মিষ্টার লেখক পর্ব-১৩ এবং শেষ পর্ব

0
1161

#মিষ্টার_লেখক(অন্তিম পর্ব)
#Israt_Bintey_Ishaque(লেখিকা)
[কার্টেসি সহও সম্পূর্ণ কপি নিষিদ্ধ]

কলিং বেলের শব্দ শুনে, ফাইজা দরজা খুলে যাকে দেখলো তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না। থতমত খেয়ে দাঁড়িয়ে রইল ফাইজা।ইমা ফাইজা কে দেখে মুখে ডেকে রাখা কাপড় টা খুলে। তারপর আবার ডেকে বললো, ভাইয়া কি বাসায় আছেন?

ফাইজা বললো, না ভাবী ও তো বাসায় নেই। আপনি বাহিরে দাঁড়িয়ে আছেন কেন ভিতরে আসেন?

ইমা ভিতরে যেতে যেতে বললো,বাবু কোথায়?
ফাইজা বললো, আপনি বসুন ভাবী আমি দেখে আসি ও কোথায় গেল। হামাগুড়ি দিয়ে সাড়া বাসায় ঘুরে ঘুরে।জানেন না ভাবী একদিন খুঁজে পাইনা পাইনা সাড়া ঘর খুঁজে অস্থির। তারপর দেখি খাটের নিচে গিয়ে বসে আছে।

ইমা হাসে ফাইজার কথা শুনে।
ফাইজা বাবু কে খুঁজতে গেলে ইমা চারিদিকে তাকিয়ে দেখে। এতো বড় ফ্লাটে তেমন ফার্নিচার নেই।ইমা একটা চকিতে বসেছে। তাছাড়া একটা কাপড়ের রেক, দুটো চেয়ার আর টুকটাক কিছু জিনিসপত্র। যেটুকু তে কোন রকম জীবন যাপন করা যায়।ইমা ভিশন অবাক হলো এমন পরিস্থিতি দেখে।

ফাইজা বাবু কে নিয়ে এলে ইমা কোলে নিয়ে আদর করে নাম জিজ্ঞাসা করে।ফাইজা বললো বাবুর নাম ফাহিম লস্কর।
ইমা একটু ইতস্তত করে বললো, আপনি আমার আপুর বয়সী হবেন তাই আপু করে বলছি। আপু আমাকে সত্যিটা বলবেন প্লিজ? আমি এটুকু বুঝতে পারছি যে আপনি মোহনার মেজ ভাইয়ের বৌ। কিন্তু আপনাদের আলাদা বাসায় থাকার কারণ কি?

ফাইজা বললো,ভাবী এগুলো বাদ দিন। আপনি প্রথমবার আমার বাসায় এসেছেন কিছু তৈরি করে দেই বসেন আপনি।

ইমা ফাইজার হাত ধরে বললো,প্লিজ আপু আমাকে আপনার বোন ভেবে বলুন। আমার সারাক্ষণ মাথায় ঘুরপাক খায় এসব কোন কিছুতে মন বসাতে পারি না। প্লিজ ভাবী বলেন?

ফাইজা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো, আমি তখন অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী।আর ও দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল।এক‌ই ভার্সিটিতে পড়াশোনা করার সুবাদে ওর সাথে পরিচয় হয়। তারপর ধীরে ধীরে আমাদের সম্পর্ক তৈরি হয়।হারাম সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে সিদ্ধান্ত নিলাম বিয়ে করবো। কিন্তু ওর বাসায় কেউ মেনে নিল না কারণ আমার মা একজন ডিবোর্সি!আর যাই হোক একজন ডিবোর্সির মেয়েকে রাজিয়া সুলতানার ব‌উ হিসেবে মানতে নারাজ আমার শ্বাশুড়ি মা।
তাই আমরা পালিয়ে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছি।আর এই বিয়ের কারণেই আমরা দুজনেই পরিবার ছাড়া। আমার মা ও আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিল।

বলতে বলতে ফাইজার চোখে পানি টলটল করছে। হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে চোখের পানি মুছে বলে,ওর মা বলেছে এখানে থাকতে হলে আলাদা ফ্লাটে এবং ভাড়া দিয়ে থাকতে হবে! জানেন তো খুলনা শহরে ফ্লাটের ভাড়া অনেক বেশি।হাসিব মানে আমার হাসবেন্ড ওদের ফ্লাট হ‌ওয়ায় এখানে কম ভাড়া দেওয়া যায়। তাছাড়া ও একটা কোম্পানিতে চাকরি করে সামান্য কিছু বেতনে। এগুলো দিয়ে সংসারের খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হয়,তাই উপায় না পেয়ে এখানেই থাকছি।এই হচ্ছে আমাদের কাহিনী ভাবী। হয়তো আল্লাহ তা’আলার অবাধ্য হয়ে হারাম সম্পর্কে জড়ানোর ফল পাচ্ছি আমরা। সাথে আমার এই অবুঝ শিশুটা পরিবারের আদর স্নেহ থেকে বঞ্চিত। মাঝে মাঝে খুব কষ্ট।

ইমা বললো, পূর্বের গুনাহের জন্য সর্বদা ত‌ওবা করবেন আপু।নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীলও পরম দয়ালু।[১]
.
.
রাজিয়া সুলতানা মাথা ব্যথার কারণে প্রিন্সিপালের থেকে অনুমতি নিয়ে বাসায় চলে এসেছেন। বাসায় ফিরে ইমার কথা জানতে চান বুয়ার থেকে। বুয়া তখন বললেন, বাহিরে বের হয়েছে।
রাজিয়া সুলতানা ভিশন অবাক হলেন কারণ এখানকার পথ ঘাট এখনো অপরিচিত ইমার। তাহলে কোথায় যেতে পারে? মহিন এ সময় প্রচুর ব্যস্ত থাকে হসপিটালে তাই ওখানে যাওয়ার বা মহিনের সাথে যাওয়ার কোন চান্স নেই।

রাজিয়া সুলতানা ফ্রেশ হয়ে এসে সোফায় মাথা এলিয়ে বসে ছিলেন তখন ইমা বাসায় আসে।এসেই শ্বাশুড়ি মায়ের মুখমুখী হতে হয়। এই সময় শ্বাশুড়ি মাকে আশা করেনি ইমা।তাই ভয়ে ভীত চোখে তাকায়।
রাজিয়া সুলতানা বললেন, কোথায় গিয়েছিলে তুমি?

ইমা যেই ভয়টা এতোক্ষণ পাচ্ছিল সেটাই হলো।ইমা কখনো মিথ্যা কথা বলে না।তাই বলতে বাধ্য হলো ফাইজা দের বাসায় গিয়েছে।
যা শুনে মুহূর্তেই রেগে গেলেন রাজিয়া সুলতানা।
উচ্চ কন্ঠে বললেন,কার পারমিশন নিয়ে তুমি ঐ বাসায় গিয়েছো?এ বাসায় বৌ হয়ে আসতে না আসতেই তোমার এতো সাহস হয়ে গেছে ভাবতেও অবাক লাগছে আমার।

আরো অনেক কথা বললেন ইমাকে।ইমা শুধু নিরবে শুনে গেল। একটু টু-শব্দ ও করলো না।যত‌ই হোক ইমার অন্যায় কিছু টা আছে। যেখানে পরিবারের সকলের যাওয়া নিষেধ সেখানে ইমার যাওয়া উচিৎ নয়।
.
মহিন রাতে বাসায় ফিরলে রাজিয়া সুলতানা বিচার দেয় ইমার নামে। মহিন মায়ের কথা বলে না তাই চুপ করে সবটা শুনে বললো, ইমা বুঝতে পারেনি মা। আমি ওকে বুঝিয়ে বলবো। তুমি রাগ করো না প্লিজ।

ইমা কাপড় গুছিয়ে কাবার্ডে রাখছিল তখন মহিন এসে বললো, তুমি ওদের বাসায় কেন গেলে? সবকিছু জেনেই হয়তো গিয়েছ, সাথে এটাও তো জানতে মায়ের বারণ আছে ঐ বাসায় যাওয়া।

ইমা বললো,মা কেন এরকম করছেন? মানছি ওরা একটা ভুল করে ফেলছে তাই বলে এভাবে ওদের শাস্তি দেওয়া কি ঠিক হচ্ছে? ওদের ভুলের জন্য মাসুম বাচ্চাটা তার পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বড় হচ্ছে এগুলো কি ঠিক আপনিই বলুন?আপনারা কেন মাকে বুঝিয়ে বলছেন না?

মহিন মাথা নিচু করে বললো, আমি বাবা মোহনা সবাই অনেক বুঝিয়েছি কিন্তু কোন কাজ হয়নি।মা আর আপু মেনে ওদের কখনো মেনে নিবে বলেছেন।তাই এখন আর কিছু বলি না।

এক সপ্তাহ পর,
মধ্য রাতে ভিশন চিৎকারের শব্দ শুনে ইমা মহিন সকালে রুম ছেড়ে বেরিয়ে এসে শুনতে পায় রাজিয়া সুলতানার রুম থেকে কান্নার শব্দ তিনি কান্না করছেন। সবাই রুমে গেলে রাজিয়া সুলতানা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, তোদের বাবা আর বেঁচে নেই!
মহিন তাড়াতাড়ি গিয়ে বাবার পাল্স চেক করে দেখে। সত্যি ই তার বাবা আর বেঁচে নেই। কষ্টে বুকটা হাহাকারের প্রতিধ্বনি তুলে। দুই হাতে নিজের মুখশ্রী চেপে ধরে মহিন।

ইমা নিরবে চোখের পানি ফেলে সবাইকে বোঝাতে হাদীসের কথা বললো,
মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘কুল্লু নাফসিন যা-ইকাতুল মাওত’ অর্থাৎ : ‘প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ ভোগ করতে হবে।’

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই মৃত ব্যক্তিকে তার পরিবারের অধিক মাত্রায় কান্নাকাটির জন্য শাস্তি দেয়া হবে।[২]

এই হাদিস দ্বারা স্পষ্ট বোঝা যায় মৃত ব্যক্তির জন্য কাঁদলে মৃত ব্যক্তিকেই শাস্তি দেয়া হবে। যখন কোনো জীবিত ব্যক্তি মৃত ব্যক্তির জন্য উচ্চস্বরে কান্না করে, তখন এই জীবিত মানুষদের কি শাস্তি দেয়া হবে, এ ব্যাপারে হাদিসে স্পষ্ট ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।

হজরতে আবু মালিক আশইয়ারী (রা.) নবী করিম (সা.) থেকে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমার উম্মতের মধ্যে চারটি জাহিলিয়াতের অভ্যাস রয়েছে, যা তারা ত্যাগ করবে না। আর তা হচ্ছে, স্বীয় বংশের গৌরব করা, অন্যের বংশকে দোষারোপ করা, তারকার মাধ্যমে বৃষ্টি কামনা করা এবং মৃত ব্যক্তির জন্য উচ্চস্বরে চেঁচামেচি করে কান্নাকাটি করা। এই হাদিসের শেষ অংশে বলা হয়েছে, মৃত ব্যক্তির জন্য উচ্চস্বরে ক্রন্দনকারী ব্যক্তি মৃত্যুর পূর্বে তওবা না করলে কিয়ামতের দিন তাকে দুর্গন্ধযুক্ত পায়জামা এবং শরীরের পচন সৃষ্টিকারী পোশাক পরানো হবে।[৩]

এছাড়া নবী করিম (সা.) আরো বলেছেন, ‘যারা মৃত ব্যক্তির জন্য শোক প্রকাশ করতে গিয়ে গাল চাপড়ায়, জামার বোতাম ছিঁড়ে ফেলে এবং জাহিলিয়াতের যুগের মতো চিৎকার করে কান্না করে। তারা আমাদের দলভুক্ত নয়।[৪]

এই হাদিস দু’টি থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে, যারা আহাজারি করে মৃত ব্যক্তির জন্য কান্না করবে তারা নবী করিম (সা.) এর দলভুক্ত না। মৃত্যুর ওপর বিলাপকারিণী যদি মৃত্যুর পূর্বে তওবা না করে, তাহলে তাকে কিয়ামত দিবসে এমন অবস্থায় উত্থান করা হবে যে, তার ওপর আলকাতরাযুক্ত ও মরিচাযুক্ত পোশাক থাকবে।[৫]

আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা.) এর অনুসরণ ও অনুকরণের মধ্যে রয়েছে মানুষের জন্য চির সফলতা। অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে, আমার আপনজনকে আমি হারিয়েছি। আমার চোখ থেকে অশ্রু গড়িয়ে পড়লে এ অশ্রু আমি কীভাবে থামাবো? পৃথিবী থেকে আপনজনের বিদায় কতটা ব্যথার আমরা সবাই বুঝি। রাসূল (সা.) অশ্রু গড়িয়ে পড়া নিয়ে কখনোই বাঁধা দেননি এবং এর ফলে আপনার কিঞ্চিত পরিমানও গুনাহ হবে না। কারণ অশ্রু থামানোর ক্ষমতা সব মানুষের নেই। অশ্রু তো ঝরে পড়বেই। এই হাদিস দ্বারা সেই ব্যক্তিদের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। যাদের চোখে অশ্রু থাকুক বা না থাকুক চিৎকার-চেঁচামেচি করে, চারপাশের পরিবেশ অশান্ত করে ফেলেন অথবা হামাগুড়ি দিয়ে নিজের শরীর চাপড়াতে থাকে। সেই সব ব্যক্তিদের প্রতি অভিশাপ দেয়া হয়েছে।

যারা নীরবে-নিভৃতে মৃত ব্যক্তির জন্য চোখের অশ্রু ঝরায়। তাদের ব্যাপারে কোরআন এবং সুন্নায় কোনো গুনাহের কথা বলা নেই। তবে চেষ্টা করতে হবে ধৈর্য ধারণ করার জন্য। নিঃসন্দেহে আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।
.
.
ইমার বোঝানতে কাজ হলো। রাজিয়া সুলতানা নিরবে চোখের পানি ফেলেন, সাথে ছেলে মেয়েদের কেও বলেন শব্দ করে যেন না কাঁদে।হাসিব কে খবর দিতে বলে।
মোহনা মুখ চেপে ধরে কাঁদে। মহিন কল করে কেঁদে উঠলো,হাসিব হকচকিয়ে যায় এতো রাতে বড় ভাই কল করে কাঁদছে কেন এই ভেবে।তাই ফোন রেখে দ্রুত পায়ে চলে আসে এই ফ্লাটে। সাথে ফাইজা বাবু কে কোলে নিয়ে আসে।

হাসিবের যেন বিশ্বাস হচ্ছে না, সকালেই বাবার সাথে কথা বললো।আর এখন বাবা নেই মানতে ভিশন কষ্ট হচ্ছে। বাবার পা ধরে বসে পরে ফ্লুরে।
প্রতিবেশীরা এসে খাট থেকে নামিয়ে ফ্লুরে চাদর বিছিয়ে শুয়ে দিয়েছে আজাদ লস্কর কে।

এতেই শিক্ষা পাওয়া যায়, কোটিপতিদের এবং দরিদ্রদের এক মাটির নিচেই শেষ ঠিকানা।এই দুনিয়া ক্ষণিকের জায়গা, এখানে বড়াই করে কোন লাভ নেই নেই।

রাজিয়া সুলতানা ফাইজার থেকে বাবু কে কোলে তুলে জড়িয়ে ধরে কাঁদে। ছোট্ট বাবুটা কি বুঝলো জানিনা। তার ছোট্ট হাত রাজিয়া সুলতানার গালে রাখে, অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।
.
.
এরপরের দিন বিকাল বেলা,লা’শের দাফন সম্পন্ন করে বাসায় ফিরে ছেলেরা।ঘর ভর্তি লোকজন, আত্মীয় স্বজন সবাই এসেছে। মিলি দেয়ালের সাথে ঠেস দিয়ে ফ্লুরে বসে অপলক দৃষ্টিতে উপরের দিকে তাকিয়ে আছে। বাবার প্রথম সন্তান সে আদরটা তেমনি সবার থেকে বেশী ই পেয়েছে।আর তো পাওয়া হবে না, মনে হলেই চোখের পানি গড়িয়ে পড়ে।

বাবু কান্না করে খিদে পেয়েছে হয়তো,তাই ফাইজা চলে যেতে নিলে রাজিয়া সুলতানা বললেন, কোথাও যাবে না আজ থেকে এখানেই থাকবে তোমরা! সবাই অবাক চাহনিতে তাকিয়ে র‌ইলো। তবে মনে মনে শুকরিয়া আদায় করলো। এই ভেবে যে একটা সম্পর্ক জোড়া লাগলো অবশেষে।
.
.
সেকেন্ড পেড়িয়ে মিনিট পেরিয়ে ঘন্টা। এভাবেই চলে যাচ্ছে দিন গুলো।তারা সবাই এখন মিলেমিশে থাকে। শুধু বাড়ির কর্তা কে খুব মিস করে। মনে পড়লেই চোখের পানি গড়িয়ে পড়ে।

মহিন হসপিটাল থেকে বাসায় ফিরে। এসে দেখে ইমা জায়নামাজে বসে কাঁদছে। কাঁদার ফলে কেঁপে কেঁপে উঠছে। মহিন ভাবলো এমনিতেই মোনাজাতে কাঁদছে,তাই ফ্রেশ হতে চলে গেল।ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে এখনো ইমা কাঁদছে।তাই
মহিন হাঁটু গেড়ে বসে বললো,ইমা কি হয়েছে তোমার? এভাবে কাঁদছো কেন তুমি? কেউ কি কিছু বলেছে?

ইমা উঠে জায়নামাজ গুছিয়ে রেখে, প্রেগনেন্সি টেস্ট স্ট্রিপ কাটি টা দেখায় মহিনকে। মহিন হাতে নিয়ে বলে টেস্ট করিয়েছো?
পজেটিভ এসেছে আলহামদুলিল্লাহ।

ইমা চোখ ভর্তি পানি নিয়ে মাথা ঝাঁকায়। মহিন ইমাকে জড়িয়ে ধরে বলে,বোকা মেয়ে এরকম একটা খুশির খবর পেয়ে কাঁদতে হয়?

ইমা বললো, আমার ভিশন আনন্দ হচ্ছে, সেই থেকেই চোখে পানি। জানেন খুব আম্মুর কথা মনে পড়ছে।আর কেমন অন্যরকম একটা ফিলিংস হচ্ছে। আমি আপনাকে বলে বুঝাতে পারবো না।

মহিন ইমার গাল দুটো আঁকড়ে ধরে বললো, হুম এই অনুভূতিটা একমাত্র মায়েরাই বুঝতে পারে। তবে আমারও কিন্তু বাবা বাবা ফিলিংস হচ্ছে। চিৎকার করে পুরো পৃথিবীকে জানাতে ইচ্ছে করছে….

ইমা লজ্জা মাখা মুখশ্রী লুকায় মহিনের প্রশস্ত বুকে।এ এক অন্যরকম অনুভুতির বহিঃপ্রকাশ যেন…..
________
রেফারেন্স:-
[১]সুরাঃআয-যুমার, আয়াত ৫৩ আংশিক
[২](বুখারী-১২২৬ নম্বর হাদিস)।
[৩]মুসলিম: কিতাবুল জানায়েজ)।
[৪](বুখারি- ১২২০)।
[৫]মুসলিম- ৯৩৪)।
________

🍀 সমাপ্ত 🍀

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে