মেঘের আড়ালে চন্দ্রলোকিত পর্ব-০৪

0
1182

পর্ব-০৪
#মেঘের_আড়ালে_চন্দ্রলোকিত💖
#লেখিকা-লামিয়া রহমান মেঘলা

সারা আরিফ আর মেঘ আমান রওনা হয় মেঘদের বাসার উদ্দেশ্যে
প্রায় ৩০ মিনিট পর তারা পৌঁছে যায় ,
গাড়িতে সবাই চুপচাপ ছিল কারোর কোন হয় নি।
বাসায় পৌঁছে মেঘ মা আর ছোট মা (সারার মা) কে জড়িয়ে ধরে,
— মাত্র এক দিন দেখি না তোদের মনে হচ্ছে কতো দিন দেখি না (চাঁদনি মেঘের মা)
— হ্যাঁ রে মা তোরা দু’জন ই ত এ বাড়ির সব ( মেঘের চাচি অর্থাৎ ছোট মা অর্নি )
— ভেতরে আসতে দেও মা ( সারা )
— হ্যাঁ হ্যাঁ ভেতরে এসো,
আমান আর আরিফ মেঘ সারার বাবার কাছে গিয়ে বসে,
মেঘ সারা মায়ের সাথে হেল্প করে রান্নায়
কিছুক্ষণ পর দুপুরে সবদই এক সাথে খাওয়া দাওয়া করে রুমে আসে
মেঘ আর সারার রুমে আমান আর আরিফ আসে,
ওদের রুম গুলো আলাদা আলাদা,
আমান এসে বসে রেস্ট নিচ্ছে আর অফিসের কিছু কজ সেগুলো ঠিক করছিলো,
মেঘ এসে ওয়াসরুমে চলে যায়,
ওয়াসরুম থেকে শাড়িটা পাল্টে একটা কমফোর্ট ড্রেস পরে আসে,
আমান মন দিয়ে ফোন দেখছে আর কজ করছে,
মেঘকে বেরিয়ে আসতে দেখে মেঘের দিকে তাকালো,
মেঘ ড্রায়ার থেকে তার সার্টিফিকেট গুলো গুছিয়ে নিচ্ছিল।
কলেজে প্রয়োজন হয় ও বাড়িতে নিয়ে যাবে তাই,
আমান মেঘের দিকে তাকায়
— এগুলো কি মেঘ?
আমনের প্রশ্নে মেঘ আমানের দিকে তাকায়,
— সার্টিফিকেট,
— কিসের?
— এসএসসি,
আমানের মুখের রং বদলে যায় কথাটা শুনে,
— তেমার রেজাল্ট কি ছিল?
— আমার ৪.৮৫।
— কেন প্লাস পাউ নি কেন?
— সেটা ত আমি জানি না।
মাথা নিচু করে বলল মেঘ,
— কেন তোমাদের এটিটিউড দেখে ত মানুষ ভাববে তোমরা জেলা ফাস্ট হয়েছো
— আপনি আমায় কবে এটিটিউড নিতে দেখলেন।
আমি কখনোই কারোর সাথে এটিটিউড দেখাই না।
বিশেষ করে কোন ম্যাজিস্ট্রেট এর সাথে ত নাই।
মেঘের কথায় কথায় আমান মেঘের দিকে তদকিয়ে তাচ্ছিল্য হাসি দিলো,,
— হয়ত কিন্তু কার কি এটিটিউড তা সে নিজেই ভালো জানে,
আমান কথাটা বলে ওয়াসরুমে চলে গেল,
— উনি আমায় কোথা থেকে এটিটিউড নিতে দেখলো,
মেঘ সব গুছিয়ে ব্যাগে রেখে বেডের এক পাশে শুয়ে পরলো,
আমান এসে মেঘকে দেখে সেও পাশে শুয়ে পরলো,
বিকাল গড়িয়ে রাত হয়,
মেঘ ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে মায়ের কাছে আসে,
— কিরে তুই কি করিস এখানে ?
— ও মা কি করব আসতে পারি না নাকি।
— আসতে পারিস কিন্তু জামাই একা ফিল করবে তুই যা।
— মাত্র এক দিনের জন্য তোমাদের কাছে এসেছি ও একা থাকুক সমস্যা নাই।।–
— পাগল মেয়েটা বলে কি ।
— সত্যি বলি ।
— আচ্ছা যা এসব খাবার গুলো নিয়ে সারাকে ডাক দে।
দু’জন কে খেতে দে ,
— ঠিক আছে ,
মেঘ গিয়ে সারা আরিফ কে ডাকে,
মেঘের রুমে গিয়ে সবাই বসে,
ওদের খাবার দেওয়া হয় ।।
আমান কিছুই খায় না।
আর আরিফ হালকা পাতলা খায়,
মেঘ কিছু বলে না।
আমানের ব্যাবহার আরও বেশি রুড হচ্ছে,
দিন দিন।।
অনিলা বেগমের কথা গুলো মনে পরলো মেঘের,
উনি বলেছিলেন তাকে ভালোবাসা দেবার কথা৷
তাকে নাকি ভালোবাসা দিলে সে ভালে হবে
তার কঠর মনোভাব একটু হলেও নরম হবে
এটা কেমন মানুষ আল্লাহ জানে কোন ধারনা নেই মেঘের,
রাতে খাবার শেষে সবাই টেবিলে বসে আছে,
মেঘ হাত ধুয়ে এলো,
— বাবা একটা কথ বলতাম ( আমন )
— হ্যাঁ বাবা বলো ( মেঘের বাবা )
— আমার ত এখন বাসায় যাওয়া প্রয়োজনীয়,
— কেন বাবা৷ ।
— আসলে বাবা কাল একটা জায়গায় ঝামেলা হয়েছে আর সেখানে পুলিশ চার্জ দিয়েছে আমাকে যেতে হবে ।
— কিন্তু এখনি এই রাতে ( মেঘের মা )
— মা প্লিজ আমি ওকে নিয়ে অন্য এক দিন আসব ।
মেঘের মনটা ভেঙে যায় কথাটা শুনে,
ইচ্ছে হচ্ছে না যেতে,
— আচ্ছা দাদাভাই তুই চলে যা আমি সারা আর মেঘ কাল সকালে না হয় আসব ( আরিফ)
আরিফের কথাটা শুনে আমানের অজান্তেই মেজাজ খারাপ হচ্ছে
কিন্তু তা প্রকাশ করে না।
–৷ আনার সকালে কাজ আছে, ওকে নিয়েই যেতে হবে
আমায় ক্ষমা করবেন বাবা আমি পরে এক দিন আসব।
মেঘের বাবা আর কিছু বলে না।
মেঘের কান্ন পাঁচ্ছে লোকটা সব সময় এমন করে ওনার সমস্যা কি এটাই মেঘ বুঝলো না আজও,
আমান উপরে এসে রেডি হয়ে নেয়,
মেঘ মাকে জড়িয়ে উপরে আসে,
আমানের দিকে তাকাতে দেখতে পায় ৫ ফুট ১১ ইঞ্চির একটা লম্বা ফর্সা ছেলে,
ছেলেটার বয়স কিন্তু ২৭ বছর দেখে তাকে মনে হচ্ছে যেন এখনো ১৭ বছরের একটা যুবক।
চুল গুলো সামনের দিকে দেওয়া সাদা সার্ট আর ফোল্ড করা হাতা, আর কালো প্যান্ট,
কোরিয়ান ছেলেদের মতো এক দম,
মেঘ চোখ নামিয়ে নিয়ে আসে,
মেঘ যা করছে তা কি সংসার আদও তা সত্যি মেঘের জানা নেই,
মেঘ গিয়ে একটা চাদর পেচিয়ে নেয়,
বাইরে অমেক শীত,
ব্যাগটা আরিফ গাড়িতে তুলে দেয়
মেঘ পুরো কান্না করে দিছে তার কোন মতে মনটা চাইছে না সে যাক,
মেঘের মা বুঝতে পারে,
— আমার বাচ্চা মেয়েটা কাঁদিস না মা আবার নিয়ে আসবে তোর বাবা তোকে বুঝলি ।
– – সত্যি ?
— হুম সত্যি ।
— আচ্ছা ।
মেঘ সবাইকে বিদায় দিয়প চলে আসে,
মেঘ বসে আছে গাড়িতে,
কোন কথা বলছে না শুধু মাথা নিচু করে বসে আছে,
বাইরে দিয়ে বাতাস আসছে অনেে বেশি,
মেঘ আমানকে বলবে গ্লাস টা লাগাতে
— গ্লাস টা লাগিয়ে দিন শীত ।
মেঘের কথায় আমান গ্লাস লাগিয়ে দেয়,
বেশ কিছুটা পথ পেরিয়ে তারা বাসায় চলে আসে ,
আমানের মা প্রশ্ন করে এখন এলি কেন আমান সেই একি উত্তর দেয়,
রুমে গিয়ে মেঘ ওয়াসরুমে গিয়ে বেরিয়ে আসে ঘুমাতে যাবে ।
অলরেডি রাত ১২ঃ৩০ বাজে ,
শীতের রাতে এটাই ২ টা মতো ,
মেঘ গিয়ে আমানের পাশে শুয়ে পরে ,
তার পর কিছুক্ষণের মাঝেই ঘুমিয়ে যায় আদো আদো ঘুম,
তখনি আমান আসে। কোথা থেকে,
— মেঘ (শীতল গলায়)
— হুম (ঘুমন্ত শুরে)
— কাল তুমি খাবার রান্না করবে সকালে সকাল ৭ টার মধ্যে৷ ।
— ঠিক আছে ,
আমান শুয়ে পরে মেঘের পাশে ,
মেঘ কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমাচ্ছে ,
আমান মেঘের দিকে তাকিয়ে দেখে একটা মায়াবী মেয়ে ঘুমিয়ে আছে ,
ভিশন কাছে পেতে মন চাইছে মেয়েটাকে ৷
জড়িয়ে ধরতে চাইছে বেহায়া মনটা কিন্তু আমান চোখ বন্ধ করে নিশ্বাস নেয়,
— মেয়েটা শুধু মাত্র তোর শত্রু আর কিছু নয় তুই এটা ভাবতে পারিস না আমান । সংযত হওয়া প্রয়োজন ,
আমান অন্য পাশে ফিরে শুয়ে পরে,
শেবার আগে মেঘের কপালে থাকা কুচি চুল গুলো আমান সরিয়ে দেয় ,
এটাই যেন এক রাস প্রশান্তি ,
আমান ঘুমিয়ে যায় ,
পরের দিন সকালে ,
মেঘ নামাজ পড়ার জন্য উঠে গিয়ে খাবার রান্না করা শুরু করে
চলবে ,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে