#গল্প_পোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং:০২
মা,
শব্দটা ছোট হলেও যে এর তাৎপর্য কতখানি তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। এই আমাদের জন্যই তুমি কত কষ্ট করো,দিনের পর দিন শুধু আমাদেরকে ভালো রাখার জন্য কি অক্লান্ত পরিশ্রম টা-ই না করো, অথছ আমরা কখনো তোমার দিকটা ভেবেও দেখিনা। কখনো তোমায় জিজ্ঞেসও করি না, মা….তুমি কি ক্লান্ত, তোমার কি কোনো সাহায্য লাগবে, বা, আজকে তোমায় কাজ করতে হবে না, আজকে বিশ্রাম নাও। আজকে তোমার ছুটি। উল্টো সারাক্ষণ শুধু হুকুম করতে থাকি আমরা, এটা দাও, ওটা দাও, এটা করে দাও, সেটা করে দাও। কত ধরনের চাহিদা আমাদের। অথচ আমরা একটা বারও ভাবি না তুমিও একটা মানুষ, আমাদের মতো তোমার শরীরও শরীর। ক্লান্ত তোমারও লাগে। এতকিছুর পরও তুমি কোনো অভিযোগ করো না। হাসি মুখে সবটা করে দাও। জানো তো মা, মাঝে মাঝে নিজেরই কেমন কষ্ট হয় তোমার জন্য, কিন্তু বলতে পারি না। আমাদের সকলের এই এক সমস্যা, বাইরের লোককে কি অকপটে বলে দেই ভালোবাসি, অথচ যে আমাদের সবচেয়ে আপন, যে দশ মাস দশ দিন পেটে ধরেছে, মৃত্যুযন্ত্রণাকে হার মনিয়ে আমাদের এই পৃথিবীর আলো দেখিয়েছে তাকে মুখ ফুটে কখনো বলা হয় না, মা আমি তোমায় অনেক ভালোবাসি। আজ দুদিন হলো তুমি বড়িতে গেছো, অথচ মনে হচ্ছে যেনো এক যুগ হয়ে গেছে। তুমিহীনা ঘরে থাকতে দম বন্ধ মতো লাগে। আমরা দুই বাবা-মেয়ে মিলেও যে তোমার ঘাটতি পূরণ করতে পারছি না। তুমি কত সুন্দর ভাবেই না এই পরিবরকে সামলাও, আমদের দ্বারা যে তার ছিটেফোঁটাও হয় না। আগে আমাদের কোনো কথা না রাখলে তোমায় বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দিবো বলতাম, এখন দেখছি তুমি ছাড়া আমাদের ভাগ্যে শুধু যাযাবর জীবনই লেখা আছে। তুমি তাড়াতাড়ি আমাদের কাছে চল আসো মা। দেখো, তোমার জন্য চিঠি লিখতে লিখতে আমার নয়ন জুড়ে অশ্রুধারা বয়ে চলেছে। সবশেষে একটাই কথা বলব ভীষণ ভালোবাসি তোমায় মা।
ইতি,
তোমার রাজকন্যা।