বেলাশেষে part_7

0
829

বেলাশেষে part_7
#adrin_anisha
.
সানগ্লাস পড়া একটা অত্যন্ত সুদর্শন ছেলে দাঁড়িয়ে আছে মেঘার সামনে। মেঘা মুগ্ধ হয়ে দেখছে তাকে। কালো শার্ট কালো রঙের প্যান্টের ভিতর গুজে রেখেছে। চুল গুলো দারুন সিলকি, এবং একপাশে সিথি করা, বাতাসে চুল গুলো উড়ছে আর সে বার বার চোখের উপর থেকে চুল গুলো সরিয়ে দিচ্ছে। ইসশ চোখের কালো সানগ্লাসটা যেন সোনায় সোহাগা। তার উপর ফরসা চেহারা, এবং ফিট বডি। মেঘা যেন প্রথম দেখায় প্রেমে পড়ে গেল। ঠিক কতক্ষন যে সে এভাবে তাকিয়ে ছিল ছেলেটার দিকে তা সে নিজেও জানে না।
শুভ্র সেটা লক্ষ্য করল এবং মেঘার মুখের সামনে একটা হাত দিল, মেঘার হুশ ফিরল আর রেগে শুভ্রর দিকে তাকালো সে, সাথে সেই ছেলেটাও রাগ নিয়ে তাকালো শুভ্রর দিকে,


– এই ছেলে এখানে কি? ঘন্টা পড়েছে শুনতে পাওনি যাও ক্লাসে এখনি।

ছেলেটার কথা শুনে মেঘা আর সুভা দুজনই তাড়াতাড়ি ক্লাসে গেল। শুভ্র ও আর কিছু বলল না, শুধু শুধু কথা বাড়িয়ে ঝগড়া করার কোনো মানে হয় না।


ক্লাসে গিয়ে মেঘা আর সুভা বসতেই শুভ্র ও এসে পাশের ব্যাঞ্চটায় বসলো। আর তখনই কলেজের ইংরেজি শিক্ষক ও সেই ছেলেটা একসাথে ক্লাসে ঢুকলো। সবাই দাড়িয়ে সালাম দিল, মেঘা, সুভা আর শুভ্র ভেবেছিল এ হয়তো নতুন কোনো ছাত্র হবে। কিন্তু স্যার এর কথা শুনে সবাই থ হয়ে গেল,

” বাচ্চারা, ইনি হলেন তোমাদের নতুন ইংরেজি শিক্ষক। ওনার নাম নীল। উনিই আজ থেকে তোমাদের ইংরেজি পড়াবেন। কোনো সমস্যা হলে ওনাকে বলবে, আশা করি উনি আমার চেয়ে ভালো করে বোঝাতে পারবেন। ”
.
কথা শেষ করে নীল আর স্যার দুজনে হ্যান্ডশেক করে স্যার চলে গেলেন। এবার নীল সবাইকে হাত দিয়ে ইশারা করে বসতে বললেন। শুভ্র নিজের বুকের উপর হাত রেখে নিজেকে শান্ত করতে করতে মনে মনে বলল,
.
“ভাগ্য ভালো তুই তখন তর্ক করিসনি শুভ্র, তা নাহলে প্রথম দিনই তুই স্যার শিকার হয়ে যেতি।”
.
.
নীল সবাইকে নিজের পরিচয় দিল, এবং সবার পরিচয় জানতে চাইল। সবাই একে একে নিজেদের নাম বলল। অনেক মেয়েরা তো ফোনে নীলের ছবি ও তুলতে শুরু করে দিয়েছে। এক মেয়ে জিজ্ঞেস ও করে ফেলল,
.

” স্যার আপনাকে দেখে মোটেও স্যার স্যার মনে হচ্ছে না। ”

নীলের জায়গায় অন্য কেউ হলে মুচকি হলেও হাসতো। কিন্তু নীল একদমই গম্ভীর প্রকৃতির মানুষ। কথাটা শুনেও যেন না শোনার ভান করল। মেঘা তো এমনিতেই নীলের উপর ক্রাশ খেয়েছিল। এখন তো ওর এমন জেন্টালমেনের মতো ব্যাবহার দেখে আরো মুগ্ধ হয়ে গেল।
সুভা মেঘার দিকে তাকিয়ে অবাক হলো য়ে যাচ্ছে। মেঘার এই প্রথম কোনো ছেলেকে ভালো লাগল।

” কি রে স্যার কে তো দেখছি চোখ দিয়ে গিলে খাবি। এতো ভালো লেগেছে নাকি স্যারকে?”

” হ্যাঁ রে। কি হ্যান্ডসাম দেখেছিস? আর পড়ানোর স্টাইল টা দেখ। জাস্ট ওয়াও। আমি এতো সুন্দর করে আর কাউকে পড়াতে দেখি নি। আমি তো পুরাই ফিদা রে দোস্ত।”

মেঘার কথা শুনে দুজনই হাসতে লাগল। আর নীল রাগে একটা জোরে ধমক দিলো।
.
” কে হাসছে ক্লাসের মাঝে? এখানে কি সারকাস হচ্ছে নাকি?”
.
সাথে সাথে সবাই চুপ হয়ে গেল। মেঘা ভয়ে চুপসে গেল। সেটা দেখে শুভ্র মুচকি মুচকি হাসছে। তখনই নীল বলল রেগে গিয়ে শুভ্রর দিকে ইশারা করে বলল,

” এই ছেলে তোমার নাম কি?”

শুভ্র ভয়ে ভয়ে দাড়ালো,
” শু_শুভ্র”

” তোতলা তুমি?”

” না না না, মোটেও না স্যার”
সবাই হেসে দিল। আর নীল রেগে গিয়ে আবারো একটা ধমক দিয়ে বলল,

” শাট আপ, আর একটা কথাও যেন না শুনি। বসো তুমি।”
.
কোনোমতে ভয়ে ভয়ে ক্লাস করল শুভ্র। সুভার দারুন খারাপ লাগলো, ভাবলো শুধু শুধুই কেন বকলো স্যার।

ক্লাস শেষে সবার মুখে শুধু একটাই কথা, নীল, নীল, নীল। মেঘাও সুভার কাছে তখন থেকে শুধু নীলের কথাই বলে যাচ্ছে।

” সুভারে, কি ভেবেছিলাম আর কি হলো। দেখতে যতটা হ্যান্ডসাম, কথায় ততটাই তেতো। বাবারে। আমি তো ভয়ই পেয়েছিলাম। ”
” চুপ কর তো। আর বাসায় চল তাড়াতাড়ি। ”

কিছুদূর যেতেই পেছন থেকে শুভ্রর ডাক শুনে পেছনের দিকে তাকালো মেঘা আর সুভা। সুভা মুচকি হেসে দাড়ালো। কিন্তু মেঘা বিরক্তি ভাব নিয়ে বলল,
” তুই কথা বল আমি গেলাম। যত্তসব। ”
মেঘা চলে গেল দেখে শুভ্রর মন খারাপ হয়ে গেল। কেননা ও মেঘার সাথেই কথা বলার জন্য আসছিল।

” আচ্ছা মেঘা কি আমাকে কোনো কারণে অপছন্দ করে?”
” ধুর বাদ দাও তো ওর কথা ওর তো কোনো ছেলেকেই ভালো লাগে না। ”
” কিন্তু নীল স্যারকে তো ওর খুভ ভালো লেগেছে বলেই মনে হলো।”
.
.
.
.
.

.
চলবে…..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে