প্রেমের পাঁচফোড়ন? পর্ব_৭

0
2515

প্রেমের পাঁচফোড়ন?
পর্ব_৭
#Writer_Afnan_Lara
?
শান্ত আর কিছু বললো না জ্যাকেটটা পরে নিয়ে কানে হেডফোন গুজে আরেকদিকে চোখ ফিরিয়ে নিলো
সবাই গান গাইতেসে
♥দূরররর দ্বীপ ও বাসিনী
চিনি তোমারে চিনি
দারুচিনির ও দেশে
তুমি বিদেশিনী গো♥
গানের মাঝে ঘটে গেলো আরেকটা বিপদ,সেটা হলো গাড়ী নষ্ট হয়ে গেছে
১০/১৫মিনিট লাগবে ঠিক হতে
সবাই বাস থেকে নেমে এদিক ওদিক ঘুরাঘুরি করতেসে
বাকি বাসগুলো আগেই চলে গেছে
শান্ত ফোনে নেট আনার ট্রাই করতেসে যদি বাই চান্স নেটটা পাই রিয়াজ বা নওশাদের হেল্প নিয়ে যেতে পারবো গন্তব্যে
.
আহানা বাস থেকে নেমে একা একা রোডের পাশে দাঁড়িয়ে আছে চুপচাপ,একটা কাক পক্ষি ও নজরে আসতেসে না,কি রকম নিবিড় একটা এলাকা,মাঝে মাঝে গা কাঁটা দিয়ে উঠে
.
শান্ত ফোন নিয়ে ঘুরে ঘুরে হাঁটতেসে নেটের জন্য,হাতে ফোন নিয়ে একবার উপরে উঠাচ্ছে আবার নিচে নামাচ্ছে
শেষে যেতে যেতে এক ধাক্কা খেলো আহানার সাথে
আহানা চোখ বড় করে বললো কি সমস্যা আপনার?আমাকে এমন ডিস্টার্ব করেন কেন
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
আমি ডিস্টার্ব করেছি তোমাকে?ভেরি ফানি,আমি নেট খুঁজতেসিলাম,আর তুমি আমাকে দেখো নাই আমি ফোনের দিকে তাকিয়ে আসতেসিলাম?
.
আজব তো!আপনি দেখে হাঁটতেসেন নাকি না দেখে হাঁটতেসেন সেটাও আমাকেই দেখতে হবে?আর না দেখলে আমার দোষ?
.
হ্যাঁ তোমার দোষ
.
আপনি একটা অসভ্য লোক!
শান্ত গাল ফুলিয়ে আহানার দিকে এগিয়ে যেতে নিতেই আহানা পিছিয়ে গেলো
শান্ত আরও এগিয়ে গেলো
আহানা এবারও পিছিয়ে গেলো
.
বেয়াদব মেয়ে!
.
আপনি বেয়াদব!
.
শান্ত পিছন ফিরে তাকাতেই দেখলো বাস উধাও সাথে সবাই উধাও
আহানা একটু এগিয়ে চারিদিক দেখলো ওমা কেউ তো নেই,সবাই গেলো কই!
.
সব তোমার কারনে হয়েছে,তুমি বেশি বকরবকর করতেসিলা
.
কি?আমার কারনে?গায়ে পড়ে লাগতে আসছিলো কে?আজব লোক!
শান্ত রেগে বললো এখন তো নেট ও পাবো না ধুর!
আহানা নিজের ফোন নিয়ে চেষ্টা করলো,তার ফোনেও নেট নেই,নেটের একটা দাগ ও নেই,বিকাল হয়ে গেছে ততক্ষণে
একটা চিল ডাকতে ডাকতে পাহাড়ের উপর গিয়ে বসলো,শান্ত আর আহানা সেদিকে তাকিয়ে চিলটার দিকে মুখ ছোট করে চেয়ে আছে
চিলটা দেখে আহানার মনে চাচ্ছে কান্না শুরু করে দিতে,মনের ভয়টা আরও জেগে উঠলো
আর শান্তর মনে হচ্ছে বেকুব পাখি,মানুষের বিপদ দেখলে কাউ কাউ করতে করতে উড়ে,একটা থাবড় মারলে কাউ কাউ যেতো পাখিটার আর আমার রাগটাও কমতো!
আহানা ব্রু কুঁচকে শান্তর দিকে তাকিয়ে আছে শান্ত রেগে মেগে হনহনিয়ে হাঁটা ধরলো
আহানা মুখটা ছোট করে দাঁড়িয়ে শান্তর চলে যাওয়া দেখতেসে
শান্ত কিছুদূর গিয়ে থেমে আহানার দিকে তাকিয়ে বললো তোমাকে কি কোলে করে নিয়ে যেতে হবে?
.
যাব না আমি আপনি যান
আহানা আরেক দিকে ফিরে হাঁটা ধরলো
.
এই মেয়েটার মত বেয়াদব আর ২টা দেখিনি,কেয়ামতের ভিতরে ঢং দেখাচ্ছে
শান্ত এগিয়ে এসে আহানার হাত চেপে ধরলো
.
চলো আমার সাথে
শান্ত আহানার কাটা হাতটা চেপে ধরে ওকে নিয়ে যাচ্ছে
.
আহানা কাঁদতে কাঁদতে বললো ছেড়ে দিতে
.
শান্ত ওর কথায় কান না দিয়ে হেঁটে চলছে
.
শেষে আহানা ব্যাথায় কুকড়িয়ে উঠতেই শান্ত থেমে গেলো,হাত ছেড়ে দিতেই দেখলো আহানার হাত ভর্তি রক্ত
.
এসব কি করে হলো?
.
আহানা হাত দিয়ে চোখ মুছে বললো কিছু না
.
এখন তো ব্যান্ডেজ করলে ভালো হতো,রক্ত বের হওয়া কমাতে পারতাম,দেখি তোমার ওড়না ছিঁড়ো সেটা দিয়ে বেঁধে দিব
.
আহানা চোখ বড় করে বললো না,আমি ঠিক আছি
.
আরে একটুই তো ছিঁড়বো,দাঁড়াও আমি ছিঁড়তেসি
শান্ত আহানার ওড়নায় হাত দিতেই আহানা টান দিয়ে সরিয়ে ফেলে বললো না,আমার ওড়না ছিঁড়বেন না একদম!
শান্ত চোখ রাঙিয়ে নিজের পকেট থেকে একটা সাদা রুমাল বের করে আহানার হাত টেনে ধরে একটা গিট্টু দিতে দিতে বললো আমার এত ফালতু সময় নেই তোমার মত মেয়ের কেয়ার করার
ইনফেকশন হয়ে গেলো অজ্ঞান হয়ে যাবা সেই আমাকেই তোমাকে বয়ে ঢাকা পর্যন্ত নিয়ে যেতে হবে তাই এই কাজ করতেসি
রুমাল দিয়ে আহানার হাত পেঁচাতে পেঁচাতে ভাবতে লাগলো কি এমন আছে এই ওড়নাতে,নিশ্চয় বিএফ দিসিলো,হুম সেটায় হবে
.
আহানা মনে মনে ভাবতেসে ওমন করে তাকিয়ে কি ভাবতেসেন উনি
.
তারপর আবারও ওর আরেক হাত ধরে হাঁটা ধরলো শান্ত
সন্ধ্যা নেমে আসতেসে শান্ত আহানাকে নিয়ে এখনও হেঁটে যাচ্ছে,কই যাচ্ছে তা দুজনের একজনেও জানে না
আহানা থেমে গেলো হঠাৎ
.
কি?

পায়ে ব্যাথা করে আর হাঁটতে পারবো না আমি
.
তো এখানে থাকার ইচ্ছা আছে নাকি?
.
চাকমাদের একটা দল হেঁটে যাচ্ছে,সম্ভবত কোনো অনুষ্ঠানে যাচ্ছে সবাই সেজে গুজে,বিরাট মিছিলের মত করে যাচ্ছে,রোডে একটু জায়গাও নেই,একজন আরেকজনের হাত ধরে হেঁটে চলেছে,শান্ত আর আহানা উনাদের চাপাচাপিতে মিছিলের মাঝখানে এসে পড়লো
উনারা খুশি হয়ে ভাবলেন হয়ত ওরা জয়েন করতে চায় তাদের সাথে
তাই ওদের টেনে দলে ঢুকিয়ে ফেললো তারা
.
শান্ত আর আহানা একজন আরেকজনের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে
একটা মাঠে এসে সবাই থেমে গিয়ে নাচগান শুরু করে দিলো একসাথে মিলে
একটা মেয়ে এসে আহানার হাত ধরে নিয়ে গেলো শান্তর পাশ থেকে
শান্ত কিছু বলতেও পারলো না,কারন সুপারি গাছের পাতা দিয়ে বেড়া দেওয়া একটা বাড়ির ভিতরে নিয়ে গেছে আহানাকে
সেখানে সব মেয়েরা আছে শান্তর যাওয়া নিষেধ,এখন যেতে গেলেও মার খেতে হবে,যেনো তেনো মাইর না একেবারে গনপিটুনি
তাই চুপচাপ সে তাকিয়ে রইলো ওদিকে
একজন শান্তকে বললো আহানাকে নাচের পোশাক পরাতে নিয়ে গেছে,উনি যে ভাষা ইউজ করেছেন শান্তর তা বুঝতে পাক্কা ৫মিনিট লেগেছে
শান্ত একটা নারকেল গাছের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,তার পাশের চাকমা লোকটাকে কিভাবে ঢাকা যাবে সেটা জিজ্ঞেস করতেই উনি ক্যাবলার মতে চেয়ে ছিলেন
শান্তর ইচ্ছে করতেসে নিজের চুল নিজে ছিঁড়তে
চারপাশটা মানুষে ভর্তি তিল পরিমান জায়গা নেই কোথাও,সব ছেলের গায়ে এক পোশাক,সব মেয়ের গায়ে এক পোশাক
একজন বয়স্ক লোক শান্তর সাথে পরিচয় হতে আসলেন,সম্ভবত উনি গ্রামের প্রধান,তার পদের নাম চাকমা রাজা
তিনি শান্তকে শুদ্ধ ভাষায় বললেন এখানে যে অনুষ্ঠানটা হচ্ছে সেটার নাম হলো “নুত্তবজুর”,বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে তারা ৩টি পর্বে বিভক্ত অনুষ্ঠান উদযাপন করেন,নুত্তবজুর হলো শেষ পর্ব,তিনি তার পরিচয়টাও দিলেন
তারপর শান্তকে বললেন তোমরা কি স্বামী স্ত্রী?
শান্ত খুব ভালো করে জানে শুধু ফ্রেন্ড বললে কেলানি খেতে হবে,লোকটার সাথে ২জন পেয়াদাও আছে,স্বামী স্ত্রী বললে ভালো আপ্যায়ন করবে এরা
শান্ত হ্যাঁ বলে দিলো
হঠাৎ করে ঢাক ঢোলের আওয়াজ বেড়ে গেলো,এক সারিতে কিছু চাকমা নারী হেলেদুলে আসতেসে ঐ বেড়াটা পেরিয়ে
কারোর দিকেই ভালো করে শান্ত তাকালো না
চোখ নামাতে গিয়েই আটকে গেলো,সারির ৭ম জন যে আছে সে হলো আহানা,গায়ে চাকমাদের পোশাক,পুরো ওদের মত করেই আহানার ড্রেস আপ করা হয়েছে,স্কার্টের মত নিচের দিকে,সেটা কোমড় থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত,আর উপরে ব্লাউজের মত একটা পোশাক,খুব আঁটসাঁটভাবে বাঁধা পুরো পোশাকটি
শান্ত কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে আরেকদিকে চোখ ফিরিয়ে নিলো
আহানা চুপচাপ সেখানে দাঁড়িয়ে আছে অন্য মেয়েরা নেচে যাচ্ছে,আহানা তাকিয়ে ওদের নাচ দেখতেসে,মাঠের এপাশে শান্ত আর ওপাশে আহানা
সন্ধ্যা হয়ে গেছে,চারিদিকে জায়গায় জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে ফেললো সবাই,কিছুদূর গেলেই আগুন,খড়কুটা,কাঠ দিয়ে জ্বালানো সব
দুটো লোক এসে আগুনের পাশ থেকে কলাপাতায় মোড়ানো খাবার শান্ত আর আহানার হাতে তুলে দিয়ে চলে গেলো
শান্ত চোখ একবার বড় করে আবার ছোট করে বুঝার চেষ্টা করতেসে এটা কি খেতে দিলো ওরা
আহানার দিকে তাকিয়ে দেখলো সে শান্তর দিকে চোখ তুলে তাকিয়ে আছে,চোখ দেখেই বুঝা যায় এই খাবারের experiment সে আমাকে দিয়ে করাতে চায়,শান্ত খেলে সে খাবে,তার ও কেমন একটা লাগতেসে খাবারটা খেতে
শান্ত ঢোক গিলে খাবারটা নিয়ে মুখে দিলো তারপর বললো বাহ,মজা তো
সেই বয়স্ক লোকটা পাশেই চেয়ারে বসা ছিলেন,উনি বললেন এটা আমাদের ঐতিহ্যবাহী খাবার ‘বাঁশের রান্না”,মাছ,ঝাল জাতীয় মসলা আর শাকসবজি সিদ্ধ করে কলাপাতায় মুড়িয়ে আগুনের পাশে রেখে তারপর খাওয়া হয় এটা
আহানা এবার বুঝতে পেরে খাবারটা মুখে দিলো,ওতটাও খারাপ না,খেতে বেশ লেগেছে
৮টা বেজে গেছে ওদের অনুষ্ঠানটটা অবশেষে শেষ হলো
শান্ত কি করে রাতটা কাটাবে সেটাই ভাবতেসে
হঠাৎ করে সেই ক্যাবলা লোকটা শান্তর হাত ধরে বেড়া পেরিয়ে একটা ঘরে নিয়ে গেলো,বাঁশ আর কাঠের তৈরী ঘর,মই বেয়ে উঠতে হয়,ঘরটাতে ৩টে রুম,২টো বেডরুম, আর একটা রান্নাঘর
শান্তকে বাম পাশের রুমটাতে যেতে বললো লোকটা,তারপর নিজে ডান পাশের রুমটায় চলে গেলো,তার বউ আর সে ঐ রুমে থাকবে
শান্ত এদিক ওদিক তাকিয়ে বলতে গেলো আহানা কই কারন তখন আহানা হাত ধুতে এদিকে আসছিল আর তার দেখা পায়নি সে
তখনই ওর নজর গেলো রুমের ভেতর আহানার হাত দেখা যাচ্ছে
শান্ত রুমে প্রবেশ করতেই আহানা বাঁশের বেড়ার সাথে লেগে গিয়ে বললো খবরদার!
.
শান্ত গম্ভীর হয়ে বিছানায় এসে বসলো
আহানা পোশাকটার উপর তার ওড়নাটা পেঁচিয়ে দাঁড়িয়ে আছে
.
শান্ত নিরব থেকে বললো আমি অনেক ট্রাই করসি বাট ঢাকা যাওয়ার কোনো রাস্তাই পাচ্ছি না,হয়ত কাল সকাল অবধি পেয়ে যাবো,আজ রাতটা!
.
আহানা চিৎকার করে বললো আমি আপনার সাথে এই রুমে থাকবো?তাও একসাথে?
.
তোমার সমস্যা হলে বাইরে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকো!
শান্ত জ্যাকেটটার চেইন আটকাতে আটকাতে কথাটা বলতেসিলো তারপর বিছানায় লম্বা হয়ে শুয়ে পড়লো
আহানা চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে,তারপর ভাবতে ভাবতে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো,যে বাসার সামনে এত এত মানুষ ছিল এতক্ষণ আর সেখানে এখন একটা পিপড়াও চোখে পড়ছে না,এখানকার মানুষ এত তাড়াতাড়ি ঘুমায়?
আহানা ঘর থেকে বেরিয়ে উঠানে দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে,চাঁদের আলো+কাঠের আগুন জ্বলতেসে
এই ছেলেটাকে একদম বিশ্বাস করতে পারছে না সে,তার উপর এই পোশাক,চেঞ্জ যে করবো তার ও উপায় নেই,জোর করে পরায় দিসে আমাকে
ঘরটার গা ঘেষে একটা পাহাড়,বেশি বড় ও না ছোট না,পাহাড়টা দেখে আহানার কলিজা বের হওয়ার উপক্রম কারন ঘুটঘুটে অন্ধকার তার উপর কেমন কেমন আওয়াজ আসতেসে পাহাড়টা থেকে,একটা শেয়াল কাছে দাঁড়িয়ে ডাক দিলো
আহানা ভয়ে চিৎকার দিয়ে সরতে যেতেই শান্তর সাথে ধাক্কা খেলো
.
কি?এখানে কি করো তুমি?
.
আপনাকে বলতে হবে?
.
চলো ভিতরে চলো এখানে থাকা সেফ না
.
যাব না আমি,আপনার সাথে এক রুমে থাকবো না
.
শান্ত আর কিছু বললো না চলে গেলো
আহানা ঘরটার সামনে বসে আছে
মশার কামড় খাচ্ছে
মশার উৎপাত এত বেড়ে গেছে মনে হয়ে রুমে যেতে বাধ্য করবে তাকে,,না উঠবো না আমি
শীতে গা কাঁপা কাঁপি শুরু হয়ে গেছে,বাধ্য হয়ে ঘরটার ভিতরে এসে লুকিয়ে রুমে উঁকি দিলো আহানা,শান্ত আরামসে শুয়ে শুয়ে ফোনে গেমস খেলতেসে
আহানা সোজা গিয়ে খাটের এক কোণে পা তুলে বসে পড়লো
মশা কামড়িয়ে হাত পা ফটকা বানায় ফেলসে
.
