#বিষাক্ত_প্রেম
#পর্ব_১৬
লেখিকা #Sabihatul_Sabha
সাইফ আর দিশা এক সাথে বসে আছে ব্রিজের ওপর।
সাইফঃ আপনার এক্স কিন্তু হেব্বি সুন্দর।
দিশা চোখ রাঙিয়ে তাকালো সাইফের দিকে। সাইফ যে মজা নিচ্ছে তা খুব ভালো করে বুঝতে পারছে দিশা।
সাইফঃ এখানে কি করছিলেন…?
দিশাঃ অফিস থেকে ফিরছিলাম..আপনি..?
সাইফঃ ফ্রেন্ডকে দেখতে এসে ছিলো ছেলে পক্ষ।
এভাবে টুকটাক কথা বলতে শুধু করলো। খারাপ না ভালোই লাগছে সাইফের দিশার সাথে সময়টা কাটাতে।
ছাঁদে আকাশে দিকে তাকিয়ে বসে আছে ফারাজ।
মুরতাসিম মোবাইল দেখতে দেখতে ছাঁদে আসলো।
মুরতাসিমঃ দেবদাসের মতো আকাশের দিকে তাকিয়ে কি করোস!.?
ফারাজ হেঁসে ভাইয়ের দিকে তাকালো।
মুরতাসিমঃ কলেজে কি হয়েছে..?
ফারাজ ভ্রু কুঁচকে ভাইয়ের দিকে তাকালো। কলেজের খবর ভাইও জেনে গিয়েছে! কি লজ্জা! কি লজ্জা।
ফারাজঃ কলেজে কি হবে.?
মুরতাসিমঃ বাচ্চা মেয়ে ছিলো তুমি বুঝিয়ে বলতে পারতে ফারাজ৷
ফারাজঃ হঠাৎ করে কি জেনো হয়ে গিয়ে ছিলো ভাই।
মুরতাসিমঃ মেয়েটার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।
ফারাজের বুক ধুক করে উঠলো।
ফারাজঃ মজা করছো ভাই..?
মুরতাসিমঃ তুমি আমাকে খুব ভালো করে চিনো।
ফারাজ মুখে হাত দিয়ে আকাশের দিকে তাকালো।
ফারাজঃ সে রাজি হয়েছে..?
মুরতাসিমঃ কেনো হবে না শুনি..?
ফারাজঃ ভালো।
মুরতাসিম সন্দিহান দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে উঠলো, ‘ তুমি কি তাকে লাইক করো.?
ফারাজঃ কি যে বলো না ভাই।
মুরতাসিমঃ আমার চোখ ফাঁকি দেওয়া ওতোটা সহজ নয়।
ফারাজঃ তুমি শুনলে কোথায় থেকে..?
মুরতাসিমঃ ওর ফ্রেন্ড সাইফের থেকে।
ফারাজ কিছু না বলে ছাঁদ থেকে নেমে গেলো। মুরতাসিম তাকিয়ে রইলো ফারাজের যাওয়ার দিকে। আসলেই কি ফারাজ ভালোবাসে না শার্লিন কে..??
শার্লিন বালিশে মুখ গুঁজে কান্না করছে।
তিতির গিয়ে যত্ন করে শার্লিনের মাথায় হাত রাখলো।
তিতিরঃ তুই বিয়েটা করতে চাচ্ছিস না বললেই তো হয়।
শার্লিনঃ আমি ভাইয়ার উপর কিছু বলতে চাচ্ছি না। আর কার জন্য বিয়ে ভেঙে দিবো!!
তিতির চুপ করে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
________
দেখতে দেখতে একটা দিন চলে গেলো আর মাত্র রাত শেষ হলেই বিয়ে। খুব সাধারণ ভাবে বিয়ে।
ফাহাদের খুব সখ ছিলো এক মাত্র ছোটো বোনের বিয়ে অনেক বড় করে দিবে কিন্তু শার্লিনের এক কথা সে বিয়ে করলে একদম সাধারণ ভাবে করবে।
ফাহাদও বোনের মনের অবস্থা খুব ভালো করে বুঝতে পারছে।তাই কথা না বাড়িয়ে সব তৈরি করে নিয়েছে খুব সাধারণ ভাবে।
ফাহাদের মোবাইলে বর পক্ষ থেকে কল আসলো।
ফাহাদ দীর্ঘ শ্বাস ফেলে কল রিসিভ করতেই ওপাস থেকে এমন কিছু শুনলো যা শুনে অবাক হয়ে গেলো।
কিছু সময় কথা কাটাকাটি করে ছেলে পক্ষ কল রেখে দিলো তার একটু পর ফাহাদের মোবাইলে অচেনা নাম্বার থেকে কল আসলো।
ফাহাদ কলে কথা বলে বাসা থেকে বেরিয়ে গেলো দেখা করার জন্য।
তিতির চোখ বন্ধ করে মুরতাসিমের কথা ভেবে মুচকি হাসলো সাথে সাথে শার্লিনের অসহায় মুখটা ভেসে উঠলো তিতির ঝটপট চোখ খুলে পাশে তাকালো।
শার্লিনের শরীর থেমে থেমে কেঁপে কেঁপে উঠছে।
তিতির বুঝতে বাকিনেই শার্লিন এখনো ঘুমায়নি।
তিতির শার্লিন কে জড়িয়ে ধরলো। রাগ হলো ভীষণ ফারাজের প্রতি।
______
সকাল থেকেই বাড়িটা খুব সুন্দর করে সাজানো হলো৷ যেখানে কথা ছিলো খুব সাধারণ ভাবে বিয়ে সেখানে এখন পুরো বাড়ি অনেক সুন্দর করে সাজানো হচ্ছে।
সকালেই বর পক্ষ থেকে অনেক গুলো শাড়ি,গহনা, আরও অনেক সাজগোজের জিনিস পত্র পাঠানো হয়েছে।
শার্লিন রেগে তাকিয়ে আছে সব কিছুর দিকে। সে পারলে এখনি সব গুলো শাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দিতো।
কিছু সময়ের মধ্যে বর পক্ষ এসে হাজির।
তিতির শার্লিন কে জোর করে একটা শাড়ি পড়িয়ে দিলো। সাজগোজ তো একদম করেনি।
সাইফে ইশারায় তিতিরকে বাহিরে নিয়ে গেলো৷
তিতিরঃ কি হয়েছে..?
সাইফঃ চুপচাপ ওই দিকে তাকা।
তিতির বরের দিকে তাকিয়ে চমকে উঠলো।
সাইফ ইশারায় বুঝালো শার্লিনকে কিছু না বলতে।
তিতির খুশিতে সাইফকে জড়িয়ে ধরলো।
সাইফঃ মটি আমাকে ছাড় আমি একটা বাচ্চা পোলা।
তিতিরঃ আমার তো এখন তোরে একটা…
” আপনি ওর মতো বাচ্চা ছেলেকে ছেড়ে আমাকে একটা কিস দিতে পারেন!”
তিতির আর সাইফ চমকে উঠলো। এই আ’বা’ল মার্কা কথা কে বললো!!
পেছন ফিরে তিতির সাইফকে ছেড়ে দূরে সরে গেলো।
সাইফ দাঁত বের করে হেঁসে বলে উঠলো, ‘ আরেএএ বেয়াই যে।’
তিতির চোখ বড় বড় করে সাইফের দিকে তাকালো।
সাইফ তখনো দাঁত বের করে হেঁসেই কথা বলছে।
~ বেয়াই আমি কি আমার একমাত্র বেয়াইনের সাথে একটু কথা বলতে পারি..!
সাইফ ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই মুরতাসিম তিতিরের হাত ধরে বলে উঠলো, ‘ আমি কিন্তু কারো উত্তরের অপেক্ষা করবো না। বলেই তিতিরের হাত ধরে নিয়ে গেলো।
সাইফ একবার শার্লিনের আরেক বার তিতিরের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো, ‘ আমারটা কই!..??’
তিতির রেগে তাকিয়ে আছে ফাহাদের দিকে।
ফাহাদ মুখে হাত দিয়ে ভয়ার্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,’ আসলে তিতিরপাখি… ‘
তিতিরঃ একদম চুপ থাকো!
ফাহাদ হাত দিয়ে মুখ বন্ধ করে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো তিতিরের দিকে।
বিয়ে শেষ শার্লিন অনুভূতিহীন মানুষের মতো গিয়ে গাড়িতে বসে পরলো। না কারো দিকে তাকালো আর না কান্না করলো৷
আমেনা বেগম তিতিরকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করলেন। প্রায় মেয়ের জন্য কান্না করতে করতে অসুস্থ হয়ে গেছেন।
শার্লিনের পাশে এসে একটা মেয়ে বসলো গাড়ি চলা শুরু করলো।
শার্লিনের সে দিকে খেয়াল নেই ওর জামাই গাড়িতে বসলো কি না!..
শার্লিন ঘোমটা দিয়ে বসে আছে প্রায় ৩ঘন্টা হতে চলছে।
বিরক্ত হলেও ঠিক যেভাবে সবাই রেখে গেছে শার্লিন সেভাবেই বসে আছি।
১২টার পর বর রুমে প্রবেশ করলো।
শার্লিনের কোনো নড়চড় দেখা গেলো না।
বর এসেই ওয়াশরুমে চলে গেলো ফ্রেশ হতে।
ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে শার্লিনের সামনে একটা নরমাল শাড়ি রেখে শার্লিনের ঘোমটা উঠালো সাথে সাথে শার্লিন কোমর থেকে একটা ছুরি বের করে সামনে ধরে বলে উঠলো, ‘ খবর্দার আমাকে টাচ করার চেষ্টা করলে একদম মে’রে ফেলবো।
বর চোখ বড় বড় করে শার্লিনের দিকে তাকিয়ে আছে আর শার্লিন সামনের দিকে তাকিয়ে হাত থেকে আপনা আপনি ছুরি নিচে পড়ে গেলো।
চলবে….
ভুলত্রুটি মার্জনীয়
#বিষাক্ত_প্রেম
#পর্ব_১৭
লেখিকা #Sabihatul_Sabha
শার্লিন রেগে তাকিয়ে আছে ফারাজের দিকে।
ফারাজ একবার শার্লিনের দিকে তাকিয়ে আবার ছু’রির দিকে তাকালো।
বেচারি শার্লিন এতোক্ষন যতো সাহস ছিলো এখন ফুস করে সব উড়ে গেলো মনে এক ঝাক ভয় এসে ভীড় করলো।
ফারাজ অবাক হয়ে বলে উঠলো, ‘ তুমি কেমন বউ বিয়ের রাতেই বিধবা হওয়ার প্লেন করে রেখেছো!!’
শার্লিন নিজেকে সামলে একবার বন্ধ দরজার দিকে তাকালো।
রেগে বলে উঠলো, ‘ আপনি এখানে কি করছেন..? আমার হাসবেন্ড কোথায়..?’
ফারাজঃ তুমি কি আশার সময় বাড়িটা দেখনি! এটা কার বাড়ি..?
শার্লিনঃ আমার যার সাথে বিয়ে হয়েছে সে কোথায়.? আর এটা কার বাড়ি..? আপনি এখানে কি করছেন..?
ফারাজঃ তোমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে তোমার স্বামী। এক কথায় আশা করি সব গুলোর উত্তর পেয়ে গেছো।
শার্লিনঃ আপনি ভুলে যাবেন না আপনি আমার টিচার! কেমন টিচার আপনি.? স্টুডেন্টের বাসর ঘরে প্রবেশ করে ফাজলামো করছেন!.? নাকি দেখতে এসেছেন সবার সামনে অপমান করা মেয়েটার কেমন ঘরে বিয়ে হলো! বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে। চলে যান আমার চোখের সামনে থেকে।
ফারাজ কিছু না বলে দরজা খুলে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
কিছু সময় যেতেই ফাহাদ শার্লিনের কাছে আসলো।
ফাহাদকে দেখে শার্লিন আর নিজেকে সামলে রাখতে পারলো না হু হু করে কেঁদে উঠলো।
ফাহাদ ছোটো বোনটাকে আগলে নিয়ে মাথা হাত রাখলো৷
শার্লিন অনেক্ষন কেঁদে বলে উঠলো, ‘ আমি এখানে কেনো ভাই..?’
ফাহাদ শার্লিনের মাথাটা নিজের সামনে রেখে বলে উঠলো, ‘ কেনো তুমি খুশি না!.?
শার্লিনঃ আমার প্রশ্নের উত্তর চাই ভাই।
ফাহাদঃ কাল বর পক্ষ কল দিয়ে বললো তাদের ছেলে অন্য কাউকে পছন্দ করে। সেই মেয়ের সাথে পালিয়ে গেছে তাই আমিও তোমার পছন্দের মানুষের সাথে বিয়ে ঠিক করে ফেললাম।
শার্লিনঃ মিথ্যা কথা কেনো বলো ভাই!! ছেলে তোমার বন্ধু ছিলো। আর আমি এটাও জানি তোমার ওই বন্ধু আমাকে অনেক আগে থেকেই পছন্দ করে।
ফাহাদ বুঝলো মিথ্যা বলে লাভ নেই। তাই সত্যি টাই বোনকে বলে দিলো।
শার্লিন বুঝতে পারলো না ফারাজ কেনো ওকে নিজ থেকে বিয়ে করতে চাইলো! ফারাজ তো ওকে পছন্দ করে না। নাকি ওর ফ্রেন্ডদের হাত আছে এখানে!? ওরা কি স্যারকে বাধ্য করেছে..?
ফাহাদ শার্লিনকে বুঝিয়ে রেখে চলে গেলো। কাল আবার আসবে তখন নিয়ে যাবে।
এইদিকে মুরতাসিম তিতিরের নাম্বার নেওয়ার জন্য শার্লিনের রুমে সামনে কড়া নাড়লো৷
শার্লিন কিছু সময় দরজার দিকে তাকিয়ে আবার চোখ সরিয়ে নিলো। শার্লিন ভেবেই নিয়েছে ফারাজের সাথে সে কখনো কথা বলবে না।
মুরতাসিম হেঁসে ভেতরে প্রবেশ করতেই শার্লিন রেগে সামনে গিয়ে বলে উঠলো, ‘ আপনি কি ভেবেছেন আপনি আমার প্রতি দয়া দেখিয়ে মহান সেজে যাবেন। আমি এখনো আমার অপমান গুলো একটুও ভুলিনি। আমি তো দয়া চাইনি। কাল আমি আমার বাড়িতে চলে যাবো তারপর ডিভোর্স। আমি খুব ভালো করেই জানি আপনিও এটাই চান কিন্তু কেনো বিয়ে করেছেন সেটা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে। একটু বলবেন কেনো এতো নাটক..? কেনো বিয়ে করেছেন আমার মতো অযোগ্য মেয়েকে.?? আমার তো কোনো যোগ্যতা নেই।
মুরতাসিম শান্ত দৃষ্টিতে এদিকে ওদিকে তাকিয়ে মাথা চুলকে বলে উঠলো , ‘ আপনি শান্ত হন।পানি খান বসে পরে না হয় ফারাজের সাথে শান্তিতে কথা বলুন।’
শার্লিন থতমত খেয়ে আবার তাকালো মুরতাসিমের দিকে।
শার্লিনঃ আপনি মুরতাসিম চৌধুরী.?
মুরতাসিমঃ জ্বি।
শার্লিন লজ্জায় মাথা নিচু করে বলে উঠলো, ‘ সরি ভাইয়া।’
মুরতাসিম গম্ভীর কণ্ঠে বলে উঠলো, ‘ ফারাজের সাথে কথা বলে সবটা সমাধান করে নিবেন আজকে৷ ডিভোর্স কোনো কিছুর সমাধান নয়৷ আর আমার জানামতে ফারাজ আপনাকে পছন্দ করে বিয়ে করেছে। আর সব থেকে বড় কথা আপনি ভার্সিটিতে প্রপোজ না করে আলাদা ভাবে বললে হয়তো সে একসেপ্ট করে নিতো। ফারাজ বসলে সমস্যা সমাধান করে নিবেন।ভালোবাসা না থাকলে ভালোবাসা ওর মনে তৈরি করুন। ঠিক এমন ভাবে তৈরি করুন জেনো আপনি নামক এক মারাত্মক রোগে সে আঁটকে যায়। হার না মেনে নিজের করে নেওয়ার চেষ্টা করুন।ফারাজের মন আমার মতো নয় সে অনেক ভালো। শুধু আপনি তাকে একটু বুঝলে,চিনলে আর কখনো ছেড়ে যাওয়ার চিন্তা মাথায় আসবে না।
শার্লিন ভদ্র মেয়েদের মতো মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো।
মুরতাসিম তিতিরের কথা আর তুললো না। মুচকি হেঁসে বেরিয়ে গেলো।
ফারাজ রুমে এসে দেখে শার্লিন ঘুমিয়ে আছে।
রাত তখন একটা ছুঁই ছুঁই। ফারাজ শার্লিনের কাছে গিয়ে ভালো করে ওর দিকে তাকালো। ভীষণ কান্না করায় এই কয়দিন মুখটা কেমন শুখিয়ে গেছে কাজল লেপ্টে গেছে। তবুও কতোটা মায়াবী লাগছে।
কখক্ষন এভাবে তাকিয়ে ছিলো ঠিক জানানেই।
সকালে সূর্যের আলো চোখে পড়তেই ঘুম ভেঙে গেলো শার্লিনের। পাশে তাকিয়ে ফারাজকে দেখে লাফ দিয়ে শুয়া থেকে বসে গেলো। একবার ফারাজের দিকে তাকিয়ে ওয়াশরুমের দিকে চলে গেলো।
আজ যেহেতু বৌ ভাতের অনুষ্ঠান তাই চৌধুরী বাড়িতে অনেক বড় অনুষ্ঠান করা হয়েছে।
হালিমা চৌধুরী নিজ হাতে ছেলের বউকে সাজিয়ে দিলেন।
শার্লিনকে বেশ পছন্দ হয়েছে হালিমা চৌধুরীর।
শার্লিন জেনো শাশুড়ী নয় নিজের মা কে সামনে দেখছে সবাই কতো ভালো। এক এক জনের ব্যবহারে মুগ্ধ। কিন্তু একটা জিনিস শার্লিন বার বার খেয়াল করছে হালিমা চৌধুরী প্রতিটা কথায় তিতিরের কথা জিজ্ঞেস করছে। ওর কি কি পছন্দ সব কিছু।
তিতির দুপুরে চৌধুরী বাড়িতে আসলো।
প্রথমে দেখা হলো ইভার সাথে তারপর ফারাজের সাথে।
ইভা চোখ লাল করে তাকিয়ে আছে তিতিরের দিকে। তিতিরকে একদম সহ্য হয় না ওর।
মুরতাসিম পাঞ্জাবির হাতা ঠিক লরতে করতে সিঁড়ি দিয়ে নামছে। তিতিরকে দেখেই চোখ আঁটকে গেলো। গোলাপি শাড়ি পড়া এক গোলাপি কন্যার দিকে।
মুরতাসিম কে হ্যাঁ করে তাকিয়ে থাকতে দেখে ফারাজ হেঁসে বলে উঠলো, ‘ ভাই মুখ বন্ধ কর মাছি ডুকবে।’
মুরতাসিম ফারাজের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে উঠলো, ‘ আগে নিজেকে ডিভোর্স খাওয়া আটকাতে চাইলে বউয়ের কাছে যা বড় ভাইয়ের পিছে না লেগে।’
ফারাজ মুখটা কাচুমাচু করে অন্য দিকে তাকালো সে কিভাবে বুঝাবে তার বউ তাকে দেখলে রেগে যায়। এতোদিন যেই মেয়ে ফারাজের নাম শুনলেই ভয় পেতো সে আজ ফারাজকে ভয় দেখায় তাও ডিভোর্সের!.
মুরতাসিম তিতিরের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলে উঠলো, ‘ আপনি কি আমাকে খুঁজছেন!!..’
তিতির ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলে উঠলো, ‘ আমি কেনো আপনাকে খুঁজবো। ‘
মুরতাসিমঃ মনে হলো কেউ আমাকে মিস করছে।
তিতির কিছু না বলে বসে রইলো।
মুরতাসিমঃ সুন্দর লাগছে।
তিতিরঃ কি..?
মুরতাসিমঃ শাড়িতে আপনাকে ভীষণ সুন্দর লাগছে।
তিতিরঃ আমি তো সব সময় শাড়ি পড়ি আপনার চোখে আজ পরলো!..
মুরতাসিম হেঁসে তিতিরের দিকে তাকিয়ে বললো, ‘ নাকে ফুল আর হাতে চুড়ি পড়লে আরও সুন্দর লাগতো।
তিতির একবার মুরতাসিমের দিকে তাকিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে রইলো।
মুরতাসিমঃ ছোটো ভাই বিয়ে করে নিয়েছে। আমি বিয়ে করেও বউ অন্যের বাড়িতে ফেলে রেখেছি লোক জানলে কি বলবে বলেন..?
তিতিরঃ আপনার তো ডিভোর্স হয়ে গেছে।
মুরতাসিম গম্ভীর কণ্ঠে বলে উঠলো, ‘ আমি তো সাইন করিনি। কয়েকদিন পর আমি আবার বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাবো।
তিতির কিছু বলার আগেই পেছনে গ্লাস ভাঙার শব্দ হলো।
তিতির মুরতাসিম পেছন ফিরে দেখে ইভার হাতের গ্লাস নিচে পড়ে ভেঙে গেছে।ইভা চোখ মুখশক্ত করে তাকিয়ে আছে গ্লাসের দিকে।
হাঁটু গেড়ে নিচে বসে গ্লাস ভাঙা টুকরো গুলো একটা একটা করে তুলতে শুরু করলো। ফারাজ নিষেধ করতেই ইভা ইচ্ছে করে গ্লাস ভাঙা গুলো হাত দিয়ে শক্ত করে চেপে ধরলো৷ সঙ্গে সঙ্গে হাত কেটে রক্ত গড়িয়ে পড়তে শুরু করলো।
তিতির দৌড়ে কাছে আসতেই ইভা থামিয়ে দিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে গেলো।
কিছু সময়ের মধ্যে ঘটে গেলো কতো কিছু উপর থেকে তাকিয়ে রইলেন হালিমা চৌধুরী। উনার মুখে মুচকি হাসি।
চলবে…
ভুলত্রুটি মার্জনীয়।