#ভালোবাসি_শুধু_তোমায় ?❤
#পর্ব : ১০
#লেখিকা : Aye Sha (Koyel Banerjee)
” সাচ আ ক্যারেক্টারলেস ইউ আর মীরা! ”
__কিছুক্ষণ আগে__
আমাদের এই পার্টিটা একটা রিসোর্টে হচ্ছে। আমি রেডি হয়ে পার্টি তে এসে পৌঁছাতেই চারিদিকে আমান কে খুঁজতে লাগলাম। আমান কে কোথাও খুঁজে না পেয়ে আমি পার্টির চারিদিকে ঘুরতে লাগলাম, বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বলছি পার্টিতে দাঁড়িয়ে ঠিক সেই সময় আমার চোখ রিসোর্টের একটা রুমের দিকে গেল যেখানে আমান ঢুকে গেলো। আমি চুপচাপ কাউকে কিছু না বলে আস্তে আস্তে আমানের রুমের দিকে এগিয়ে গেলাম। দেখলাম রুমের দরজাটা আনলক আছে। রুমে ঢুকে আমানকে না দেখে বুঝলাম আমান ওয়াশরুমে আছে। তাই চুপ করে আমানের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। কিছুক্ষণ পরেই আমান বেরিয়ে এলো ওয়াশরুম থেকে আমাকে দেখে পুরো অবাক হয়ে গেল। আমি আমানের মুখ দেখে সামান্য হাসলাম আর হেসে বললাম,
— আপনি কি ভুত দেখেছেন নাকি?
— ভুত নয়, শাক্চুন্নি। যে কি না আমাকে শান্তিতে থাকতে দিচ্ছে না।
আমি রেগে ওনার দিকে তাকিয়ে জোরে চেঁচিয়ে বললাম,
— কিইই? আমি শাক্চুন্নি?
উনি আমার কথার পাত্তা না দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন?
— কি করছো তুমি এখানে?
আমি ওনার দিকে থেকে মুখ ফিরিয়ে বললাম,
— পার্টি তে এসেছি জানেন না বুঝি?
উনি আমার সামনে এসে দু-হাত ভাঁজ করে দাঁড়িয়ে আমার দিকে তাকিয়ে শান্ত ভাবে বললেন,
— জানি। তাই তোমার তো পার্টি তে থাকার কথা। আমি যেই রূমে এসেছি সেখানে কেন এসেছো?
আমি আমানের দিকে তাকিয়ে ওনার শার্টের কলার দু-হাত দিয়ে চেপে ধরে বললাম,
— আপনাকে খুন করতে। ঘাড় মটকাব আপনার বুঝলেন?
— হমম শাক্চুন্নিদের কাজই তো সেটা।
উনি সম্পূর্ণ ঠান্ডা গলায় কথাটা বলে দিলেন কোনো রকম প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে। আমি ওনাকে ওভাবেই ধরে রেখে জিজ্ঞেস করলাম,
— বিয়ে কবে করবেন আমায়?
আমার এই প্রশ্নে আমান এবার বিরক্ত হয়ে গেলেন। ওনার চোখে মুখে বিরক্তির প্রকাশ পাচ্ছে। উনি বিরক্তির সুরে আমার দুই হাতের উপর হাত রেখে বললেন,
— একই প্রশ্ন বার বার কেন করছো মীরা? আমি তো বলেছি আমি তোমাকে বিয়ে করবো না। আমার মনে তোমার আর কোনো স্থান নেই। আমি অতীত টা পুরো পুরি ভুলে গেছি।
কথাটা বলে উনি হাত ছাড়াতে নিলেই আমি আরো শক্ত চেপে ধরে বললাম,
— ভুলে গেছি বললেই হলো? আপনি ভুলতে পারেন কিন্তু আমি ভুলিনি। আপনিই তো বলেছিলেন আমাকে আপনার স্ত্রী হতে হবে একদিন। এখন কথার খেলাফ করবেন?
— আমাকে জোর করো না মীরা। জোর করে আর যাই হোক ভালোবাসা পাওয়া যায় না আর সুখে থাকাও যায় না।
— আমি ওতো কিছু জানি না। আপনি আমাকে বিয়ে করবেন কি না বলুন।
উনি একটা ছোট্ট নিশ্বাস ছেড়ে বললেন,
— না করলে?
— না করলে আমি আপনাকে…
— তুমি আমাকে কি? কি করবে?
— আমি আপনাকে…দাঁড়ান! ভাবতে দিন।
আমার কথা শুনে আমান সামান্য হেসে ফেললো, এই দেখে আমার মাথা আরো গরম হয়ে গেলো। এমনিতেই মাথায় আসছে না আমি ওনাকে কি করবো তার মধ্যে ইনি আবার হাসছেন। রাগের মাথায় দিলাম এক ধমক,
— এই মিস্টার এই! হাসছেন কেন হ্যাঁ? দেখছেন না আমি ঠিক করতে পারছি না আপনাকে কি করবো। একটু হেল্প করুন না আমাকে আপনাকে শায়েস্তা করতে। আপনিই তো ভালো জানবেন কোনটা করলে আপনি বিয়েতে রাজি হবেন।
আমি বেশ চিন্তিত হয়ে গেলাম আর আমান জোরে জোরে হাসতে শুরু করলেন। আমি ওনার হাসি দেখে ভ্রূ কুঁচকে ওনার দিকে তাকাতেই উনি কোনো রকমে হাসি থামিয়ে বললেন,
— আল্লাহ! তুমি কবে বড়ো হবে মীরা? একটা বাচ্চা মেয়েও বোধ হয় জানে যে যাকে শায়েস্তা করতে হয় তা নিজের বুদ্ধি দিয়ে করতে হয়, তাকে জিজ্ঞেস করে নয়। আর তুমি কি না এতো বড়ো হয়ে যাকে শায়েস্তা করবে তার কাছেই হেল্প চাইছো তাকে কিভাবে শায়েস্তা করা যাবে। ওহ মাই গড!
কথাটা বলে উনি আবার হাসি তে ফেটে পরলেন আর আমি পুরোই বোকা বনে গেলাম। নিজের উপর নিজেরই রাগ হতে লাগলো। কেমন একটা আহাম্মগ তৈরী হয়েছি আমি আল্লাহ মালুম! আমান হাসি থামিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
— এসব চিন্তা-ভাবনা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলো মীরা। আমি আর কোনদিন তোমার হবো না।
ওনার শেষের কথাটা জানো আমার কানে বাজতে লাগলো। উনি চলে যাবেন ঠিক সেই সময় ওনার হাত টেনে নিজের কাছে এনে ওনার চোখে চোখ রেখে বললাম,
— আপনাকে আমি আমার কাছ থেকে আর দুরে যেতে দেবো না আমান। যদি আপনি আমায় বিয়ে না করেন তাহলে আপনার চোখের সামনে আমার কবর দেখবেন।
আমানের জানো কোনো গায়ে লাগলো না আমার মরার কথায়। উনি সামান্য হেসে শান্ত ভাবে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন,
— ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করছো? কাজ হবে না এতেও।
— তার মানে আপনি বলতে চাইছেন আমি মরে গেলেও আপনার যায় আসে না তাই না? কিন্তু আমি মরতে চাই না আমান। আমি আপনার সাথে যে ভুল করেছি, আমি চাই সেই ভুলের শাস্তি আপনি নিজের হাতে আমাকে দেন। এই কয়েক দিনে কম বার আমি আপনার কাছে গেছি ক্ষমা চাইতে? প্রত্যেক বার আপনি আমায় ফিরিয়ে দিয়েছেন। আমি জানি আপনি চাইলেও আমাকে অপমান করতে পারবেন না, শাস্তি দিতে পারবেন না কারণ আপনি আমার মতো খারাপ নন। আপনি আমার চাইতে শত গুনে ভালো মানুষ। তাই আমি বার বার আপনার কাছে ক্ষমা চাইছি আর আপনি যখন আমায় ফিরিয়ে দিচ্ছেন এটাই আমার জন্য শাস্তি আমান। প্রত্যেকবার আপনার আমার থেকে দুরে যাওয়ার কথা আমি মেনে নিতে পারছি না আমান। ভালোবাসি আপনাকে!” ভালোবাসি শুধু আপনাকে। ”
জানি না আমানের কি হলো আমান আমার মুখ তুলে আমার চোখ দু-হাত দিয়ে মুছিয়ে দিলেন। আমার মনে হলো আমি হয়তো আমার আমানের মন জয় করে ফেলেছি। উনি আমার চোখের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছেন আর আমি ওনার দিকে। একটা মুহুর্তে ওনার ঠোঁট আমার ঠোঁটের অনেক কাছে চলে এলো ঠিক সেই সময়…
____ওয়াও মীরা ওয়াও!
একটা মেয়ের গলার আওয়াজ ভেসে আসতেই আমার আর আমানের ঘোর কাটলো। আমরা তাকিয়ে দেখলাম নীহা দাঁড়িয়ে আছে। নীহাকে দেখে আমি আমানের থেকে দুরে সরে আসতে চাইলেও পারলাম না কারণ আমান তখনও আমার কোমর জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। আমি নীহা কে বললাম,
— নীহা তুই এখানে কি করছিস?
নীহা একটা অদ্ভুত হাসি দিয়ে বললো,
— তোর সব কীর্তিকলাপ ফাঁস করতে এসেছি।
নীহার কথা শেষ হতেই পার্টির অন্যান্য সব বিখ্যাত বিসনেসম্যানরা প্রবেশ করলো তা দেখে আমান আমাকে ছেড়ে দিয়ে একটুখানি দুরে সরে দাঁড়ালো। নীহা সবাই কে উদ্দেশ্য করে বললো,
— অ্যাটেনশন এভরিওয়ান! এই যে আপনাদের সামনে যে দাঁড়িয়ে আছে, মিস মীরা চৌধুরি! তাকে তো আপনারা খুব ভালো মনে করেন তাই না? কিন্তু সে আসলে কি জানেন? ক্যারেক্টারলেস!
নীহার কথা শুনে আমার চোখে পানি চলে এলো, আমি রেগে নীহা কে বললাম,
— নীহাআআ কি বলছিস এসব?
নীহা আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
— ” সাচ আ ক্যারেক্টারলেস ইউ আর মীরা! ”
__এখন__
নীহা কথাটা পার্টির সবার সামনে বললো। আমি চোখে পানি নিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে দেখছি, নিজের বেস্ট ফ্রেন্ড কতটা অপমান করতে পারে আমায়। আমি ভেজা চোখে আমানের দিকে তাকালাম উনি নির্বিকার হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। নীহা আমার সামনে দাঁড়িয়ে এসে বললো,
— ছিঃ মীরা! তুই এতোটা নিচে নামতে পারলি? এইভাবে নিজের আব্বু-আম্মুর নাম ডোবাচ্ছিস? আমার ভাবতেই লজ্জা লাগছে তুই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড।
আমি চোখ মুছে নীহার দিকে তাকিয়ে বললাম,
— তোর তো লজ্জা করছে! আর আমার ঘৃণা করছে এই ভেবে যে আমি তোকে নিজের বেস্ট ফ্রেন্ড বানিয়ে ছিলাম। শুধুমাত্র আমাকে নিচে নামানোর জন্য, অপমান করার জন্য তুই এভাবে মিথ্যে বলছিস?
— মিথ্যে আমি নই, মিথ্যে তুই বলছিস মীরা। আমি সবটা করবো এখন। তুই যার সাথে রূমের মধ্যে নোংরামি করছিলিস সে নিজেও চুপ করেই আছে দেখ।
আমি নীহার কথা শুনে আমানের দিকে তাকালাম, আমানের কোনো হেলদোল নেই। আমান মনোযোগ সহকারে নীহার কথা শুনছে। নীহা নিজের সাইড ব্যাগ থেকে কয়েকটা ছবি দেখিয়ে বললো,
— এই দেখুন গাইস! মীরার কিছু ভালো মানুসির ছবি।
ছবি গুলো আমার আর আমানের। আমি অফিসে যে যে সময় আমানের কাছে গেছিলাম জোর করে সেই সব ছবি। নীহার ছবি দেখানো শেষ হলে নীহা আমানের কোম্পানির মালিক কে বলতে শুরু করলো,
— ঠিক এই জন্যেই মীরা নিজে আপনাদের কোম্পানি থেকে স্টাফ বেছে নিয়েছিল। আসলে ও এরকমই সব সময় ছেলেদের উপর নজর। বাবার পয়সা থাকলে যা হয় আর কি।
আমি সব চুপচাপ সহ্য করছি শুধু এটা ভেবে যে আমান কিছু বলবে। আমি ওনাকে ভালোবাসি তাই তো ওনার কাছে গেছি যেটা কেউ জানে না। উনি যদি আমাকে ভালোবাসেন তাহলে উনি ঠিক সত্যিটা সবাইকে বলবেন। আর যদি না বলেন তাহলে মনে করবো আমি আমার করা পাপের শাস্তি পাচ্ছি। যেমনটা আমি সাড়ে তিন বছর আগে আমানের সাথে আমি করেছিলাম। নীহা এবার আমানের কাছে এসে আমান কে জিজ্ঞেস করলো,
— মিস্টার আমান খান! এই যে ছবি গুলো এখানে আমি দেখালাম এগুলো কি আপনি অস্বীকার করতে পারেন?
আমান নিজ এটিটিউডে উত্তর দিলেন,
— নট এট অল। কেন অস্বীকার করতে যাবো? এই ছবিগুলো ফেইক নয়, সব রিয়েল।
নীহা প্রশান্তির হাসি হেসে বললো,
— তোহ মীরা? ইটস প্রুভড! আমি বলেছিলাম না তুই মিথ্যে বলছিস আমি নই। বরাবর তোর নিজের টাকার উপর ভীষণ অহংকার। টাকার ক্ষমতা নাকি তোর কাছে অনেক বেশি, এর চাইতে বড় কিছুই নেই। তোহ আজকে পারলে নিজের সন্মান টাকার ক্ষমতায় কিনে দেখা। আমিও দেখি একটু।
নীহা পৈশাচিক হাসি দিলো কথাগুলো বলে, আমি কোনো উত্তর দিলাম না। আমি ধরে নিয়েছি এটা আমার জীবনে করা সবচেয়ে বড় ভুলের চরম শাস্তি। আমি চোখ মুছে নীহার দিকে তাকিয়ে বললাম,
— অ..অনেক বড় উপকার ক..করলি আজ ত..তুই আমার ব..বেস্ট ফ্রেন্ড হয়ে। হয়তো ন..নিজের অজান্তে করেছিস ক..কিন্তু যা করেছিস ত..তার জন্য অ..অনেক ধন্যবাদ।
আমি কাঁপা কাঁপা গলায় কান্না জড়ানো কন্ঠে কথাগুলো বলে ওখান থেকে বেড়াতে নিলেই আমার হাতে টান পরলো। আমি পিছন ফিরে তাকাতেই দেখলাম আমান আমার হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। আমাকে নিজের দিকে হ্যাঁচকা টেনে নিয়ে বললেন,
— তুমি কোথায় যাচ্ছো? নীহা তোমার কেমন উপকার করলো, কি উপকার করলো সেটা না বলেই চলে যাচ্ছো ওকে?
আমি মাথা নিচু করে উত্তর দিলাম,
— আ..আমাকে যেতে দ..দিন প্লিজ।
— সে কি মীরা? নীহা এতক্ষণ কথাগুলো বললো, তারপর তুমিও বললে এবার আমারও তো কিছু বলার আছে নাকি?
আমানের কথা শুনে নীহা অবাক হয়ে আমানকে জিজ্ঞেস করলো,
— আপনি কি বলবেন?
আমান হাসলো নীহার কথা আর আমার হাত ছেড়ে পকেটে দুই হাত গুঁজে নীহা কে জিজ্ঞেস করলো,
— এটাই যে মীরার ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট আপনাকে কে দিতে বলেছে? হতে পারে আপনি মীরার বেস্ট ফ্রেন্ড তাই বলে তো মীরা আপনাকে বলেনি যে সবার সামনে ওর ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট দিতে তাই না?
নীহা হকচকিয়ে গিয়ে বললো,
— মীরা যে সবার সামনে ভালো মানুসির পরিচয় দেয় তা যে ফেইক সেটাই প্রমান করেছি আমি এখানে।
— ফাস্ট অফ অল আপনার কথা অনুযায়ী মীরা যদি ফেইক হয় তাহলে আপনিও ফেইক। কারণ এখানে আপনি মীরা জে দোষারোপ করে নিজে ভালো সাজছেন যা আপনি নন। আপনার যে কতগুলো অ্যাফেয়রস আছে, রোজ কতগুলো ছেলের সাথে নাইট ক্লাবে পার্টি করেন রাত কাটান তাহ মে বি আপনার চাইতে ভালো কেউ জানে না।
এর মাঝে নীহা কথা বলতে গেলে আমান মীরা কে হাতের ইশারায় থামিয়ে দিয়ে বললো,
— নোহ! এতক্ষণ আপনি বলেছেন নাও মাই টার্ন। সো লেট মি ফিনিশ। হ্যাঁ তো কোথায় ছিলাম? ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট রাইট? আপনি নিজের ক্যারেক্টার কে ঠিক না রেখে লোকের ক্যারেক্টার জাজ করতে এসেছেন? ভেরি ব্যাড হ্যাবিট ইট ইজ। আর যেই ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট আপনি দিচ্ছেন তা তো সম্পূর্ণ ভুল।
নীহা ঘাবড়ে গিয়ে বললো,
— ভুল মানে?
আমান ডান হাত পকেট থেকে বেড় করে আমার কাঁধে রেখে আমাকে নিজের দিকে টেনে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলেন। তারপর আমার চোখে চোখ রেখে বললেন,
— শি ইজ মাই উড-বি ওয়াইফ! তাই যখন খুশি যেভাবে খুশি আমার সাথে টাইম স্পেন্ড করতেই পারে। আজকেও আমরা টাইম স্পেন্ড করছিলাম আর আপনি এসে ব্যাঘাত ঘটালেন। কেমন বেস্ট ফ্রেন্ড আপনি যে ঠিক ঠাক খবর ও রাখেন না আবার রং টাইমে এন্ট্রি নেন। ওহ স্যরি! আপনি তো দেখিয়েই দিলেন আপনি কেমন বেস্ট ফ্রেন্ড। বায় দ্য ওয়ে আপনার বলা আর শোনা শেষ হয়ে গেলে বলুন আমরা একটু পার্টিটা এঞ্জয় করতে পারি। এতক্ষণ আপনার ভাট বকা শুনে পায়ে ব্যাথা করছে।
আমানের কথা শুনে আশেপাশের সবাই মুখ টিপে হাসতে লাগলো, আমি তো অবাক হয়ে ওনার দিকে তাকিয়ে আছি। কানে শুধু একটাই কথা বাজছে ” শি ইজ মাই উড-বি ওয়াইফ। ” আমি মনে মনে ভাবছি আমার ভালোবাসায় আমানের মন একটু হলেও গলেছে, জয় করতে পেরেছি আমি। বাকিটা আমি বিয়ের পর জয় করে নেবো। আমানের কথায় ঘোর কাটলো আমার।
— তুমি আমাকে অনেক আগেই ধ্বংস করে দিয়েছো মীরা। আমার আর কোনো কিছুই আমি তোমাকে ধ্বংস করতে দেবো না। ভেবো না তোমার ভালোবাসায় আমান মন গলেছে। আমি তোমাকে বিয়ে করবো কিন্তু সেটা নিজের উদ্দেশ্যে। স্ত্রীয়ের কোনো অধিকার তুমি পাবে না আর সেটা দেখাতেও আসবে না মাইন্ড ইট!
আমান কথাগুলো বলেই বেরিয়ে গেলেন। এরপরে আর কোনো যোগাযোগ আমাদের মধ্যে হয়নি। একবারে বিয়ের পর বাসর রাতে ওনাকে দেখেছিলাম তাও আবার ড্রাঙ্ক অবস্থায়। একটা কথাও উনি বলেননি আমার সাথে।
__বর্তমান__
[আগের পর্বে যে অতীত শুরু হয়েছিল তা এখানে শেষ হলো। আমার গল্পে তেমন বড় অতীত আমি রাখিনি, এটুকু অতীত পড়ার ধৈর্য না থাকলে আমার আর কিছু করার বা বলার নেই।]
আমি অতীত থেকে বেরিয়ে এলাম দরজা বন্ধ করার শব্দে। মাথাটা কেমন ভার হয়ে রয়েছে হয়তো অনেক্ষন কান্নার ফলে। আমি উঠে দাঁড়ালাম কোনো মতে মেঝে থেকে। তাকিয়ে দেখলাম আমান ফিরেছেন, আমি সঙ্গে আমানের কাছে দাঁড়ালাম। ওনার চোখের দিকে তাকাতেই আমার ভিতরটা ধরাস করে উঠলো। আমি আমান কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললাম,
— কোথায় ছিলেন আপনি গোটা একটা দিন? সেই কাল সকালে বেরিয়েছেন আর আজ ফিরলেন? আমি ভুল করে ফেলেছি আমান। আমি বুঝতে পারিনি আপনি আমাকে ধরেছিলেন। আমাকে ক্ষমা করে দিন না প্লিজ।
আমান আমাকে নিজের থেকে দুরে সরিয়ে সোজা করে দাঁড় করাতেই আমি ওনাকে জিজ্ঞেস করলাম,
— আপনি কি আমায় আম্মুর কথা মতো ডিভোর্স দিয়ে দেবেন আমান? এমনটা করবেন না প্লিজ! আমি কি আমার ভুলের শাস্তি পাইনি যে আপনি আমাকে এমন শাস্তি দেবেন। এটা আমার জন্য শাস্তি নয় আমান মৃত্যুদণ্ড।
উনি আমার কথা শেষ হতেই আমাকে পাশ কাটিয়ে দিয়ে ওয়াশরূমে চলে গেলেন। আর আমি নিজের মাথা ধরে বসে পরলাম। অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে আমার মাথায়।
?
?