#বিষাক্ত_প্রেম
#পর্ব_১৪
লেখিকা #Sabihatul_Sabha
তিতির ভয়ে মাথা নিচু করে নেয়।
মুরতাসিমঃ এতো লুকোচুরি কেনো জানতে পারি..??
তিতিরঃ আপনি ডিভোর্স পেপার পাঠিয়ে ছিলেন! তারপর আমার জীবনে কি ঝড় ভয়ে গেছে তা জানেন..? আজ আমার জায়গা কোনো বুড়ো লোকের ঘরে বা রাস্তায় হতো।
মুরতাসিমঃ আমি সব জানি।
তিতির অবাক হয়ে তাকালো।
মুরতাসিমঃ দেখো আমি এতো কথা ঘুরিয়ে বলতে পারি না।
প্রথম থেকেই আমি তোমাকে খুঁজে বের করার অনেক চেষ্টা করেছি তারপর গ্রামে গিয়ে তোমার খুঁজ নিয়েছি লোক দিয়ে। লাস্ট তোমার মামাকে তুলে এনে লোক দিয়ে ভয় দেখিয়ে তোমার ছবি নিয়েছি আর তখন তুমি আমার কোম্পানিতে নতুন জয়েন করে ছিলে। আমি খুব অবাক হয়ে ছিলাম। যাকে এতো খুঁজে বেড়াচ্ছি সে আমার চোখের সামনে ঘুরে বেড়াচ্ছে!
তিতির চুপচাপ বসা থেকে দাঁড়িয়ে গেলো। হাতের ব্যগটা শক্ত করে ধরে হাটা শুরু করলো।
মুরতাসিম তিতিরের হাত ধরতেই তিতির বেশ রেগে গেলো। তবুও কিছু না বলে হাত ছাড়িয়ে নিলো।
মুরতাসিমঃ সবটা কি আবার প্রথম থেকে শুরু করা যায় না!!..?
তিতিরঃ যেখানে সব শেষ আবার শুরু হওয়ার প্রশ্ন আসে কোথায় থেকে..?
মুরতাসিমঃ আমি এখনো ডিভোর্স পেপারে সাইন করিনি।
তিতিরঃ কেনো করেননি.??
মুরতাসিমঃ কেনো করিনি সেটা আমিও জানিনা। তবে তুমি এখনো আমার বউ আছো আর জীবনের শেষ নিশ্বাস অব্ধি থাকবে।
“বউ” এই ছোটো শব্দটাই জেনো তিতিরের বুক কেঁপে উঠল।
তিতির মুরতাসিমের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে গেলো।
মুরতাসিম চুপচাপ তিতিরের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো। তুমি আসবে, আমার কাছেই আসবে। তুমি আসতে বাধ্য তিতির।
কেটে গেছে বেশ কয়েকদিন। এই কয়েকদিন না তিতির মুরতাসিমের সামনে এসেছে আর কল রিসিভ করেছে, অফিসে আশাও বন্ধ করে দিয়েছে।
মুরতাসিমের অবস্থা খুবি খারাপ সে এক বারের জন্য হলেও তিতিরের মুখটা দেখতে পারলে শান্তি, কন্ঠটা শুনতে পারলে আমার এই প্রতি নিয়ত ছটফট বন্ধ হবে। তুমি আমার মনে অসুখ হয়ে বাসা বেঁধেছো মারাত্মক সেই অসুখ। যার চিকিৎসা একমাত্র তোমার কাছে আছে তিতির।
তিতির, শার্লিন,সাইফ বসে আছে ভার্সিটির মাঠে।
সাইফঃ কিরেএ মামা স্যারকে দুলাভাই কবে বানাবি! দেখ দুলাভাই যদি পরীক্ষায় পাস না করিয়ে দেয় তাহলে দুলাভাই জীবনেও ডাকমু না।
শার্লিনঃ তুই নিজে লেখবি না উনি কিভাবে পাস করাইবো।
সাইফঃ দেখলি তিতু এখনি এই শালু জামাইর পক্ষে কথা বলা শুরু করেছে।
তিতিরঃ আসলেই শালু এটা ঠিক না তুই আমাদের বোন হয়ে জামাইর কক্ষ নিতেছিস!!.
শার্লিনঃ তোদের পক্ষ তো এতোদিন নিলাম এতো সখ করে একটা জামাই পেলাম এখন কি তার পক্ষ নিবো না! সর তোরা।
সাইফঃ একটু তো লজ্জা কর তোর থেকে গুণে গুণে তিন মাসের বড় আমি। বড় ভাইয়ের সামনে জামাই জামাই করোস!.
শার্লিনঃ বড় ভাই হলে আমার ক্লাসে কি করোস! তোর তো আরও আগে লজ্জা থাকার কথা।
সাইফঃ দেখলি তিতু…
তিতিরঃ থাম তোরা। শার্লিন প্লেন কি..?
শার্লিন লজ্জা মাথা নিচু করে বললো,’ একটু পর।’
সাইফঃ ড্রামা কুইন, এই একদম ন্যাকা লজ্জা দেখাবি। লজ্জা থাকলে স্যারকে প্রপোজ করতে জেতি না।
শার্লিনঃ তুই চুপ থাক সাইফফার বাচ্চা। সিনিয়র আপুর উপর ক্রাশ খেয়ে বসে আছোস আবার আমাকে বলোস। নিজের কতো টুকু লজ্জা আছে হ্যাঁ..?
সাইফঃ তোর নিজের মতো ভাবছ আমি কেনো সিনিয়র আপুর উপর ক্রাশ খাবো!!
শার্লিনঃ সব বুঝি! সব বুঝি…
সাইফ রেগে যেতেই তিতির দুইজন কে ধমক দিয়ে থামালো।
ফারাজ গেইট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই শার্লিন গিয়ে সামনে দাঁড়ালো।
ফারাজ ভ্রু কুঁচকে শার্লিনের দিকে তাকাতেই শার্লিন চোখ বন্ধ করে ফারাজের দিকে একটা গোলাপ বাড়িয়ে দিয়ে বলে উঠলো, ‘ জানি স্যার আপনি অবাক হয়েছেন হঠাৎ গোলাপ কেনো বাড়িয়ে দিলাম তাও ভার্সিটির মাঠে! এতো লোকের সামনে। প্রথম যেদিন আপনাকে দেখি সেদিন আমি আপনার হাসি দেখে মুগ্ধ হয়ে ছিলাম। আস্তে আস্তে আপনার চলাফেরা, কথা বলা, সবার প্রতি সম্মান, স্নেহ এইগুলো দেখে প্রেমে পড়লাম তারপর আপনাকে ফলো করতে শুরু করলাম আস্তে আস্তে সেই প্রেম গভীর ভালোবাসায় পরিণত হলো।আমি প্রথম অতোটা পাত্তা দেইনি আমার ফিলিংস কে কিন্তু আস্তে আস্তে বুঝলাম ভালো থাকতে হলে আমার আপনাকে প্রয়োজন। শান্তিতে শ্বাস নিতে হলে আপনার আনাগোনা আমার আশেপাশে বড্ড প্রয়োজন। জানি স্যার ছাত্রীর ভালোবাসা কেউ ভালো চোখে দেখে না, আমি বলবো লোকের কথা নয় আমাদের নিজের মনের কথা শুনা উচিত। আমি আপনার অর্ধাঙ্গিনী হতে চাই প্রেমিকা না।আপনিকি আমাকে সেই সুযোগ দিবেন..?!
কতোসত স্বপ্ন নিয়ে তাকিয়ে আছে ফারাজের দিকে। চোখে গুলো শুধু উত্তর খুঁজছে।
ভার্সিটির সব ছেলে মেয়ে অবাক হয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে। উত্তর কি আসে জানার জন্য!!
ফারাজ সবার দিকে একবার তাকিয়ে শার্লিনের দিকে তাকালো। হাত থেকে ফুলটা নিতেই তিতির আর সাইফের মুখে হাসি ফুটে উঠলো। শার্লিনের ঠোঁটের কোনে হাসির রেখা দেখা গেলো।
ফারাজ ফুলটা নিচে ফেলে দিলো, পা দিয়ে ফুলটা পিষে শার্লিনের দিকে তাকিয়ে ঠাসসস করে গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো।
এতো জলদি সব হয়ে গেলো যে সবাই শুধু তাকিয়েই রইলো।
শার্লিন গালে হাত দিয়ে অবাক চোখে ফারাজের দিকে তাকালো। না আজ এই থাপ্পড়ে গাল জ্বলছে না ভেতরটা পুড়ে যাচ্ছে! এটা শুধু থাপ্পড় ছিলো না তীরের আঘাত ছিলো। জেনো কেউ বুকে তীর ছুঁড়েছে। ফুলটার দিকে তাকালো। পা দিয়ে ফুল না জেনো ওর সম্মান! ভালোবাসা! অনুভূতিকে পিষে ফেলেছে ফারাজ।
সাইফ রাগে হাত মুষ্টি বদ্ধ করে নিলো। তিতির অপমানে চোখ লাল করে ফারাজের দিকে তাকিয়ে আছে।
ফারাজঃ তোমার সাহস দেখে আমি অবাক হচ্ছি! একবার নিজের দিকে তাকিয়েছো..?? এখানে কেনো আসো.? কি যোগ্যতা আছে ফারাজ চৌধুরীর অর্ধাঙ্গিনী হওয়ার!.? তোমাদের মতো মেয়েদের সাথে একটু ভালো করে কথা বললেই সাহস পেয়ে যাও। তোমরা ভুলে যাও কার সামনে দাঁড়িয়ে আছো.? দ্বিতীয় বার তোমার এই মুখ আমার সামনে জেনো না পড়ে। বলেই শার্লিনকে পাশ কাটিয়ে চলে গেলো। না একবারও ফিরে তাকালো না পাষাণ লোকটি।
শার্লিন দাঁড়িয়ে রইলো নির্জীব হয়ে। কেমন নিজেকে নিজের কাছে তুচ্ছ কিছু মনে হচ্ছে।
তিতির, সাইফ এসে জড়িয়ে ধরলো শার্লিনকে।
সাইফ শার্লিনের মাথাটা বুকের সাথে চেপে ধরে বলে উঠলো কিছু হইনি। এতোক্ষন সব দোস্বপ্ন ছিলো।
শার্লিন আদুরে মাথায় হাত পেয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো।
তিতিরঃ শালু সোনা কান্না করে না। বাসায় চল একদম চুপ একটা চোখের জলও ফেলবি না। এইসব লোকের জন্য তো ভুলেও না যাদের কাছে অনুভূতির কোনো দাম৷ নেই।
শার্লিন সাইফকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ফুপিয়ে কান্না করতে লাগলো। জ্বলে যাচ্ছে ভেতরটা। হৃদয় ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেলো এতো স্বপ্ন সব এক নিমিষেই শেষ।
তিতির সাইফকে বললো শার্লিনকে বাসায় পৌঁছে দিতে। সাইফ মাথা নেড়ে শার্লিনকে নিয়ে চলে গেলো।
তিতির দাঁড়িয়ে আছে ফারাজের সামনে।
ফারাজঃ মিস তিতির আপনার কিছু বলার আছে।
তিতির ফারাজের সামনে গিয়ে রেগে বলে উঠলো, ‘ আপনার সাহস কি করে হয় আমার বোনকে অপমান করার! থাপ্পড় মারার।নিজেকে কি মনে করেন আপনি..? হ্যাঁ আমি মানছি ওর ভুল হয়েছে বাচ্চা মেয়ে৷ তাই বলে আপনি সবার সামনে এমনটা করবেন!!
ফারাজঃ আপনি আপনার সীমা অতিক্রম করছেন বলে মনে হচ্ছে না!..
তিতিরঃ একদম না! আজ আপনি যেটা করলেন একদম ঠিক হয়নি। শুধু এতো টুকুই বলবো আপনার জীবনে এমন দিন না আসুক।যাদের কাছে একটা মানুষের অনুভূতির কোনো মূল্য নেই।ভালো করে বুঝিয়ে ওকে বলতে পারতেন। শুধু পড়াশোনা বড় বড় ডিগ্রি নিলেই কেউ যোগ্য হয়ে যায় না আগে নিজের মনটাকে সুন্দর করে নিতে হয়। বলেই তিতির ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে গেলো।
চলবে…
ভুলত্রুটি মার্জনীয়।
#বিষাক্ত_প্রেম
#পর্ব_১৫
লেখিকা #Sabihatul_Sabha
শার্লিন বাসায় এসে দরজা বন্ধ করে দিয়েছে।
আমেনা বেগম মেয়ের চোখে পানি দেখে ভয় পেয়ে গেলেন৷ চোখ মুখ মেয়ের কেমন অস্বাভাবিক লাল হয়ে আছে। কি হয়েছে মেয়েটার!.?
তিতির বাসায় এসে বেশ কয়েক বার দরজা খুলার চেষ্টা করলো৷
ফাহাদ বাসায় এসে তিতিরকে জিজ্ঞেস করলো কি হয়েছে..?
তিতির ভয়ে ভয়ে সব বলে দিলো।
ফাহাদ কিছু না বলে শার্লিনের দরজার সামনে গিয়ে রেগে একটা লাঠি মারলো। আর চিৎকার করে বলে উঠলো, ‘ পাঁচ মিনিটের মধ্যে দরজা না খুললে এই দরজা আর কখনো খুলা হবে না। দরজা জেনো পাঁচ মিনিটের মধ্যে খুলা দেখি।
শার্লিন ভাইকে খুব ভয় পায়। এমন চিৎকার শুনে ভয়ে দরজা খুলে দিলো৷ সাথে সাথে ফাহাদ শার্লিনের গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো।
শার্লিন ফুপিয়ে কেঁদে উঠলো।
আমেনা বেগমঃ পাগল হয়েছিস তুই ফাহাদ!
ফাহাদঃ তুমি দূরে থাকো আম্মু। আদরে আদরে ও বাদর হয়ে গেছে।
ফাহাদ আর কিছু না বলে কিছু একটা ভেবে বাসা থেকে বেরিয়ে গেলো।
শার্লিন ওর আম্মুকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করলো। কি থেকে কি হয়ে গেলো সব।
ফাহাদ সন্ধ্যার দিকে বাসায় এসে নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলো।
শার্লিনের রুমের সামনে এসে দরজায় কড়া নাড়লো।
শার্লিনঃ আসো।
ফাহাদঃ কি করছিস..?
তিতির বেশ অবাক হলো। ফাহাদ এতো শান্ত!
ফাহাদঃ তোর সাথে আমার কিছু কথা ছিলো।
শার্লিন তিতিরের দিকে তাকালো।
তিতির ভ্রু কুঁচকে ফাহাদের দিকে তাকিয়ে বললো, ‘ আমি থাকলে সমস্যা কি..?’
ফাহাদঃ তুমি মুখ বন্ধ রাখতে পারলে এখানে থাকো না হয় রুম থেকে চলে যাও।
তিতির কিছু না বলে চুপচাপ বেরিয়ে গেলো।
ফাহাদ তিতিরের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে হাসলো।
শার্লিন মাথা নিচু করে বসে আছে। একটু পর পর কেঁপে উঠছে। হয়তো এখনো কান্না করছিলো।
ফাহাদ বোনের মাথায় হাত রাখলো।
শার্লিন ভাইয়ের দিকে তাকাতেই ফাহাদ বলে উঠলো, ‘ এতো দিন নিজের মর্জি মতো চলেছো। আজ কি নিজের ভাইয়ের কথা শুনবে..??
শার্লিন মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো।
ফাহাদঃ আজ তুমি যা করেছো একদম ঠিক করোনি এটা কি মানছো.??
শার্লিন ফুপিয়ে কেঁদে উঠলো।
ফাহাদঃ উনি তোমার টিচার। টিচারকে সম্মান করতে হয় আর তুমি সবার সামনে অপমান করেছো।
শার্লিনঃ আমি তো….
ফাহাদঃ হুসসস চুপ! তুমি এখনো ছোটো। আমি তোমার জন্য যা ঠিক করবো তাই মেনে চলতে হবে। আমার বন্ধু কাল তোমাকে দেখতে আসবে পছন্দ হলে বিয়ে ঠিক তৈরি থেকো।
শার্লিন কিছু বলতে চেয়েও পারলো না। সব কথা কেমন গলায় আঁটকে আসছে। ধম বন্ধ কর অনুভূতি হচ্ছে।
ফাহাদ রুম থেকে যেতেই তিতির রুমে প্রবেশ করলো।
শার্লিন চুপচাপ বসে আছে।
তিতিরঃ কি হয়েছে শালু..? কি বলে গেলো.?
শার্লিন কিছু না বলে কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে পরলো।
তিতির কিছু সময় তাকিয়ে রইলো শার্লিনের দিকে।
মুরতাসিম দাঁড়িয়ে আছে তিতিরের বাসার নিচে।
তিতির বারান্দা থেকে মুরতাসিম কে দেখে অবাক হলো। জলদি মোবাইল হাতে নিয়ে দেখলো অনেক গুলো কল মেসেজ দেওয়া।
তিতির মাথায় ঘোমটা দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে আসলো।
মুরতাসিম তিতিরকে দেখে চুপচাপ তাকিয়ে রইলো।
তিতির বিরক্ত হয়ে বলে উঠলো, ‘ এতো রাতে এখানে আসার কারন কি..?’
মুরতাসিমঃ তুমি জানো না..?
তিতিরঃ আমার জানা মতে আপনার এখানে কোনো প্রয়োজন নেই।
মুরতাসিমঃ আমার সব থেকে মূল্যবান জিনিসটাই এখানে।
তিতির ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই মুরতাসিম ইশারায় কাছে আসতে বললো।
তিতির একটু সামনে যেতেই মুরতাসিম তিতিরের হাত টেনে নিজের একদম কাছে নিয়ে আসলো।
তিতিরের বুক ভেতর ধুকপুক বেড়ে গেলো, রাগ, সাথে লজ্জাও লাগছে তাকাতে।
মুরতাসিমঃ অফিসে যাচ্ছো না কেনো.??
তিতির মুরতাসিমের কাছ থেকে ছুটার চেষ্টা করলো।
মুরতাসিম তিতিরের মুখের উপর পড়ে থাকা চুল গুলো যত্ন করে কানের পেছনে গুঁজে দিয়ে বলে উঠলো, ‘ যত ছুটার চেষ্টা করবে ততই আরও কাছে আসতে হবে।’
তিতির চুপ হয়ে গেলো।
মুরতাসিমঃ মোবাইল বন্ধ কেনো..? অফিসেও যাচ্ছো না! মিস করেছি অনেক। সব কি ঠিক করা যায় না..? আম্মু সুস্থ হলেই বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসবো।
তিতিরঃ আপনার ভাই আজ কি করেছে জানেন..?
মুরতাসিমঃ না কি হয়েছে..?
তিতিরঃ বাসায় গিয়ে জিজ্ঞেস করে নিবেন। এখন আমাকে দেখা হয়ে গেছে ছাড়ুন।
মুরতাসিম তিতিরকে ছেড়ে দিলো৷
মুরতাসিমঃ আজ ছেড়ে দিচ্ছি খুব জলদি একদম নিজের কাছে নিয়ে আসবো।
তিতির মুরতাসিম কে আর কিছু না বলতে দিয়ে বাসায় চলে আসলো।
মুরতাসিম তাকিয়ে রইলো তার তিতিরের দিকে।
__________________
শার্লিন কে দেখতে এসেছে ছেলে পক্ষ।
সাইফ শার্লিনের দিকে তাকিয়ে আছে ।
শার্লিন মলিন হেঁসে বললো, ‘ এভাবে কি দেখছিস..?’
সাইফঃ তুই বিয়েতে রাজি..?
শার্লিনঃ একবার ভুল করেছি দ্বিতীয় বার আর করতে চাই না।
সাইফঃ গুড।
তিতিরঃ এই নে তৈরি।
শার্লিন আয়নার দিকে তাকালো নিজেই নিজের দিকে তাকিয়ে হেঁসে উঠলো।
সাইফঃ এই মেয়ে নিশ্চয়ই পাগল হয়ে গেছে!
তিতিরঃ তুই চুপ থাক।
ফাহাদ নিজেই শার্লিন কে নিয়ে গেলো৷
ছেলে আর তার বাবা এসেছে।
ছেলের পরিবার বলতেই বাবা আর ছেলে মা নেই।
শার্লিন কে দেখে তাদের পছন্দ হলো৷
ফাহাদের তো আগে থেকেই সব জানা শুনা। বিয়ে ঠিক হয়ে গেলো৷ দুই দিন পর বিয়ে।
তিতির, সাইফ অবাক হলো এতো জলদি!!.?
শার্লিন চুপচাপ নিজের রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো।
ফাহাদ সেই দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলে উঠলো, ‘ আবির অনেক ভালো ছেলে তুই অনেক সুখে থাকবি শার্লিন।আমি তোর ভালো চাই, আমি তোর ভাই,আব্বুর সব দায়িত্ব যে এখন আমার।
সাইফ বাসায় আসার সময় রাস্তায় দিশাকে কারো সাথে ঝগড়া করতে দেখে এগিয়ে আসলো।
এমনিতেই মন ভালো নেই শালুকের জন্য ।
দিশাঃ তোর লজ্জা হয়নি ওইদিন মাইর খেয়ে..? আজ আবার কেনো বিরক্ত করছিস..?
~ আগে আসো এক জায়গায় বসে কথা বলি দিশা। আবার সব ঠিক করে নেই। আমাকে মাফ করে দাও আর দ্বিতীয় বার অন্য মেয়ের দিকে ফিরেও তাকাবো না।
দিশাঃ তুই আমার সামনে থেকে যাবি!
সাইফ দিশার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো,’ কি হয়েছে..? ‘
~ এই ভাই আপনি কে দূরে থাকেন আমাদের মাঝে এসে ডুকবেন না।
সাইফঃ কে কার মাঝে আসছে!.? কি বলছেন.? আপনি কে.?
~ এতো প্রশ্ন কেনো করেন সরেন তো।আমি আমার গার্লফ্রেন্ডের রাগ ভাঙাচ্ছি।
সাইফ চোখ বড় বড় করে দিশার দিকে তাকালো।
দিশা বিরক্ত হয়ে নিজের ব্যাগ নিয়ে হাঁটা ধরলে ছেলেটা দিশার হাত ধরে নিলো।
দিশাও নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো গালে৷
সাইফ একবার দিশার দিকে আরেক বার ছেলেটার দিকে তাকালো। আসলে হচ্ছে টা কি.??
চলবে..
( ভুল হতে পারে সময় পাইনি চেক করার)
ভুলত্রুটি মার্জনীয়।