#প্রেম_পড়শী
#পর্ব_১৬
#লেখনীতে_নবনীতা_শেখ
[প্রাপ্তবয়স্ক ও মুক্তমনাদের জন্য উন্মুক্ত]
কাটল আরও তিনদিন। মোহ শেফা-মাহফুজের রুমে এলো হঠাৎ করে। মাহফুজ সাহেবের মারা যাওয়ার পর আর এ রুমে কেউ প্রবেশ করেনি। জয়তুননেসা ছেলে শোকে রোজ মোনাজাতে কাঁদেন। নাজমা চুপচাপ নিজের রুমে বসে থাকে। নুরশীন-নাফসিন নিজেদের পড়ালেখা নিয়েই ব্যস্ত। ওদের স্কুলে যাওয়া-আসাটা রূশীর সাথেই হয়। নাজমা স্বাভাবিকের মাঝেও অস্বাভাবিক। স্বামী যত বড়ো অন্যায়কারীই হোক না কেন, কোনো স্ত্রী-ই তার শোক কাটাতে কার্পণ্য করবে না।
মোহ এলোমেলো রুমটার আনাচে কানাচে দেখতে লাগল। মায়ের শাড়িগুলো গোছাচ্ছে, আলাদা করছে। নিজের রুমে নিয়ে রাখবে। ওদিকে মাহফুজ সাহেবের জিনিস ছুঁয়েও দেখছে না। শেফা কঠোর ব্যাক্তিত্ব সম্পন্ন নারী ছিল। নিজের কোনো জিনিস কাউকে ছুঁতে দিত না। সাধের পুরুষ হোক কিংবা অবহেলায় এক কোণায় পড়ে থাকা পুরোনো ডায়েরিগুলো। যা তার, তা একান্ত তার নিজের। নিজের মেয়ে ব্যতীত কেউ এসবে হাত দিতে পারত না।
সে-সময় মোহ ছিল খানিকটা আলাদা গোছের মানুষ। সামনে অমূল্য সম্পদ ফেলে রাখা হলেও, মোহ তা উলটিয়ে দেখত না।
মেয়েটা আজ শেফার সব জিনিস স্পর্শ করছে। আটকানোর কেউ নেই। শাড়িগুলো বিছানার ওপর রাখার পর, বাকিসব খুঁজছে। কাবার্ড থেকে কিছু পুরোনো ফোটো অ্যালবাম আর ডায়েরি পেল। সেগুলোসহ শাড়িগুলো নিয়ে নিজের রুমে চলে গেল।
বিছানার ওপর এলোমেলোভাবে সব ফেলে মোহ অ্যালবামগুলো দেখছে। সবগুলোয় সিরিয়াল নম্বর দেওয়া। ৫-টা অ্যালবাম। একটাতে শেফা-মাহফুজের ভার্সিটি লাইফের সব ছবি, আরেকটাতে বিয়ের পরের সব ছবি। ৩ আর ৪-নং অ্যালবামে মোহর ছোটোবেলার সব ছবি, তাদের তিনজনের একত্রিত ছবি। আর ৫-এ হুটহাট তোলা কিছু ছবি। মোহ শেষের দিকে শেফা-মাহফুজের একসাথে তোলা ছবি পেল না। বোধহয় বয়স বাড়ার সাথে সাথে বিভিন্ন সাধও মিটে গিয়েছিল।
মোহ ডায়েরি ধরল। এগুলোর কিছু কিছু হিসেব নিকেশের ডায়েরি। মোহ দেয়ালে হেলান দিয়ে বসল। একটা একটা করে সবগুলো ডায়েরির পেইজ উলটোতে লাগল। মাঝে মাঝে শেফার ছোট্টো একটা দুটো চিরকুট বেরোচ্ছে। লেখাগুলো এরকম,
-‘আমাদের মোহনা আমাদের সুখ। আমাদের দুঃখ মিটেছে, মোহনার আব্বু।’
-‘বাপের বাড়ি যাচ্ছি। রাগ নামলে ফিরব। ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া কোরো। ফিরে যেন নেমে যাওয়া রাগ আবার না বাড়ে!’
-‘অফিস থেকে ফেরার সময় আমার জন্য জবা এনো। ১১টি জবা। আমাদের প্রণয়ের আজ ১১ বসন্ত।’
-‘আমি রেগে আছি। শিঘ্রই রাগ ভাঙাও। লাইব্রেরি রুমে আছি আমি, এসো।’
এরকম আরও অনেক চিরকুট। মোহ মুগ্ধ হয়ে দেখছে। হিসেবের ডায়েরির ভাঁজে থেকে এসব চিরকুট সরিয়ে মোহ আলাদা করছে। করতে করতেই, হুট করেই একটা খুব পুরোনো ডায়েরিতে মোহর হাত থমকে গেল। কাগজগুলো রঙচটা।
প্রথম পৃষ্ঠায় লেখা,
“মাহফুজের শুভ্রাণী..”
স্বর্ণশেফা হাওলাদার
২৩ এপ্রিল, ১৯৯৪
মোহ নড়েচড়ে বসল। তার মায়ের ডায়েরি লেখার সখের ব্যাপার হতে সে সম্পূর্ণ অপরিচিত। সবগুলো পেইজ স্লাইড করে বুঝল, ডায়েরিটি বড়ো গোপন কিছু। একে পড়তে হবেও গোপনভাবে।
উঠে নিয়ে বিছানায় ফেলে রাখা সব কিছু কাউচের ওপর এনে ফেলল। দরজাটা আটকে আবারও আগের স্থানে গিয়ে বসে পরের পেইজ ওলটাল,
“আমাদের বন্ধুত্বের তিন বছর শেষে আমাদের প্রণয়ের আজ প্রথম বর্ষ।”
স্বর্ণশেফা হাওলাদার
১৭ আগস্ট, ১৯৯৫
“মাহফুজ ভীষণ অন্তর্মুখী। আমি ওকে বুঝতে পারি না। ওর সাথে আমার বন্ধুত্ব হয়েছিল খুবই ভিন্নভাবে। কলেজের চতুর্থ দিন ও প্রথম কলেজে এসে আমাকে সিনিয়র মনে করে বসে। জিজ্ঞেস করে,
-‘আপু, সাইন্স এ সেকশনের ক্লাস কোনটা?’
আমি অবাক হই। এই ছেলে আমাকে আপু ডাকে কেন? উত্তরটা খুঁজে পাই তৎক্ষনাৎ। আমাকে সিনিয়র ভেবেছে কি না! আমি গভীর শ্বাস ফেলে রুম দেখিয়ে দিই।
ও ক্লাসে গিয়ে শেষের দিকের একটা বেঞ্চে বসে পড়ে। পাশাপাশি বেঞ্চে আমি বসেছিলাম। আমাকে দেখে তখন চোখ-মুখ কুঁচকে ফেলে। নিজের ভুল ধরতে পেরে নিশ্চুপ থাকে। আমি মনে মনে একচোট হাসি। এরপর থেকে যে-কোনো কিছুতে আমি ওকে খোঁচাই। বারে বারে বলি,
-‘এই ছেলে! আপুকে সালাম দাও। সুন্দর করে বলো, আসসালামু আলাইকুম, আপু। অভদ্রতা করবে না।’
মাহফুজ এড়িয়ে যায়। আমি পিছু ছাড়ি না। অনেকটা জোর জবরদস্তি করেই বন্ধু হয়ে যাই। ওর সব বিষয়ে এই সরু নাকটা গলাতে থাকি। তারপর একদিন অনুভব করি, ওর মনে আমার জন্য কিছু একটা চলছে। এই কিছু একটা হচ্ছে ভিন্ন কিছু একটা। আমি আশ্চর্য হই না। বিষয়টা হতে আমি অবগত ছিলাম। আমার মনে সেই বিখ্যাত উক্তিটি সর্বদা ছিল—একটি ছেলে আর একটি মেয়ে কখনও কেবল বন্ধু হয়ে থাকতে পারে না। জীবনের শেষদিনে এসে হোক কিংবা ক্ষণিকের জন্য, প্রেমে অবশ্যই পড়বে।
তখন আমাদের ইন্টারমিডিয়েট কম্পলিট হয়েছে। কারোরই পাবলিকে চান্স হয়নি। দু’জনেই প্রাইভেটে ভর্তি হলাম। অনার্সের প্রথম বর্ষটা যখন শেষের পথে, তখন গিয়ে বলে বসি,
-‘এই ছেলে! আমাকে পটাচ্ছ না কেন?’
মাহফুজ সোজাসাপটা জবাব দেয়,
-‘পটানোর জন্য কী করতে হবে?’
-‘আমাকে ইম্প্রেস করতে হবে।’
-‘তুমি কি বলতে পারো, তুমি ইম্প্রেসড হওনি এখনও?’
আমি মানা করতে পারি না। মাহফুজ সব বুঝে গা দুলিয়ে হাসে। অসভ্য একটা! মূলত সেদিন থেকেই শুরু হলো আমাদের প্রেমের সম্পর্ক। বয়স বাড়ছে। স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছি মানে আমার বিয়ের বয়স পেরোচ্ছে। তাই পরিবার থেকে বিয়ের জন্য জোর করা হচ্ছে। এদিকে আমি নিজেকে মাহফুজের জন্য যত্নে রাখছি। আমাদের এত এত স্মৃতিগুলো সব কলমে ফুটিয়ে তুলছি, পাছে না এসব ভুলে যাই!”
স্বর্ণশেফা হাওলাদার
২৪ আগস্ট, ১৯৯৬
লেখাটা এখানেই শেষ। এরপর দু’পৃষ্ঠা ওলটানোর পর আরও কিছু লেখা ভেসে এলো। মোহ পড়তে লাগল আবার,
“ডায়েরি লেখার অভ্যেস নেই। তাই অনেক কিছু লিখতে ইচ্ছে করলেও, শব্দ মেলাতে পারি না। আমার মনে হয় না ডায়েরিটা জীবনে পুরোটা লেখা হবে! ইশ! ডায়েরি, তুই কত্ত মোটা! আমি এত লিখব কীভাবে?”
স্বর্ণশেফা হাওলাদার
২১ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৬
“আজ মেজাজটা প্রচুর খারাপ হয়েছে। অসভ্যটাকে ইচ্ছে করছে থাপড়ে চেহারা নষ্ট করে দিতে। আমারই বান্ধবীর সাথে ক্যান্টিনে বসে হাহা-হিহি করে? সাহস কত! কাল ওকে কী যে করব!”
স্বর্ণশেফা হাওলাদার
৩ অক্টোবর, ১৯৯৬
“প্রচণ্ড খারাপ মেজাজ নিয়ে মাহফুজের মুখোমুখি হলেও, আজ একটা দারুণ ঘটনা ঘটেছে। ক্যাম্পাসের একদম মাঝখানে মাহফুজকে দিয়ে কানে ধরে ওঠ-বস করিয়েছি। রোদে পুরো মুখটা কী লাল হয়ে গেছিল ওর! মায়া লাগছিল, এদিকে মজাও লাগছিল খুব। ওর ওই অসহায় ফেইসে প্রতিবার আপডাউনের সাথে একবার করে সরি শোনার জন্য হলেও অভিমান করাটা আমার ওপর আপাতদৃষ্টিতে বাধ্যতামূলক হোক!”
স্বর্ণশেফা হাওলাদার
৪ অক্টোবর, ১৯৯৬
“আজ পাত্রপক্ষ দেখতে এসেছিল আমাকে। মায়ের ওপর খুব রাগ ঝেড়েছি। আমাকে না বলেই কীভাবে সরাসরি বাসায় লোক আনে? আমাকে শোপিস ভেবেছে? মানুষ এনে দেখিয়ে বেড়াবে? উফ! ভাবতেই তো গা গোলাচ্ছে। মহিলাগুলো কেমন খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছিল! বিশেষ করে ওই চারচোখা ভুড়িওয়ালা লোকটা। চোশমা উঁচিয়ে যেভাবে দেখছিল, ইয়াক! ওটা কোনো মাল হলো? এর একটা হেস্তনেস্ত না করলে তো শান্তি পাচ্ছি না। গা জ্বলে যাচ্ছে।
ওহ-হ্যাঁ! লোকটা না-কি হাইস্কুলের মাস্টার। কাল মাহফুজকে বলব—এটার একটা ব্যবস্থা করতে। মাহফুজ কিছু করতে না পারলে, মাহফুজের ব্যবস্থা করে দেবো আমি।”
স্বর্ণশেফা হাওলাদার
১১ অক্টোবর, ১৯৯৬
“মাহফুজ বেঁচে গেল আমার হাত থেকে! চারচোখার এক চোখের কাঁচ ভেঙে গেছে। শুনলাম গোবরে মুখ থুবড়ে পড়েছে। আমার শান্ত-শিষ্ট চিন্তাবিদের কাজ ছিল এটা, আমি বুঝতে পেরেছি। সেই সুবাদে তাকে আমি একটা ট্রিট দেবো ভাবছি।”
স্বর্ণশেফা হাওলাদার
১৪ অক্টোবর, ১৯৯৬
“মাঝে মাঝেই মাহফুজ আমাকে স্বর্ণলতা ডাকে, শুভ্রাণী ডাকে। আমার কী যে শান্তি লাগে! মনের ভেতর প্রজাপতি ওড়ে। আমি বাইরে থেকে নিজেকে স্বাভাবিক রাখতে চাই। পুরুষমানুষ প্রেমিক হিসেবে এমনই ভালো। সবসময় সে দিতে থাকবে।
আমার মতে, এদিক থেকেও সেরকম কিছু পেলে, তার আর ধরে রাখার জোর থাকবে না। তার মনে হবে—আ-রে! ও তো আছেই। সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখার যত যা করা লাগে, ও-ই করবে। আমার এত কিছু না করলেও চলবে। এভাবে সম্পর্কটা একপাক্ষিক দেখা যেতে পারে, হয়ে যেতে পারে। কথাটা আংশিক মিলে গেলেও সমস্যা।”
স্বর্ণশেফা হাওলাদার
৭ নভেম্বর, ১৯৯৬
“মাহফুজের সাথে আজ বোরকা পরে পুরো শহর ঘুরেছি। কী স্নিগ্ধ অনুভূতিগুলো! ছেলেটা এত যত্ন নিতে কোত্থেকে শিখল? আমার চোখ দেখলে পুরো আমিটাকে পড়ে ফেলে। মূলত এজন্যই আজ অবধি ভালোবাসি বলার প্রয়োজন পড়েনি আমার। আমার চোখে তাকালেই সে মুচকি হাসে।
সেদিন তো বলেও দিলো,
-‘শুভ্রা, শোনো! তোমার চোখ আমাকে খুব শাসায়। যেন, এ-ই আমি কিছু করলাম। তো এ-ই সে আমায় মেরে দেবে।’
প্রিয় পুরুষ যদি সে নারীর চোখের ভাষা পড়তে পারে, তবে হাত বাড়িয়ে কাছে টানার প্রয়োজন নারীটির পড়ে না; চোখ হয়ে মন পড়তে ক’জনই বা পারে? সে আদর্শবান প্রেমিক! সে আমায় প্রেম শিখিয়েছে, বিনিদ্র রজনী চিনিয়েছে, অস্থিরতায় সুখ দেখিয়েছে। তার প্রেমেতে অন্ধ বানিয়েছে। আমি অনমনীয়, নিজেকে ধরে রাখতে জানি। তার আগেতে নিজেকে দেখি। তার কাছে নিজের সুখ পাই বলেই আমি আছি, থাকি। এক্ষেত্রে আমি স্বার্থপর বটে।”
স্বর্ণশেফা হাওলাদার
২৩ মে, ১৯৯৭
“মাহফুজ! আমার মাহফুজ! এত সুখ, এত শান্তি! এত কিছু আমার কপালে ছিল?
বেশি আবেগী হওয়া শুভ্রার জন্য নিষিদ্ধ। তাই আসো, আবেগ কমাই। কাটাকাটি করি।
মাহফুজ, তোমার এতটুকু ভালোবাসার বিনিময়ে আমি আজীবন তোমার। শোধবোধ, ওকে?”
স্বর্ণশেফা হাওলাদার
১৮ জুলাই, ১৯৯৭
মোহ এটুকু পড়ে চোখ বুজে নিল। ডায়েরিটা বুকের ভেতর চেপে ধরল। সময় নিয়ে পাতা ওলটাল,
“চতুর্থ বর্ষে ভর্তি হলাম দু’জন। আমি প্রায়শই সিনিয়র, জুনিয়র, পাড়ার এলোথেলো প্রায় অনেকের প্রপোজাল পেলেও, মাহফুজ পায় না। অন্তত আমি দেখিনি। এত নজর রেখেও একটা পিঁপড়ের নজর ওর ওপর পড়তে দেখলাম না। এদিকে ও সুদর্শন বটে। কেন কেউ প্রপোজ করে না? আগে খানিকটা হ্যাংলা টাইপের দেখতে হলেও, এখন তো শরীর আকর্ষণীয়। একদম পার্ফেক্ট ম্যান লাগে। আমারই মাঝে মাঝে হিংসে হয় ওকে। কী ফিট!
সেবার নানুমার সাথে তার বাবার বাড়ি বান্দরবানে বেড়াতে গিয়ে একটা পানীয় খেয়েছিলাম। নামটা মনে পড়ছে না। মাহফুজকে দেখলেই আমার সেই পানীয়র কথা মনে পড়ে যায়। ঘোর লেগে যায়। ওহ হ্যাঁ, ওটার নাম মহুয়া ছিল।”
স্বর্ণশেফা হাওলাদার
২১ ফেব্রুয়ারী, ১৯৯৮
“বাড়ি থেকে প্রচুর প্রেশার পাচ্ছি। আব্বার সাপোর্ট পেলেও, আম্মা বিয়ে দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগে গেছে। রোজ নতুন নতুন সম্বন্ধ আসছে। সমবয়সী বলে মাহফুজকে তারা মানবে না। এতদিন বিভিন্নভাবে এড়িয়ে গেলেও, এবার আম্মা আমার থেকে পছন্দ হয়েছে কি না শুনতে চায়নি। নিজেরাই আলাপ করে বিয়ের তারিখ ঠিক করে ফেলেছে। আমি জানি না কিছুই। আম্মা বলল, শরীরটা খারাপ তার। কাল যেন ভার্সিটিতে না যাই। আমি তাই মেনেছি। একটু আগে শিহাব আমার কাছে খবর পৌঁছাল। কাল আমাকে ছেলেপক্ষ দেখতে আসবে। দেখতে আসবে বলতে, পছন্দ করে রেখেছে, কাল বিয়ে পড়িয়ে উঠিয়ে দেওয়া হবে। পরে অনুষ্ঠান করবে।
এত বড়ো খেলা খেলল? আমার মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে। অল্পতেই উত্তেজিত হয়ে পড়ার অভ্যেসটা আমার আগে ছিল না, এখন হয়েছে। মাহফুজকে টেলিফোন করে যে জানাব, তারও উপায় নেই!
মাহফুজের ওপর খুব রাগ হচ্ছে। ছেলেটা আমাকে এত ভালোবাসে কেন? আম্মা যার সাথে বিয়ে ঠিক করেছে, সে দেখতে-শুনতে বেশ ভালো, সরকারি চাকরি করে। ব্যাক্তিত্বও সুন্দর। তবুও আমি বিয়েটা করতে পারছি না। অবশ্যই মাহফুজের জন্য! কোনোমতে বিয়েটা থেকে রক্ষে পাই, ফাজিলটাকে আচ্ছা মজা দেখাব! আমাকে বশ করে রেখেছে! সাহস কত!”
স্বর্ণশেফা হাওলাদার
১১ আগস্ট, ১৯৯৮
চলবে…