ভালোবাসি প্রিয় পর্ব-১৪+১৫

0
1029

#ভালোবাসি_প্রিয়( ১৪)

#অপরাজিতা_রহমান (লেখনীতে)

আসলে কোলবালিশে ময়লা হয়েছিল তাই ধুয়ে দিয়েছি। কথাটা বলা মাত্রই রাজ হো হো করে হেসে উঠলো। সেই পা*গ*ল করা হাসি।যা একদম আমার বুকে এসে বিধল।যেই হাসি দেখেই আমি যুগ যুগ পার করে দিতে পারব। কিন্তু রাজকে কিছুতেই আমার দূর্বলতা বুঝতে দেওয়া যাবে না।তাই ভাব দেখিয়ে বললাম, আপনি আমার সামনে এমন‌‌ রাজহাঁসের মতো হাসবেন না তো।দেখতে বিশ্রী লাগে।

দেখতে বিশ্রী লাগে তাই তো ঘন্টার পর ঘন্টা চেয়ে থাকো ।আর ভালো লাগলে না জানি কি করতে?আর
তুমি একটা ম্যাচিউর মেয়ে ।এতো দিনে বাচ্চার মা ও হয়ে যেতে অথচ এখন ও জানো‌ না কোলবালিশ নয় বালিশের কাভার ধুতে হয়।কোন আক্কেলে এমন কাজ করলে? তোমার বয়স হয়েছে ঠিকই কিন্তু বুদ্ধি বাড়ে নি।

ধুয়েছি বেশ করেছি। শুধু শুধু কি দরকার বিছানায় বাড়তি জিনিস রাখার?আর আপনি এমন রিয়েক্ট করছেন যেন আপনার থেকে আপনার ব‌উকে ছিনিয়ে নিয়েছি।

সিঙ্গেলদের জন্য যে কোলবালিশ কি তুমি বুঝবে না কুয়াশা।

আপনি সিঙ্গেল?

তা ন‌ই তো কি? বিবাহিত সিঙ্গেল ।ব‌উ থাকতে ও সিঙ্গেল।

এইরকম ভাব দেখালে সারাজীবন ব‌উ থাকতে ও সিঙ্গেল‌ই থাকতে হবে।

বিড়বিড় করে কি বলছ? জোরে জোরে বল আমি ও একটু শুনি।

কিছু না।

ঠিক আছে। ঘুমিয়ে পড়। গুড নাইট।

ঘুমোনোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম তখনই দেখি বাবার ফোন। ফোন নিয়ে বেলকনিতে চলে গেলাম। বাবার সাথে অনেক বোঝাপড়া বাকি আছে। আসসালামুয়ালাইকুম বাবা।

ওয়ালাইকুমুস সালাম।কেমন আছিস মা?

আলহামদুলিল্লাহ ভালো।তোমরা সবাই কেমন আছো?

ইদানিং আমার শরীর টা তেমন ভালো যাচ্ছে না রে মা ।কখন কি হয়ে যায় বলা তো যায় না।

এমন ভাবে বলছ কেন বাবা। আমার কষ্ট হয় তো। তুমি আর কখনো এমন কথা বলবে না বাবা।হয়তো রাগে অভিমানে কখনো তোমাকে জ*রি*য়ে ধরে বলতে পারি নি #ভালোবাসি_প্রিয় । তবুও তোমাকে অনেক ভালোবাসি বাবা।

আমি জানি রে মা তুই আমাকে কতোখানি ভালোবাসি স। তোকে তো উপযুক্ত মানুষের হাতে তুলে দিতে পেরেছি , এখন শীতল কে নিয়ে টেনশন হয়। শীতলের বয়স যখন সাত বছর তখন রেহেনার হাত ধরে এই বাড়িতে প্রবেশ করে।কোলে পিঠে করে মেয়েটা কে বড় করেছি। এখন যদি ওকে ওর উপযুক্ত জায়গায় পৌঁছে দিতে না পারি, তাহলে শীতলের প্রতি বাবার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হব আমি। শাফিনের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়েছি।শাফিন ছেলেটা..

বাবা! আমি তোমাকে বলেছিলাম না আমার একটা ছেলের সাথে পাঁচ বছরের রিলেশন ছিল।

হ্যাঁ।মনে পড়েছে।ছেলেটা বিসিএস ক্যাডার ছিল।

হ্যাঁ বাবা।ছেলেটা আর কেউ নয় ।শীতলের হবু বর শাফিন।

কি বলিস তুই?

আমাকে আগে জানাস নি কেন?

আমি কি জানতাম নাকি শাফিন‌ ই শীতল কে দেখতে আসবে।পরে তোমাদের কে বলতে যাবো তার আগেই দেখি তোমরা সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছ।তাই আর বলা হয় নি।

এখন বুঝতে পারছি তুই কেন ঐভাবে চলে গেছিলি।

হ্যাঁ বাবা।তবে বিশ্বাস করো আমি কষ্ট থেকে না রাগ থেকে চলে আসছিলাম। তবে শাফিনের অনেক পরিবর্তন হয়েছে এখন। আমার আধুনিকতা ,টিকটক করা শাফিনের পছন্দ হতো না।ও আমাকে অনেক বলেছে এসব থেকে বের হয়ে আসতে। আমি আসি নি এজন্যই ব্রেকআপ করেছে।তবে শাফিন সবসময় শীতলের মতো একজনকেই জীবনসঙ্গী করতে চাইতো।

হ্যাঁ মা। আমি শাফিনের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে তেমন খারাপ কিছু পেলাম না।ছেলেটা ভালো।প্রবাদে আছে না”সৎ সঙ্গে স্বর্গ বাস ,অসৎ সঙ্গ স*র্ব*না*শ”। দেখ মা তুই ও তো একসময় টিকটক সেলিব্রিটি ছিলি। এখন রাজের সংস্পর্শে গিয়ে তোর কতো পরিবর্তন হয়েছে তুই নিজেই লক্ষ্য করে দেখিস। তেমনি শীতলের সংস্পর্শে এসে ও শাফিনের পরিবর্তন হয়ে যাবে।

তোমাকে জানানোর প্রয়োজন তাই তোমাকে বললাম। এখন তুমি যা ভালো মনে কর ।

ঠিক আছে মা আমি ভেবে দেখি কি করা যায়। তুই ভালো থাকিস । নিজের খেয়াল রাখিস‌।রাজ ছেলেটা কে আমি পরখ করে দেখেছি একেবারে খাঁটি সোনা।ওকে কখনো কষ্ট দিস না মা।

ঠিক আছে বাবা। তুমি ও ভালো থেক বাবা। ঔষধ ঠিক মতো খাবে।

বাবার সাথে কথা বলা শেষ করে এসে শুয়ে পরলাম। কিন্তু হালকা শীত করছে। কিন্তু এখন তো কাঁথা ও বের করে আনতে পারব না। কিছুক্ষণ ভেবে রাজ কে ডাক দিলাম।এই যে শুনছেন। নো রেসপন্স।যা বাব্বা এর‌ই মধ্যে ঘুমিয়ে গেল নাকি। আবারও ডাক দিলাম,ওগো স্বামী শুনছেন।

বল।

বলছি আমার কাঁথা টা ও ধুয়ে দিয়েছি। এখন খুব শীত করছে আমার।

কাঁথা ধুয়েছ কেন?

ময়লা হয়েছিল তাই।

এক‌ই বিছানায় দুইটা কাঁথা থাকতে একটা কাঁথা ময়লা হয় কিভাবে?

এই রে এখন কি বলব। সবসময় নিজের জালে নিজেই ফেঁসে যাই। কিছু না বলে গুটিসুটি মে*রে শুয়ে রইলাম।

দেখ কুয়াশা। আমি সিঙ্গেল তাই আমার কাঁথা ও সিঙ্গেল। আমি বিছানার এই প্রান্তে তুমি অপর প্রান্তে থাকলে তো কাঁথার নাগাল পাবে না।তাই শীত নিবারণের জন্য তোমার দূরুত্ব কমাতে হবে।

ব্যাটা ভাংবে তবু মচকাবে না। আমি ও যাবো না। দরকার নেই আমার শীত নিবারণ করার। আপনি মনে করবেন না যে আমি আপনার সাথে এক কাঁথার নিচে থাকার জন্য আমার কাঁথা ধুয়ে দিয়েছি।

আশ্চর্য আমি কখন বললাম তুমি আমার সাথে এক কাঁথার নিচে থাকতে চাও। কি হলো? কথা বলছো না কেন?কুয়াশা!

বলুন।

কাঁথার মধ্যে এসো।বেশ শীত লাগছে। তোমার শীতে কষ্ট হচ্ছে বুঝতে পারছি।

হ‌ই হোক ‌।তাতে আপনার কি? আপনার তো আর কিছু যাবে আসবে না। আপনার কাঁথার নিচে যাওয়ার কোন প্রয়োজন নেই আমার। আমি আলমারি থেকে অন্য কাঁথা নিয়ে আসছি ,বলে বিছানা থেকে নেমে যেতেই রাজ আমাকে হ্যাঁচকা টানে ওর বু*কে*র উপর ফেলে দিয়ে বলল, তুমি চাইলে এইখানে ও থাকতে পারো। আমি ও কিছু না বলে রাজের বু*কে গুটিসুটি মে*রে ঘুমিয়ে পড়লাম।
ঘুম ভেঙ্গে গেল ফজরের আযান শুনে। ইদানিং ভোরে ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস হয়ে গেছে।আযান শুনে আর বিছানায় থাকতে মন চাই না। ঘুম ভাঙ্গতেই দেখি আমি এখন ও রাজের বু*কে*ই রয়েছি। মনে হচ্ছে এইটাই আমার একমাত্র আশ্রয়স্থল, আমার শান্তির জায়গা।রাজের এখন ও ঘুম ভাঙ্গে নি।ওর ঘুমন্ত মুখটা কি মায়াবী লাগছে।ওর এই নিষ্পাপ মুখ দেখে হঠাৎ আমার মনে এক সুপ্ত বাসনা জেগে উঠল। কোন কিছু না ভেবেই ঠাস করে একটা কি*স দিয়ে দিলাম রাজের কপালে। সাথে সাথেই রাজ চোখ খুলে তাকালো। রাজের তাকানো দেখে অনেক টা ঘাবড়ে গেলাম সাথে অনেক লজ্জা ও পেলাম। তার মানে সাহেব এতোক্ষণ ঘুমের ভং ধরে ছিল ভাবতেই এক রাশ লজ্জা এসে ঘিরে ধরল। ভেতরে ভেতরে বিড়াল বিড়াল ফিলিংস হচ্ছে। বিড়ালের বোধহয় মাছ চুরি করে খেয়ে ধরা পড়লে এমন ফিলিংস‌ই হয়।

কি করছিলে তুমি কুয়াশা?

আসলে আমি ,আসলে, আমি কি‌ যে বলব ভেবে পাচ্ছি না। এদিকে রাজ আমাকে শক্ত করে ধরে রেখেছে।‌ পালিয়ে যাবো তার ও কোন উপায় নেই।

আসলে তুমি কি? আমি তো সেটাই জানতে চাচ্ছি।

আসলে আপনি রাতে বাবুর কথা বললেন না ,তাই আমি স্বপ্ন দেখছিলাম যে , আমি একটা বাবু কে কি*স দিয়েছি। এখন ঘুম ভেঙ্গে দেখি যে আপনি হয়ে গিয়েছেন।হা,হা,হা, ।

চলবে ইনশাআল্লাহ…

#ভালোবাসি_প্রিয় (১৫)

#অপরাজিতা_রহমান (লেখনীতে)

আসলে আপনি রাতে বাবুর কথা বললেন না,তাই আমি স্বপ্ন দেখছিলাম যে, আমি একটা বাবুকে কি*স দিয়েছি। এখন ঘুম ভেঙ্গে দেখি যে আপনি হয়ে গিয়েছেন।হা,হা,হা।

হা,হা,হা।তাই নাকি? কিন্তু আমি তো দেখলাম আমার বউ আমার কপালে কি*স দিল। কিন্তু তুমি তো দাও নি। তাহলে বোধহয় স্বপ্নে আমার দ্বিতীয় ব‌উ এসে দিয়ে গিয়েছে।

দ্বিতীয় বিয়ে করার খুব শখ আপনার তাই না?

শখ তো আছে বটে। তুমি তো আমাকে পাত্তাই দাও না। আমাকে ভালোবাসো না। তাহলে কি করা উচিত তুমিই বল?

আপনি দুইটা কেন দশটা বিয়ে করুন। একটা ব‌উয়ে তো হচ্ছে না আপনার। আপনার আরো আরো ব‌উ চায়। ঘর ভর্তি বউ চায় আপনার।

এতো রেগে যাচ্ছো কেন কুয়াশা? তুমি একবার নয় বারবার বলেছ আমার মতো অশিক্ষিত, আনস্মার্ট, থার্ড ক্লাস লোকের প্রতি তোমার কোন ইন্টারেস্ট নেই। আমার দ্বিতীয় বিয়েতে তোমার কিছু যাবে আসবে না। তাহলে তোমার এখন জ্বলছে কেন? তোমার জন্য এক লাইন গান গাইতে ইচ্ছে হচ্ছে। শুনবে তুমি?

আপনার গান শোনার কোন ইন্টারেস্ট নেই আমার।
নিজের গান নিজেই শুনেন।

গান টা তোমার জন্য গাইব। এখন তুমি যদি না শোন তাহলে কি হয় বল।শুননা প্লীজ।

ঠিক আছে শোনান।

“রাজ অন্যের হলে কুয়াশার কেন জ্বলে রে বন্ধু কুয়াশার কেন জ্বলে”।

মোটেই আমার জ্বলছে না।তবে আফসোস হচ্ছে আপনার জন্য।

কিসের আফসোস?

এই যে আপনি দ্বিতীয় বিয়ে করতে চাচ্ছেন। অথচ আপনার মতো থার্ড ক্লাস লোকের সাথে কোন বাবাই তার মেয়েকে বিয়ে দিবে না।আমি দেখে দুই মাস আপনার সংসার করছি। আপনার সাথে এক‌ই ছাদের নিচে এক‌ই বিছানায় থাকছি। আমার জায়গায় অন্য কোন মেয়ে হলে কবেই এই সংসার ছেড়ে চলে যেত।

দিন দিন তুমি অনেক ঝ*গ*ড়া*টে হয়ে যাচ্ছো কুয়াশা। শুনেছি মায়ের দোষ গুণ নিয়ে নাকি সন্তান পৃথিবীতে ভূমিষ্ট হয়। তুমি যে ঝ*গ*ড়া*টে না জানি আমার পোলাপাইন কি পরিমানে ঝ*গ*ড়া*টে হবে। আবার দেখছি মহিলাদের মতো ডায়ালগ ও দিতে শিখে গেছ। বাবার সাথে যখন আম্মার ঝ*গ*ড়া হয় তখন এমন ডায়লগ আম্মা কে ও দিতে শুনেছি । এইটা হচ্ছে মেয়েদের জাতীয় ডায়লগ।

পোলাপাইনের কথা শুনে লজ্জায় রাজের বুকে মুখ লুকালাম।এই লোকটা হচ্ছে এক নাম্বারের বদ অ*স*ভ্য।কথায় কথায় শুধু লজ্জা দেয়।

তবে তোমার সাহসের তারিফ করতে হচ্ছে ‌। আমার বুকের উপর থেকে আমাকেই হু*ম*কি দিচ্ছো। মনে হচ্ছে বুকটা তোমার নামে দলিল করে দিয়েছি। সারারাত আমাকে অশান্তি তে রেখে নিজে শান্তি করে ঘুমিয়েছে। কোথায় আমাকে ধন্যবাদ দিবে তা নয় তো সকাল সকাল ঝগড়া করা শুরু করে দিয়েছ। তাড়াতাড়ি উঠে ফ্রেশ হয়ে নামাজ পড়ে নাও।

ওয়েট,ওয়েট। আমি আপনাকে কিভাবে অশান্তি তে রাখলাম।

ও তুমি বুঝবে না। তোমার বোঝার বয়স হয় নি।

আপনি কেমন বুঝদার পুরুষ আমার খুব ভালো করে বোঝা হয়ে গেছে।

আজ শুক্রবার। আমার ছুটির দিন। ঝ*গ*ড়া পরেও করতে পারবে। এখন তাড়াতাড়ি উঠ। নামাজ পড়তে হবে।

নামাজ পড়ে ভাবলাম অনেক দিন ছাদে যাওয়া হয় না একটু ছাদ থেকে ঘুরে আসি। কিচেনে এসে এক কাপ গ্ৰীনটি করে ছাদে চলে এলাম। ছাদে গিয়ে দেখি রাজ গাছে পানি দিচ্ছে। আমাকে দেখে রাজ বলল, ঠান্ডার মধ্যে ছাদে আসতে গেলে কেন?আর আসলেই যখন গায়ে একটা চাদর দিয়ে আসতে।একা একা চা খাচ্ছো আমার জন্য ও এক কাপ আনতে পারতে।

আমি জানতাম নাকি আপনি ছাদে আছেন। আপনি তো গ্ৰীনটি খান না। আমি এক্ষুনি আপনার জন্য কফি করে নিয়ে আসছি।

থাক তোমার আবার কষ্ট করে কফি করতে যেতে হবে না।গ্ৰীনটি খাই না তো কি হয়েছে?আজ খেয়ে দেখব এর স্বাদ কেমন? একথা বলেই রাজ ছো মেরে আমার হাত থেকে চায়ের কাপ নিয়ে কাপের যে অংশে আমি ঠোঁ*ট লাগিয়ে খেয়েছি রাজ ও ঠিক একই অংশে ঠোঁ*ট লাগিয়ে চা খেতে শুরু করল।
বাহ্ দারুন স্বাদ তো। তুমি কি চা তে মধু মিশিয়েছ?

ইয়ার্কি ডু করছেন?গ্ৰীনটি খেতে একদম বাজে ।আর আপনি বলছেন দারুন স্বাদ।

হুম ‌। আচ্ছা এখন কি রান্না করব বল।

গরম গরম খিচুড়ি হলে মন্দ হয় না।আর খিচুড়ির সাথে যদি শুকনো মরিচ ভর্তা ডিম ভাজি থাকে তাহলে তো কোন কথাই নেই। অতঃপর দুইজনে মিলে রান্নার পর্ব শেষ করলাম। রাজ খেতে বসেছে । আমি খাবার পরিবেশন করছি।

কুয়াশা! এতো ভাত দিচ্ছ কেন?

আপনি যতটুকু পারেন খান।আর বাকি টা বাসার বিড়াল কে দিব। বিড়াল কে যদি আমরা খেতে না দেই তাহলে বিড়াল ক‌ই পাবে খাবার?

ঠিক আছে। তবুও অল্প দাও। ভাবছি এখন থেকে অল্প অল্প খাবো।না হলে তো ভুরি হয়ে যাবে। তখন আর দ্বিতীয় বিয়ে করার জন্য মেয়ে পাবো না।

গতকাল থেকে রাজের মুখে দ্বিতীয় বিয়ে করার কথা শুনে অনেক খারাপ লাগছে। মূহুর্তের মধ্যে চোখ ভিজে গেল। অথচ কিছুদিন আগে আমি নিজেই তাকে দ্বিতীয় বিয়ে করার কথা বলেছিলাম। আমার দূর্বলতা যাতে রাজের সামনে প্রকাশ না পাই তার জন্য না খেয়েই রুমে চলে আসলাম। খুব কান্না পাচ্ছে আমার। এতো বুঝদার লোক অথচ এইটা বোঝে না তার দ্বিতীয় বিয়ে করার কথা আমাকে ঠিক কতটা কষ্ট দেই। আমার ভেতর টা দুমরে মুচড়ে শেষ হয়ে যায়। কিন্তু রাজ যদি সত্যি সত্যিই দ্বিতীয় বিয়ে করে, তাহলে আমার কি হবে? আমি কখনোই পারব না আমার সামনে রাজ অন্য মেয়েকে #ভালোবাসি_প্রিয় বলছে এইটা শুনতে।




শীতল প্লীজ একটু বোঝার চেষ্টা কর।প্লীজ আমাকে একটা সুযোগ দাও।

ক্ষমা করবেন। আমি কখনোই পারব না আমার বোনের প্রাক্তন প্রেমিক কে বিয়ে করতে। কুয়াশা যদি আগেই আমাদের সবটা বলত তাহলে আজ এই সমস্যা হতো না। দুঃখিত আমি এই বিয়ে করতে পারব না।আর বাবা ও নিশ্চয় চাইবে না তার বড় মেয়ের প্রাক্তন প্রেমিকের সাথে ছোট মেয়ের বিয়ে দিতে।

তোমার সমস্যা কোথায় আমি বুঝতে পারছি না শীতল? কুয়াশা ভালো আছে রাজের সাথে। আমি কুয়াশা কে দেখেই বুঝতে পেরেছি আমার প্রতি এখন আর ওর কোন ফিলিংস নেই। ইনফ্যাক্ট ওর আমার রিলেশন টা অন্য পাঁচ দশটা কাপলের মতো ছিল না। কুয়াশা সবসময় ওর টিকটক নিয়ে ব্যস্ত থাকত।আর এদিকে আমি আমার বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম। এমন ও অনেক হয়েছে আমাদের সপ্তাহে একদিন কথা হতো।মাসে একদিন দেখা হতো।আর তখন ও কুয়াশা ওর টিকটকের ফ্যান ফলোয়ার্সদের কথা বলে যেত। আমার তো মনে হয় আমরা দুজন দুজনকে কখনো ভালোবাসি নি। আমাদের নামে মাত্র রিলেশন ছিল।এর পর যখন আমার মধ্যে দ্বীনের বোধ জাগ্রত হলো। আমি বুঝতে পারলাম আমি একটা হারাম রিলেশনে জরিয়ে আছি , তখন আমি এই হারাম রিলেশন থেকে বেরিয়ে আসলাম। আমি ব্রেকআপ করলাম কুয়াশার সাথে। বিশ্বাস করো শীতল আমি এখন অনেক পরিবর্তন হয়ে গিয়েছি।দাড়ি রেখেছি , নামাজ পড়ছি, ইসলাম কে পরিপূর্ণ ভাবে জানতে চেষ্টা করছি। তুমি কি আমাকে একটা বার শেষ সুযোগ দিবে শীতল? সুযোগ দিবে তোমার হাত ধরে জান্নাতে যাওয়ার?

চলবে ইনশাআল্লাহ…
ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে