#প্রেম_পড়শী
#পর্ব_৪ (অন্যকিছু)
#লেখনীতে_নবনীতা_শেখ
[প্রাপ্তবয়স্ক ও মুক্তমনাদের জন্য উন্মুক্ত]
-“সব ঠিক না হলেও চলবে। আমার উত্তর চাই।”
-“কী প্রশ্নের?”
-“আমার বাবায় কেন ভাগ বসল? এখন আর নিজের বাবা বলতে পারি না কেন?”
জবাবে রঙ্গন কিছুক্ষণ চুপ রইল, অবশেষে বলল,
-“আমি জবাব এনে দেবো।”
-“প্লিজ, জলদি। আর সহ্য হয় না।”
গাড়ি চলতে শুরু করল। থামল মোহর ক্যাম্পাসের একটু আগে। রঙ্গন মোহকে বসতে বলে গাড়ি থেকে বেরোল। কিছুক্ষণের মাঝেই ডেলিভারি বয় এসে রঙ্গনকে একটা প্যাকেট দিয়ে গেল। মোহ বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে। রঙ্গন জানালার সামনে এসে চাপা গলায় বলল,
-“এদিকে তাকাও।”
মোহ তাকালে সে বলল,
-“পিছে গিয়ে বসো।”
মোহ প্রশ্নাত্মক চোখে তাকাতেই, সে আবার বলল,
-“আসো।”
মোহ আর কিছু না বলে পিছে গিয়ে বসল, রঙ্গন নিজেও পিছে চলে এলো। খাবারটা আনপ্যাক করতে করতে বলল,
-“এতটা কেয়ারলেস কেন তুমি?”
-“আগেও ছিলাম।”
মোহ থেমে পালটা প্রশ্ন শুধাল,
-“আমি তোমাকে একবারও বলিনি—আমি না খেয়ে আছি।”
রঙ্গন মিহি হেসে রুটি ছিঁড়ে মোহর মুখে তুলে দিতে দিতে বলল,
-“তোমাকে বুঝতে আগে যা সমস্যা হতো, তা-ই। বুঝে ফেলার পর থেকে তোমার বলার অপেক্ষায় থাকা লাগে না, প্রয়োজন পড়ে না।”
মোহ খেতে খেতে শুধাল,
-“খেয়েছ?”
-“অভুক্ত থাকতে পারি না যে! খেয়ে নিয়েছি।”
-“ইদানিং আমাকে তোমার খুব বিরক্ত লাগছে, তাই-না, রঙ্গন?”
-“লাগছে না।”
-“মিথ্যে বলছ?”
-“তোমার না আধ্যাত্মিক ক্ষমতা আছে, চোখ দেখেই সত্য-মিথ্যা ধরতে পারো। আমার চোখে তাকাও। কী দেখতে পাচ্ছ?”
অন্যমনস্কভাবে মোহ বলে উঠল,
-“কেবল নিজেকে দেখতে পাচ্ছি।”
মিহি হাসল রঙ্গন,
-“এর চেয়ে বড়ো সত্য নেই।”
মোহ অবাক হয়। আগে হতো না। এখন হয়। কথায় কথায় ভারি অবাক হয়, আশ্চর্য হয়। চোখের সামনে দিয়ে একটা মানুষ হেঁটে গেলেও এখন মোহ বিস্মিত চোখে দেখে। অথচ একসময় হুট করেই রঙ্গন যখন তার প্রেমে পড়ে গিয়েছিল, সে মোটেও আশ্চর্যান্বিত হয়নি। তার কাছে সেটা ছিল রোজ জল খাওয়ার মতোই স্বাভাবিক ব্যাপার। আনমনে বলেও ফেলেছিল,
-“প্রেমে পড়া ভালো, অতীব সুন্দর। এতে স্বাস্থ্য ভালো থাকে। স্কিন উজ্জ্বল হয়।”
সেই সময় রঙ্গন দিনে হাজারবার বিভিন্ন হৃদ-স্পর্শী পন্থায় তাকে প্রপোজ করতে থাকত, জবাবে মোহ নির্বিকার থাকত, খুব বেশি হলে সামান্য মুচকি হাসত। অথচ আজ সেই পুরুষটা একবার ‘ভালোবাসি’ বললেই সে আত্মকে ওঠে, তার অন্তরাত্মা কেঁপে ওঠে। রঙ্গনের ছোটোর চেয়েও ছোটো একেকটি কথা তার অভ্যন্তরে তরঙ্গ হয়ে আছড়ে পড়ে।
খাওয়া শেষে রঙ্গন মোহর দিকে জলের বোতল এগিয়ে দিলো। মোহ খানিকটা খেয়ে বোতল ফেরত দিতেই সে হাত ধুয়ে নিল। মোহকে ক্যাম্পাসে যেতে বলার মুহূর্ত আগে সে কপালে ছোট্ট করে চুমু এঁকে বলল,
-“আমি আশে-পাশেই থাকব। ভালো না লাগলেই কল দেবে, ঠিক আছে?”
-“ঠিক আছে।”
-“রঙ্গন লাভস ইউ, মোহিনী।”
মোহর শুনতে ভালো লাগে না, ব্যাপারটা তা নয়। খুব ভালো লাগে, খুব শুনতে ইচ্ছে করে। কিন্তু যতবারই প্রেমিক পুরুষের মুখে সে ‘ভালোবাসি’ শোনে, ততবারই তার দুনিয়ার সব মুছে যায়। সব কি? না না, সব না। সে আর প্রিয় পুরুষ বাদে বাকি সব মুছে যায়। যেমনটা এখন গেল। রঙ্গন এখনও তার খুব কাছে। মোহর হাঁসফাঁস লাগছে কিছুটা। রঙ্গনের বুকের কাছটায় তার দু’হাত, জাস্ট ফর ব্যালেন্স। সেভাবেই বলে উঠল,
-“ভালোবাসার কথা সবসময় বলতে নেই।”
-“কেন বলতে নেই?”
-“ভালোবাসা অমূল্য, ভালোবাসা প্রকাশও অমূল্য হওয়া উচিত। যাতে অপর মানুষটা শোনার জন্য ব্যাকুল হয়, স্থির থাকতে না পারে। অথচ আমি না চাইতেও পেয়ে যাচ্ছি। যদি মূল্য না দিই?”
রঙ্গন হাসল। মোহর কানের লতিতে আলতো করে চুমু খেল। মোহ সরে যেতে নিতেই রঙ্গন ফিসফিসিয়ে বলল,
-“তোমাকে আমি এর চেয়েও গভীরভাবে ছুঁয়ে দিয়েছি, তাও এখনও সেই প্রথমের মতোই অনুভব করো। একইভাবে এখনও তোমার হৃদ স্পন্দনের গতিবেগ আমার হৃৎপিণ্ডকে ছুঁয়ে যায়।”
মোহ জমে গেল, সরতে ভুলে গেল। কিছুক্ষণ থেমে রঙ্গন আবারও বলল,
-“তুমি বলেছিলে না? গোটা জীবদ্দশায় আমরা কেবল কিছু সংখ্যক মানুষের ভালোবাসা দেখতে পাই, বাকিরা ভালো লাগা নিয়েই এগোয়। সেই কিছু সংখ্যক-এর সংখ্যা নগন্য। আমরা তো মানুষ, ভালোলাগা মিটে যায়। ভালোবাসা ফুরোয় না। আজ থেকে সত্তরবছর পরও তোমার চোখের দিকে ভালোবাসার নজরে তাকালে, তোমার ভেতরে একটা সংঘর্ষ হবে। পলক ফেলার আগ অবধি মিলিয়নবার সেই সংঘর্ষ গেয়ে ওঠবে—ভালোবাসি।”
মোহ আবারও অবাক-চোখে রঙ্গনকে দেখল। সে একা পালটায়নি, রঙ্গনও পালটেছে। একসময় রঙ্গন ছিল ইমম্যাচিউর, গায়ে-পড়া আর ভীষণ রসিক। সে কথা জানত অবশ্য, কিন্তু এখন যেন সব জানে। মোহকে কীভাবে কাবু করতে হয়—তা খানিকটা বেশিই জানে। মোহকে নিজেরদিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকতে দেখে রঙ্গন ঠোঁট কামড়ে হেসে ফেলল।
মোহর বুকের ভেতরটা ছলকে উঠল, চোখে-চোখ রেখে অশান্ত গলায় বলল,
-“ওভাবে হাসবে না।”
হাসি চেপে নিয়ে রঙ্গন শুধাল,
-“কেন?”
মোহর আশঙ্কনীয় আওয়াজ,
-“আমি আবারও তোমার প্রেমে পড়ে যাব।”
______
নাজমা চা নিয়ে জয়তুননেসার রুমের সামনে দাঁড়িয়ে বলল,
-“আসি?”
জয়তুননেসা বিছানায় হেলান দিয়ে বসে ছিলেন। হাত উঁচিয়ে বোঝালেন,
-“আসো।”
নাজমা গিয়ে চা-টা জয়তুননেসার খাটের পাশের টেবিলে রেখে বলল,
-“আপনার চা।”
জয়তুননেসা বললেন,
-“ভালা কাম করছ চা আইনা। বসো। কয়ডা কথা কই।”
নাজমা শাড়ির আঁচল টেনে পাশেই বসল। জয়তুননেসা বললেন,
-“কাইল তো কথা কইবার সময় পাই নাই, এখন কইয়া নিই। কী কও?”
-“আচ্ছা।”
-“তোমাগোর বিয়া কবে হইছিল?”
-“জি, পনেরো বছর আগে।”
-“প্রেমের সম্পর্ক?”
-“জি না।”
-“তাইলে কেমনে কী?”
-“আমার আব্বা মাহফুজের অফিসের ম্যানেজার ছিলেন।”
-“জগলু? তুমি জগলুর মাইয়া?”
-“জি।”
-“তোমার আব্বার কথা মাফুইজ্যা আমারে কইত। বেজায় ভালা মানুষ। মাফুইজ্যারে খুবই আদর করতেন।”
-“হ্যাঁ, তাদের সম্পর্কটা ভীষণ ভালো ছিল। সেই হিসেবে মাহফুজকে আমিও খানিকটা চিনতাম। একদিন অফিসের খুব প্রেশারে আব্বার অ্যাটাক হয়। হসপিটালে নিয়ে গেলে আব্বা মাহফুজকে বলেন—আমাকে নিয়ে আসতে।”
-“অন্য কাউরে বলে নাই? কাহিনিডা বানোয়াট গল্পের মতো হইয়া গেল না?”
-“প্রশ্নের উত্তর খেয়াল করলে খানিকক্ষণ আগের কথাতেই পেয়ে যেতেন। আব্বা ছাড়া আমার কেউ ছিল না। খুব আদরের ছিলাম। যার-তার হাতে আমাকে তুলে শান্তি পেতেন না। তাই মাহফুজকে বলেছিলেন, একটু কষ্ট হলেও যাতে নিজে গিয়ে আমাকে নিয়ে আসে।”
-“তোমার আম্মা?”
-“আম্মা নেই। জন্মের পরপরই চলে যায়।”
-“জানতাম না, এরপর কও।”
-“আমি তখন ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি, হোস্টেলে থাকতাম। মাহফুজের কল আসে, সবটা শুনে অস্থির হয়ে যাই। জলদি তৈরি হয়ে নিই। মাহফুজ এসে আমাকে নিয়ে যান, ওখানে গিয়ে আব্বাকে আর পাই না। আব্বা নেই। আমি এটা মানতেই পারি না। বার বার মনে হতো—হয়তো চলে যাওয়ার আগে আমার আব্বা আমাকে খুব খুঁজেছিল! আব্বা আমার দেখা শেষবার আর পেল না। খুব ভেঙে পড়ি। এমতাবস্থায় আমার দ্বারা হোস্টেলে থাকা হয় না। হসপিটালেই থাকি। কিচ্ছু খাই না, সারাটাক্ষণ স্যালাইনের ওপর রাখা হয়। এরপর সুস্থ হলেও, ক্লাস করি না, মন বসে না। একদিন মাহফুজকে বলি—আমার আব্বার বাসায় নিয়ে যেতে। ওখানে থাকব। আব্বা তখন মাহফুজদের নতুন ব্রাঞ্চের জন্য নতুন বাসায় উঠেছিল, তাই আমি চিনতাম না। মাহফুজ আমাকে রেখে গেলেন। তারপর থেকে ওখানেই থাকি। প্রতি সপ্তাহে মাহফুজ তার সেক্রেটারি রফিককে দিয়ে আমার প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠিয়ে দিতেন। একটা ছুটা বুয়া রেখেছিলেন। আমার খুব খেয়াল রাখত খালাটা। কিন্তু আমার ভালো লাগত না। আসলে আমার সব কাজ খালা করত, আমার তখন বিরক্ত লাগত। এমনিতেও করার মতো কিছু ছিল না, যা ছিল তা-ও করে দিলে কি সহ্য হয়?
শেষে মাহফুজকে বলে আমি একা থাকা শুরু করি। তবে মাহফুজের এই এত এত দেওয়াটা আমি নিতে পারছিলাম না। তাই আমি জিজ্ঞেস করে বসি একদিন—করুণা করছেন?
মাহফুজ জানতেন, আমি কারো করুণার পাত্রী নই। তাই বলে বসেন, ‘এগুলো তোমার বাবার জন্য। আমাদের কোম্পানির পলিসি অনুযায়ী—যদি কোনো এম্পলয়ী ডিউটি টাইমে মারা যান, আমরা তার পরিবারের দায়িত্ব নিই।’
এমন কোনো পলিসি আমার জানা ছিল না। যতদূর জানি, কিছু টাকা-পয়সা দেওয়া হয়। এর বেশি কিছু না। তবুও আমি আর মাহফুজকে কিছু বলি না। মাসে দু’বার আমার খোঁজ নিতে চলে আসতেন তিনি। সব ঠিক আছে কি না জানতে চাইতেন। আর আমাকে বরাবরের মতোই বলতেন—পড়াশোনাটা চালিয়ে যেতে।
অবশেষে সফল হন৷ ওখানকার একটা কলেজে এডমিশন দিয়ে দেন। এক্সাম দিই। ভালো রেজাল্ট হয়। মাহফুজ আমাকে কখনই বাজে-নজরে দেখতেন না। আমাকে সবসময় স্নেহ করতেন। বার বার বলতেন, ‘তোমার আব্বা আমাকে যতটা সাপোর্ট করেছেন, তার বিনিময়ে আমি কিছুই করতে পারিনি। তোমার জন্য যা করছি, এতে শান্তি পাচ্ছি; প্লিজ, বাঁধা দিয়ো না।’
আমি বুঝতাম, সবটাই ছিল দায়িত্ব, মাহফুজের ভালোমানুষি।
এরকমই একদিন মাহফুজ ভার্সিটি এডমিশনের বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আমাকে আমার ফ্ল্যাটে এসে বোঝাচ্ছিলেন। সেদিন বাসায় কলোনির কিছু মহিলারা একত্রে আমার বাসায় চলে আসেন। তারপর একা বাসায় মাহফুজ আর আমাকে দেখে কত কিছুই না বললেন! একটা মেয়ে হয়ে তারা অন্য মেয়ের মুখের ওপর কালি ছুঁড়তে দ্বিতীয়বার ভাবলেন না। কী অশ্লীল একেকটা কথা! এখনও কানে বাজে। বাপ-মা মরা মেয়ে আমি, আমি নাকি শরীর বেচে খাই! একদিন মাহফুজ, একদিন রফিক, একদিন আরেকজন! পালাক্রমে টাকা কামাই। ছি! কী বাজে! সবচেয়ে বাজে ছিল যখন পুরুষ জড়ো হয়, আর আমার দিকে এলোমেলো নজরে তাকায়, তাদের মুখে তখন লোভাতুর হাসি। বিশ্বাস করুন, মরে যেতে ইচ্ছে করছিল।
সেদিন তাদের কথা শেষ হয় না। আমার মরা বাপ-মা নিয়েও কম কথা বলেনি। দুনিয়ার এই রূপের সাথে আমি পরিচিত ছিলাম না। আমার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাচ্ছিল প্রায়। এমতাবস্থায় মাহফুজ আমার দিকে একবার কেবল তাকিয়েছিলেন। আমি তখন কান্না করতে ভুলে গেছি, কেবল নতমুখী হয়ে বসে ছিলাম। আমার আব্বা থাকলে কি এত কথা শুনতে হতো আমায়?
মাহফুজ আমার অবস্থা উপলব্ধি করে তখনই কাজি ডাকেন এবং আমাকে বিয়ে করে নেন। বিষয়টা সহজ ছিল না আমার জন্য। আমি কখনই মাহফুজকে ওই নজরে দেখিনি। বিয়েটা হলেও, প্রতিবেশীরা আমাকে ছাড় দিল না। একেকজনের নজর যেন কাদা হয়ে আমার শরীরে লেপটে যাচ্ছিল।
মাহফুজ আমাকে নিয়ে সেই বাসা থেকে বেরিয়ে যান। রফিককে বলে, রাতারাতি নতুন বাসার ব্যবস্থা করে ফেলেন। আমার প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয় সবকিছুর খেয়াল রাখলেও, আমার সাথে কথা বলেননি টানা তিনমাস।
আমি বুঝেছিলাম, ওনার সময় প্রয়োজন। বুঝিনি কেবল এ-ই—উনি দুই সুতোয় টান খাচ্ছেন। যদি বুঝতাম, তবে এরকমটা কিছুতেই হতে দিতাম না।
আমাদের বিয়ের ব্যাপারটা কেবল রফিক জানত। মাহফুজ আর কাউকে জানাতে নিষেধ করেছিলেন। বলেছিলেন—পরিবার বিষয়টা মানবে না, আলাদাই থাকতে হবে।
চারমাস পর একদিন উনি দ্বিতীয়বার আমার নতুনবাসায় আসেন। খুব স্বাভাবিক ব্যবহার করেছিলেন। এসে সোফায় বসে গলার টাই আলগা করতে করতে বলেছিলেন,
-‘খুব রেগে আছ, নাজ?’
প্রথম সম্বোধন! আমি বুঝি, উনি এগোতে চাইছেন। কিন্তু এগোননি। কিচ্ছু হয়নি, কিচ্ছু না। আমার মনের ভেতর ভালোবাসার প্রজাপতি উড়তে লাগলেও, ওনার মনে চলছিল বিষাক্ত কিছু। বুঝে এলে অবশ্যই আমার গা শিরশির করে উঠত…
চলবে…