#ভালবাসি_শুধু_তোমায়_আমি
#পর্ব:৪
#তাসনিম_জাহান_রিয়া
আরনিয়া তার পাপাকে দেখে ফোনটা বালিশের নিচে রেখে দেয়। স্পর্শক লাইনে আছে ইচ্ছে করেই ফোনটা রেখে দেয়নি। সে জানতে চায় এহসান খান আরনিয়াকে কী বলে? তবে সে আন্দাজ করতে পারছে এহসান খান কী বলতে এসেছে?
হ্যাঁ পাপা এসো।
তোমাকে কিছু বলার ছিল।
হ্যাঁ বলো।
তুমি তো জানো আর ৫ দিন পরে ইহানের সাথে তোমার বিয়ে।
আরনিয়া মাথা দুলিয়ে সম্মতি জানায় যে, সে জানে।
পাপা আমার তোমাকে কিছু বলার ছিল।
তুমি তো জানো আমার কথার মাঝে কেউ কথা বলুক সেটা আমার পছন্দ না। আগে আমার কথা শেষ করতে দাও তারপর তোমার কথা শুনবো।
সরি।
আমার ধারণা তোমার বিয়েতে গণ্ডগোল হবে।
পাপা কী করে জানলো গণ্ডগোল হবে? ( মনেমনে )
আরনিয়া গাবড়ে যায় নিজেকে সামলে নিয়ে বলে,
পাপা কে গণ্ডগোল করবে?
আদনান আহম্মেদ স্পর্শক। আমিও চাই সে বিয়েতে এসে জামেলা করুক। ইহানের সাথে তোমার বিয়ে হতে দিবে না।
স্পর্শকের নাম শুনে আরনিয়া ভয়ে কাঁপাকাঁপি শুরু করে দেয়। সে ভাবছে তার পাপা কী করে জানলো স্পর্শক বিয়েতে আসবে? আরনিয়া আমতা আমতা করে তার পাপাকে প্রশ্ন করে,,
উনি এতবড় বিজনেসম্যান হয়ে আমার বিয়েতে কেনো জামেলা করতে যাবেন? ইহানের সাথে আমার বিয়ে ভেঙে উনার লাভ কী? তুমি নিজে ইহানের সাথে আমার বিয়ে ঠিক করছো। আবার তুমি নিজেই চাইছো মি. আহম্মেদ জেনো আমার বিয়েতে জামেলা করে। কেনো পাপা?
চুপপপ। তুমি জানো আমার অতিরিক্ত কৌতূহল আর অতিরিক্ত প্রশ্ন কোনটাই পছন্দ নয়। আমি তোমাকে ঠিক যতটুকু বলবো তুমি ঠিক ততটুকু করবে এর বাইরে কিছু জানার চেষ্টা করবে না। মি. আহম্মেদ তোমাকে বিয়ে করতে চাইলে তুমি রাজি হবে না। আমাকে গান পয়েন্টে রেখে যখন তোমাকে বিয়ে করতে বলবে তখন তুমি রাজি হবে। তোমাকে যখন উনার সাথে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে তখন তুমি দ্বিমত পোষণ করবে। আমি জানি মি. আহম্মেদ জোর করে হলেও তোমাকে উনার সাথে নিয়ে যাবে। তুমি উনার বাড়িতে গিয়ে আমার কথা মতো কাজ করবে। ( রুক্ষ ভাবে)
কিন্তু পাপা…….
আমি কোনো কিন্তু ফিন্তু শুনতে চাই না। তোমাকে আমার কথা মতো কাজ করতে হবে।
এহসান খান আরনিয়াকে কিছু বলতে না দিয়ে হনহনিয়ে রুম থেকে চলে যায়।
তারপর স্পর্শক আর আরনিয়া প্লেন করে বিয়ে করে।
বর্তমান
স্পর্শক বাসায় নাহয় ঐ ছেলেটা আমাদের ওপর নজর রাখছিল তাই অভিনয় করা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তুমি গাড়িতে কেনো অভিনয় করতে বললে ওখানে তো তুমি আর আমি ছাড়া আর কেউ ছিল না?
কে বললো ছিল না? সয়ং এহসান খান নিজে ছিল।
মানে?
তোমার হিটলার বাপ গাড়িতে ক্যামেরা লাগিয়ে রেখেছিল।
একদম পাপাকে হিটলার বলবা না।
হিটলারকে তাহলে কী বলবো?
সারা রাত কী আমরা এখানে দাঁড়িয়ে কথা বলবো?
এখানে দাঁড়িয়ে কথা না বলে অন্য কিছুও করতে পারি।
ধুর।
স্পর্শক আরনিয়াকে কোলে তুলে নেয়।
এই কী করছো। নামাও বলছি।
কেনো?
কেনো আবার তোমার হাতে ব্যথা। আমাকে কোলে নিতে হবে না। তুমি বলো কোথায় যেতে হবে। আমি নিজেই যাচ্ছি।
চুপপ তুমি বড্ড বেশি কথা বলো।
স্পর্শক আরনিয়াকে একটা রুমে নিয়ে আসে।
এই ভারি লেহেঙ্গাটা কতক্ষণ ধরে পড়ে আছো বলোতো যাও চেইন্জ করে আসো।
চেইন্জ করে কী পড়বো?
কাবার্ডে ড্রেস আছে পড়ে নাও।
আরনিয়া কাবার্ড খোলে দেখে সব শাড়ি।
স্পর্শক।
কী?
আমি তো শাড়ি পড়তে পারি না আর এখানে শাড়ি ছাড়া তো আর অন্য কোনো ড্রেস নাই।
তুমি যদি ভাবো আমি তোমাকে শাড়ি পড়িয়ে দিবো তাহলে তুমি ভুল ভাবছো। কারণ আমি নিজেও শাড়ি পড়াতে পারি না।
তাহলে এখন কী হবে? ( ঠোঁট উল্টিয়ে)
স্পর্শক ঠোঁটে দিয়ে ঠোঁট চেপে ধরে এক হাত কোমড়ে রেখে অন্য হাত দিয়ে কপালে স্লাইড করে কিছু ভাবছে। কিছুক্ষণ ভেবে বলে,
আমরা দুজন মিলে চেষ্টা করি ইউটুভ দেখে।
ওকে।
৩০ মিনিট ধরে দুজন মিলে চেষ্টা করেও কিছু করতে পারে নাই। উল্টো স্পর্শক নিজেকেও আরনিয়া সাথে শাড়িতে পেছিয়ে ফেলে। স্পর্শক ক্লান্ত হয়ে বেডে বসে পড়ে। স্পর্শক বসে পড়ায় শাড়িতে টান লাগে যার ফলে আরনিয়াও স্পর্শকের ওপর পড়ে যায়। স্পর্শক টাল সামলাতে না পেরে আরনিয়াকে নিয়ে বেডে পড়ে যায়। আরনিয়া স্পর্শকের ওপর থেকে উঠতে যায় কিন্তু পারে না তা দেখে স্পর্শক মিটিমিটি হাসছে। আরনিয়া রাগে কটমট করতে করতে বলে,,
তুমি ছেলে হয়েও শাড়ি পড়াতে পারো না।
ছেলে হওয়ার পেছনে কী শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে নাকি? যে ছেলে হলেই শাড়ি পড়ানো শিখতে হবে?
না মানে সব ছেলেরাই তো বউয়ের সাথে রোমান্স করবে বলে শাড়ি পড়ানো শিখে।
আমি ঐসব ছেলেদের মাঝে পড়ি না। রোমান্স করতে হলে শাড়ি পড়িয়ে করবো কেনো শাড়ি খোলে করবো। ওয়েট ওয়েট তোমার কী এখন রোমান্স করতে ইচ্ছা করছে? আমার কিন্তু কোনো সমস্যা নাই।
আব….
স্পর্শক আরনিয়াক আর কিছু বলতে না দিয়ে আরনিয়াকে ঘুরিয়ে নিজের নিচে ফেলে দেয়। আরনিয়ার হাত দুটো বেডের সাথে চেপে ধরে ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়।
__________________
সকাল ১০ টা
সূর্যের আলো চোখে পড়তেই স্পর্শক আদো আদো করে চোখ খুলে তাকায়। নিজের বুকের ওপর ভারি কিছু অনুভব করায় সম্পূর্ণ চোখ খুলে বুকের দিকে তাকিয়ে দেখে আরনিয়া ঘুটিশুটি মেরে তার বুকের ওপর শুয়ে আছে।
চলবে……..