#গল্পপোকা_কবিতা_লিখন_প্রতিযোগিতা
কবিতা: ভাষা আন্দোলন হতে বিজয়
লেখা: সাইদুল হাসান
বাংলায় কথা বলতে, বাংলায় লিখতে
বুকে লালনের স্বপ্ন নিয়ে বাংলায় চলতে
যারা রিপুর সম্মুখে পেতেছিল বুক
যারা রাইফেল হাতে ছুটেছিল বাংলা ভাষা রক্ষায়,
তারা তো কভু ভীরু কাপুরুষ নয়!
রফিক, সালামসহ যারা রাজপথ ভাষা আন্দোলনে কাঁপিয়েছিল, তারা তো বাংলার সূর্য সন্তান।
যাদের হুংকারে মুখরিত ছিল পূর্ব পাকিস্তান।
চুয়ান্নতে যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রী পরিষদ বাতিল,
বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে গভর্নর জে জি এম।
ছাপ্পান্নতে রাষ্ট্রভাষা বাংলাকে মেনে নেয়,
হাসি ফুটে প্রান্তিক-শহুরে বাঙালির বদনে।
বাক স্বাধীনতা অবরুদ্ধ করার পরেও স্বভাষায়
প্রতিবাদের ঝড় উঠে পূর্ব বাংলার মানুষের মুখে।
বাঙালির মুক্তির সনদের দাবিতে মাঠ হতে
তেপান্তর স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত ছিল।
ভেসে আসে গণকন্ঠের আহ্বান, সম্মিলিত সুরে
আওয়াজ তোলে “রাষ্টভাষা বাংলা চাই”।
ছয় দফা আন্দোলন শেষে, উনসত্তরে এক
হত্যার প্রতিবাদে মিছিলে মিছিলে ছেয়ে যায়
দেশ। গণআন্দোলনে কাঁপে সমগ্র ভূমি।
রূপায়িত হয় শেষে গণঅভ্যুত্থান নামে।
একাত্তরের পঁচিশে মার্চের নিশীথে সংগঠিত অপারেশন সার্চলাইট, নিরীহ বাঙালি কামঘুমে হারায়।
বাজারের দোকানপাট, আপন আলয়
অনলের লেলিহান শিখায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত।
এপ্রিলে মুজিবনগর সরকার গঠন, প্রস্তুতি দেশ রক্ষায় আহবের সম্মুখ পানে রাইফেল হাতে ছুড়তে।
পূত ভূমি, মায়ের মততার আচল রক্ষায়
শপথ পাঠে দেশ রক্ষার পূর্ণ অঙ্গীকারবদ্ধ।
যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে সহজ সরল বাঙালি
দেশমাতৃকার বুকে রক্তিম রুধি ঝরিয়ে
স্বদেশ বাঁচাতে চায়, বাক স্বাধীনতা চায়
সেই সাতই মার্চের অগ্নিময় ভাষণ স্মরণ রেখে।
দুর্মতি কৌশল অবলম্বের পথ হৃদয়ে গাঁথে
পাক বাহিনী, মেধা শূণ্য করতে চেয়েছিল পূর্ব বাংলা।
বুলেটে বুদ্ধিজীবীদের তাজা প্রাণ কেড়ে নেয়,
তবুও বিজয় পারিনি কুঙ্খিত রাখতে হাতে।
বাঙলার দামাল ছেলের দল কভু পশ্চাতে ফিরেনি,
হৃদয়ে পূর্ণ সাহস ও বঙ্গবন্ধুর সুপ্ত জোয়ারে প্রাণের সংঞ্চারিত ভাষণের উৎসাহ, উদ্দীপনাকে বুকে ধারণ করে
ছিনিয়ে আনে বহুল প্রত্যাশিত বিজয়।
স্বাধীনতার পদধ্বনি বাজে গগনপটে
মরুতে বিজয়াধূম উল্লাসের ধ্বনি ভাসে
শ্রমিক জেলে কৃষক সকলের বদনে হাসি
আমার বাংলা, আমি তোমাকেই ভালোবাসি।