রুমটাতে একটা খাট ছাড়া আর কিছু নেই,একটা চেয়ার ও না,থাকলে অন্তত সেখানে বসা যেতো
.
শান্ত আহানার দিকে চেয়ে দেখলো সে খাটের শেষ প্রান্তে জানালায় মাথা ঠেকিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে
.
মাঝে মাঝে জানালা থেকে আসা হাওয়ায় কেঁপে কেঁপে উঠতেছে
শান্ত তার জ্যাকেটার দিকে তাকিয়ে সেটা খুলে নিলো আহানার গায়ে পরাতে যেতেই ও জেগে তাকিয়ে দেখলো শান্ত খালি গায়ে হাতে জ্যাকেট
আহানা ভয় পেয়ে সরতে যেতেই বাঁশের জানালার কোণার সাথে ব্যাথা পেলো পিঠে
উহহ!
.
আগেও বলেছি এখনও বলতেসি তোমার মত মেয়ের প্রতি আমার কোনো interest নেই,শীতে মরে যাচ্ছো তাই জ্যাকেট দিচ্ছিলাম তোমাকে
.
লাগবে না!
আহানা ওড়নাটা ভালো করে গায়ে খিঁচে খাটের কোণায় দূরে গিয়ে বসলো
.
শান্তর রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে,হাতের কব্জি কচলিয়ে দুহাত দুপাশে রেখে আহানার দিকে এগিয়ে গেলো সে
আহানা চিৎকার দেওয়ার আগেই ওর মুখ চেপে ধরে ফেললো শান্ত
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
শুনো!! তোমার সাথে আমি যদি এখন জোর করেও কিছু করে ফেলি তোমার ক্ষমতা নেই আমাকে আটকানোর
আর যাই হোক আমি তোমার সাথে এসব করবো না,তোমার প্রতি আমার বিন্দু মাত্র interest নেই,সো আমাকে এমন ভাব দেখিয়ে নিজেকে উপরে তুলতে যেও না
.
আহানার মুখ থেকে হাত ছাড়তেই ও চিল্লাই বললো আপনার চরিত্র খারাপ!!
শান্ত কথাটা না শুনার ভান করে জ্যাকেটটা আবারও পরে খাটের আরেক প্রান্তে গিয়ে বসে পড়লো
হারিকেন জ্বালানো,বাঁশের একটা কোণার সাথে ঝুলিয়ে রাখা আছে হারিকেনটা,শান্ত জীবনে হারিকেন বাস্তবে দেখেনি তাই ভালো করে উঁকিবুকি দিয়ে একটা ছবি তুলে নিলো হারিকেনের,বইতে না টিভিতে দেখসিলাম সামনা সামনি এই প্রথম দেখলাম ♥
আহানা কখন যে ঘুমিয়ে পড়লো,চোখ মেলে দেখলো শান্ত লম্বা হয়ে ঘুমায় গেছে খাটের আরেকপাশে
আহানা খাট থেকে নেমে তার জামাটা হাতে নিয়ে বের হলো ঘর থেকে,যে মেয়েটা ওকে কাল জামাটা পরিয়ে দিয়েছিল তাকে গিয়ে বললো বাথরুম দেখাতে,সে দেখিয়ে দিতেই আহানা গিয়ে তার আগের জামাটা পরে আসলো,পোশাকটা মেয়েটাকে দিয়ে বললো ফেরত নিতে মেয়েটা মুচকি হেসে বললো নিয়ে যান আপামনি
.
আহানা জামাটা হাতে নিয়ে রুমে আসলো,শান্ত মরার মত ঘুমাচ্ছে
.
ইচ্ছে করছে চড় মেরে উঠাই বেয়াদবটাকে,ওর জন্য কাল রাত আমাকে এখানে থাকতে হয়েছে,অসভ্য!
.
আহানা শান্তর পাশে দাঁড়িয়ে ওর পায়ের আঙ্গুলে চিমটি কাটলো
সাথে সাথে শান্ত লাফ দিয়ে উঠে পা ধরে দেখলো কিছু কামড় দিসে কিনা
আহানা মুখ বাঁকিয়ে বললো আজ ঢাকা যাবেন না নাকি??না গেলে বলেন আমি যাই
চলবে♥

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে