দেখা করতে পারেন কিন্তু এক জন,
জেছি চলে যায়,
আমামের মা মেঘকে পাঠায়,
মেঘ রুমে যায়
আমান চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে,
মেঘে কষ্ট হচ্ছে তাকে দেখে,
মেঘ গিয়ে আমানের পাশে বসে,
আমানের হাতে হাত রাখে,
আমান চোখ খুলে,
— ঠিক আছেন আপনি ?
আমান মৃদু হাসে,
— তোমার ত এখানে থাকার কথা না ।
— কেন ?
— তুমি আমার এতো খারাপ ব্যবহার সহ্য করেও কেন এখানে এসেছো আমি হে আসতাম না।
— আপনি কেন এসব বলছেন চুপ থাকেন এখন এসব এর সময় না।
— মেঘ তুমি
— হুস,
মেঘের হাত আমানের মুখে দেয়,
— এসব কথা এখন না শুধু রেস্ট নিবেন সুস্থ হবেন তার পর দেখা যাবে।
আমান হেসে দেয় মেয়েটা পাগল,
চলবে,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে