প্রেমের পাঁচফোড়ন? পর্ব_৪২

0
2018

প্রেমের পাঁচফোড়ন?
পর্ব_৪২
#Writer_Afnan_Lara
?
আহানা শান্তর সামনে গিয়ে রাগে এক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে
.
হাই??কি খবর
.
আপনি!!
আপনি তারেক আঙ্কেলকে কি বলেছেন?আপনাকে বলসি আমি আমার হয়ে তদারকি করেন?
.
না বলো নি,আর আমি কি করবো না করবো সেটাও তোমার এত ভাবতে হবে না
তোমাকে জিজ্ঞেস করিনি আমি,আর কেনইবা এতসব তোমাকে কৈফিয়ত দিচ্ছি আমি?
চোখ রাঙিয়ে শান্ত মুখে সেন্টার ফ্রেশ ঢুকিয়ে পাশ কাটিয়ে চলে গেলো
আহানা ওর দিকে চেয়ে রেগে সামনে পা রাখতেই নিহাল এসে দাঁড়ালো
.
কি?আবার কি?
.
দেখো আহানা আমি অনেক ভেবেছি,আমার মনে হয় আমি ভুল ছিলাম,সেদিন তোমার অনাথ হওয়ার কথা শুনেও আমার বিয়েতে হ্যাঁ করা উচিত ছিল বাট আমি করিনি,তুমি প্লিস আমাকে ক্ষমা করে কাছে টেনে নাও
.
আপনি এসব কি বলতেসেন,দেখুন আমি আপনাকে ভালোবাসি না,ওকে?বাই,আমাকে এত ডিস্টার্ব করবেন না
.
আহানা গিয়ে তার কেবিনে বসলো
.
নিহাল আহানার দিকে চেয়ে বললো তোমাকে তো আমিও লাভ করি না,কিন্তু কথা হলো গিয়ে শান্তর সাথের বাজির
ওর ধারনা তোমাকে আমি পটাতে পারবো না,কিন্তু এই বাজি তো আমিই জিতব,তুমি যে অনাথ,তোমাকে বিয়ে করে পরেরদিনই লাথি মেরে বের করা আমার বাঁ হাতের খেল!
সবকিছুতে ছাড় দিতে পারি কিন্তু বাজিতে না
শান্ত জাস্ট ওয়েট এন্ড সি
.
আহানা রাফি স্যারকে ফাইল দেখিয়ে কেবিনে এসে দেখলো একটা ছোট্ট বক্স,ঝকমকে কাগজে মোড়ানো আর উপর দিয়ে লাল ফিতা বাঁধা
সে বক্সটা খুলে দেখলো একটা রিং

আহানা রেগে বক্সটা শান্তর গায়ে মেরে দিলো
কি সমস্যা আপনার,এটা কি দিসেন?মজা করার ও একটা লিমিট থাকে
.
মানে?আমি কেন দিতে যাব আজব!
.
আপনি দেননি?
.
এটা আমি দিয়েছি আহানা!
নিহাল কাছে এসে আহানার হাত ধরে টেনে নিজের দিকে ফিরিয়ে বললো will you marry me?
.
শান্তর চোখ লাল টুকটুকে হয়ে গেছে,বসা থেকে দাঁড়িয়ে গেছে সে
.
আহানা হাত ছাড়াতে নিতেই নিহাল আরও শক্ত করে ধরে আকুতি মিনতি করতে লাগলো
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
নিহাল ছাড়ুন,আমার লাগতেসে!
.
শান্ত এক ধাক্কা দিয়ে নিহালকে সরিয়ে দিলো
.
ও বলছে না ওর লাগছে?কথা কানে যায় না তোর??
.
মাইন্ড ইউর language শান্ত!!
.
ইউ জাস্ট শাট আপ!!আহানার গায়ে একটাও টোকা দিবি তো তোর হাত ভেঙে তোর মাথায় হ্যান্ড ক্রাউন বানিয়ে সাজিয়ে দিব!
.
নিহাল শার্টের কলার ঠিক করে চলে গেলো
.
আহানা চুপ করে চেয়ারে গিয়ে বসেছে
.
শান্ত ঢকঢক করে পানি খেয়েই যাচ্ছে
তারপর সিগারেট একটা ধরিয়ে নিচের দিকে গেলো,বাইরে দাঁড়িয়ে অফিসের দিকে চেয়ে দেখতেসে আর সিগারেটে টান দিচ্ছে
নিহাল কোথা থেকে এসে শান্তর সিগারেটটা নিয়ে নিলো
তারপর হেসে দিয়ে বললো এত কষ্ট এই টুকুতেই?
আরে সামনে তো আরও কত কিছু দেখতে হবে তোমাকে!
আমি যখন আহানাকে বিয়ে করে নিয়ে যাব তোমার সামনে রোমান্স করবো!
.
চুপ!!এসব করার যোগ্যতা তোমার নাই
.
তাই তো আমি আহানাকে বিয়ে করে সেটা প্রুভ করে দিব শান্ত,আমার সাথে বাজি ধরতে আসিও না,আমি বাজিগর!তুমি তোমার ওভার একটিং নিয়ে থাকো আমি আহানাকে বিয়ে করে হানিমুনেও চলে যাব ততদিনে
.
শান্ত নিহালের কলার টেনে বললো আমি তোরে ছাড়বো না,আহানার থেকে দূরে থাকবি,গট ইট?
কথাটা বলে শান্ত চলে গেলো

আজ বিকালেই সব কাজ শেষ করে আহানা বাসায় ফিরেছে,শান্তর যে কি হলো,আমার সাথে একটা কথাও বলেনি সে
বাসায় ফিরে সিঁড়ি বেয়ে উঠতে যেতেই দাদি ডাক দিলেন
আহানা সবে একটা সিঁড়িতে পা রেখেছে,নিচে নেমে সেদিকে গেলো দাদির ডাকে
দাদি মুচকি হেসে আহানার হাত ধরে ভিতরে নিয়ে আসলেন
সোফায় দাদা আর কে যেন বসে আছে
আহানার বুকের ভিতর কেমন যেন করছে,না এটা হতে পারে না, এটা শান্ত হতে পারে না, শান্ত যেন টের না পায় সেজন্য তো আমি অন্য রোড দিয়ে এসেছি তাহলে ও এখানে কেন আসবে,কিন্তু নাহহহ এটাই শান্ত
আহানা ঢোক গিলে তাকিয়ে আছে ওর দিকে,আর সে দাদার সাথে দাবা খেলায় মগ্ন
দাদা এমনভাবে ওর সাথে কথা বলতেসে যেন দূর দুরান্তের সম্পর্ক তাদের
.
কিরে চিনোস তো এরে?
.
আহানা থতমত খেয়ে বললো হুম চিনি
.
তুই আমাদের শান্তকে চিনস আগে বলবি না??তাহলেই তো হতো
.
আপনি এখানে কেন?
.
শান্ত দাবায় চাল দিয়ে আহানার দিকে চেয়ে মুচকি হেসে বললো এই প্রশ্ন তো আমার করা উচিত,তুমি এখানে কেন?কারণ তোমার আগে আমি উনাদের চিনি
.
আহানা ব্রু কুঁচকে বললো দাদি আমি আসি
.
আরে থাক থাক এত লজ্জা পাওয়ার কি আছে?চা খাওয়ার জন্য ডাকছি তোরে
.
লজ্জা,?কিসের লজ্জা!
.
হইসে না জানার ভান করতে হবে না,আমরা সব জানি
.
আহানা মনে মনে ভাবতেসে এরা কি জানে,বেয়াদবটা কি বলেছে এদের!
.
দাদি হেসে দিয়ে রান্নাঘরের দিকে চলে গেলেন
দাদা চাল দিতে দিতে বললো শান্ত আমার নাতির মত,এমন কোনো দিন বাকি নেই ও আমার খবর নেয় না,বড্ড ভালো ছেলে
.
কেমন ভালো সেটা আমার থেকে ভালো কেউ জানে না
চা না খেয়েই আহানা বাসা থেকে বেরিয়ে দোতলার দিকে গেলো
দরজা লাগাতে যেতেই শান্ত হাত দিয়ে দরজা ধরে ফেলে ভিতরে ঢুকে গেলো
.
এই আপনি এখানে কি করেন?এখন কি আমাকে এই বাসা থেকেও বের করে দিবেন?কি সমস্যা আপনার? যান বলতেসি!
.
এটা আমারও বাসা
.
বললেই হলো আর কি,বের হোন বলতেসি আমি চিৎকার করবো,দাদা!!!! দাদি!!
.
শান্ত আহানার মুখ চেপে ধরে দেয়ালের সাথে লাগিয়ে ধরলো
শুনো একটা কথা বলি..মন দিয়ে শুনবা ওকে?
.
না
.
তাহলে কামড়ে দিব,চুপচাপ আমার কথা শুনো
আমি এই বাসা আমার ও বাসা বানিয়ে নিব
কালকের জন্য তৈরি থেকো,ওকে?
কথাগুলো বলে শান্ত মুচকি হেসে চলে গেলো
.
আহানা থ হয়ে ওর চলে যাওয়া দেখছে,এটা কি বলে গেলো শান্ত?কালকের জন্য তৈরি থাকবো মানে?
আমাকে কি এই বাসা থেকেও তাড়াবে নাকি?আজব তো!
আর কি বললো উনার বাসা বানাবে?নিজের বাপের এত বড় ফ্ল্যাট রেখে কিনা এবার আমার এই বাসায় থাকবে?থাকাচ্ছি আমি!!
কাল খবর করে দিব আমাকে এই বাসা থেকে বের করতে চাইলে!
আহানা ঠাস করে দরজা লাগিয়ে পিছন ফিরে তাকাতেই দেখলো দুটো প্যাকেট ফ্লোরে
আহানা গিয়ে প্যাকেটগুলো হাতে নিয়ে ভাবলো এগুলা কে রাখলো আমি তো দরজা লক করে গেসিলাম,তাহলে চাবি পেলো কই?
আহানা প্যাকেটটা না খুলেই হনহনিয়ে নিচ তলায় আসলো দাদি গাছে পানি দিচ্ছেন আর সূরা ফাতিহা পড়তেসেন
আহানা গিয়ে বললো দাদি আমি যাওয়ার পর কি কেউ আমার বাসায় এসেছিল?
.
সূরা পড়া শেষ করে উনি বললেন হ্যাঁ,একটা মেয়ে,নাম রুপা বললো তোমার বান্ধুবী
আমি বারতি চাবি দিতাম না কিন্তু সে বললো সে তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে চায়,আর বললো প্যাকেটটা রেখেই চলে যাবে
তাই চাবি দিলাম,অলিকেও সাথে দিসিলাম কারণ আবার কি করে না করে আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না
অলি বললো শুধু ব্যাগ রেখে চলে এসেছে
.
ওহ!
আহানা দোতলায় উঠতে উঠতে ভাবলো রুপা আমাকে সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলো?
তাহলে এখনও কল করেনি কেন?
ভাবতে ভাবতে আহানা প্যাকেট খুলে দেখলো একটা লাল শাড়ী,সুতোর শাড়ী
নীল ব্লাউজ,লাল শাড়ীর সাথে নীল ব্লাউজ কেন?রুপা কি গাঁজা খাইয়া শপিং করসে নাকি
আরেকটা প্যাকেটে একটা হালকা পাতলা গলার হার, কানের দুল,টিকলি আর এক মুঠো চুড়ি
রুপা এসব কেন কিনলো,আর চয়েস এত সুন্দর!রুপার চয়েস তো এত ভালো না,আমার কেন জানি মনে হচ্ছে শান্ত কিনেছে এসব!
আহানা ফোন নিয়ে সোজা রুপাকে কল করলো
.
রুপা গন্ডারের মত ঘুমাচ্ছে পড়ে পড়ে,ফোন বাজতেই লাফ দিয়ে উঠে রিসিভ করে আহানা কিছু বলার আগেই বললো ঐ প্যাকেটের সব আমি কিনছি
.
তোকে তো এখনও জিজ্ঞেসই করিনি তাহলে?
.
না তুই হয়ত ভাববি অন্য কেউ দিসে কিন্তু না আমি দিয়েছি,সত্যি বিশ্বাস কর,সত্যি আমার পিগি ব্যাংকের কসম
.
হইসে চুপ কর,বিশ্বাস করসি,কিন্তু একটা কথা,লাল শাড়ীর সাথে নীল ব্লাউজ দিছস কেন?মদ আবার খেয়েছিস?
.
ওটাতে শাড়ী ছিল?
.
কিহহহহ?তুই কি বললি?
.
না মানে ইয়ে মানে ওটাতে নীল ব্লাউজ ছিল?আমি তো লাল কিনেছিলাম,ওরা ভুলে নীল দিয়া দিসে
.
ওহ,আচ্ছা থ্যাংক ইউ সো মাচ!!
.
রুপা ততক্ষণে লাইন কেটে ২গ্লাস পানি খেয়ে শান্তকে কল করতেসে
.
হ্যাঁ রুপা বলো
.
ভাইয়া ঐ প্যাকেটে শাড়ী ছিল আমাকে বলেননি কেন,আর একটুর জন্য ধরা খাইতাম আমি
.
আহানার সাথে আমি মিথ্যা বলতে পারি না বলেই তোমাকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম,সরি ফর দ্যাট,মনে ছিল না শাড়ীর কথা তোমাকে যে বলিনি
.
হুম!
.
আহানা প্যাকেট গুলো রেখে চুপচাপ রান্নাঘরে গেলো,ভাত বসিয়ে ভাবলো রুপা কি সত্যিই এগুলো কিনেছে?আচ্ছা কাল টেস্ট করবো,কে কিনেছে
.
পরেরদিন আহানা মিষ্টিকে পড়িয়ে শান্তর বাসার দিকে তাকাতে তাকাতে চলে যাচ্ছে,কি ব্যাপার!এই শান্তর কি হলো!আমাকে জ্বালাতে আসলে না!
আজ শুক্রবার বলে ভার্সিটি নেই,মিষ্টিকে পড়িয়ে আহানা বাসায় ফিরে বাসার সব কাজ সেরে ভাত বসাতে যেতেই দরজায় নক হলো,অলির কথা শুনা যাচ্ছে
আহানা গিয়ে দরজা খুলতেই অলি বললো আজ রান্না করতে হবে না,দাদির বাসায় দাওয়াত
.
হঠাৎ কেন?
.
সেটা তো জানি না!
.
আহানা গিয়ে চালের বাটি থেকে চাল বালতিতে ঢেলে ছাদে গেলো
আজ সকাল থেকে এত বাতাস,আহানার ভালোই লাগছে,এই প্রথম সে এই বাসার ছাদে এসেছে
অলি একটা দড়ি নিয়ে এসে বললো তার সাথে দড়ি লাফ খেলতে
আহানা মানা করেছে কিন্তু সে শুনছে না
আহানা বললো সে বেশি লাফাতে পারে না
কম লাফ দিবে,তাতেই অলি রাজি হলো
অলি ৫০বার লাফ দিয়ে এবার আহানার হাতে দড়িটা দিলো
আহানা দড়ি নিয়ে ৩/৪বার লাফ মারতেই দেখলো দূরের ছাদে কাউকে দেখা যাচ্ছে,এটা তো শান্ত
এতক্ষণ এদিকেই চেয়ে ছিলো,আহানা থেমে গিয়ে ওড়না ঠিক করতে যেতেই শান্ত আরেকদিকে মুখ করে চলে গেলো
.
হুহ!ঢং দেখায় আমাকে,আরে আমি তো ভুলেই গেসিলাম আমাকে বলছে না আজ এই বাড়ি থেকে আমাকে তাড়াবে,আমিও যাব না হুহ?
আহানা শাড়ীটা পরে গলার সেটটা,চুড়ি,টিকলিও পরে নিলো,আয়নায় নিজেকে দেখে নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে পড়লো অফিসের উদ্দেশ্যে
শান্ত যদি মুচকি হাসে এর মানে দাঁড়াবে সে দিসে এগুলো,হুমমমমম,ওর মুখের দিকে খেয়াল রাখতে হবে
অফিসে পা রাখতেই আহানা দেখলো শান্ত ফোনে কথা বলতেসে
আহানার দিকে একবার তাকিয়ে কম্পিউটারে একটা ফাইল কমপ্লিট করায় ব্যস্ত হয়ে গেলো
আহানা ব্রু কুঁচকে ভাবলো কি ব্যাপার কোনো রিয়েকশান নাই কেন উনার,আজিব তো!
শান্তর পাশে বসে আহানা কিছুক্ষন ওর দিকে তাকিয়ে থেকে বললো আমাকে কেমন লাগছে?
.
ভালো
.
শুধু ভালো?
.
হুম,তোমাকে তো শুধু ভালোই লাগে
.
হ্যাঁ আমাকে তো শুধু ভালোটায় লাগে,আর বেশি ভালো লাগে না
.
ওয়াও আহানা,তোমাকে কি জোস লাগতেসে,বাই দ্যা হয়ে লাল শাড়ীর সাথে নীল ব্লাউজ পড়সো কেন?
.
আহানা ইতস্তত বোধ নিয়ে লিজার কথায় হেসে বললো লাল ব্লাউজ খুঁজে পাচ্ছিলাম না
.
শান্ত আজ রাফি স্যারকে বলে তাড়াতাড়ি চলে গেছে অফিস থেকে,আহানার তো কলিজা কাঁপতেসে,না জানি দাদা দাদিকে কি আজব সাজব বানিয়ে বলতেসে,আমাকে যদি ওরা বের করে দেয় আমি কোথায় যাব!!
আহানা অনেক কষ্টে কাজ সারতে সারতে সন্ধ্যা হয়ে গেলো তার
ভয়ে ভয়ে হেঁটেই বাসায় ফিরলো গতি বাড়িয়ে,সব দেখি চুপচাপ!
আহানা পা টিপে টিপে বাসার ভেতর ঢুকলো,দাদা দাদির বাসা থেকে সোরগোল শোনা যাচ্ছে,কি হচ্ছে কে জানে
আহানা দোতলায় উঠতে যেতেই দাদার ডাক শুনতে পেলো
থেমে গিয়ে জ্বী বলে বাসার ভেতর ঢুকলো সে
দাদা বললেন ভিতরের রুমে যেতে,সেখানে দাদি আছেন
আহানা ভিতরের রুমে যেতে যেতে সোফার দিকে তাকালো
২জন হুজুুর বসে আছেন,তার মধ্যে একজন চশমা পড়া হুজুরের মতন লম্বা দাঁড়ি আলা তিনি কাগজ কলম নিয়ে কিসব লিখে যাচ্ছেন আর দাদার সাথে কথা বলতেসেন
শান্তকে তো দেখা যাচ্ছে না
আহানা ভিতরের রুমে এসে যা দেখলো তা দেখে তার চোখ কপালে,রুম ভর্তি সব মহিলা
সবাই আহানার দিকে চেয়ে মুচকি হেসে আছে
দাদি আহানাকে ধরে খাটে বসিয়ে ওর থুতনি ধরে টেনে উনার হাত মুখে নিয়ে চুমু খেলেন আর বললেন সোনার টুকরো মেয়ে
.
আহানা কিছু বুঝতেসে না
শেষে হা করলো কথা বলার জন্য তার আগেই পিছন থেকে একজন মহিলা ধাক্কা দিয়ে বললেন
তা মেয়ে এতদিন ধরে প্রেম করছো বিয়ের কথা মুখে আনলেই এমন করো কেন?সম্পর্ককে বৈধ রুপ দিয়ে থাকাটা হালাল কাজ,মুসলিম মেয়ে হয়ে এসব জানো না?
.
মানেহহহহ!কি?
.
শান্ত এসে গেছে গো,তোমরা আহানাকে রেডি করো
.
একজনের মুখে কথাটা শুনে আহানা বলতেসে কি হয়েছে,কি হবে,কেন হবে??
কেউ তার কথায় কোনো পাত্তাই দিচ্ছে না,একজন তো আহানার শাড়ীর আঁচল টেনে ওর মাথার উপর দিয়ে দিলো
আরেকজন আহানার হাত ধরে ওকে দাঁড়ই করিয়ে দিলো
.
এক মিনিট কি হচ্ছে এসব?
.
আরে মেয়ে না জানার ভান করো কেন,তুমি নিজেই লাল শাড়ী পরে তৈরি হয়ে এসেছো আর বলতেসো কি হচ্ছে?তোমার বিয়ে হচ্ছে,বিয়ে!!!
.
আহানা চোখ তুলে বললো কি বললেন?কার সাথে?
.
রুমের সবাই হাসতে হাসতে লুটোপুটি খাচ্ছে
আহানা বিরক্ত হয়ে সোফার রুমের দিকে চলে গেলো
সোফার রুমে আসতেই দেখলো যিনি চশমা পরে ছিলেন তিনি শান্তকে কিসব জিজ্ঞেস করতেসেন,সম্ভবত নাম জিজ্ঞেস করেছেন
শান্ত নাম বললো-শাহরিয়ার শান্ত!
তারপর আহানার দিকে তাকালো
আহানা ওর দিকে তাকিয়ে চুপ করে আছে,ও নীল পাঞ্জাবি পরে এসেছে এখানে
সোফায় ভদ্রভাবে বসে আছে,মাথায় সাদা টুপি,নিজের নাম বলে আহানার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো সে
আহানা ঘোমটা খুলে শান্তর হাত ধরে টেনে বাসার বাইরে নিয়ে গেলো
কি সমস্যা আপনার?এসব কি হচ্ছে?
.
আমার আর তোমার বিয়ে হচ্ছে
.
আমি আপনাকে বিয়ে করবো না,ওকে?এরকম ফাইজলামো করার আগের আমার সাথে কথা বলা উচিত ছিল আপনার
ওহহহ তাহলে শাড়ীর প্যাকেট আপনিই দিসিলেন
.
হ্যাঁ আমি দিয়েছি,আর আজ এই মূহুর্তে আমি তোমাকে বিয়ে করবো
.
বললেই হয় না,আমি আপনাকে বিয়ে করবো না,এখন গিয়ে বলেন উনাদের চলে যেতে
.
কাজী সাহেব আমার সব নাম পরিচয় সব লিখে নিসে এবার তোমার পালা,তুমি তোমার পরিচয় নাম দিয়ে বসো কবুল বলতে বললে কবুল বলবা
.
সম্ভব না!
আমি এই বিয়ে কিছুতেই করবো না
বলা নেই কওয়া নেই আপনি এত বড় একটা ডিসিশান আমাকে না জানিয়েই নিয়ে নিলেন?
চলবে♥

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে