#ভালোবাসি_শুধু_তোমায় ?❤
#পর্ব : ২০ (অন্তিম পর্ব)
#লেখিকা : Aye Sha (Koyel Banerjee)
” আমি বাসর ঘরে ঘোমটা টেনে বসে আমানের জন্য অপেক্ষা করছি। আগেরবার ও আমি এভাবেই আমানের জন্য অপেক্ষা করছিলাম কিন্তু ও ফেরেনি আর যখন ফিরেছে তখন আমাকে স্ত্রী হিসেবে অস্বীকার করেছে।”
অতীতের কথাগুলো মনে পরতেই চোখের কোণে হাল্কা পানি জমলো আমার। আজ সব কিছু কত বদলে গেছে। অতীত আর বর্তমানের মধ্যে অনেক ফারাক আজ। অনেক বাঁধা পেরিয়ে আজ আমরা এক হতে চলেছি। কিন্তু আমান কোথায়? এখনও এলো না কেন ও? কেন জানো একটা ভয় লাগছে আমার। “খট” করে দরজা বন্ধ করার শব্দে আমার ঘোর কাটলো। আমি একটু ঘোমটা উঠিয়ে দেখতেই আতকে উঠলাম। আমান কেমন জানো টলছে, তাহলে কি ও আজও ড্রিংক করে এসেছে?
আমান টলমল পায়ে এসে বেডে ধপ করে বসে পরলো আর বললো,
— এ..এসব কি ন..নাটক হ..হ্যাঁ? ঘ..ঘোমটা দিয়ে বসে আ..আছো কেন? ত..তোমাকে আমি বউ ব..বলে ম..মানি না ও..ওকে? ন..নাও গেট লস্ট!
— হয়ে গেছে নাটক শেষ? এবার আপনি নাটকটা বন্ধ করতে পারেন মিস্টার আমান খান।
আমি দাঁতে দাঁত চেপে কথাগুলো বলায় আমান কেমন ভ্যাবাচাকা খেয়ে গেলো। এক আঙ্গুল কপালের একপাশ ঘষে আমায় আমতা আমতা করে জিজ্ঞেস করলো,
— ই..ইয়ে ম..মানে তুমি বুঝলে ক..কি ক..করে?
— ন্যাকাষষ্ঠী! ঢং করবে না একদম। আমি না তোমাকে হাড়ে-মজ্জায় চিনি।
আমান একটা শুকনো ঢোঁক গিলে নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
— হ..হাড়ে-মজ্জায়?
— আজ্ঞে হ্যাঁ। এই ছয় মাসে প্রত্যেক রাতে তুমি ড্রিংক করে এসেছো কিন্তু একবারও তোমার কথা জড়িয়ে যায়নি। আর আজ হঠাৎ করেই জড়িয়ে গেলো?
আমান নিজের মাথায় নিজে বারি মেরে বললো,
— নিজের পায়ে নিজে কুড়ুল মারলাম, ধুর!
আমি আমান কে জিজ্ঞেস করলাম,
— কুড়ুল এনে দেবো? নাহ মানে তুমি বললে “নিজের পায়ে নিজে কুড়ুল মারলাম” তাই বললাম আর কি।
আমান বাচ্চাদের মতো হেসে বললো,
— আই লাভ ইউ বউ!
বলে যেই না আমাকে জড়িয়ে ধরতে এলো আমি দু-হাত দিয়ে ওর বুকে হাত রেখে আলতো ধাক্কা মেরে বললাম,
— দুর হও! একদম কাছে আসবে না আমার।
আমান অসহায় মুখ করে বললো,
— ক..কেন? আজ তো আমাদের বাসর রাত তাই না?
— ইশশশশ! আগে মনে ছিলো না কথাটা? নাটক করলে কেন হ্যাঁ? এখন যাও, একদম আসবে না আমার কাছে।
আমি কথাগুলো বলে বেড থেকে নেমে ওয়াশরূমের দিকে পা বাড়াতেই পিছন থেকে আমান উঠে দাঁড়িয়ে আমার হাত ধরে হ্যাঁচকা টান মারলো আর আমি ওর বুকে গিয়ে পরলাম। নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে গিয়ে আমানের চোখে চোখ পরে গেলো। আমান কেমন জানো নেশাগ্রস্ত চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে একপলকে। আমি বেশিক্ষণ চোখের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারলাম না, চোখ সরিয়ে আমতা আমতা করে বললাম,
— আ..আমান ছ..ছাড়ো আমায়।
— আজ কি ছাড়ার কথা মীরু? তোমাকে ছাড়ার জন্য আমি ধরিনি সেটা তুমি খুব ভালো ভাবেই জানো।
আমি নিচের দিকেই তাকিয়ে আছি। ঠিক সে সময় অনুভব করলাম আমান আলতো করে আমার নাকের নথটা খুলে দিলো। আজ আমানের আলতো স্পর্শেও কেমন জানো কেঁপে উঠছি। মারাত্মক লজ্জাবোধ কাজ করছে। আমান আমার গয়নাগুলো আস্তে আস্তে খুলতে লাগলো আর আমি স্থির, মূর্তির ন্যায় দাঁড়িয়ে রইলাম। সব গয়না খোলা শেষে আমান আমার কপালে গভীর ভাবে ঠোঁট ছোঁয়াতেই আমি চোখ বন্ধ করে নিলাম। কপাল থেকে ঠোঁট সরিয়ে আমান আমাকে কোলে তুলে নিলে, আমি আমানের গলায় মুখ গুঁজে দিই।
ঠিক এভাবেই আমানের সাথে নিজের সারাজীবন কাটাতে চাই। নিজের শেষ মুহুর্ত অবধি আমানের ভালোবাসা অনুভব করতে চাই। আজ থেকে শুরু হলো আমাদের ভালোবাসাময় দাম্পত্যজীবন।
অন্যদিকে,
— ব..ব..বউ! তুমি এ..এমন রেগে আছো কেন? আজ তো আমাদের বাসর রাত নাকি?
অর্নিল বেডের একপাশে ভয়ে সিটিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মুখ কাচুমাচু করে ইসমির উদ্দেশ্যে কথাগুলো বললো কারণ ইসমি সামনে লাজুক বউ নয়, উড়নচন্ডী রূপে দাঁড়িয়ে আছে। মনে হচ্ছে এখনই অর্নিল কে বিছানা ঝাড়ু দিয়ে ঝাড়ু পিটা করবে। ইসমি রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে অর্নিল কে জিজ্ঞেস করলো,
— নীহা কে বিয়ে করার তো তোমার খুব শখ! তোমার আদরের “বেবস” বলে কথা। তো যাও ওর সাথে বাসর রাত কাটাও না।
— আচ্ছা। আমি যাচ্ছি।
— কিইইইইইইই!?
অর্নিলের কথা শুনে ইসমি মারাত্মক চিৎকার করে উঠলো ফলে অর্নিলের খেয়াল হলো ও কি বলেছে। সঙ্গে সঙ্গে অর্নিল নিজেকে শুধরে বললো,
— ঈঈঈঈ! বউ আমি সেটা বলিনি। নাহ মানে আমি তো তোমাকে অনেক কষ্ট দিতে ফেলেছি নীহা কে ওসব বলে তাই ওই নীহা কে মজা দেখাতে যাচ্ছি।
— আহাহা ন্যাকাচন্ডী আমার। মজা দেখাতে যাবে নীহা কে নাকি মজা করতে যাবে ওর সাথে?
ইসমির এমন কথায় অর্নিলের মুহুর্তেই রাগ উঠে গেলো, ইসমি কে ধমক দিয়ে বললো,
— ইসমি প্লিজ! আজে বাজে কথা শুনতে চাইছি না আমি আজকে।
অর্নিলের ধমক খেয়ে ইসমি একটু কেঁপে উঠলো। তারপর ভাবলো সত্যি ভুল কথা বলে ফেলেছে। তাই মাথা নিচু করে হাতে হাত ডলতে লাগলো। অর্নিলের কোনো সাড়া না পাওয়ায় ইসমি মাথা তুলে তাকালো আর দেখলো অর্নিল ওর দিকেই এগোচ্ছে। ইসমি ভয়ে আশেপাশে তাকিয়ে ওখান থেকে সরতে নিলেই অর্নিল ইসমির কোমর জড়িয়ে কাছে টেনে নেয় ইসমি কে। দুজন দুজনের চোখের দিকে একপলকে তাকিয়ে আছে। অর্নিল ইসমির কপালে কপাল ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করে বললো,
— তুমি তো জানো আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি।
— হু! আমি মজা করছিলাম তোমার সাথে। আমান জিজু আমাকে পুরো ঘটনাই বলেছে। আমি ইচ্ছে করেই …
— তুমি ইচ্ছে করে আমাকে ভয় দেখাচ্ছিলে?
অর্নিলের মুখ দেখে ইসমি নিজের হাসি আটকাতে পারলো না। জোরে হেসে দিলো, ইসমির হাসি দেখে অর্নিলও হেসে ফেললো। কিছুসময় পর অর্নিল ইসমির নাকে নাক ঘষে দিয়ে কোলে তুলে নিলো ইসমি কে ইসমি অবাক হয়ে বললো,
— কি করছো?
— ব্যালকনিতে যাচ্ছি। আজ সারারাত গল্প করবো। তোমারই তো ইচ্ছে ছিলো এটা তাই না?
— কি করে জানলে তুমি?
— যাকে ভালোবাসি তার মনের ইচ্ছা তো জানতেই হবে। তাছাড়া আগে তো তুমি কথা বলে বলে কানের বারোটা বাজাতে আমার, তখনই আর কি শুনে ফেলেছিলাম।
— হুহ! আর এটাকে তুমি ভালোবাসা বলো? কচু ভালোবাসা এটা।
— ঠিক আছে তাহলে কালকে তোমাকে আমি কচু ভাজা খাওয়াবো। ওকেই?
— অর্নিলললল!!
— আমার কানটা গেলো আল্লাহ!
— হুহ!
অর্নিল ইসমি কে ব্যালকনিতে নিয়ে এসে, ব্যালকনি তে রাখা দোলনায় বসিয়ে দিলো আর নিজে ইসমির কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে পরলো। এভাবেই দুটো জুটির রাত কেটে গেলো, নতুন অধ্যায় শুরু করলো।
সকালে,
— মীরু! আমরা কোথায় যাচ্ছি বলবে?
— উহুঁ! চলো, দেখতেই পাবে। সারপ্রাইজ থোরি না বলে দিলে হয়।
আমান আমার কথায় চুপ করে গেলো। আমান আর অর্নিল গাড়ির পিছনের সিটে বসে আছে, সুমি সামনে আর আমি ড্রাইভ করছি। আমান আর অর্নিলের মাঝে মাঝে মুখ চাওয়া-চাওয়ি দেখে আমি আর সুমি হাসছি একে অপরের দিকে তাকিয়ে। একটা সময় আমি গাড়ি থামালাম আর আমান এবং অর্নিলের চোখ গেলো বাইরের দিকে। ওরা সঙ্গে সঙ্গে নেমে পরলো গাড়ি থেকে। আমি আর সুমিও নেমে ওদের পাশে দাঁড়ালাম। আমান আর অর্নিল একদৃষ্টে সামনের দিকে তাকিয়ে আছে, চোখের কোণে হাল্কা পানি চিকচিক করছে। সুমি সেটা দেখে আমার দিকে একবার তাকিয়ে অর্নিলের হাতের বাহু জড়িয়ে ধরলো। আর আমি আমানের হাত নিজের হাতের মাঝে শক্ত করে ধরে সামনের দিকে এগিয়ে গেলাম।
আমাদের সামনেই রয়েছে “খান ইন্ডাস্ট্রিজ”। মেইন গেটের এক প্রান্ত থেকে নিয়ে আরেক প্রান্তে লাল ফিতে লাগানো। আমি একজনকে ডেকে বললাম,
— রিয়া! নিয়ে এসো।
— ওকে ম্যাডাম।
আমি রিয়া কে কথাটা বলার পরেই আমানের দিকে তাকালাম দেখলাম ও একদৃষ্টে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি ওকে হেসে জিজ্ঞেস করলাম,
— কি দেখছো এভাবে?
— এসব..??
— সারপ্রাইজ!
আমার কথা শেষেই রিয়া “আম্মু” কে নিয়ে এলেন। আম্মু কে দেখে আমান আর অর্নিল অবাক হয়ে গেলো। আমান আম্মু কে জিজ্ঞেস করলো,
— আম্মু তুমি এখানে?
— হ্যাঁ। তোদের আগে এসেছি আমি। আমারও তোদের মতোই অবস্থা এখনও পর্যন্ত।
আম্মুর কথা শুনে সুমি বললো,
— ওহ হো আম্মু! পরে হবে সব কথা। আগে তুমি ফিতেটা তো কাটো।
আমাদের বলায় আম্মু ফিতে কেটে উদ্বোধন করলো। ভিতরে প্রবেশ করতেই আম্মু বললো,
— কোনো কিছুই বদলায়নি। সব একদম আগের মতো সাজানো যেমনটা তোদের আব্বু সাজিয়ে গেছিলো।
আমি আম্মুর হাত ধরে বললাম,
— ফুপি কোম্পানিটা দখল করেছিল ঠিকই কিন্তু ব্যবহার করেনি। এখন এই কোম্পানি তোমার নামে আম্মু যা আব্বু করে গেছিলো। একদিন এই “খান ইন্ডাস্ট্রিজ” ভুলবশত আমি কেড়ে নিয়েছিলাম তোমাদের থেকে আজ সেই ভুল শুধরে তোমাদের তা ফিরিয়ে দিলাম।
আম্মু আমাকে জড়িয়ে ধরলো। সে সময় সুমি বাচ্চাদের মতো করে বললো,
— বাহ! আমি বাদ?
আম্মু সুমির দিকে হাত বাড়িয়ে বললো,
— আয়!
সুমি দু-পাশে মাথা নাড়িয়ে বাচ্চাদের মতো করে বললো,
— নাহ! রাগ করেছি। এটা ডিউ রইলো আপাতত।
সুমির কথা শুনে সবাই হেসে দিলো। আম্মু আর অর্নিল অফিস দেখছে সে সময় আমান আমার হাত ধরে বললো,
— তুমি যে আমাকে আজ এতো বড় সারপ্রাইজ দেবে আমি ভাবতেও পারিনি। থ্যাংক ইউ, থ্যাংক ইউ সো মাচ।
— এটা আমার কর্তব্য ছিলো আমান। আমি তোমাদের থেকে অন্যায় ভাবে এই কোম্পানি ছিনিয়ে নিয়েছিলাম। যদি এই ভুল আমি শুধরাতে না পারতাম তাহলে নিজের কাছেই নিজে অপরাধী হয়ে যেতাম। আর থ্যাংক ইউ কেন বলছো? এটা তো আমারও কোম্পানি।
আমান হেসে আমার কপালে কপাল ঠেকালো।
— উহুম উহুম! অফিস টাইম রোম্যান্স শেষ?
— রোম্যান্স আর করতে কোথায় দিলি চুন্নি?
— এহহ বাসায় গিয়ে রোম্যান্স করিস এখন চল পুন্নি।
আমার সুমির কথা শুনে আমান হেসে ফেললো। অর্নিল সুমি কে জিজ্ঞেস করলো,
— চল মানে? কোথায় যাবে তোমরা এখন?
— শুধু আমরা না তুমি, আমি, মীরা, জিজু আর আম্মুও যাবে।
সুমির কথায় সবাই অবাক হলেও আমি অবাক হলাম না। অফিস থেকে বেরিয়ে সুমি ড্রাইভিং সিটে বসে পরলো আর আমি সামনের সিটে সুমির পাশে, আম্মু পিছনে। এদিকে দুই ভাই বুঝতে পারছে না আমাদের দাবীটা কি। সুমি জোরে চিল্লিয়ে বললো,
— উঠবে বাকি তোমাদের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেবো আমি?
সুমির ধমক খেয়ে আমান আর অর্নিল তাড়াতাড়ি গাড়িতে উঠে আম্মুর দু-পাশে বসে পরলো। আমি মুখ টিপে হেসে ফেললাম আর সুমি ড্রাইভ করা শুরু করলো। এইবার আর আমান, অর্নিল কেউ জিজ্ঞেস করলো না কোথায় যাচ্ছি কিন্তু পাঁচ মিনিট পর আম্মু হঠাৎ করেই উত্তেজিত হয়ে জিজ্ঞেস করলো,
— সুমি! কোথায় যাচ্ছি আমরা?
আম্মুর কথায় আমান আর অর্নিলও নড়ে চড়ে বসলো কারণ একজন ল্যাপটপে আরেক জন ফোনে মুখ গুঁজে বসে ছিলো। অর্নিল বাইরের দিকে তাকাতেই বললো,
— সুমি স্টপ দ্য কার। কোথায় যাচ্ছো তুমি?
— আই উইল নট স্টপ দ্য কার। যেখানে গাড়ি থামার সেখানেই গাড়ি থামবে।
— হোয়াট দ্য…??
অর্নিল আর কিছু বলতে নিলেই আমান অর্নিল কে থামিয়ে দিয়ে আমার দিকে তাকায়। আমি আমানের দিকে তাকিয়ে চোখ দিয়ে ইশারা করলাম ভরসা রাখতে আর তারপর সামনে ফিরে বসলাম।
বেশ কিছুক্ষণ পর আমাদের গাড়ি থামতেই অর্নিল নেমে গেলো গাড়ি থেকে। আমরাও এক এক করে গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়ালাম। আম্মু ছলছল চোখে বলে উঠলো আপন মনে,
— এটা তো আমাদের সেই বাসা। আরমানের শেষ স্মৃতি। যা আমরা হারিয়ে ফেলেছি।
— না আম্মু! হারিয়ে ফেলেছিলে। এখন আবার সেটা ফিরে পেয়েছো।
সুমির কথা শুনে আম্মু, আমান, অর্নিল সবাই অবাক হয়ে গেলো। সুমি হেসে বললো,
— মীরা যেমন কোম্পানিটা ফিরিয়ে নিজের কর্তব্য পালন করলো, ভুল শুধরে নিলো আমারও তো সেটা করা উচিত তাই না? এই বাসাটা আজ থেকে আবারও আমাদের। আব্বু যেমন তোমার নামে রেখে গিয়েছিলো এ বাসা আজও তাই আছে আম্মু।
আম্মু কথাটা শুনেই সুমি কে জড়িয়ে ধরলো। আম্মু আমি আর আমান বাসার দিকে এগোলাম কিন্তু অর্নিল সুমির হাত ধরে আটকিয়ে দিলো।
— কি হলো অর্নিল? যাবে না ভিতরে?
— স্যরি!
— স্যরি কেন?
— তোমার উপর তখন অভাবে রিয়াক্ট করেছি তাই। আমি জানি তোমার খারাপ লেগেছে বাট আমি তো জানতাম না যে এই বাসাটা আবার ফিরে পাবো। আমার মন খারাপ হয়ে যায় তাই…
ইসমি অর্নিল কে চুপ করিয়ে, গালে হাত রেখে বললো,
— শশশশ! অনেক বলে ফেলেছো। এবার চলো সবাই চলে গেছে।
আমি অর্নিল সুমি কে একসাথে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বললাম,
— উহুম উহুম! রোম্যান্স শেষ?
— ওরে! তুই আমায় কপি করিস কেন পুন্নি?
— শোধ বোধ। তুই যেমন ব্যাঘাত ঘটিয়েছিস আমিও ঘটালাম চুন্নি!
— তবে রে!
আমি দিলাম ছুট বাসার ভিতর আর সুমি আমার পিছন পিছন আমাকে ধরতে এলো। আমাদের ছুটোছুটি দেখে আম্মু বললো,
— আমার দুই ছেলে যেমন, বউমারাও তেমন।
আমরা চারজন একসাথে হেসে আম্মু কে জড়িয়ে ধরলাম। আমাদের পাঁচজনের এই পরিবার কক্ষনো ভাঙতে দেবো না আমি। সবসময় একসাথে, একজোট হয়ে থাকবো। ভালোবাসার বন্ধনে বেঁধে রাখবো সবাই কে একসাথে।
~~~~~~ ? সমাপ্ত ❤ ~~~~~~