ভালোবাসা ( এক অনুভূতি)
পর্ব:২
লেখা: kashfuzjahan
ঢাকায় ফিরে মেয়েটিকে নিয়ে বাসায় না গিয়ে আলাদা একটা ফ্লাটে তোলে আদ্রিয়ান। বাসায় এনেই যেন অত্যাচার শুরু হয় আদ্রিয়ানের। মেয়েটাকে ছুড়ে দেয় মেঝেতে।
– মিস জংলি বিড়াল,, তোমার পরিবারের সবাই তো আমাকে বাধ্য করল তোমাকে বিয়ে করতে। তাই বলে ভেব না তোমার মতো জংলির সাথে আমি থাকব। ডিভোর্সের জন্য এপ্লাই করব তার আগে ৯০ দিন এক সাথে থাকতে হবে। আর ডিভোর্স হতে ১০ দিন মোট ১০০ দিন তুমি আমার সাথে থাকবা। তারপর যে যার রাস্তায় হাটব। ( আদ্রিয়ান)
– ,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
– ও মিস জংলি বিড়াল বুঝতে পারছো আমার কথা?? যদি বুঝে থাক তো এটাও বুঝে নাও যে তোমার মুখ দেখতে চাই না। নাউ জাস্ট আউট ফ্রম হেয়ার। ( আদ্রিয়ান)
মেয়েটা কিছু না বলে রুম থেকে বাইরে চলে গেল। আদ্রিয়ান আর কিছু না ভেবে ঘুমিয়ে পরে। পরের দিন সকাল বেলা উঠে দেখে তার ফ্লাট টি সুন্দর করে সাজানে। দেখে বেশ খুশি হয় সে। কিন্তু আগের দিনের কথা মনে পরতেই তার মাথা গরম হয়ে যায়।
– জংলি বিড়াল ওই জংলি বিড়াল কই তুই। কাম হেয়ার রাইট নাও। (আদ্রিয়ান)
মেয়েটি সামনে এসে মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে কিছু বলে না। এতে আদ্রিয়ানের মেজাজ আরো খারাপ হয়।
– ওই তুই কি বোবা নাকি?? কাল থেকে তুমি বলছি জন্য তোর ভাব বেড়ে গেছে না?? যা খাবার নিয়ে আয়। আই ফিল রিয়েলি ভেরি হাঙ্গরি। (আদ্রিয়ান চিৎকার করে)
মেয়েটা কোন কথা না বলে খাবার নিয়ে আসে। টোস্ট, এগ ফ্রাই আর জুস। খাবার দেখা অবাক হলেও কিছু না বলে খাবার খেয়ে বেড়িয়ে যায় আদ্রিয়ান। সন্ধ্যায় কয়েকটা 3 পিস কিনে চলে আসে। আর দিয়েই বেড়িয়ে যায়। অনেক রাতে ফিরে আসে। কিন্তু অনেক ধাক্কাধাক্কির পরও দরজা খোলেনা ভিতর থেকে। পরে রাগে গজগজ করতে করতে নকল চাবি দিয়ে দরজা খোলে সে।
ঘরে ঢুকে দেখে লোড শেডিং হয়েছে। মোম জালিয়ে কয়েক পা এগিয়ে যেতেই দেখে মেয়েটি অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। তাড়াতাড়ি বিছানায় নিয়ে ওর জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করে। কিছুক্ষণ পর মেয়েটির জ্ঞান ফেরে।
– এই মেয়ে তুই অজ্ঞান হয়েছিলি কেন?? অন্ধকারে ভয় পাস বলেছিলি কি? একটা কল দিলে কি হতো? ওহো আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম তোর মতো জংলি বিড়াল আবার মোবাইল ব্যবহার করে নাকি?? আল্লাহ কার পাল্লায় ফেল্লা তুমি রক্ষা কর? জংলি বিড়াল একটা ( আদ্রিয়ান)
– দুঃখিত, মাফ করবেন (মেয়েটি)
বলেই মেয়েটি পাশের রুমে চলে গেল। এদিকে মেয়েটির কন্ঠ শুনে অবাক আদ্রিয়ান। কি করে কারো কন্ঠ এতো সুন্দর হতে পারে?? যাই হোক বাইরে থেকে খেয়ে এসেছে। তাই ঘুমিয়ে পড়ল। পরেরদিন ফেরার সময় একটা মোবাইল নিয়ে এলো
– আজ থেকে এটা তুই চালাবি। পারিস তো নাকি শেখায় দিতে হবে??( আদ্রিয়ান)
– পারব। কিন্তু আপনি কি আপনার ভাষা শেখাবেন আমায়?? কারণ আমার ভাষা আপনি বুঝবেন না। (মেয়েটি)
– ওরে আমার জংলি বিড়াল রে, আসছে ভাষা শিখতে, তোর জন্য তোর অঞ্চলের ভাষাই থাক। এমনিতেও ১০০দিন পর ওই জঙ্গলেই যাবি তুই। ( আদ্রিয়ান)
এর কয়েকদিন পর প্রত্যয় কল করে আদ্রিয়ানকে বলে তোদের স্বামী-স্ত্রীর জন্য একটা পার্টি এরেঞ্জ করছি আশা করি আসবি। কথাটা শুনে আদ্রিয়ানের মাথায় বাজ ভেঙ্গে পড়ে। কারণ সে চায় না এই জংলি বিড়াল কে কেউ দেখুক। অবশেষে এক প্রকার বাধ্য হয়েই মেয়েটিকে নিয়ে রওয়ানা হয় পার্টিতে।
লেডিস এন্ড জেন্টেলম্যান আজ আমি প্রত্যয় আমার প্রাণ প্রিয় বন্ধু এবং বিজনেস পার্টনার আদ্রিয়ানের বিয়ের জন্য পার্টি দিচ্ছি গিভ দেম আ বিগ উইস। আর সেই সাথে আমাদের ভাবীকে বলব যাতে আমাদের কে একটা গান শোনায়।
কথাটা শোনার সাথে সাথে আদ্রয়ান প্রত্যয় কে সাইডে টেনে নিয়ে যায়।
– ওই শালা তুই কি বলস এসব? ( আদ্রিয়ান)
– কেন কি ভুল বলছি?? গান ই তো শুনব( প্রত্যয়)
– তুই জানিস ওই জংলি টা পাহাড়ি। বাংলা বলতে পারে না আর গান শোনাবে। আমার মান নষ্ট না করলে তোর হয় না?? ( আদ্রিয়ান)
– হা হা হা ডোন্ট জাজ আ বুক বাই ইটস কভার ( প্রত্যয়)
– কি,,কি,,কিন্তু ( আর কিছু বলতে যাবে তার আগেই গানের আাওয়াজ শুনতে পায়। কেউ গিটার বাজিয়ে গাইছে। পিছন ফিরে দেখে মেয়েটা
akho main asu leke
Hotho se muskuray
Hum jaise ji rahiha koyi jike to batay.
Jo tutke na tute
Koye aisa dil dekhay
Hum jaise ji rahihe koye jike to batay
…………………………………
অবাক হয়ে সবাই গান শুনছে। কারণ এতো সুন্দর গলা শুধু মাত্র শিল্পীরই হতে পারে। গান শেষে সবাই মেয়েটি কাছে যায়। এসব যেন সহ্য হচ্ছিল না আদ্রিয়ানের। কারণ এমনিই মেয়েটিকে আজ পরীর মতো লাগছে তার উপর এতো ভালো গান। সবাই ওর দিকে যাবেই।
তাই এক প্রকার জোর করেই টানতে টানতে মেয়েটিকে ঘরে নিয়ে আসে আদ্রিয়ান। তারপর মেঝেতে ফেলে দিয়ে উল্টা পাল্টা বলা শুরু করে।
– শালা জংলি বিড়াল। আসছে সবাইকে দেখাইতে যে তুই কতো সুন্দর। শালি জঙ্গলের ভুত, জীবনেও দেখছিলি এমন পার্টি। লোকের কাছে নিজেকে বিলায় দিচ্ছিস ছোট লোক কোথাকার। (নিজের মতো গালি দিয়ে ঘুমিয়ে যায় আদ্রিয়ান)
এতো কিছুর মাঝে সে খেয়াল ই করে নি মেয়েটির কপাল আর হাতের কনুই কেটে রক্ত বের হচ্ছে। তার মাঝে এমন একটা ঘরে মেয়েটাকে থাকতে দেয় যেখানে কিছুই নেই। শুধু মাটিতে চাদর পেতে শুয়ে থাকে মেয়েটি।
চলবে???