#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
ভালোবাসবো আজীবন তোকে,,,
চিঠির শুরুতে সালাম, ভালো-মন্দ জিজ্ঞেসের বিষয় থাকে। কিন্তু তুমি তো আমাদেরকে ছেড়ে চলে গিয়েছো না ফেরার দেশে, তাহলে কী বলব বা বলার প্রয়োজন তা জানি না। শুধু জানি ভালোবাসি, প্রচণ্ড ভালোবাসি !
আর সেটা তুমি নিশ্চয়ই জানো কারণ তুমি তো এখন শরীরি ভাষায় নেই, তুমি তো আত্মা! তোমার তো জানারই কথা!
প্রতিদিনের মতই আজও চিঠি লিখতেছি তোমাকে
কিন্তু জানা নেই কীভাবে তোমার কাছে পাঠাতে পারব! না ফেরার দেশে চিঠি পাঠানোর ঠিকানাটা আমার সত্যি জানা নেই!
কই এতদিন তো হলো, তুমিও একটিবারেও বললে না। আপু তোকে খুব মনে পড়ছে। একটা চিঠি দিও। আমি হয়তো জানি না, না ফেরার দেশের ঠিকানা, কিন্তু তুমি তো জানো ভাই, কারণ তুমি সেখানেই আছো! তাহলে তুৃমি আমাকে, আমার স্বপ্নের মধ্যে এসে ঠিকানাটা দিয়ে যেতে পার। সেটাও দাও না!
তুমি সেই চলে গিয়েছো আর কোনো খোঁজ খবর নেই। এতটা স্বার্থপর কিভাবে কবে থেকে হতে পারলে ভাই তুমি!
তুমি জানো! তুমি চলে যাওয়ার পর থেকে তোমাকে রোজ মনে করে ফোন দেই! কিন্তু কেনো জানি সব সময়ই ফোন থেকে কিছু কথা ভেসে আসে, “” আপনি যে নাম্বারে ডায়েল করেছেন, সে নাম্বারে এই মুহূর্তে সংযোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না! অনুগ্রহ করে আবার ডায়েল করুন,ধন্যবাদ! “” বল না ভাই, ওখানে কী ফোনের নেটওয়ার্ক নেই!
বল না ভাই, এতদিন কেউ কী ফোন বন্ধ রাখে! তোর কী একবারেও মনে হয় না আমাদের কথা! মায়ের কথা!
জানিস, মা তোর জন্য রোজ বড় গলায় কাঁদে। চার বছর হলো তবুও যেন মায়ের কান্না দেখলে মনে হয়, তুই যেন গতকালকেই মারা গেছিস!
তোর চলে যাওয়ার কষ্টটা তাজা দগদগে এখনো বুকের মধ্যে! আমাদের কথা না হয় বাদই দিলাম। কিন্তু মায়ের কথা ভেবেও তো তুই তোর ঠিকানাটা দিতে পারতিস বল! বল পারিস না!
কিন্তু তুই দিবি না জানি। কারণ অনেক শান্তিতে আছিস তুই পরপারে! সেজন্যই তো মায়ের কথা, আমাদের কথা বেমালুম ভুলে গিয়েছিস!
মনে রাখিস আমি যখন তোর মত না ফেরার দেশে যাব, তখন আমিও তোর সাথে কথাই বলব না। দেখে নিস।
আমি তোকে চিনেও না চেনার ভান করব, দেখিস! তাহলে বুঝতে পারবি কত কষ্ট হয়। প্রিয় মানুষ কথা না বললে, কত কষ্ট হয় প্রিয় মানুষের সাথে অনেকদিন দেখা না হলে! তার কোনো খোঁজ খবর না পেলে কতটা অস্থির হয় প্রিয় মানুষগুলো! বদলা কিন্তু আমি নিবই, নিব দেখিস! আমি তোর আমাদের প্রতি এত উদাসীন দেখে সত্যি আশ্চর্য হই! সত্যি কী তুই আমাদেরকে ভালোবাসতিস!
এইটুকু বয়সে কী চলে যাওয়ার সময় বল ভাই। আমি তো বড় আমার গেলে হতো না! মোটে ২৫ টি বছর কাটিয়েছিস দুনিয়ায়! আর কিছু বছর থেকে যেতে পারতিস! তুই জানিস তোর মৃত্যুর দিনটা আমার বড্ড কষ্ট দেয় আমাকে! আমার জন্মদিনেই তোকে চলে যেতে হবে! আমাকে এভাবে শাস্তি না দিলেও পারতিস! তুই হয়তো ভেবেছিস তুই না থাকলে, আমি তোকে ভুলে যাব তাই না! সেজন্যই তুই আমার জন্মদিনটা তোর মৃত্যুদিন হিসেবে বেছে নিয়েছিলি!
( এটা আমার আবেগি চিন্তা ভাবনা। কারণ জন্ম মৃত্যু সবই আল্লাহর ইচ্ছে। সবার ছোট ভাইকে হারিয়ে প্রায়ই এমন আবেগপ্রবণ হয়ে উঠি আমি)
ইতি,
তোর বড় বোন
মোরশেদা পারভীন