ভালোবাসা ( এক অনুভুতি)
পর্ব ৬
লেখা kashfuzjahan
গত কয়েকদিনে আদ্রিয়ান আর নওশির বন্ধুত্বটা বেশ ভালো হয়েছে। নিলয় এসব পছন্দ না করলেও কিছুই বলতে পারছে না কারণ তার কাছে নওশির জীবন সবার আগে। তাও বিরক্ত হয়ে জিসানের কাছে গেল।
– ভাই নওশির এভাবে আদ্রিয়ানের সাথে মেশাটা আমার একদম পছন্দ হচ্ছে না (নিলয়)
– ভালো কি আর আমার লাগছে বল। তাও মানতে হবে। আমাদের হাত পা বাধা (জিসান)
– যা করবা কর নাহলে ওকে শুট করব ( নিলয়)
– কাম ডাউন মাই এ্যান্গ্রি বয়। সহ্য কর। এতো এনকাউন্টার আর শুট করার কি দরকার তোমার। জাস্ট চিল ( জয়)
– হ্যা তোমার আর কি। তুমি তো বলেই চুপ। আমার ই ফাটটাছে। ( নিলয়)
– আহা গো আমার প্রেমিক পুরুষের ফাটতাছে ( জয়)
– শালা বউয়ের বড় ভাই নাহলে তোকে দেখে নিতাম। ( নিলয়)
– ওই তুই কি কইলি?? যা দিমু না তোরে আমার বইন ( জয়)
-বড় ভাইয়াাা দেখ কেমন করে। ( নিলয়)
– তোদের ইদুর বিড়ালের খেলা শেষ কবে হবে?? (জিসান)
– এ জন্মে না ( জয়)
– বদ শালা ( নিলয়)
এমন সময় জিসানের মোবাইলে একটা কল আসে।
– কি!! সত্যি বলছো তুমি?? তোমার কথা যদি সত্যি হয়। আর প্রমাণ ঠিকঠাক দিতে পার তো তোমাকে শুধু ৩০০ কোটি না বরং এতো টাকা দিব যে তোমার ৪ প্রজন্ম বসে খাবে। আসছি আমি ( জিসান)
– জয় একটু চলতো আমার সাথে কাজ আছে। ( জিসান)
– হ্যা দাড়াও গাড়ির চাবি নিয়ে আসি। ( জয়)
– আমিও যাই ভাইয়া ( নিলয়)
– তোর যেয়ে কাজ নেই বরং তুই নওশি কে সময় দে। (জয়)
– কিন্তু ওতো আদ্রিয়ানের সাথে। আমি কই পাব। ( নিলয়)
– আমি কল করছি তাড়াতাড়ি চলে আসবে ( জিসান)
অন্যদিকে,
বন্ধুত্বের বাইরেও আদ্রিয়ান আর নওশির সম্পর্ক এগিয়ে গেছে নিজেদের অজান্তেই। আদ্রিয়ান তার কলিজা কে কাছে পেয়ে সব ভুলে গেছে। নওশিও যেন তার ডাকে সাড়া দিতে প্রস্তুত। মেঘলাদিনে ঝড়জড় বাতাসের সাথে প্রথমবারের মতো মিলন ঘটে দুটো হৃদয়ের।
কিন্তু এতো সুখ সইবে তো আদ্রিয়ানের কপালে? কারণ সে যে সুখ হীন জীবনে অভ্যস্ত।
এক পুরোনো মসজিদের পিছনে,
– হ্যালো ইজ এনিবডি দেয়ার?? কেউ কি আছেন?? সাড়া দিন প্লিজ। ( জিসান)
– ভাইয়া তুমি শিওর তো যে এখানেই ডেকেছিলো ( জয়)
– হ্যা এই জায়গাই তো বলেছিলো ( জিসান)
– ওয়েলকাম মি. জিসান। একা আসতে ভয় পাচ্ছিলেন বুঝি। ভাইকে আনতে হলো। ( অপরিচিত)
– সেটা তোমাকে ভাবতে হবে না। তোমার কাজ তুমি কর ( জয়)
– হা হা হা ঠিক বলেছেন মি, জয় আমার কাজ আমি করি। বাই দ্যা ওয়ে।
যেখানে দাড়িয়ে আছেন সেখান থেকে বা দিকে ১৫০ পা গেলেই একটা পাথর দেখতে পারবেন। তার নিচে আপনাদের প্রমান গুলো আছে। ওগুলো নিয়ে পাথরটার নিচেই টাকা গুলো রেখে চলে যান। (অপরিচিত)
– কিন্তু একবার দেখা হলে ভালো হতো না কি?? ( জয়)
– আরে ছোট ভাইয়া দেখার কি দরকার?? যার যা দরকার পেয়ে গেছি। আল্লাহ হাফেজ(অপরিচিত)
খাম হাতে নিয়ে বাড়ি ফেরে জয় আর জিসান। নওশি ফেরেনি দেখেও কিছু না বলে নিলয়কে নিয়ে জিসানের রুমে যায়। খাম খুলে দেখে কিছু ছবি আর ভিডিও।
যেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে আদ্রিয়ান আর নওশির বিয়ের ঘটনা। আর ভিডিও চালিয়ে দেখতে পেল কিভাবে পার্টিতে অপমান করেছিল নওশিকে আদ্রিয়ান।
– এতো বড় ধোকা জয় চৌধুরীর সাথে। আজ ওকে পেলে খুন করে ফেলব( জয়)
– শুধু খুন নয় কি কি যে হবে আল্লাহ ভালো জানে। আমার কলিজায় হাত দেয়া ( জিসান)
এমন সময় নওশিকে নিয়ে বাড়ি ফেরে আদ্রিয়ান। ওকে দেখেই যেন ওদের রাগ ১০ গুন বেড়ে যায়। প্রথমে নিলয় মারা শুরু করে পরে জয় আর জিসান যোগ দেয়।
– ভাইয়া ওকে কেন মারতেছো?? প্লিজ ওকে মেরো না আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে ( নওশি)
– তুই জানিস না নওশি ওর জন্য তোকে কত কষ্ট পেতে হয়েছে। সেইদিন গুলা তুই ভুলছিস আমরা না। (জয়)
– ও এমন কিছু করতে পারে না। প্লিজ ওকে ছেড়ে দাও। বলেই নওশি মাথা চেপে বসে পরে।
– ওকে ছেড়ে দিব?? ওর লাশও কেউ পাবে না। ( নিলয়)
– পৃথিবী থেকে ওর নাম মিশায় দিব আজ। ( জিসান)
– বাস। ইনাফ। জয় কিছুই করে নি। যা করার প্রত্যয় করেছে। ( নওশি)
– কি বলছিস বনু তুই এসব ( জিসান)
– হ্যা ভাইয়া আমি ঠিকই বলছি। আদ্রিয়ান আমাকে প্রথমে পছন্দ করতো না। কিন্তু প্রত্যয় প্রথম থেকেই আমাকে লাভ করত। তাই যেদিন আমি আদ্রিয়ানের বাড়ি থেকে বের হয়ে আসি ওইদিন আমাকে প্রত্যয় প্রপোজ করে। আমি না বলায় আমাকে কিডন্যাপ করে নেয়। আর তারপর তোমরা জানো ( নওশি)
– এতো বড় সাহস আমাদের সাথে ক্রসিং করা ওকে শেষ করে ফেলব। (জয়)
– তার আগে আমার আদ্রিয়ান কে বাচাও ভাইয়া প্লিজ (নওশি)
এতোক্ষণে তারা খেয়াল করল আদ্রিয়ানের অবস্থা ভালো না। ৩ জন মিলে মারার ফলে নাক মুখ দিয়ে লালা ঝড়ছে সাথে অনবরত রক্ত বের হচ্ছে।
অবস্থা খুব খারাপ তাই এম্বুলেন্স এর অপেক্ষা না করে গাড়ি নিয়েই চলে যায় জয়, জিসান, আর নিলয়ের একটা কল আশায় সে যেতে পারে না।
চলবে??