বৃষ্টি এসো সাঁঝের বেলা ১ম পর্ব

0
3070

বৃষ্টি_এসো_সাঁঝের_বেলা
#১ম_পর্ব
#অনন্য_শফিক

নিতুল ভাইয়া আমায় ধাক্কা দিয়ে বিছানার উপর ফেলে দিলেন। তারপর উড়নাটা এক টানে খুলে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন দূরে।
আমি বললাম, ভাইয়া, আপনার পায়ে পড়ি।’
কিন্তু কাজ হলো না। এবার তিনি আমার বুকে হাত দিলেন।আর ঠোঁট দুটো এমন শক্ত করে কামড়ে ধরলেন যেন রক্ত বের করে ফেলবেন ঠোঁট থেকে। আমি নিজেকে তার কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিতে আপ্রাণ চেষ্টা করছি। কিন্তু জিম করে রড বানিয়ে রাখা তার দু বাহুর আকড় থেকে আমি কিছুতেই মুক্ত হতে পারছি না।
নিতুল ভাইয়া এক এক করে আমার সবকটি কাপড় গা থেকে টেনে খুলে নিলেন। আমি এখন একেবারেই নগ্ন। গায়ে একটি সুতা পর্যন্ত নেই।
আমি কিছুতেই তাকে বাঁধা দিতে পারছিলাম না।তার শক্তির সাথে কীভাবে আমি কুলিয়ে উঠি!
একবার এমন শক্ত করে তিনি আমায় ধরলেন যে আমি ব‍্যাথায় মরে যেতে লাগলাম। আমি গলা ছেড়ে চিৎকার করতে লাগলাম। কিন্তু সেই চিৎকার বাইরে যাচ্ছে না। কারণ নিতুল ভাইয়া এখন আমার মুখ চেপে ধরেছেন।
অবশেষে বিপদের মুখে একটা সাপ যেভাবে ধ্বংসন করে তার নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করে সেই চেষ্টা আমিও করলাম।কুটুস করে কামড়ে ধরলাম নিতুল ভাইয়ার হাতের একটা আঙুল। ভাইয়া এবার ঝট করে আমায় ছেড়ে দিলেন।ওর হাত থেকে বাঁচতে পেরে তাড়াহুড়ো করে কাপড় চোপড় ঠিক করে যখন বিছানা থেকে নামবো ঠিক তখন তিনি ফের আমায় জাপটে ধরলেন।আর বললেন,’এই শরীরটা আমার। এখানে অন‍্য কেউ ভাগ বসাতে চাইলে এই শরীর আর ভাগীদার দুটোকেই আমি আগুনে জ্বলসে দিবো।’
আমার খুব কান্না পেয়ে গেল। ভয়ে আমার হৃৎপিণ্ড ঘড়ির কাঁটার মতো বাজতে লাগলো।
আমি কাঁপা আর কান্নামাখা গলায় বললাম,’ভাইয়া,আপনারাই তো আমার আশ্রয়দাতা। আমি একটা অনাথ মেয়ে ‌। আপনারা ছাড়া আমার আর কেউ নাই। ছোট বেলা থেকেই আপনার বাবাকে আমি বাবা, আপনার মাকে মা আপনাকে ভাই আর আপনার বোনকে বোন মেনে এসেছি। কিন্তু আজ আপনি কেন আমার সাথে এমন টা করলেন?’
নিতুল ভাইয়া এ কথা শুনে মোটেও লজ্জিত হলো না। বরং সে রাগে ঠিকরে যেতে যেতে বললো,’পৃথু, তোমার দিকে কেউ নজর দিলে আমার তা সহ‍্য হয়না।গতদিন দেখেছি একটা ছেলে তোমার সাথে হেঁটে হেঁটে আসছে।তার সাথে তুমি ভাব করে কথা বলছো।’
‘ও তো আমার বন্ধু অনুজ।ওর সাথে আমার ভালো সম্পর্ক। খুব ভালো ছেলে ও।’
‘ভালো সম্পর্ক না?’
নিতুল ভাইয়া ঠাস করে আমার গালে একটা চড় বসিয়ে দিলেন। আমার মাথাটা তখন ভন ভন করে ঘুরে উঠলো। খানিক সময়ের জন্য আমি কেমন স্বব্ধ হয়ে গেলাম। কারণ জীবনে এমন আঘাত আর কেউ কখনো আমায় করেনি।
তারপর নিতুল ভাইয়া আমায় টেনে টেনে ঘর থেকে বের করলো।আর তার মোটর বাইকটা নিয়ে স্টার্ট করে আমায় পেছনে বসিয়ে পাগলের মতো ছুটতে লাগলো কোথায় যেন।
আমি ভয়ে মরে যাচ্ছি।কী সব হচ্ছে আমার সাথে। মনে মনে আল্লাহর সাথে অভিমান করছি।বলছি,অনাথের জন্য তুমি পৃথিবীতে শান্তি কী জিনিস তা রাখোনি না প্রভু। তুমি শুধু আমার জন্য দুঃখ রেখেছো। তুমি অত পাষাণ কেন প্রভু। তুমি এতো নিষ্ঠুর কেন?
গাড়ি গিয়ে থামলো শহরের এক মাথায়। তারপর নিতুল ভাইয়া আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে বললো হাঁট আমার সাথে। আমি হাঁটতে লাগলাম তার পাশে পাশে। নিতুল ভাইয়া আমায় নিয়ে একটা ভবনের দিকে এগিয়ে গেলেন। সেই ভবন বহুতল।আমরা আস্তে আস্তে তিন তলা পর্যন্ত উঠলাম। তিন তলায় উঠার পর একটা ঘরের সামনে দেখা গেল মস্ত এক সাইনবোর্ড। সেই বোর্ডে লিখা ‘কাজী-অফিস’। লিখা দেখে আমার ভেতরটা হিম হয়ে গেল। আমি কাঁপা কাঁপা গলায় নিতুল ভাইয়ার একটা হাত নাড়া দিয়ে বললাম,’এখানে কেন আমায় নিয়ে এসেছেন আপনি?’
নিতুল ভাইয়া—-
#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে