ভালোবাসায় তুমি আমি পর্ব-৩+৪

0
1330

#গল্পঃভালোবাসায়_তুমি_আমি
#পর্ব_৩
#লেখিকাঃ রাদিয়াহ রাফা রুহি

স্যার বাচ্চাটির গায়ে একটা ডিএনএ রিপোর্ট আছে!!!!

রিপোর্ট খুলে নিয়ে দেহরক্ষী রিপোর্ট টা শুভ্রের কাছে দিলো।

-তারপর রিপোর্টে যা দেখলো শুভ্র তার জন্য সে প্রস্তুত ছিলো না।।
—তার চোখ গুলো যেন লাল হয়ে যাচ্ছিলো”! –ইম্পসিবল এটা কি করে হতে পারে না কিছুই ভাবতে পারছে না

শুভ্র—-শুভ্র রক্ষীকে হুকুম করলো যে এই জায়গা টা সেল করে বন্ধ করুন।
-আর ইমিডিয়েটলি খোঁজ নিন –বাচ্চার মা কে!
খুজে বের করুন যতো তারাতারি সম্ভব । আর তার সাথে এটাও দেখুন ডিএনএ রিপোর্ট টা নকল কিনা।।

ইয়েস স্যার বলে —রক্ষীরা খোঁজ নেওয়ার জন্য বেরিয়ে পরলো

শুভ্র আর কিছু না ভেবে বাচ্চাটিকে কোলে তুলে নিলো।।কারণ এই বাচ্চা মেয়ে টাকে তো আর এখানে এইভাবে ফেলে রেখে সে চলে যেতে পারে না। উপরে নিজের রুমে গিয়ে বসে পরে বাচ্চাটিকে নামিয়ে দিয়ে আর ভাবতে পারছে না শুভ্র কিচ্ছু —।
———————————————————-




–নীলা এইবার ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে। কিছু দিন পর তার এক্সাম।

তাকে অনেক কষ্টে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে হবে যে করেই হোক। আজ যদি মা বেঁচে থাকতো তাহলেও কি তাকে এতো কষ্ট সহ্য করতে হতো! কখনোই না।

—সে এসব ভাবছে বাসে বসে বসে।।–কিছুক্ষন পর বাস থামলো তার গন্তব্যের কাছে।

— বাস থেকে নেমে হাটতে শুরু করলো নীলা একটু সামনেই তার কলেজ সামনেই কলেজের বড়ো গেট টা দেখা যাচ্ছে।

–নীলার পাবলিক ট্রান্সপর্টে চলাচলের অভ্যাস হয়ে গেছে। সে রোজ সবকিছুই মানিয়ে নিতে পারে পরিস্থিতি সাপেক্ষে।

—তার ছোট বেলার কথা মনে পরছে!
যখন বাবা রোজ তাকে স্কুলে নামিয়ে দিয়ে যেতো গাড়ি করে আবার নিয়েও যেতো।

— খুব একটা আদর করে বা ভালোবেসে যে তাকে তার বাবা স্কুল দিয়ে যেতো তা কিন্তু না। ছোট জন্যই হইতো তাকে দিয়ে যেতো।

তাও নীলা সেই ছোট বেলার মতোই চাই!! যদি বাবা তাকে এখনো কলেজ দিয়ে যেতো। ভাবতে ভাবতেই সে গেটের ভেতর প্রবেশ করলো ।

কলেজের অনেকই তাকে দেখতে পারে না।
সে যে এতো বড় বাড়ির মেয়ে সেটা তো কেউ জানে না।
সবাই তাকে গাইয়া বলে!! কারণ তার ড্রেসআপই এমন তাকে দেখে তো বুঝা যাবে না। -কারন নীলা খুবই সিম্পল ভাবে চলাফেরা করে।

কলেজে অনেকেই আছে নীলার একটু ভালো লাগলো দেখে। সে আস্তে আস্তে তার ক্লাসে চলে গেলো সেখানেই তার বন্ধু প্রাপ্তি বসে আছে সেই একমাত্র মেয়ে যাকে কিনা নীলা প্রথম দিন থেকেই তার পাশে পেয়েছে।।

—নীলাকে দেখেই প্রাপ্তি বললো আয় বস –নীলা গিয়ে প্রাপ্তির পাশে বসে পরলো।

–প্রাপ্তিঃতকে এমন দেখাচ্ছে কেন। কাল কি কিছু হয়ে ছিলো বাসায় নিশ্চয়ই তোর অই হিটলার সৎমা তোকে আবার মেরেছে!!

প্রশ্নাত্তক চোখে তাকিয়ে রইলো সে নীলার দিকে —

নীলাঃহুম মেরেছে তুই তো জানিস তবে আমিও মিসেস খান কাল কে কিছু কথা বলে দিয়েছি —–তারপর কালকের সব ঘটনা বললো প্রাপ্তিকে—

প্রাপ্তিঃঠিক হয়েছে। সব সময় তাকে কারনে অকারণে মারে মাঝে মাঝে এরকম প্রতিবাদ করতে হই।।– তুই যে ওই কুটনি বুড়িকে কেন সহ্য করিস আল্লাহ জানে।।।আমি হলে তো অই মহিলার চুলের মুঠি ধরে শায়েস্তা করতাম।।। ডাইনি রাক্ষসী মহিলা একটা।

দাতে দাত চেপে কথা গুলো বললো প্রাপ্তি।

তখনি স্যার আসলেন ক্লাসে নীলা প্রাপ্তিকে বললো স্যার আসছেন চুপ কর এই বার। প্রাপ্তি চুপ করে একটু নরেচরে ঠিক করে বসলো।আর ক্লাসে মনোযোগ দিলো দুজনেই।
—————————————————–


–বিল্ডিংয়ের টপ ফ্লোরে প্রেসিডেন্সির অফিস বিশাল ঘরটার কন্ট্রাস্টিং সাদা কালো ফার্নিস দেখতে বেশ অভিজাত লাগছে।
কিন্তু এই মুহুর্তে সেই বিশাল জায়গাটা থমথমে হয়ে আছে।।
এসি রুমে বসেও শুভ্র তরতর করে ঘামছে। তার এই মুহুর্তে কিছুই ভালো লাগছে না অস্থির হয়ে আছে সে। যেনো একটা দম বন্ধিকর অস্বস্তিকর অবস্থা।।
যে কেউ মাথা তুলে তাকানোর সাহসই পেলো না

—-
—-কিছুক্ষন পর একটা রক্ষী শুভ্রর কাছে এসে বলে

—-মিস্টার চৌধুরী আমরা আশেপাশে সবাইকে জিজ্ঞেস করেছি।।
কিন্তু কেউই বলতে পারলো না বাচ্চাটা কোথা থেকে এসেছে বার কার —আর না এখানকার কারোর বাচ্চা হারিয়ে গেছে।। আর সিসিটিভি ক্যামেরাতেও কিছু পাওয়া যায়নি।

বাচ্চা টা যেনো হঠাৎ করেই শুন্য থেকে উরে এসেছে কোনো ট্রেস ছাড়াই।।

—-শুভ্রঃ হোয়াট–(জোরে চেচিয়ে) কিছুই খুজে পাননি এটা কি করে হতে পারে।

মিস্টার চৌধুরীর হিমশিতল গলার আওয়াজে সবাই একদম শিউরে ওঠে কেউ আর কথা বলার সাহস পাই না।সবাই ভয়ে ঠান্ডা হয়ে গেলো।
শুভ্র ডিএনএ রিপোর্টটা হাতে তুলে নিয়ে ধপ করে টেবিলের উপরে ছুরে ফেললো

এতো ছোট একটা বাচ্চা তো আর নিজে থেকে এখানে আসতে পারে না তাই না।

—তবে ডিএনএ রিপোর্ট টা যে অথেনটিক তার বেপারে আমরা নিশ্চিত স্যার।।
আপনার কথা মতো রিপোর্ট টাও চেক করে দেখেছি আর এখানে সবচেয়ে বড় ডক্টর কে দিয়ে চেক করিয়েছি।।। ডিএনএ টা যে আপনার সেটা সিউর স্যার।। —-দেহরক্ষী বেশ সাবধানে কথাটি গুলো বললো।

অর্থাৎ ওই ছোট্ট ফুটফুটে পুতুলের মতো মেয়েটা সত্যিই তার সন্তান।।

বিশাল ঘরটা তখনো যেনো পাথরের মতো কঠিন নিরবতা যেনো চারিদিকে ছেয়ে গেলো।

শুধু ওই ছোট্ট নিস্পাপ মিস্টি একরত্তি বাচ্চা মেয়েটাই এই পরিবেশ সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই।।সে তার গোল গোল চোখে চারিপাশটা দেখছে।
তারপর বাচ্চাটা শুভ্রর দিকে গুটি গুটি পায়ে হেটে এগিয়ে গেলো। কোলে উঠার জন্য তার ছোট্ট ছোট্ট হাত বাড়িয়ে তাকিয়ে রইলো তার দিকে আর মিষ্টি কোমল কন্ঠে ঠোট ফুলিয়ে আলতো করে ডেকে উঠে —-
বাবাআআ—

শুভ্র যেনো তার বুকের মধ্যে একটা চাপা কিছু অনুভব করলো –এই ডাকটা যেনো তাকে মায়াই জড়িয়ে ফেললো।।

যেনো তার হার্টের দূবদূবানি নিমিষেই বেড়ে গেলো ঠিক বলে বুঝানো যাবে না–

-তারপর শুভ্র কিছু একটা ভেবে বাচ্চাটির কাছে গিয়ে হাটু গেরে বসলো সেই বাচ্চার সামনে।
—আর বাচ্চা মেয়েটির মুখের দিকে তাকিয়ে শুভ্র চোখ দুটো বন্ধ করে নিলো –মুখটা প্রায় অবিকল তার নিজের মতো।

কেনো যেনো তাকে খুব টানছে মেয়েটির মায়া ভরা মুখ দেখে শুভ্র একটা উতলে উঠা আবেগ সামলালো।
—–হঠাৎই ছোট্ট মেয়েটি তার কোলে উঠে তাকে এমন ভাবে জাপ্টে ধরে আর বলতে থাকে—খিদে— খিদে বাবা খিদে পেয়েছে!!
ছোট্ট মেয়েটি তোতলাতে তোতলাতে বলে——শুভ্র প্রথমে একটু স্থির হয়ে নিলেন।।
পরের মুহুর্তেই সে কিছু না ভেবে মেয়েটির কচি মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে মোয়েটি হা করে হেসে যাচ্ছে।
——————————————————–

–জীনিয়া এখনো পরে পরে ঘুমাচ্ছে।
মুন্নি অকে ডাকতে এসেছে এর আগেও বার কয়েক অকে ডেকে গেছে কিন্তু উঠে নি সে–।


মুন্নিঃ এই আপু উঠ বলছি।। আজ কে তোমার ফাহিম ভাইয়ার সাথে দেখা করতে যাওয়ার কথা আর কতো ঘুমাবে।
এর পর দেরি করলে তো ফাহিম ভাইয়া রাগ করবে তোমার সাথে—

জীনিয়াঃউফফফ সকাল সকাল জালাস না তো যাহ ফাহিম কে আমি বুঝিয়ে বলবো সে নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না।

মুন্নিঃএখন ক’টা বাজে তোর কোনো আইডিয়া আছে এখন বারোটা বেজে যাচ্ছে আর তুই বলছিস সকাল সকাল তকে জালাচ্ছি।

