#ফিরে এসো ভালবাসা❤
#লেখিকাঃ নাবিলা আহমেদ রোজ
#পর্ব- ১২
রাহি হাসতে, হাসতে চলে গেলো। বাড়ি গিয়ে মনের সুখে বিয়ের প্রিপারেশন নিচ্ছে। এরমাঝে শুভ্র রাহিকে ফোন করলো। রাহি নাচতে, নাচতে ফোন রিসিভ করে বললো।”
—-” হাই বেবি,
শুভ্র ভ্রু কুঁচকে বললো।”
—-” তোমার পাশে কি রোজ আছে?”
রাহি পাশে তাকিয়ে না বললো। এবার শুভ্র একটু রেগে বললো,
—-” তাহলে নেকামি করে বেবি বলছো কেন? তুমি কি ভুলে যাচ্ছো আমাদের কি কথা হয়েছে? এই বিয়েটা কোন বিয়েই না সব নাটক। আমিও তোমাকে বিয়ে করছি না আর তুমিও না। বিয়ের স্টেজে গিয়ে তুমি আমাকে রিজেক্ট করে দেবে। আর এরপর আমি রোজের কাছে ফিরলেও রোজ আমাকে রিজেক্ট করবে। কারন তখন ও ভাববে তুমি আমাকে রিজেক্ট করেছো বলে ওর কাছে ফিরেছি আমি। রোজ এমনিতেই আমাকে ঘৃনা করে। তখন ও আরো বেশী ঘৃনা করবে। আর এই ঘৃনাটাই আমি ওর মনে জন্ম দিতে চাই। আর এসবের জন্য আমি তোমাকে টাকাও দিতে চেয়েছিলাম। কারন তুমি চেনোই তো সেটা। তুমি কি ভেবেছো আমি সব ভুলে গিয়েছি? শোন রাহি রোজের সামনে জাস্ট নাটক করবে। তাছাড়া একদম নেকামি করবে না ওকে?”
বলে শুভ্র ফোন কেটে দিলো। রাহি রেগে ফোনটা আছাড় মেরে বিছানায় ফেলে বললো।”
—-” বিয়ের স্টেজেই আসল মজা হবে। কারণ আমি তোমাকে রিজেক্ট করবো না। আর রোজের মনে নিজের জন্য ঘৃনার সৃষ্টি করতে। তুমি বাধ্য হবে আমাকে বিয়ে করতে। আর আমিও তোমার সভ্য ওয়াইফের মতো। তোমাকে আবার হসপিটালে নিয়ে যাবো। আরেক ডক্টর দিয়ে টেস্ট করিয়ে প্রুফ করবো। তোমার আসলে কোন রোগই হয়নি হা হা হা,
রাহি হাসতে, হাসতে থেমে আবার বললো।”
—-” ইয়েস শুভ্র তোমার কোন ব্রেইন ক্যান্সার হয়নি। এসবটাই আমার বানানো প্লান। শুধুমাএ তোমাকে বিয়ে করতে। তোমাকে বিয়ে করে তোমাদের কোটি, কোটি টাকার প্রপার্টির মালকিন হবো আমি। আর এসব কি না ভেস্তে দেবে ওই রোজ? রিয়েলি? আর এটা আমি হতে দেবো? কখনো না তাই তো এই প্লান। তুমি কত বোকা শুভ্র তাই না? ওহো নো, নো এতে তোমার দোষ নেই। আসলে তুমি এটা বিশ্বাস করেছো কারন তোমার অনেক মাথা ব্যথায়। ওটাও তো আমারই চাল। আসলে তুমি যেই ঔষুধটা খাচ্ছো। ওটা খেলে মাথা ব্যথা কমে না বরং বাড়ে। আর এই মাথা ব্যথার জন্যই তুমি ভাবছো তোমার সত্যিই ব্রেইন ক্যান্সার। এই পুরোটাই আমার বানানো গেম। আরো যেই সত্যিটা আছে সেটা না হয় লুকোনোই থাক,
রাহি ডক্টরকে ফোন করলো। ডক্টর ফোন রিসিভ করেই বললো।”
—-” দেখুন আমি আপনার সব কথা শুনেছি। রিপোর্ট আমি চেঞ্জ করে দিয়েছি। এবার আপনি আমার ছেলেকে ছেড়ে দিন প্লিজ,
রাহি শয়তানি হেসে বললো।”
—-” সরি ডক্টর এখনি কি করে ছাড়বো?”
ডক্টর অবাক হয়ে বললো,
—-” তাহলে আর কবে ছাড়বেন? আপনি তো শুধু তারিখ করছেন। ও একটা বাচ্চা ছেলে প্লিজ ওকে ছেড়ে দিন।”
রাহি রেগে বললো,
—-” এ ডক্টর আমি যেদিন চাইবো সেদিনই ছাড়বো। আপনি তো বেশী মহান আপনার বিশ্বাস নেই।”
ডক্টর চোখ মুছে বললো,
—-” আমি কাউকে কিছু বলবো না প্লিজ।”
রাহি মুখ বাঁকিয়ে বললো,
—-” বলতে দিলে তো বলবেন? শুনুন ৩দিন পর আমার বিয়ে। আর বিয়ের পরদিনই আমি আপনার ছেলেকে ছেড়ে দেবো প্রমিস।”
বলে ফোন কেটে দিলো। ডক্টর ধপ করে বসে পড়লো। রাহি ডক্টরকে বাধ্য করেছে এসব করতে। প্রথমে ডক্টর রাজি হয়নি পরে রাহি ওনার ছেলেকে কিডন্যাপ করে। আর নিজের ছেলেকে বাঁচাতেই উনি এসব করে। ডক্টর চশমাটা খুলে বললো,
—-” আমি কি পারবো সবটা জানাতে?”
রোজ অনেক ভেবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ও শুভ্রর বিয়েতে যাবে। তাই তনয়া আর রোদকে ডেকে বললো।”
—-” তোমরা কালকে কখন যাবে?”
রোদ গাল ফুলিয়ে বললো,
—-” কেন?”
রোজ মুচকি হেসে বললো।”
—-” আমিও যাবো,
তনয়া হা করে থেকে বললো।”
—-” সত্যিই তুই যাবি?”
রোজ হেসে বললো,
—-” ইয়াপ ভাবী।”
রোদ ভ্রু কুঁচকে বললো,
—-” ১রাতেই ডিসিশন চেঞ্জ?”
রোজ ভেংচি কেটে বললো।”
—-” হ্যা তো তোর কি? এখন কাল কখন যাবি বল?”
রোদ রোজের দিকে তাকিয়ে বললো,
—-” কাল ১১টায় শুভ্রদের বাড়ি যাবো। ওখান থেকে ১২টায় কমিউনিটি সেন্টারে যাবো।”
রোজ স্লান হেসে বললো,
—-” আচ্ছা আমি রেডি হয়ে থাকবো।”
রোদ আর তনয়া হেসে চলে গেলো। ওরা যেতেই রোজ মনে, মনে বললো,
—-” আমিও দেখতে চাই আপনি কত খুশি এই বিয়েতে। এবার আমি সেই সব করবো। যেগুলো আপনার পছন্দ না।”
_______________
পরেরদিন সকাল, সকাল রোজ শাওয়ার নিলো। হেয়ার ড্রয়ার দিয়ে চুলগুলো শুকিয়ে বসে রইলো। নিচে গিয়ে সবার সাথে ব্রেকফাস্ট করছে রোজ। আর আগের মতো অনেক দুষ্টুমি করছে। সবাই বড়, বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে রোজের দিকে। কারণ কয়েকদিন হলো রোজ ঠিকমত খায়নি। আর সবার সাথে এত দুষ্টুমিও করেনি। যাকে কি না বলেও নিচে আনতে পারেনি। আর আজকে সে নিজেই এসেছে। রোজ খেতে, খেতে সবার দিকে তাকিয়ে বললো,
—-” কি হলো তোমাদের? এভাবে আমাকে দেখার কি আছে? আমাকে কি নতুন দেখছো নাকি?”
সবাই তবুও ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে। রোজ এবার বিরক্তি নিয়ে বললো।”
—-” কি এলিয়েন দেখছো নাকি?”
সবাই দ্রুত মাথা নেড়ে না বললো। রোজ বিরক্তি নিয়েই বললো,
—-” তাহলে খাওয়া স্টার্ট করো।”
এবার সবাই খেতে শুরু করলো। রোজ খাওয়া শেষ করে রুমে এলো। রুমে এসে আগের মতো গেটআপ দিলো। কালো একটা চেক শার্ট পড়েছে। ব্লু কালার জিন্স প্যান্ট। হাতে কালো বেল্টের ঘড়ি। চুলগুলো একটা ঝুটি করা। ঠোটে হালকা লাল লিপস্টিক। ব্যাস রোজের সাজ কম্পিলিট। রোজ রেডি হয়ে বসে ফোন চাপছে। ১০টা বাজতেই রোদ রোজকে ডাকলো। রোজ ফোন চাপতে, চাপতে নিচে গেলো। রোজকে দেখে সবাই আরেকদফা শকড হলো। রোদ ভ্রু কুঁচকে বললো,
—-” তুই আবার আগের সাজে?”
রোজ ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললো।”
—-” ইয়াহ সো?”
রোদ মিনমিন করে বললো,
—-” না কিছুনা চল।”
রোজ আরেক গাড়িতে বসে বললো,
—-” তোরা যা আমি আসছি।”
তনয়া ভ্রু কুঁচকে বললো,
—-” তুই আমাদের সাথে যাবি না?”
রোজ ফোন সাইডে রেখে বললো।”
—-” তোমাদের পিছনেই আসছি,
রোদ গিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিলো। রোজও নিজের গাড়ি স্টার্ট দিলো। ১১টায় গিয়ে ওরা শুভ্রদের বাড়ি পৌছালো। সবাই রেডি হয়ে বসে আছে। রোজ সাইন গ্লাসটা চোখে দিয়ে ভেতরে গেলো। রোজকে দেখে সবাই অবাক হলো। শুভ্রর সাথে রিলেশনে যাওয়ার পর রোজ এসব পড়েনি। ঈশান আর রিক রোজের কাছে এসে বললো।”
—-” তুই আবার ছেলেদের সাজ দিয়েছিস?”
রোজ মুখ বাঁকিয়ে বললো,
—-” কেন কোন বইতে লেখা আছে এটা ছেলেদের সাজ? এই শার্টটা লেডিস শার্ট। আর এই প্যান্টও লেডিস প্যান্ট।”
রিক ভাবুক ভাবে বললো,
—-” কিন্তুু তুইতো এসব পড়া বাদ দিয়েছিলি না?”
রোজ দেখলো শুভ্র পাশে দাড়ানো সেটা দেখে বললো।”
—-” আরে কোথাকার কার কথায় আমি এসব বাদ দেবো কেন?”
শুভ্র বুঝলো কথাটা রোজ ওকে বলেছে। শুভ্র কিছু বললো না মলিন হাসলো। ব্যাপারটা রোজের চোখ এড়ালো না। তবে রোজ এটা নিয়ে মাথা ঘামালো না। রোজ গিয়ে সবার সাথে কথা বলছে। রোজ যেতেই ঈশান বললো,
—-” আমার মনে হচ্ছে কথাটা রোজ শুভ্রকে বললো।”
রিক কপাল কুঁচকে বললো,
—-” তোর এটা কেন মনে হলো?”
ঈশান শুভ্রকে দেখিয়ে বললো।”
—-” ওইযে দেখ শুভ্র দাড়ানো। আর রোজ কথাটা ওর দিকে তাকিয়েই বলেছে,
এরমাঝে রাহি এলো। রাহিকে দেখে শুভ্র অবাক হয়ে বললো।”
—-” রাহি?”
রাহি শুভ্রর কাছে গিয়ে বললো,
—-” তুমি আমাকে মিস করবে জানি। তাইতো তুমি বললে আমি চলে এলাম।”
শুভ্র আস্তে করে বললো,
—-” আমি কখন আসতে বললাম?”
রাহিও ফিসফিস করে বললো।”
—-” রোজকে শোনাতে বললাম,
শুভ্র আর কিছু বললো না। রাহি যে ইচ্ছে করে এসব করছে। সেটাতো আর শুভ্র জানেনা। রাহি রোজকে দেখিয়ে নেকামি করছে। আর শুভ্রও কিছু বলছে না। রোজ সেদিকে পাত্তাও দিচ্ছে না। শুভ্রর ভেতর দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। কিন্তুু মুখে সেটা বলতেও পারছে না। তবে শুভ্রর চেহারায় অসহায়ত্ব স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। রোজ শুভ্রর দিকে তাকিয়ে মনে, মনে বললো।”
—-” ওনাকে এমন লাগছে কেন?”
শুভ্র রুমে চলে গেলো। এসে বড়, বড় কয়েকটা শ্বাস ছাড়লো। এতক্ষণ যেন দম বন্ধ হয়েছিলো ওর। শুভ্র বেডে বসে পড়লো। হাত দিয়ে ল্যাম্পপোস্টে বাড়ি দিয়ে বললো,
—-” এভাবে আমি আর পারছি না। আল্লাহ তোমার যখন আমাকে নেওয়ারই হবে। তাহলে তাড়াতাড়ি নিচ্ছো না কেন? এভাবে বাঁচার চেয়ে মরে যাওয়া ভাল।”
রাহি নেকামি করে উপরে এলো। মিথ্যে কথা বলে শুভ্রকে শান্তনা দিলো। এরপর দুজনে একসাথে নিচে গেলো। ১২টায় সবাই মিলে রওনা দিলো। শুভ্রর পাশে রাহি বসেছে। রোজ একাই যাচ্ছে গাড়ি নিয়ে। কমিউনিটি সেন্টারে গিয়ে পৌছালো ৩টায়। রাহির বাড়ির লোকও চলে এসেছে। গায়ে হলুদ আর বিয়ে হবে এখানে। আর রিসেপশন শুভ্রদের বাড়ি। কমিউনিটি সেন্টারে ঢুকেই রাহি মনে, মনে বললো,
—-” আমি আমার স্বপ্নের খুব কাছে। আর মাএ ২দিনের অপেক্ষা।”
সবাই নিজেদের মতো রেস্ট নিতে গেলো। এতটা পথ জার্নি করে সবাই ক্লান্ত। শুভ্র নিজের রুমে এসে একটা সিগারেট ধরালো। জীবনেও সিগারেট না খাওয়া শুভ্র আজ সিগারেট খাচ্ছে,
তার পরদিন, সকাল থেকেই সবাই বিজি। আজকে রাহি আর শুভ্রর গায়ে হলুদ। রাহি সবার সাথে বেশ আড্ডা দিচ্ছে। এদিকে বুক ফেটে চৌচির হচ্ছে রোজ আর শুভ্রর। শুভ্র রুমে বসে একের পর এক সিগারেট খাচ্ছে। আর রোজও নিজের রুমে বসে অশ্রু বিসর্জন দিচ্ছে।”
—-” কেন এমন হলো আল্লাহ? আজকে রাহির জায়গায় আমার থাকার কথা ছিলো। তাহলে সবকিছু এমন কেন হয়ে গেলো? কেন শুভ্রকে ভালবাসলাম আমি? আর ওই বা কেন ঠকালো আমাকে? তুমি আমাকে শক্তি দাও আল্লাহ। আমি যেন ওর সামনে উইক না হয়ে পড়ি,
________________
এদিকে শুভ্রর রুমে বসে শুভ্র বলছে।”
—-” এটা কেন হলো আল্লাহ? আজকে তো এখানে রোজ থাকতে পারতো। তাহলে সবটা কত সুন্দর হতো। আমি আমার রেড রোজ কত খুশি থাকতাম। আমার রোজ এতো কষ্ট পেতো না। আমি জানি ও যতই উপর দিয়ে নিজেকে স্ট্রং দেখাক। ভেতর দিয়ে ও অনেক কষ্ট পাচ্ছে। আর আমি এমনই এক হতভাগা। যে হাত গুটিয়ে বসে থাকা ছাড়া কিছুই করতে পারছি না,
শুভ্র নিজেকে স্বাভাবিক করে নিচে গেলো। সবাই এটা, ওটা বলে মজা করছে। শুভ্র শুধু হু, হা করে জবাব দিচ্ছে। এরমাঝে রাহির ফোন এলো রাহি উপরে চলে এলো। ফোন রিসিভ করেই বললো।”
—-” আবার কি ডক্টর?”
ডক্টর আকুতি করে বললো,
—-” কালই তো আপনার বিয়ে। আমার ছেলেকে ছেড়ে দিন প্লিজ।”
রাহি চেঁচিয়ে বললো,
—-” এই ডক্টর তোকে কতবার বলবো? একবার আমার বিয়েটা হয়ে যেতে দে। আমি নিজে তোর ছেলেকে তোর কাছে পৌছে দেবো। এখন লাস্ট মোমেন্টে এসে যদি শুভ্র জানে ওর ব্রেইন ক্যান্সার না। এই সবটাই আমার বানানো প্লান। তাহলে তোকে আমি ছাড়বো না।”
বলে ফোন কেটে দিলো। ফোন কেটে দরজার কাছে আসতেই চমকে গেলো। রাহি রীতিমত ঘামতে শুরু করলো। থতমত খেয়ে ভয়ে, ভয়ে বললো,
—-” শুভ্র তুমি?”
শুভ্র ভ্রু কুঁচকে বললো।”
—-” ফোন নিতে এসেছিলাম। তুমি ঘামছো কেন?”
রাহি আমতা, আমতা করে বললো,
—-” আসলে আমার আমি আসলে।”
শুভ্র রাহির কপালে হাত দিয়ে বললো,
—-” শরীর খারাপ লাগছে তোমার?”
রাহি নিজেকে সামলে বললো।”
—-” এখানে কখন এলে তুমি?”
শুভ্র হালকা হেসে বললো,
—-” মাএই এলাম কেন?”
রাহি মনে, মনে বললো।”
—-” তারমানে শুভ্র কিছু শোনেনি,
এবার মুখেই বললো।”
—-” আমি ঠিক আছি চলো যাই,
শুভ্র হ্যা বলে নিচে গেলো। রাতে হলুদের আয়োজন করেছে। রাহিকে হলুদ লেহেঙ্গা পড়িয়েছে। রাহি মেকআপ করেছে ইচ্ছেমতো। শুভ্র হলুদ পাঞ্জাবী পড়েছে। সাদা জিন্স প্যান্ট, চুলগুলো নরমাল। হাতে একটা সাদা বেল্টের ঘড়ি। রোজ মাথা ধরে নিচে এলো। সন্ধ্যা থেকেই মাথা ব্যথা করছে। রোজ তাচ্ছিল্য হেসে মনে, মনে বললো।”
—-” যার জন্য টেনশন করে মাথা ব্যথা করে ফেলেছি। সে তো এখানে দিব্যি আছে,
সবাই এক, এক করে ওদের হলুদ লাগালো। শেষে রাহি ইচ্ছে করে রোজকে বললো।”
—-” কি গো ননদিনী তুমি হলুদ লাগাবে না?”
রোজ হেসে বললো,
—-” সরি গো হলুদ ধরে আমি আমার হাত নষ্ট করবো না।”
রাহি রাগে ফোস, ফোস করছে। শুভ্র টিস্যু দিয়ে হলুদ মুছতে, মুছতে স্টেজ থেকে নেমে এলো। তখন সবাই মিলে শুভ্রকে চেপে ধরলো গান গাইতে। শুভ্র প্রথমে রাজী হলো না। এবার রোজ কাছে এসে বললো,
—-” গান না শুভ্র ভাই।”
শুভ্র মলিন হেসে বললো,
—-” তুমি শুনবে?”
রোজ মুচকি হেসে হ্যা বললো। এবার আর শুভ্র না করতে পারলো না।”
🎶ওওওওও, ওহহহহ, ওওওওও🎶
একবার রোজের দিকে তাকালো শুভ্র,
🎶দিন দুনিয়ার মালিক খোদা দিলে কি দয়া হয় না🎶
🎶তোমার দিলে কি দয়া হয় না, তোমার দিলে কি দয়া হয় না🎶২
উপরের দিকে তাকিয়ে গানের কলিটা গাইলো শুভ্র।”
সাদা লাইট বন্ধ হয়ে নীল লাইট জ্বলে উঠলো,
🎶সব দিয়ে যার সব কেড়ে নাও🎶
🎶 সব দিয়ে যার সব কেড়ে নাও🎶
🎶তার তো প্রানে সয় না, তোমার দিলে কি দয়া হয় না🎶
🎶তোমার দিলে কি দয়া হয় না🎶
রোজ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। রাহি স্টেজ থেকে নেমে এসে শুভ্রকে থামিয়ে দিলো। সাথে, সাথে সাদা লাইট জ্বলে উঠলো। শুভ্র নিজের চোখের পানি মুছে বললো।”
—-” কি হলো রাহি?”
রাহি ঢং করে বললো,
—-” বেবি এসব দুঃখী গান কেন গাইছো? লোকে ভাববে এই বিয়েতে তুমি সুখী নও।”
রোজ এতক্ষণ শুভ্রর দিকে তাকিয়ে থাকলেও এবার মুখ ফিরিয়ে নিলো। শুভ্র একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। এদিকে রাহি শয়তানি হেসে মনে, মনে বললো,
—-” হলুদ শেষ এবার বিয়ের অপেক্ষা। কাল এমন সময় আমি থাকবো চৌধুরী বাড়িতে। মিসেস শুভ্র চৌধুরী হয়ে।”
#চলবে…