‘মডেল মিফতা ‘পর্ব : ৪

0
1952
‘মডেল মিফতা ‘পর্ব : ৪ গল্পবিলাসী – Nishe টকশো টা ছিলো এটিএন বাংলা চ্যানেলে ইয়ং নাইট শো। নিরব সব কাজ দূরে রেখে তাকিয়ে আছে টেলিভিশনের দিকে। মাত্রই শুরু হয়েছে। -” মিফতা কেমন আছো তুমি? ” – “আমি ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন?” -“আমি ভাল আছি। এখন তোমাকে দেখে আরো ভালো লাগছে। কজ চারোদিকে শুধু তোমার নামের কলরব। তোমার বিভিন্ন চরিত্র, সংলাপ শোনা যাচ্ছে। হ্যালো ভিউয়ার্স! আজকে আমাদের সাথে আছেন সেই মিফতাহুল ইরা যার নাম আজকাল অনেক বেশিই আমরা শুনতে পাচ্ছি। আজকে আমরা কথা বলবো মিফতা তোমার সাথে। তোমার সম্পর্কে জানবো। তোমার এই সাফল্যতার পেছনে ঠিক কি সূত্র লুকিয়ে আছে তা জানবো তার আগে তোমার কাছে আমার একটা ছোট্ট প্রশ্ন এখানে এসে তোমার ঠিক কেমন লাগছে? ” -” যদিও এখানে আসার আগে আমি অনেক নার্ভাস ছিলাম কিন্তু এখন একদম ঠিক আছি। আর এখানে এসেও আমার খুব ভালো লাগছে। ” -” মিফতা! আমি বা আমরা সবাই এখন যতটুকু জানি তুমি এখন মডেল।সবাই এখন তোমাকে মডেল মিফতা নামেই জানে। যার কয়েকটি শর্টফিল্ম ও ইতিমধ্যে আমরা দেখতে পেয়েছি।” -” হ্যা। ” -“আমাদের মেক্সিমাম এক্টর বলো মডেল বলো কোনো না কোনো সূত্র ধরেই কিন্তু আমাদের এই চিত্রজগতে আসা। এখনআমরা জানতে চাচ্ছি যে তোমার এই চিত্রজগতে আসার প্রথম সূত্র কি? বা কিভাবে তুমি এলে? ” -” আমার চিত্রজগতে আসার মাধ্যম হলো আমার ইউনিভার্সিটি।সেখান থেকেই আমার পথচলাটা শুরু। যদিও সেটা মিরাক্কেলীয় ভাবেই। আর সেটা শুধু আমার শ্রদ্ধেয় মেম রাহেলা আশনুর ওনার জন্যই । আজকাল মিডিয়া জগতে যাওয়ার আগে একটা মডেল কে বা একটা এক্টর কে অনেক এক্সপার্ট হতে হয়। লাইক সুন্দর ভাবে কথা বলা, তার বিহেভিয়ার নরমাল রাখা দেট মিনস তার মধ্যে কোনো নার্ভাসনেস থাকবেনা প্রতিটা সংলাপ যখন বলবে মনে হবে যেনো সেটাই নেচারাল। এইটা কোনো মোভি বা কোনো শর্টফিল্ম না তেমন ভাবে বলতে গেলে কিন্তু আমি কিছুই করিনি। ” -” আচ্ছা! আমরা তাহলে এবার এই মিরাক্কেলীয় গল্পটাই শুনতে যাচ্ছি। ” -” লাস্ট ইয়ার একটা শর্টফিল্মের জন্য শুটিংস্পোর্ট হিসেবে আমাদের ভার্সিটিকে সিলেক্ট করা হয়। শর্টফিল্ম টা ছিলো এইটাইপ যে একজন শিক্ষার্থীর সাফল্যের গল্প আর সে কতোটা কষ্ট করে তার সাফল্যের ঠিকানায় এসে দাঁড়িয়েছে তার গল্প। সেখানে যে এক্টর হিসেবে এসেছিলেন আই থিংক সেটাই তার ফার্স্ট শুটিং ছিলো। সে এতোটাই নার্ভাস ছিলো যে, সে সংলাপ গুলো সে ভূলে যাচ্ছিলো বারবার। অনেকবার চেষ্টা করার পরও কোনোভাবেই সে বলতে পারছিলো না।যেহেতু এইটা স্টেইজ পারফরমেন্স ছিলো সেখানে আমরা অনেক স্টুডেন্টস ছিলাম। সংলাপ গুলো এতোবার করে বলা হয়েছিলো আমার মনেহয় সেখানে উপস্থিত সবারই সবটা মুখস্ত হয়ে গেছে। সেখানে বাহির থেকে অনেক গেস্ট হায়ার করা হয়েছিলো জাজ হিসেবে। আমাদের ডিপার্টমেন্টের সব টিচার্স ছিলো। আমি ভার্সিটি বিভিন্ন ফাংশনে নাটক, গান, নাচ এগুলোতে এটেন্ড করতাম পুরোপুরিভাবে না পারলেও যাস্ট এন্টেটেন করার জন্য যথেষ্ট ছিলো। ” -” তারপর? ” -” তখন মেম আমাকে বলে যে ওনি চাইছিলেন আমি এইটাতে একবার চেষ্টা করি।চিত্রজগতে যাওয়ার কোনো ইচ্ছাই আমার ছিলো না মেমকে মুখের উপর না বলতেও কেমন লাগছিলো তখন আমার ননদ, ফাহিমা বললো যে, ভাবি! তুমি ট্রাই করো। আমি এইটা শিয়র ছিলাম যে আমার দ্বারা হবেনা। কয আমি তেমন কোনো এক্সপার্ট ই না। ” -” তখন হয়েছিলো? ” -” হ্যা হয়েছিলো। কয সবাই বলে আমার কথা বলার স্টাইলটা একটু ইউনিক।ঐখানে মেইনলি কথার বলার স্টাইলটাই ছিলো। দেন ভার্সিটি এরিয়ার পাশেই একটা বাড়িকে সাকসেসফুল স্টুডেন্ট টুম্পার বাড়ি হিসেবে তুলে ধরা হলো। সেখানেও একটু এক্টিং করতে হয়েছিলো যেগুলো তাদের খুব পছন্দ হয়েছিলো। ” -“তাহলে ঐখান থেকেই পথচলা শুরু?” -“আমি এটা পেশা হিসেবে নিতে চাইনি কিন্তু দেখা গেলো সেদিনের পর থেকে অনেকগুলো কাজ করার প্রপোজাল আসে বাট আমি চাইছিলাম না। তখন ফাহিমা আমার বাবা আই মিন আমার শ্বশুর কে জানায় তখন। বাবা আমাকে এইটা চালিয়ে যেতে বলে। তারপরেই পরপর কয়েকটা করা হয়েছিলো। ” -” সত্যিই খুব মিরাক্কেলীয় ছিলো মিফতা। আজকাল এমন স্টরি খুব কম। এখন আমরা কি আবারো নতুন কোনো কেরেক্টারে পর্দায় তোমাকে দেখতে পারবো? ” -” হ্যা। ইনশাল্লাহ আগামীকাল থেকেই আমার আরো একটি শর্টফিল্মের শুটিং শুরু হতে যাচ্ছে আর স্পটটা কক্সবাজার। আর এইটাই আমার প্রথম কোনো কাপল হিসেবে এক্টিং করতে যাচ্ছি। যেখানে একটা কাপলের মান অভিমানের হাজারো গল্প থাকবে। ” -” সো ভিউয়ার্স আশা করিআমরা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই মিফতাকে আরো একটি নতুন কেরেক্টার নিয়ে রঙিন পর্দায় দেখতে পারবো । ” -“এই চিত্রজগতে আশার আগে বা তুমি যদি আজকে মডেল না হতে লাইফে কি করার চিন্তা ছিলো? ” -” প্রতিটা স্বপ্নকে সাফল্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কিছু সাপোর্ট প্রয়োজন হয়। আর সবচেয়ে বেশি যেটা প্রয়োজন সেটা হচ্ছে টাকা। আমার ফেমিলির অর্থের দিক দিয়ে টুটালি শূন্য।যেমন প্রবাদ বলেনা’ নূন আনতে পান্তা ফুরায় ‘। আমার বাবা অনেকটাই অলস প্রকৃতির ছিলো। কাজ করতোনা খুব অল্প সময়েই অসুস্থ হয়ে পরে। আমরা দুবোন এক ভাই লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছিলাম। মা বিভিন্ন কাজ করে পরিবারের খরচ বহন করতো।আমিও টিউশনি করে কিছুটা উপার্জন করি। পুরো নাজেহাল অবস্থা ছিলো তখন আমাদের। আমার মনেহয় না সেই লেভেলের ফেমিলি থেকে স্বপ্ন না দেখাটা তেমন কোনো বিশাল কিছু নয়। ” -” তাহলে এখন এই পরিবর্তন? ” -” আমাদের সেই সূচনীয় অবস্তায় আল্লাহ তায়ালা ফেরেশতা হিসেবে মনেহয় আমার শ্বশুর কে পাঠিয়েছিলেন। তিনি আমাকে বউ করে নিয়ে এলেন। পরিবারের দায়িত্ব কাধেঁ নিয়ে আমাকে সাফল্যের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে।আজকে এখানের আমি পুরোটাই বাবার জন্য।” পুরোটা শো খুব মনযোগ সহকারে দেখেছে নিরব। এমনি মাঝখানের ব্রেক গুলোতেও কোনো চ্যানেলে যায়নি। কখনো এতোটা মনযোগ দিয়ে কোনো ফাইল দেখেছে কিনা তার সন্দেহ। হাতের ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে গাড়ির চাবি ওয়ালেট আর মোবাইল নিয়ে বেড়িয়ে এলো। অনেক কাজ বাকী। শো শেষ করে আসতেই একরকম বড় করে নিঃশ্বাস ফেললো মিফতা। “থ্যাংকস গড” সে তার ব্যাপার নিয়ে মোটেও নার্ভাস ছিলোনা। নার্ভাস ছিলো নিরব সম্পর্কে। যদি রিলেশন সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞাসা করত কি জবাব দিতো সে? সেটা ভেবেই একপ্রকার হাই প্রেশার পেশেন্ট বানিয়ে নিয়েছিলাম,এখন নিশ্চিন্ত ফিল হচ্ছে। ফাহিমা একপ্রকার ঝাপিয়ে পরলো মিফতার গায়ে। -” জানু! আমার তো শুধু আফসোস কেন যে ছেলে হইলাম না! চলবে,,,,,


( প্রিয় পাঠক আপনাদের যদি আমার গল্প পরে ভালোলেগে থাকে তাহলে আরো নতুন নতুন গল্প পড়ার জন্য আমার facebook id follow করে রাখতে পারেন, কারণ আমার facebook id তে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন গল্প, কবিতা Publish করা হয়।)
Facebook Id link ???
https://www.facebook.com/nishe.ratri.9809

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে