ভালোবাসা ( এক অনুভূতি)
পর্বঃ৪
লেখা kashfuzjahan
আদ্রিয়ান চোখ খুলে দেখতে পায় একটা হসপিটালে শুয়ে আছে সে। ডাক্তার তাকে দেখে হাসি মুখে বলে।
– অবশেষে জ্ঞান ফিরল আপনার?? যা খেলা দেখালেন ভাই। পর পর ৩টা অপারেশন করতে হয়েছে। ১২দিন পর আপনার জ্ঞান ফিরল। মানতে হবে আপনার স্তীর ভালোবাসা কে। এ পাও নড়ে নি আপনার কাছ থেকে। ভাগ্য করে বউ পেয়েছেন ভাই। এমন বউ সবাই পায় না। আজরাইল আর আপনার মাঝ খানে দেয়ালের মতো দাড়ায় ছিল। (ডাক্তার)
সব কথা শুনে আদ্রিয়ান নওশির দিকে তাকালো। পাশেই সোফাতে শুয়ে আছে নওশি। দেখেই বোঝা যাচ্ছে এই কয়েকদিনে কি গেছে ওর উপর দিয়ে।
ফ্লাশ ব্যাক,
গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে সব কিছু কেনা শেষ করে আদ্রিয়ান। গাড়ি চালাতে চালাতে সাগরের সাথে কথা বলছিল সে হঠাৎ করে ট্রাক এসে আদ্রিয়ানের গাড়িকে ধাক্কা দেয়। আর সাগর হঠাৎ এসব কিছুর শব্দ শুনে কিছু বিপদ আন্দাজ করে তাড়াতাড়ি ঘটনা স্থলে পৌছায়৷
বর্তমান,
সব ভাবতে ভাবতে নড়ে ওঠে আদ্রিয়ান, সাথে সাথেই তার ব্যথা অনুভব হয়। কারণ বেচে গেলেও শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা রয়েছে।
আদ্রিয়ানের আওয়াজ শুনেই জেগে ওঠে নওশি। তাড়াহুড়ো করে কাছে আসে সে। তারপর জিজ্ঞেস করে
আপনি ঠিক আছেন তো?? ব্যথা লাগে নি কোথাও?? খুব কষ্ট হচ্ছে?? ( নওশি)
এসব কথা শুনে হাসতে শুরু করে আদ্রিয়ান। কেউ কি করে এতোটা ভালো হতে পারে? কিছু বলতে যাবে তার আগেই ডাক্তার এসে পরে।
– মি, আদ্রিয়ান। আপনি মোটামুটি ভালোই আছেন। বাসায় যান। তারপর কিছুদিন টোটাল বেড রেস্ট। আর ঔষধ ঠিকঠাক খাবেন। আশা করি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন। ( ডাক্তার)
পরেরদিন হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরে আদ্রিয়ান। তাই নওশি ভাবে এই কয়দিন হসপিটালে ছিল তো ওর গা মুছে দিয়ে কাপড় বদলে দেই। কিন্তু যেই কাছে গেল
– ওই ওই কি কর তুমি আমার সাথে?? কি হচ্ছে এসব? (আদ্রিয়ান)
– কই কি? শুধু আপনাকে গোসল করায় দিব। আর কাপড় বদলায় দিব। ( নওশি)
– নাাাা এটা হতে পারে নাাাা। তুমি আমার মতো একটা ইনোসেন্ট বেচারা পুরুষের ইজ্জত এভাবে নিতে পারো না। আল্লাহ সহ্য করবে না ( আদ্রিয়ান)
– পারি অবশ্যই পারি। আরও অনেক কিছুই পারি দেখবা? ( নওশি)
– একবার সুস্থ হতে দাও। তারপর দেখব কি কি পার। ( আদ্রিয়ান মনে মনে)
– ওই আবার বির বির করে কি বলো হ্যা? জোরে বলো(নওশি)
– আল্লাহ তোমাকে বিচার দিলাম। তুমি এই অত্যাচারের বিচার কর আল্লাহ (আদ্রিয়ান নওশিকে শুনিয়ে)
এবার আর নওশি কিছু বলতে পারল না। পেট চেপে হাসা শুরু করল। এভাবেই দিন যাচ্ছিল দুজনের। নওশির ভালোবাসা আর সেবা যত্নে এখন আদ্রিয়ান বেশ সুস্থ। হাটতে গেলেও তেমন সাহায্য লাগে না।
তবে নওশি তেমন হাটতে দেয় না। শুধু বিকালে বাইরে নিয়ে যায়।
এর মধ্যে একদিন প্রত্যয় আর সাগর এলো আদ্রিয়ানের ফ্লাটে। রাতের খাবার শেষে আড্ডা দিতে বসেছে ৩ বন্ধু।
– কি রে তোর তো ১০০ দিনের সময় শেষ প্রায়। এখন কি ছেড়ে দিবি নওশিকে ( প্রত্যয়)
– মানে কি বলছিস এসব( আদ্রিয়ান)
– তুই তো বলেছিলি কোন জংলি মেয়ের সাথে থাকা দি আদ্রিয়ান খানের পক্ষে সম্ভব না (প্রত্যয়)
– আগের আমি হলে হয়তো ডিভোর্স দিয়ে দিতাম। কিন্তু ও আমার জন্য যা যা করেছে তারপরও ওকে কিভাবে ছেড়ে দিব আমি তো মানুষ। ( আদ্রিয়ান)
– এসব কি বলছিস তুই তোর মাথা ঠিক আছে?? ( সাগর)
– হুম একদম। আগে পাগল ছিলাম তাই এসব বলতাম৷ কিন্তু নওশি সব পাল্টাতে সাহায্য করেছে আমায়। ( আদ্রিয়ান)
– তাহলে আলহামদুলিল্লাহ। তোরা ভালো থাকলেই হলো। আজ আসি বাই ( সাগর)
এদিকে নিজের রুমে কান্না করছে নওশি। কারণ সে যে আদ্রিয়ানের অর্ধেক কথা শুনেছে।
পরের দিন সকালে,,
আদ্রিয়ান ঘুম থেকে উঠে আজ চা আর ঔষধ পেল না।তাই নওশিকে ডাকতে লাগল। অনেক ডাকার পরেও সারা পায় নি শেষে সারা বাড়ি খুজতে লাগল।
নওশিকে না পেয়ে তার মোবাইলে কল দেয় আদ্রিয়ান। কল টা পাশেই বেজে ওঠে। হাতে নিয়ে দেখে তার নাম
unwanted love
দিয়ে সেভ করা। সাথে একটা চিঠি আর একটা কাগজ। কাগজটি চেক করে দেখে সেটা একট ডিভোর্স পেপার। আর চিঠিতে লেখা,,
dear
unwanted love
না চাইতেও তোমায় বড্ড ভালোবেসে ফেলেছিলাম। জানি না কেন। তবে কাল বুঝতে পারলাম তুৃমি আমাকে ভালোবাস না। আর ডিভোর্সও দিতে পারছো না। তোমার জিবন বাচিয়েছি তাই।
কিন্তু মন খারাপ করিও না। আজ ১০০ দিন শেষ তাই আমি চলে যাচ্ছি। তুৃমি তোমার মনের মতো কাউকে বিয়ে করে নিও। আমার সাথে এডজাস্ট করতে হবে না তোমার। তোমার কষ্ট দেখতে পারব না। তাই চলে গেলাম
ইতি
জংলি বিড়াল
চলবে???