জীনিয়াঃপ্রায় লাফিয়ে উঠলো কিহ বারোটা —আমাকে আর একটু আগে ডাকবি তো এই,,,,,

মুন্নিঃএখন বুঝো–আমি তোমাকে সেই কখন থেকেই ডেকে যাচ্ছি আপু আর তুমি বলছো যে আগে ডাকিনি কেন। হুম এখন যাও ফ্রেশ হয়ে নিচে আসো মম ডাকছে।

জীনিয়াঃ হ্যাঁ হ্যাঁ যাচ্ছি যাহ এতো কথা বলতে হবে ডাকতে এসে। এই বলে সে বাথরুমে চলে গেলো ফ্রেশ হতে।

মুন্নিও জীনিয়ার কথায় কর্নপাত না করে চলে আসলো—

চলবে—-

#গল্পভালোবাসায়_তুমি_আমি
#পর্ব:(৪)
#লেখিকা: রাদিয়াহ রাফা রুহি

লাইট ব্লু ডেনিম,, কালো শার্ট। চুল গুলোকে পনিটেইল করা । ঠোঁটে গাড়ো গোলাপি রঙের লিপস্টিক।। ব্র্যান্ডের কালো ওয়াচ। চোখে ব্র‍্যান্ডের কালো চশমা। পায়ে দামি স্টীলেটো পরে খটখট আওয়াজ করে নিচে নামছে জিনীয়া।

আজ কে তার বফ ফাহিম শেখ এর সাথে দেখা করতে হবে কালই লন্ডন থেকে এসেছে সে। তখনি রিশিকা জিনীয়া কে দেখে বললো ওয়াও বেবি তোমাকে কি সুন্দর লাগছে বেটা।

জিনীয়াঃ —থ্যাংকস মম। আচ্ছা মম আমাকে যেতে হবে। আমার লেট হয়ে গেছে।
রিশিকাঃ আরে বেটা খাবার খাবে না নাকি খেয়ে যাও।

জীনিয়াঃ অফফহো মম আমার অলরেডি লেট হয়ে গেছে আই হ্যাভ গো নাউ। আমি বাইরে খেয়ে নিবো।

রিশিকাঃ ওকে বেটা তুমি যাও ফাহিমকে আমার সাথে দেখা করতে বলো একদিন।

জীনিয়াঃওকে মম বলে দিবো এখন যায় টাটা মম এই বলে জীনিয়া রিশিকা কে হালকা জড়িয়ে ধরে চলে গেলো।

জীনিয়া লন্ডন থেকেই স্ট্যাডি কমপ্লিট করে এসেছে। জিনীয়ার ফাহিমের সাথে লন্ডনেই পরিচয় হয়

জীনিয়ার যখন দশ বছর বয়স তখন তার বাবা মারা যায় কার এক্সিডেন্টে!
আর তার মা রিশিকা বিয়ে করে ইমরান খানকে।

———————————————————

বাচ্চাটি কেদেই যাচ্ছে খিদেই আর শুভ্র কিছুতেই থামাতে পারছে না বাচ্চাটির কান্না।

শুভ্র বাচ্চা টাকে নিয়ে ভাবছে কি করবে। কারন তার সত্যিই জানা নেই একটা বাচ্চা কে কিভাবে থামাতে হয়।

তখনি তরিঘরি করে একজন মাঝ বয়সি মহিলা ঢুকছে তার কেবিনে আর এসেই বলছে শুভ্র বাচ্চাটি কে?

কোথা থেকে এসেছে বাচ্চাটা।
তুমি কি আমাদের না জানিয়ে বিয়ে করেছিলে কি হলো বলো??

শুভ্রঃ কি বলবে সে তার মাকে। সে তো নিজেই জানে যে বাচ্চাটা আসলে কে? আর মাকেই বা কে জানালো কথাটা মনে মনে। এখন আমি কি বলবো মা কে।
মা তো আমাকে ভুল বুঝছে— মাকে ম্যানেজ করতে হবে কিছু একটা বলে।

মাআআ,,(মিসেস মোল্লিকা চৌধুরী) আ-স-লে আমতা আমতা করে বলে মা আমি এই বাচ্চাটাকে চিনি না কোথা থেকে এলো কি করে এলো তাও জানি না।

মোল্লিকাঃ দেখো শুভ্র আমাকে মিথ্যা কথা বলে লাভ নেই সত্যিটা আমি জানি এই বাচ্চাটি যদি তোমাদের না হবে তাহলে এর সাথে তোমার ডিএনএ কিভাবে মিলে যায় বলো আন্সার মি আর আমার বৌমা কে কোথায় রেখেছো বাচ্চার মাকে কোনোদিন বাচ্চায় থাকতে পারে না তুমি জানো না আর তুমি তো আমাকে একবার বলতে পারতে তুমি বিয়ে করছো তাহলে কি আমি মেনে নিতাম না।। আমি নিজেই তো কতো বার জিজ্ঞেস করেছি কোনো মেয়েকে পছন্দ কি না আর এখন বাচ্চার বাবাও হয়ে গেছো আর নিজের বাচ্চাকে অস্বিকার করছো। একদমে কথাগুলো বলে থামলেন মোল্লিকা শুভ্রকে কিছু বলতে না দিয়ে ।।

শুভ্র কিছু বলতে যাবে তখনি বাচ্চাটি আবার কেদে উঠে শুভ্র আর কিচ্ছু বলতে পারলো না।

আর মোল্লিকার চোখ পরলো বাচ্চাটির দিকে এতক্ষন সে খেয়ালই করেনি যে তার ছেলের কোলে একটা ফুটফুটে বাচ্চা মেয়ে।

ছেলেকে বকতে গিয়ে সে খেয়াল করে নি। কি নিস্পাপ এই মুখটা! আর বাচ্চাটিও যেনো মোল্লিকাকে দেখে যাচ্ছে যেনো কতো দিনের চেনা মোল্লিকা তার।

একজন খুব চেনা মানুষকে দেখলে যেমন করে —বাচ্চাটি মোল্লিকাকে দেখে কান্না থামিয়ে দিয়েছে।।

মোল্লিকা হাত বাড়িয়ে দেই বাচ্চাটিকে নেওয়ার জন্য। বাচ্চা মেয়েটাও যেনো হাতে চাদ পাওয়ার মতো খুশি হয়ে গেছে।। মোল্লিকা হাত বাড়াতেই বাচ্চাটি প্রায় লাফিয়ে তার কোলে চলে গেলো।

মোল্লিকা বাচ্চাটিকে নিয়ে আদর করতে থাকে অনেক গুলো চুমু খেতে থাকে গালে মুখে কপালে আর খুটিয়ে খুটিয়ে দেখতে থাকে কারন বাচ্চাটির মুখের সাথে শুভ্রর অনেক মিল।

—শুভ্র তার মাকে দেখে যাচ্ছে যে কিভাবে বাচ্চাটিকে আদর করছে যেনো বাচ্চাটিকে আরও অনেক আগে থেকেই চিনে।

শুভ্র নিরবতা ভেঙে বললো মা বাচ্চাটি বলছিলো অর নাকি খিদে পেয়েছে তুমি অকে কিছু খাওয়াও।।

মোল্লিকাঃকিহ ফিহা কাদছিলো! অস্ফুট সুরে বলে ফেলে।

এই বলেই মোল্লিকা জিব্বাহ কামর দেই এটা কি করে ফেললাম।

শুভ্র যেনো অবাকের সপ্তম আকাশ থেকে পরলো এটা কি বললো মা —সে তার মা কে জিজ্ঞেস করলো মা তুমি কি বললে –ফিহা মানে অকে তুমি চেনো প্রশ্ন করে তার মায়ের দিকে তাকিয়ে আছে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে —

মোল্লিকাঃ এইরে এখন আমি কি বলবো ফিহাকে পেয়ে আমি ভুলেই গেছিলাম আদর করছিলাম করতেই কি বলে ফেললাম মনে মনে ভাবছে মোল্লিকা।

শুভ্রঃকি হলো মা বলো তুমি কি অকে চেনো
আমার এমন কেনো মনে হচ্ছে তুমি অকে চেনো।

মোল্লিকাঃ না –না আ-আমি অকে কি করে চিনবো ।
আমতা আমতা করে। আসলে অকে আদর করতে করতেই অর একটা নাম ভাবছিলাম যে কি নামে ডাকবো তখনি তুই বললি তাই নাম টা ধরেই ডাকলাম।অকে আমি ফিহা বলেই ডাকবো আর ও আমার কাছেই থাকবে।

শুভ্রর যেনো বিশ্বাস করতে মন চাইছে না কেনো মনে হচ্ছে মা কিছু লুকাচ্ছে আমার থেকে। তারপর শুভ্র বললো–
ওহ আচ্ছা।।

এদিকে মোল্লিকা ভাবছে শুভ্র কিছু সন্দেহ করলো না তো।

মোল্লিকাঃ তুই অকে কি বলে ডাকিস।মানে অর নাম কি?আর অর মা ই বা কোথায়।

শুভ্রঃআমি কি করে জানবো অর নাম কি আমি কি এর আগে অকে কোনদিন দেখেছি।
মোল্লিকাঃআবার মিথ্যা বলছিস।

তখনি ফিহা শুভ্রকে ডেকে উঠলো বাবাআআ।

মোল্লিকাঃ চিনিস না তুই অকে তাই না তাহলে এই মেয়েটি তোকে বাবা কেন বলছে।

শুভ্রঃআমি সত্যিই জানি না মা মেয়েটি আমাকে কেনো বাবা বলছে। আজই আমি মেয়েটাকে দেখি এর আগে কোনোদিন দেখি নি ট্রাস্ট মি মা। অসহায় ভাবে মায়ের দিকে তাকিয়ে বললো– শুভ্র

মোল্লিকাঃওকে ঠিক আছে এখন আমি আমার নাতনিকে নিয়ে যাচ্ছি আমার সাথে আর হ্যাঁ তোমার কাছে এক সপ্তাহ সময় আছে তুমি ফিহার মাকে নিয়ে আসবে মানে আমার বৌমাকে দেখতে চাই ।আর না হলে আর কোনদিন আমার সামনে আসবে না এই বলে দিলাম।এই বলে তিনি গটগট করে চলে গেলো।

শুভ্র পিছন থেকে তার মাকে মা মা বলে ডাকলো আর বললো মা আমি অর মাকে কোথায় পাবো আরে মা আমার কথাটা তো শুনো।

মোল্লিকা শুভ্রর কোনো কথা শুনলো না চলে গেলো।

শুভ্র টেবিলের উপরে জোরে একটা পাঞ্চ করলো আর বললো অহ শিট এখন মাও আমাকে ভুল বুঝছে।

কি করবো আমি কোত্থেকে পাবো বাচ্চার মা কে —-কিচ্ছু ভাবতে পারছি না!

শুভ্র একজন দেহরক্ষীকে বললেন গাড়ি বের করুন আমি বের হবো।

দেহরক্ষী মাথা নাড়লো অকে স্যার এই বলে বের হয়ে গেলো।
শুভ্র গাড়ি নিজেই ড্রাইভ করে বেরিয়ে পরে।

——————————————————–
নীলা আর প্রাপ্তি ক্লাস শেষ করে বের হচ্ছে।দুজনেই ঠিক করেছে আজ ফুচকা খাবে তাই হেটে হেটে সামনের দিকে যাচ্ছে।

নীলা খেতে চাইছিলো না কারণ তার কাছে বাস ভাড়া ছাড়া আর কোনো টাকা নেই তাই সে না করছিলো কিন্তু প্রাপ্তি নাছর বান্দা কিছুতেই মানতে রাজি না আজকে খেতেই হবে।

প্রাপ্তি নীলাকে জোর করে নিয়ে যাচ্ছে। আর নীলার কিচ্ছু করার নেই এই মেয়ে যখন বলেছে খাইয়েই ছারবে। নীলা আর প্রাপ্তি হেটে হেটে ফুচকাওয়ালার কাছে যাচ্ছে।

প্রাপ্তিঃএই তুই কি শুরু করেছিস রে হ্যাঁ তুই কি ভয় পাচ্ছিস তোর অই হিটলার মায়ের কথা ভেবে ভ্রু কুচকে বললো প্রাপ্তি।
নীলাঃ না তা নয় আজকে কি খেতেই হবে অন্য দিন খেলে হতো না।।

প্রাপ্তিঃআজকেই খাবো তোর কি কোনো সমস্যা তুই না খেলে বলে দে খাবি না আমার সাথে এতো ভাবার কি আছে। একটু রেগে😤

নীলাঃআরে এতো রাগ করছিস কেনো। ঠিক আছে খাবো।। চল এই বলে অর হাত ধরে হাটতে লাগলাম।

প্রাপ্তিঃ রাগ করব না ইতি মধ্যে তুই ঠিক কত আর না করেছিস যে খাবি না।

এই বলে আমার থেকে হাত টা ছাড়িয়ে নিলো।

নীলাঃআরে বললাম তো যে খাবো।রাগ করিস না বান্ধুবি প্লিজ।

প্রাপ্তিও হেসে দিলো ঠিক আছে আয় আর ঢং করতে হবে না।


—–এদিকে শুভ্র ফুল স্পিডে গাড়ী চালিয়ে আসছে। আর ভাবতে পারছে না শুভ্র কি থেকে কি হয়ে গেলো মাথা কাজ করছে না তার । কি হচ্ছে তার সাথে এসব —
————_————

নীলা আর প্রাপ্তি ফুচকা খাওয়া শেষ করে দুজনেই হেটে হেটে বাড়ি যাচ্ছে।দুজনের কাছে যা টাকা ছিল সব গুলো দিয়ে ফুচকা খেয়েছে যার জন্য এখন হেটেই যেতে হচ্ছে।।।।।

তাঁর মধ্যেই আকাশ টা মেঘাচ্ছন্ন হয়ে আসছে।।।।নীলা আর প্রাপ্তি দ্রুত হেটে যাচ্ছে।

নীলা রেগে গজগজ করে হেটে যাচ্ছে আর প্রাপ্তি কে বকছে।।।

যাহ বাবা বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো এখন
তো নীলা একটা দোকানে দিকে যেতে নিলে প্রাপ্তি নীলার হাত টেনে ধরে,,,,,,,,দাঁত কেলিয়ে বলে উঠে নীলা আমার জানু চল না বৃষ্টি তে ভিজি।

নীলা যেইনা কিছু বলতে যাবে প্রাপ্তি কোনো কথা না শুনে বৃষ্টি তে ভিজতে শুরু করে।

প্রাপ্তি মুচকি হেসে বলে উঠলো নীলা রাগ করিস না। দেখ না কতো সুন্দর ঝমঝম বৃষ্টি কার না ভালো লাগে আর তুই কি রাগ করছিস

নীলাঃ সব তোর জন্য ফুচকা খেতে না গেলে তো আর না দেরি হতো আর না ভিজতে হতো। এখন ভিজে ভিজে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।

আচ্ছা জানু সরি।, এখন তো বৃষ্টি টা উপভোগ কর তারপর দুজনেই ভিজতে থাকে।

চলবে—-

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে