ভেজা চুলে পর্ব-১১+১২

0
1007

#ভেজা_চুলে
#সাদিয়া_খান(সুবাসিনী)
#পর্ব-১১

প্রকৃত পুরুষ কখনো নিজের পুরুষত্ব প্রকাশের জন্য নারীর উপর প্রহার করে না।না কথার মাধ্যমে তাকে ছোট করে না তার গায়ে হাত তোলে।
প্রকৃত পুরুষ সব সময় নারীকে সম্মান করে, নারীর সম্মানের হেফাজত করে।
একজন প্রকৃত পুরুষের কাছে সকল নারী ভীষণ সম্মানের। হোক সে রাজরানী বা ঘুটেকুড়োনি।

ফিরে এসে মাধুর্য লম্বা শাওয়ার নিচ্ছে। ইচ্ছে ছিল দিঘিতে সাতার দিবে। তবে রাত এখন অনেক।আরহান বাহিরের ঘরে মাধুর্যের মামার সাথে কথা বলায় ব্যস্ত।
মাধুর্যের মামী তাদের জন্য রাতের খাবার বানাচ্ছেন।আরহান এসে যেন আটকে গেছেন।কারণ বাহিরে মুশলধারার বৃষ্টি।

গোসল শেষে মাধুর্য সরাসরি রান্নাঘরে তার মামীর কাছে চলে যায়।মামীকে সে মাম্মাই বলে ডাকে। মাধুর্যকে দেখে চোখ রাঙিয়ে ভদ্রমহিলা বললেন,

“মেয়ে, যদি ঠান্ডা লাগে রে!মার একটাও মাটিতে পড়বে না।”

“তোমার হাতে এক মগ কড়া কফি মাম্মাই, আমার সব ক্লান্তি উবে যাবে।”

“দিচ্ছি মা।তার আগে তুমি।চায়ের কাপে চা ঢেলে দিয়ে আসো।”

“আচ্ছা বেশ।তবে একটা শর্ত।”
“বলো। ”
“আমার সাথে বসে তুমিও চা নিবে। তারপর দুজনে ফটাফট রেধে ফেলব?”
“আচ্ছা বেশ।”

পরদিন ওয়াহেদদের বাড়ি কে কে যাবে তার লিস্ট হচ্ছিলো।সেখানে সবার নাম থাকলেও বাড়ির কোথাও মাধুর্য নেই।বিষয়টি সাকিবের বড় চাচা খেয়াল করে জিজ্ঞেস করলেন মাধুর্য কোথায়?
সব’টা শুনে খবর পাঠালেন মাধুর্য যেন এক্ষুনি এখানে আসে।
তখন আরহান বেরিয়ে যাচ্ছে, এবং মাধুর্যের ছোটো মামা তাকে এগিয়ে দিতে বেরিয়েছেন।
আরহান চলে যাওয়ার পর মাধুর্যকে নিয়ে সাকিবদের বাড়ি এলেন তিনি।
সাকিবের বড় চাচা ওহাব সাহেব প্রবীণ মানুষ। তার কথা ফেলার সাহস কেউ করেন না।

মাধুর্যকে কাছে ডেকে তার পাশে বসিয়ে বললেন,

“আগামীকাল এ বাড়ি থেকে যা যা যাবে সব সাজানো তোমার দায়িত্ব। আর তুমি যাবে আমার সাথে।”

মাধুর্য কোনো জবাব দেয় না।চুপচাপ মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানায়।
এদিকে তাদের বড় মামি এসে মাধুর্যকে হাত ধরে টেনে নিয়ে সাকিবের পাশে বসিয়ে দেয়।
তারপর বলতে লাগলেন,

“পোলায় আমার দুই দিন অভুক্ত। কী শান্তি পাস তোরা ঝগড়া করে?”

ঠিক সে সময় বিদ্যুৎ চলে যায়, মাধুর্য উঠতে নিলে সাকিব খুব সাবধানে তার পা দিয়ে আটকে ফেলে সামনের পথ।

বড়মামী খাবারের থালা এনে দেয় সাকিবের হাতে। তারপর বললেন,

“তোরা এখনো বাচ্চা? দুটোকে বিয়ে দিলে বাচ্চার মা-বাপ হবি। এখন এমন পাগলামি কেউ করে রে বাবা?দুজনেই খেয়ে নে।”

ভাতের থালা নিয়ে সাকিব মাথা নিচু করে বসে আছে। মাধুর্য পালাতে চাইছে কারণ যদি তারেকা বানু বা জেরিন দেখে আরেকদফা ঝামেলা হবে।
কিন্তু উঠতেও পারছে না।
সাকিব উঠে গিয়ে মামীর সামনেই দরজা বন্ধ করে। মামী তখন চেয়ারে বসে পাখা দিয়ে বাতাস দিচ্ছেন।
হাত ধুয়ে সাকিব ভাতের লোকমা তুলে দিলো মাধুর্যের মুখে।
মাধুর্য মুখ ফিরিয়ে নিলে সাকিব হাত নামিয়ে নেয়। মামী বলে উঠলেন,

“ছেলেটা কষ্ট পাচ্ছেরে। আর দিস না।আমি পারলে তোদের বিয়ে এক্ষুণি দিয়ে দিতাম। কিন্তু তোরাই তো রাজি না।”

বলেই দীর্ঘ শ্বাস ফেললেন তিনি।সাকিব হাত ধুতে উঠে যাচ্ছিলো মাধুর্য তাকে থামিয়ে ইশারায় ভাত মুখে দিতে বললে সাকিব তার মুখে ভাত তুলে দেয়।
মনোমালিন্য দূর হলেও মাধুর্য-সাকিবের মাঝে অঘোষিত দূরত্ব বেড়েই চলেছিল।হয়তো এতটা,মাধুর্যের জন্য
যে মানুষটার সাকিব খুঁজছিল!যে আগলে রাখবে তার তামসীকে? সে চলে এলেও তার টের পায়নি সাকিব।”

গায়ের হলুদের ডালা সাজাতে বেশ রাত হলো মাধুর্য এবং তার মাম্মাইয়ের৷
প্রায় ভোর রাতে রৌদ্রের সাথে বাড়ি ফিরলো তারা। বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই চোখ গেল ড্রেসিং টেবিলের উপর। রাজকীয় ভঙ্গিতে সেখানে রয়েছে আরহানের রোদ চশমা।
মাধুর্য উঠে এসে চশমা হাতে নিয়ে অন্য হাতে ফোন নিলো।
আবার ভাবলো রাত এখন প্রায় দেড়টা। এখন কল দিবে?

অগ্যতা ফেসবুক স্ক্রল করতেই হোয়াটসঅ্যাপে কল দিলো পত্রী।
এই মাত্র তো ও বাড়ি থেকে এলো, আবার কী হলো?
কল রিসিভ করতেই খুশবু বলল,

“আপু! এই জেরিনের বাচ্চারে ঘুমের মেডিসিন গিলিয়ে দেই?”

পাশ থেকেই পত্রী বলল,

“জামালগোটাও আছে।”

“কেনো রে মোনাই পাখিরা? কী করেছে?”

মাধুর্যের জবাবে খুশবু বলল,

“বেয়াদব মহিলা তুমি যাওয়ার পর আসছিল ডালা নিতে। আসতে দেই নাই রুমে। কাল নিশ্চিত ঝামেলা করবে।”

“আরে খুশবু চিন্তা করিস না। ডায়রেক্ট মার্ডার করে দিব৷ জেল ফাস মানুষের জন্যই। আমি পত্রী না হয় ওরে মাইরাই ফেলবো।কী বলো মাধু আপু?”

পত্রীর কথার জবাব দেওয়ার আগেই কল ডিসকানেকটেড হয়ে যায়।মাধুর্য দীর্ঘ শ্বাস ফেলে রোদ চশমার দিকে তাকিয়ে রইল।”

পরদিন বিকেলবেলা যখন কনে পক্ষ বর পক্ষের বাড়ি পৌঁছালো তখন তারা অপেক্ষা করছে কনে পক্ষের জন্য।
সবাইকে একটা করে আইসক্রিম দিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে বর পক্ষ।কনে পক্ষের সব ছেলের পোশাক আজ হালকা অফ হোয়াইট পাঞ্জাবী, মেয়েদের পরনে লাল শাড়ি। মাধুর্য শুধু আকাশ রঙা শাড়িতে। সাদা-নীল মিলিয়ে সে এক অনবদ্য রঙ।

এক হাতে আইসক্রিম নিয়ে যখন দূর থেকে ইনহান মাধুর্যকে দেখেছে তখন সে গলার কাছে হাত নিয়ে এমন একটা ভান করে যেন খুব গরম আজ।
কাছাকাছি আসতেই কিছুটা জোড়ে শব্দ করে বলল,

“হায় গারমি!”

সবাইকে দেখতে এক লাগছে অথচ মাধুর্য লাল রঙের শাড়ি তে নেই এটা জেরিনের অহমে বেশ লেগেছে। মাধুর্য লাল পড়েনি এটা সে মানতে পারছে না।তাকেও সবার সাথেই চলতে হবে৷ ইচ্ছে করে হাতের আইসক্রিম মাধুর্য পায়ের দিকে ফেলে দেয় সে। মাম্মাই সবটা বুঝেও মেয়েকে সামলে নেয়। তখন পরিচয় পর্ব চলছিল।
মুনা এসে মাধুর্যকে পথ দেখিয়ে বলে ওয়াশরুম ওদিকে।
গ্রামের বাড়িতে এমন বেডরুম দেখে কিছুটা অবাক হয় সে। সম্পূর্ণ শহরে ছোঁয়া। সাত পাঁচ না ভেবেই ওয়াশরুমে ঢুকে পা ধুয়ে ফিরে আসার জন্য পা বাড়াতেই ধাক্কা খেলো কারো সাথে।
এক্সটা আইল্যাশেস বেকে এক ফাকে কিছুটা চোখে লাগলো,নাক মনে হয় ভেঙেই গেছে। তবুও নাকে এলো বেলী ফুলের তীব্র গন্ধ।
চোখ তুলে তাকিয়ে সামনে থাকা ব্যক্তিকে দেখে থমকে যায় সে।

চোখ নামিয়ে চলে আসতে পা বাড়ালে বাধা পেলো।শক্ত পুরুষালী ডান হাতে আবদ্ধ মাধুর্য। বাম হাত ধীরেধীরে হলুদ মাখিয়ে দিচ্ছে তার মাধুর্যের রক্তিম ঠোঁটে।

চলবে।

#ভেজা_চুলে
#সাদিয়া_খান(সুবাসিনী)
#পর্ব-১২

বিরিয়ানির সাথে একটা এলাচ মুখে এলে মুখের যে অবস্থা হয়?
পত্রী নিজের মুখের অবস্থা ঠিক সে রকম করে রেখেছে৷
পাত্র পক্ষের এত কিছু আয়োজন দেখে সে ভীষণ বিরক্ত।
কোনো কমতি ধরার সুযোগ পাচ্ছে না।
এই মুহুর্তে তারেকাবানুকে সে খুব মিস করছে। সে থাকলে একটা না একটা উপায় বের হতোই হতো।

“পাখি! কী ভাবিস?”
“ভাবছি আমাদের থেকে এদের প্ল্যান কত হাই রে!আমরা কি সব আগামাথা চিন্তা করছি।আর দেখ এরা কত ভালো আয়োজন করছে।”

“আমিও তাই ভাবতেছি।তবে একটা কথা ঠিক বুঝে আসছে না।”

“কী?”
“জেরিন আপুর কিছু হইলো না ক্যান?জামালগোটায় কী দুই নাম্বারি হলো?”

“আমিও তাই চিন্তা করতেছি।সকালে দিলাম এখন অবধি তার স্যালাইন নিয়ে পড়ে থাকার কথা।অথচ সে?”

ঠিক তখন তাদের সামনে দিয়ে জেরিন হাসতে হাসতে যাচ্ছে। মাইশার সাথে কথা বলতে বলতে। তার দিকে তাকিয়ে খুশবু বলল,

“একদল আছে না?লোহা গিলে লোহা হজম করে ফেলে?এই জেরিন্ন্যা ওই দলের।”

আরহানের হাত ভীষণ জ্বলে যাচ্ছে। তাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে বাড়ির মেয়ে মহল।
মাধুর্যের মাম্মাই সেখানে ছিল।ছেলেটার হাতের তালু পুরো লাল হয়ে গেছে। ইনহানের মা ছেলের হাত ধরে বসে আছেন।মেয়ের মৃত্যুর পর সে আরহান কে চোখে হারায়। ভাতিজা হলেও ছেলের থেকে কম নয়।

যে পাটায় হলুদ বাটা হয়েছে? সে পাটায় না কী আগে শুটকির মরিচবাটা বেটেছে কেউ।
হলুদ শুধু আরহান ধরেছে। বাটিতে উঠাতে।
তাই ছেলের হাতটা একদম পুরে গেছে।

ইনহানের মা প্রলাপ করছে, তার কথা এমন শোনায় মাঝেমধ্যে।
আরহানের মা এসে জায়ের হাতে নারকেল তেল দিয়ে বললেন,

“লাগিয়ে দে মনি।জ্বালা কমে যাবে।”

মাধুর্যের ঠোঁট লাল টকটকে হয়ে আছে। ভ্যাসলিন দিয়ে ঘষে তুলে ফেলেছে ওয়াটারপ্রুফ লিপস্টিক। গোলাপি ঠোঁটটা লাল হয়ে আছে।
পত্রী,রৌদ্র,খুশবু জিজ্ঞেস করছে সেদিকে কোনো খেয়াল নেই মাধুর্যের। টিস্যু দিয়ে মুছে চলেছে ঠোঁট।
কানে শুধু একটা কথা বাজছে

“লাল রঙ কামনার রঙ।নারীকে ভীষণ আবেদনময়ী লাগে এই রঙে। কেন পুরুষের ধৈর্য্যের পরীক্ষা নেয় নারী?পুরুষের ধৈর্যের বাঁধ ভাঙলে আবার নারীই বলে,

” পুরুষ তুমি কেমন পুরুষ? নিজেকে সামলাতে জানো না?”

অথচ নারী কেন বার বার আবেদন করে তার রুপ?পুরুষের চৌকাঠে?”

মাধুর্যের ঠোঁটের এক কোণে তখনো হলুদের ছোয়া লেগে আছে। লেগে আছে কারো নিবিড় স্পর্শ।

মাধুর্যর পাশে দাড়িয়ে ইনহান আবার হাত দিয়ে ইশারা করে তার খুব গরম লাগছে।
তখন পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তার বাবা বললেন,

“কী কও আব্বা?গরম কই? আজ তো বৃষ্টি তাই ভালোই ঠান্ডা।”

মাধুর্য ভেবেছিল সে একটু ভড়কে যাবে কিন্তু না। ইনহান আরো হাসি হাসি মুখ করে বলল,

“আব্বা এই গরম যে লংকার ঝাল।আশেপাশে দেখো না আব্বা, কত ধানী লংকা।”

ইনহানের বাবা বিষয়টা বুঝে মুচকি হেসে চলে গেলেন।ইনহান ও চলে যাচ্ছে তবে বিড়বিড় করে গান বলছে,

“বেয়াইন সাব আপনার জন্য ঢাকা থেইক্যা ডিজে আনছি।”

ঠিক তখন স্টেজে নাচের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে মাইশা,শয়ন সমেত কয়েকজন। ফুল স্পীডে গান বেজে উঠল,

“এই যে বেয়াইন সাব। ভাব নিয়েন না।এত গুলা বেয়াই যেন দেইখাও দেখেন না।”

নাচ টা সবাই বেশ ইঞ্জয় করেছে। জেরিন,পত্রী,খুশবু,রৌদ্র সবাই গেলেও সাকিবের নিষেধে মাধুর্যকে যেতে দেয়নি তার মাম্মাই।

তারপর ধীরে ধীরে কয়েকটি গানে পারফর্মেন্স করলো ছেলে পক্ষ।তার মধ্যে স্পেশাল ছিল

“হায় গারমি।”

ওদের নাচ দেখে পত্রী, খুশবুর মাথায় হাত। ওরা সব ট্রেন্ডিং গানে নেচে ফেলেছে। এবার তারা কী করবে?

এত ভীড়ের মাঝে আরহান কখন এসে মাধুর্যের পাশে দাঁড়িয়েছে খেয়াল হয়নি।তার হাত এখনো হলুদ।

ডান পাশে আরহান এসে দাড়াতেই বা পাশে এসে সাকিব দাড়ায়।
মাধুর্যের ঠোঁটে লেগে থাকা হলুদের ছোঁয়া,আরহানের হাতে হলুদ,তার হাত জ্বলে যাওয়া, মাধুর্যের ঠোঁটে রক্তিম রঙ সব তার কাছে সূর্যের আলোর মতোন স্বচ্ছ।তবে সে তার তামসীকে এত সহজে যার তার হাতে তুলে দিতে পারে না।

তার ভালোবাসা সে এমন কারো হাতে তুলে দিবে, যে তার থেকেও যত্নে আগলে রাখবে।

তামসীর হাসির জন্যই তার থেকে দূরে যাওয়া,সে হাসির জোয়ারে ভাটা পড়তে দিবে না।

মাইশা এসে খুব মিনতি করে মাধুর্যকে রাজি করায় বেহালায় সুর তোলার জন্য। হালকা বাতাস,ঝিরিঝিরি বাতাসে আবছা আধারে মাধুর্য বেহালায় সুর তুলে

মুঝকো বারসাত বানালো,এক লাম্বি রাত বানালো গানে।
পাশেই টুল নিয়ে বসে ইনহান সুরের তালে গান তোলে।
ইনহানের পরনে ছাই রঙা মেঘের পাঞ্জাবী। মাধুর্য তো আজ আস্ত এক আকাশ। পুরো সময় চোখ বন্ধ ছিল মেয়েটার অথচ ইনহানের সম্পূর্ণ দৃষ্টি কাপতে থাকা ওই দুই আখি পল্লবে।

গান শেষ হতেই মাধুর্য চোখ খুলে। ইনহান যেন হাসি তৈরী রেখেছিল।
তাদের এই জুটি দেখে ভীড়ের মাঝে কেউ একজন বলল,

“এই যে ইনুর মা!মেয়ে কিন্তু পেয়ে গেলা।দুইজন মিলে যেন আস্ত এক আকাশ। এই আকাশ আর মেঘেরে এক করে বাইন্ধ্যা দেও।মাইয়্যা ফিরা পাইবা।”

তারেকা বানুর শরীর ভীষণ খারাপ।সকাল থেকে ৪৬ বার ওয়াশরুমে দৌড়াতে হয়েছে। আপাতত তার স্যালাইন চলছে।
জেরিনের দেওয়া কাচা আমের শরবত খাওয়ার পর থেকে এই অবস্থা।অবস্থা খারাপ তাই সাকিবকে দ্রুত চলে আসতে হয়েছে৷
বাড়ি ফিরে এসে ফ্রেশ হয়ে ঘুমের মতোন এসেছিল তখন বাহিরের থেকে হৈচৈ শুরু। সবাই ফিরেছে।
মাধুর্য শাড়ি বদলে পরেছে গোলাপি রঙা শাড়ি।
সাকিবের মন বড্ড পুড়ছে। সে বাইরে গেলো না। চুপচাপ নিজের ঘরেই রইল।
কিছুক্ষণ পর শুরু হলো মুষলধারে বৃষ্টি।
হাতে হ্যারিকেন নিয়ে খট করে দরজা খুলে প্রবেশ করলো কেউ।
ক্যাঁচক্যাঁচ শব্দে দরজা খুলে আবার বন্ধ হয়ে গেলো।

আবছা আলোয় সাকিব দেখতে পেলো মাধুর্য বসে আছে। হাতে খাবারের প্লেট।
সাকিব উঠে হাত ধুয়ে খাবার তুলে দিলো তার মুখে।
খাবার মুখে নিয়ে মাধুর্য বলল,

“দাদীজানের অবস্থা খুব একটা ভালো না। যদি সে মরে যায় তবে আনবে আমায় তোমার ঘরের রমনী করে?”

মাধুর্যের কন্ঠে কিছু একটা ছিল। যা ভেতরে ভেতরে চুরমার করে দিলো সাকিবকে। না চাইতেও চোয়াল শক্ত হয়ে এলো।

চলবে।(ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখিবেন। এডিট করার সময় পাইনি।)”

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে