প্রেমের পাঁচফোড়ন? পর্ব_৪১

0
2260

প্রেমের পাঁচফোড়ন?
পর্ব_৪১
#Writer_Afnan_Lara
?
কেন?কারণ জানতে চান আপনি??
আপনি জানেন আপনার কারণে আজ আমায় এত কাঠ খড় পোড়াতে হয়েছে,কি দরকার ছিল আমার বাসায় কারণে অকারণে আসার?
আপনার এত আমার বাসায় আসা যাওয়া তারেক আঙ্কেল ঠিকভাবে নেয়নি,আমাকে বাসা ছাড়তে বলছিলো একদিনের ভিতরে
তাই আমি একটা নতুন বাসা নিয়েছি
.
শান্ত চুপ করে থেকে আহানার দিকে চেয়ে আছে
ঐ তারেক বলদরে পিটাইয়া পিঠের ছাল তুলে সেটা দিয়ে চামড়ার দোকান একটা খুলে ব্যবসা লাটে উঠাবো আমি নাহলে আমি আহানার মিঃ অশান্ত নাহ!!!
.
শুনুন আপনাকে আমি সাফ সাফ একটা কথা বলে দিচ্ছি আর কখনও আমার আশেপাশে আসবেন না দূরে থাকুন বলতেসি!
.
?তোমার নতুন বাসার এড্রেস দাও
.
দিব না,আপনার লজ্জা করে না?এত কিছুর পরও আমার বাসার ঠিকানা চাচ্ছেন?এবার আমাকে রাস্তায় নামাবেন নাকি?
.
তুমি বলতে হবে না,তোমার বাসার ঠিকানা বের করা আমার কাছে ২মিনিটের ব্যাপার বুঝছো?আর রইলো কথা তোমার এই বাসাও যাবে না আমার কারণে,দেখে নিও
.
দেখার দরকার নাই আমার,আপনি প্লিস আমাকে আমার মত চলতে দিন,প্লিস!!
.
শান্ত কম্পিউটারে মনোযোগ দিলো
আহানা কিছুক্ষন চুপ করে বসে থেকে এখন ফাইলগুলো বের করতেসে
সারাদিনে দুজনে দুজনের সাথে একটা কথাও বলেনি
সন্ধ্যায় অফিস ছুটি হতেই আহানা হাঁটা ধরলো,আজ আর শান্তর বাইকের জন্য দাঁড়ায় নিই
শান্তকে আগেই থামিয়ে দিলে তারেক আঙ্কেলের বাসা ছাড়তে হতো না আমাকে!
শান্ত বাইক নিয়ে এসে দেখলো আহানা অনেকদূর চলে গেছে তাও ওকে দেখা যাচ্ছে,কারন ফাঁকা রোড বলে
আহানা বারবার পিছনে তাকাচ্ছে,শুধু মনে হচ্ছে কেউ ওকে ফলো করছে কিন্তু কাউকে তো সে দেখছে না,শেষে হাঁটার গতি বাড়িয়ে রাত হওয়ার আগেই সন্ধ্যা থাকতে থাকতে বাসার সামনে এসে পড়লো সে
উফ বাঁচলাম,পা মনে হয় ভেঙ্গে যাবে,এতদূর কি আর হেঁটে আসা যায়!
বাসায় দরজার তালা খুলে ভিতরে পা রাখতেই গলা শুকিয়ে গেলো আহানার
পুরো রুম অন্ধকার,একা একটা বাসা,ভয় লাগারই কথা,কাঁপা কাঁপা হাতে লাইটের সুইচ টিপ দিয়ে বাতি জ্বালালো সে
নিচে বিছানো চাদরটার উপর ব্যাগ রেখে রান্নাঘরের দিকে গেলো আহানা
চাল ধোয়ার জন্য নিতেই দরজায় কে যেন নক করলো,কলিংবেল নেই,যারা আসবে তারা দরজায় টোকা দিবে
আহানা রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে গিয়ে দরজা খুললো,একটা ছোট বাচ্চা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে
সে আহানার দিকে চেয়ে হেসে দিয়ে বললো নানুমণি তোমাকে ডাকে
.
তুমি কে?
.
আমি অলি,অলি আহমেদ,ঐ যে পাশের বাসা আছে না
নীল রঙের টিনের বাড়ি ওটাতে আমি থাকি,আমি আমার আম্মু আমার আব্বু, আমার ছোট ভাই
আর তার পাশে যে সবুজ রঙের টিনের ঘরটা আছে ওটাতে আমার চাচ্চু আর চাচি,আমার চাচাতো বোন থাকে
আর তার পাশে যে ছাই রঙের টিনের ঘর আছে না ওটাতে আমার দাদা দাদি থাকে
আর আমার চাচাতো বোনের নাম তন্নি
আর আমার ভাইয়ের নাম অমি,আমার মায়ের নাম সায়মা খাতুন,বাবার নাম তকির আহমেদ
আমি ক্লাস ২তে পড়ি,আর….
.
ওকে ওকে ওকে বুঝছি সব,আসো ভিতরে আসো
.
নাহ,নানুমণি বলসে তোমাকে নিয়ে যেতে,আর আমি এখন থেকে তোমার খানাপিনাপিয়ন
.
ডাকপিয়ন শুনছি,খানাপিনাপিয়ন শুনি নাই কোনোদিন
.
মানে নানুমণি তোমাকে খেতে ডাকলে আমাকে দিয়ে ডাকাবে
.
ওহ,আচ্ছা চলো!
আহানা নিচতলায় এসে মেয়েটার সাথে ভেতরে গেলো বাসার
সালমা বেগম ডাইনিং এ খাবার সাজাচ্ছেন,আহানার দিকে চেয়ে মুচকি হেসে বললেন প্রথমদিন তো তাই তোমাকে আর রাঁধতে দিব না
আমি খাওয়াবো
তা দুপুরবেলায় কই ছিলে?আমি অলিকে দিয়ে ডাকাইসি তুমি নাকি ছিলে না
.
দাদি আমি অফিসে ছিলাম
.
ওহ,অফিসে খেয়েছো তো,আচ্ছা কথা না বাড়িয়ে এখন খেতে বসো
.
দাদি আমি রান্না করে খেতে পারবো,কি দরকার ছিল এত কষ্ট করার
.
আরে বোকা মেয়ে এতসব তোমাকে ভাবতে হবে না,আসো বসো
.
আহানা চেয়ার টেনে বসলো,অলি টিভি চালু করে মটু পাতলু দেখতেসে আর খিলখিল করে হাসতেসে
.
আমার পায়ের ব্যাথার জন্য সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে পারি না,তাই অলিকে দিয়ে তোমাকে ডাকালাম,ও তো এতক্ষণে ওর ১৪গুষ্টির পরিচয় তোমাকে দিয়ে দিছে নিশ্চয়?
.
আহানা হেসে বললো হুমমম!

শান্ত বারান্দায় দাঁড়িয়ে সিগারেট মুখে দিলো,তারপর গ্রিলে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আহানার নতুন বাসার দিকে চেয়ে রইলো
আহানা ম্যাডাম বললাম না আমার কাছে ২মিনিটের ব্যাপার আপনার নতুন বাসার ঠিকানা বের করার,আর তোমার নতুন বাসা তো একদম আমার বাসার পাশেই
ডেইলি জ্বালানোটার ধরন এবার জোস হবে!তোমার বাসার বারান্দা না দেখা গেলেও রান্নাঘরটা দেখা যায়,স্পষ্ট না তাও হালকা পাতলা দেখা যায়
শান্ত হেসে পকেট থেকে দূরবীন বের করলো আর বললো এটা দিয়ে তোমাকে স্পষ্ট দেখা যাবে ম্যাডাম আহানা!
হাহা,মজা হবে শুধু মজা
.
কিরে কিসের মজা হবে?
.
তোর বিয়ে তো তাই,জবের কি খবর?প্রেগন্যান্ট বউরে কতদিন বাপের বাড়ি রাখবি?
.
আরে ধুর, রুপা তো প্রেগন্যান্ট নাহ,বাট একটা বাসাও তো নিতে হবে,রিয়াজ সূর্য তুই সব দামড়া ছেলে
তোদের মাঝে তো এখানে সে uncomportable ফিল করবে
.
হ্যাঁ সেটা অবশ্যই,আচ্ছা এক কাজ করলেই হয়,তোদের বাসা তো গ্রামে,সেখানে নিয়ে যা
.
রুপা আমাকে কাঁচা গিলে খাবে,ওর গ্রাম ভালো লাগে না
.
বাপরে বাপ,এখন থেকে বউকে ভয় পাস তুই
.
তুই পাস না?তোরে তো প্রথমদিনেই চড় মাইরা দিসিলো
.
হুর!আহানা কি আমার বউ নাকি,নাকি হবু?কিছুই না,তাহলে ওর সাথে মিলাস কেন?
.
তো কার সাথে মিলাবো?যেখানে তাকাই তোদের দুজনকে একসাথে দেখি,তবে প্রেমপিরিতি করস না এটা ঠিক বাট সারাদিন ঝগড়া করস
এলিনা,বেবি ছিল ওদের সাথে মিলাই নাই কারণ ওদের প্রতি তোর কোনোদিনই ইন্টারেস্ট ছিল না,বাট আহানার প্রতি তোর ইন্টারেস্টের অভাব হয় না
.
তো?এখন কি একসাথে দেখছিস আমাকে আর আহানাকে?
.
নাহ তবে তোর হাতে দূরবীন কেন?অফিস,ভার্সিটি ছেড়ে এখন কি ডিটেক্টিভ হয়েছিস নাকি?
.
আরে না,ঐ যে ইমামের বাড়ি আছে না?
.
হুম তো?ওখানে কি ফলো করবি তুই যে দূরবীনই আনতে হলো,উনি তো উনার বউরে নিয়ে একা থাকেন
.
না একা না,দোতলা ভাড়া দিয়েছে
.
আহানাকে ছেড়ে এবার আরেকটা ধরছোস?বিশ্বাস কর যত মেয়েই লাইফে আনোস না কেন,আহানার মত পার্টনার পাবি না,সে তোকে মেরে আবার মলম লাগিয়ে দেওয়ার মত মেয়ে
.
আরে আমাকে বলতে তো দিবি,দোতলা আহানা ভাড়া নিসে
.
হোয়াট??
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
তোদের দূরত্ব কি কম ছিল যে এবার এত কাছে চলে আসলো?
আমি শেষ,সাম বডি সেভ মি,এবার ঝগড়ার আকার টাইটানিকের চেয়েও বিরাট আকার ধারণ করবে
.
চুপ!
যা এখান থেকে,বেয়াদব!
.
শান্ত দূরবীন দিয়ে আহানার রান্নাঘরের দিকে তাকালো,জানালা বন্ধ,ঘুমাতে গেছে মনে হয়
.
আহানা তার রুমে এসে দরজা লাগিয়ে নিচে শুয়ে পড়েছে,পিঠে ব্যাথা করতেসে,ফ্লোরে শোয়ার অভ্যাস নেই,বেতনটা কবে পাবো,কত কিছু কেনা বাকি!
তোষক,খাট,আলমারি!
অনেক কষ্টে এপাশ ওপাশ করে ঘুমিয়ে গেলো সে,সকাল সকাল উঠে নামাজ সেরে বসে রইলো,দু কদম হাঁটলেই মিষ্টিদের বাসা,আগে তো কতদূর থেকে হেঁটে আসতে হতো
আসলেই আল্লাহ যা করে ভালোর জন্য করে
আহানা ওড়নাটা পরে ব্যাগ নিয়ে বের হলো,শান্তদের বাসার সামনে এসে থেমে গেলো সে,মুখ তুলে উপরে তাকিয়ে দেখলো শান্ত সিগারেট খাচ্ছে আর ওর দিকে চেয়ে আছে এক দৃষ্টিতে
আল্লাহ জানে আমাকে ওদিক থেকে আসার সময় দেখছে কিনা
আহানা ভয়ে ভয়ে লিফটে উঠলো,লিফট থেকে বেরিয়ে বড় একটা দম নিয়ে হাঁটা ধরেছে সে
শান্ত ওর বাসার দরজার পাশের দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে চেয়ে আছে ওর দিকে
.
আহানা না তাকিয়েই মিষ্টিদের বাসার কলিংবেলে চাপ দিতে যাওয়ার আগেই শান্ত একটান দিয়ে ওকে নিজের কাছে নিয়ে আসলো
দাঁতে দাঁত চেপে বললো আমার দিকে তাকালে কি হয় তোমার?
.
বললাম না দূরে থাকুন,আপনার কারণে এ কদিন ধরে কত কষ্ট করতেসি আমি আর কত কষ্ট দিবেন?বাকি রাখছেন কিছু?
.
আমি চাই তুমি আমার আশেপাশে থাকো,আমি তোমাকে.!
.
কি?আপনার আশেপাশে কেন থাকবো আমি?
আহানা শান্তর বুকে হাত দিয়ে ওকে সরাতে যেতেই শান্ত আরও খিঁচিয়ে চেপে ধরলো ওকে
.
তুমি আমার সাথে এমন করতে পারো না আহানা!
.
আর আপনি পারেন?আপনার কারণে একবার এক ঝামেলায় পড়তে হয় আমাকে,আপনি প্লিস আমার থেকে দূরে থাকুন,নিন আপনার নোটস
আহানা শান্তর হাত ছাড়িয়ে চলে গেলো
.
শান্তর মেজাজ বিগড়ে আছে,সোফা থেকে জ্যাকেটটা নিয়ে সোজা গেলো তারেক রহমানের বাসার দিকে

ওগো শুনছো??
.
কি?
.
দেখো না এএএএএরররররা ককককাররা
.
তারেক রহমান দরজার সামনে গিয়ে ভয়ে চোখ বড় করে ১মিনিট চেয়ে রইলেন
দরজার ওপাশে ১০/১২টা ছেলে দাঁত কেলিয়ে চেয়ে আছে
আর সবার পিছনে পকেটে হাত ঢুকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা একজনকে দেখা যাচ্ছে,আর সে হলো শান্ত
শান্ত চুইংগাম চিবাতে চিবাতে কাছে এসে তারেক রহমানের গাল টিপে বললো কি ব্যাপার গলুমলু আঙ্কেল?
আপনাকে তো আমি ভালো মনে করেছিলাম কিন্তু আপনি এটা কি করলেন?আপনি আহানাকে বাসা থেকে বেরই করে দিলেন,আপনার এত বড় সাহস??
আমাকে কি ভয় লাগে না?
লোকে কি বললো না বললো তা ধরে আপনি আহানাকে বের করে দিলেন?আমাকে আর আহানাকে এক বিছানায় দেখেছেন?নাকি আহানার সাথে আপনার অন্য কোনো শত্রুতামি আছে?
আহানাকে আমি অফিস থেকে বাসায় বাইকে করে পৌঁছায় দি বলে আপনার এত জ্বলে?
আহানাকে তো আমি মানবতার খাতিরে হেল্প করসি আর আপনি কিনা মানবাধিকার লঙ্গনই করে দিসেন!
হেসে দিয়ে বাসার ভিতরে ঢুকে সোফায় বসে শান্ত বললো
.
রিসাদ!তুই টিভি ভাঙ্গবি,আর অর্ক তুই ডাইনিং ভাঙ্গবি
আর বাকিরা বাসার অন্যসব ভাঙ্গো
আর আমি তারেক আঙ্কেলের হাড্ডি ভাঙ্গবো
.
ফতুয়া দিয়ে ঘাম মুছে তারেক রহমান বললেন আমি পুলিশে ফোন দিবো,তোমরা এসব কি বলতেসো
.
আরে দেন দেন,আমরাও বলবো আপনি আপনার ভাড়াটিয়াদের অত্যাচার করে বের করে দেন টাকার লোভে
তাদের টাকার জন্য কথা শুনান,ব্যস এই দুলাইনেই আপনার জেলে থাকা হয়ে যাবে
.
আমি এখনই পুলিশে ফোন করতেসি
.
শান্ত টিভি অন করে টম এন্ড জেরি দেখতেসে
পুলিশের গাড়ীর আওয়াজ শোনা যাচ্ছে
তারেক রহমান দাঁত কেলিয়ে শান্তর দিকে তাকালো,শান্ত দাঁত কেলিয়ে ছেলেগুলোর দিকে তাকালো
ছেলেগুলো পকেট থেকে ভাঁজ করা বড় কাগজ বের করে ভাঁজ খুলে নিলো
কাগজে লেখা-ভাড়াটিয়ার অধিকার দিতেই হবে,দিতেই হবে!!!!
তারপর কাগজ উপরে তুলে সবাই বলা শুরু করলো
মানি না মানবো না!!নারী অত্যাচার মারবো না!মানি না মানবো না!!ভাড়াটিয়াদের অত্যাচার মানবো না
.
ওদের মূহুর্তেই এমন বদল দেখে তারেক রহমানের চোখ কপালে উঠে গেছে,আসলো মারধর করতে আর এখন কিনা আন্দোলন শুরু করছে
পুলিশ এসে বললেন কই কারা আপনার বাসার জিনিসপত্র ভাঙ্গতে এসেছে?
.
তারেক রহমান ঢোক গিলে বললেন এরা
.
কিন্তু এরা তো দেখি আন্দোলন করতেসে,কি সমস্যা?
.
শান্ত সোফা থেকে উঠে এসে বললো এই আঙ্কেলটা ভাড়াটিয়াদের অত্যাচার করে বের করে দেয়,টাকার জন্য যা তা বলে,তাই আমরা অধিকার চাইতে এসেছি
.
পুলিশ এবার মুখ ঘুরিয়ে উনার দিকে তাকিয়ে বললেন ফাজলামি করেন?আমি তো ভাঙ্গচুরের কোনো নিশানায় পেলাম না,সামান্য একটা ঘটনার জন্য আপনি আমাদের সময় নষ্ট করলেন,আর এখন নিজেকে বাঁচাতে আপনি মিথ্যা বলতেসেন?এরা আপনাকে মারতে এসেছিল?কই?
.
কথাগুলো বলে পুলিশ চলে গেলো
.
শান্ত টেবিল থেকে একটা আপেল নিয়ে যেতে যেতে বললো- গিয়ে আহানাকে বলেন ফেরত আসতে
বহুত কষ্ট দিসেন ওকে,আর সহ্য করতে দিব না আমি!মাইন্ড ইট
আমাকে চেনেন না আপনি??অলিগলির কয়েকটা ছেলে মেয়েকে বলিয়েন শান্ত ভাই কে?কি তার পরিচয়?
তাইলে বায়োডাটা পেয়ে যাবেন,আর কোনোদিন আমার সাথে লাগতে আসার সাহস আসবে না আপনার
আপনার বয়সের কদর করি বলে ফুলের টোকাও দিলাম না আমি,এই নিন কাগজ,এটাতে আহানার নতুন বাসার ঠিকানা আছে
সম্মান দিয়া কথা বলছি,সো যা বলছি তাই করেন নাহলে সত্যি সত্যি আপনার ঐ শখের ডাইনিং আর টিভি ভাঙ্গবো আপনার ফতুয়ার কসম!
বাই
সবাই বাইকে বসে চলে গেলো,বাইক ১০টার মতন,হইচই লেগে গেছে পুরো কলোনিতে
তারেক রহমানের কলিজা এখনও কাঁপতেসে
ফতুয়া পাল্টিয়ে একটা পাঞ্জাবি পরে বউকে নিয়ে বের হলেন আহানার বাসার দিকে

আহানা ভাত বসিয়ে দিয়ে হাঁড়ি পাতিল সব এক এক করে তাকের উপর সাজিয়ে রাখছে,দরজায় নক হতেই ওড়না পরতে পরতে গেলো সে দরজা খুলতে
দরজা খুলে দেখলো তারেক রহমান আর তার স্ত্রী দাঁড়িয়ে আছেন,চোখে মুখে তাদের অসহায়ত্বের ছাপ
আহানা সালাম দিয়ে ব্যস্ত হয়ে উনাদের ভেতরে আসতে বললো
কিছু নেই যে বসতে দিবে এই ভেবে সে মাফ চাইলো
.
না মা,চেয়ার লাগবে না আমরা ঠিক আছি,তুমি ফেরত চলো
.
আহানা উনার কথা শুনে চুপ করে থেকে বললো কিন্তু কেন?
.
এমনি, তোমাকে ছাড়া আমাদের একা একা লাগে,তোমাকে তো ভালোবাসতাম অনেক,তাই
.
আহানা হেসে দিয়ে বললো না আঙ্কেল আমি আর যাব না,,সরি,আমি এখানে আমার দাদা দাদি পেয়েছি,তারা আমাকে অনেক ভালোবাসে,আপনারাও বাসেন,তবে এনাদের একা ছেড়ে যেতে পারবো না
.
তারেক রহমান ঢোক গিলে বললেন তাহলে কথাটা শান্তকে বুঝিয়ে বলিও কেমন?সে নাহয় আবার আমাকে ধরবে
.
আহানা ব্রু নাচিয়ে বললো উনি কি করেছেন?
.
নাহহহহহ কিছু করে নাই,এমনি বললাম,আসি কেমন
.
দুজনে তড়িগড়ি করে চলে গেলেন
আহানা নিচে ধপ করে বসে চেয়ে আছে দরজার দিকে
এই ছেলেটাকে নিয়ে আমি আর পারবো না,ওকে বাসা পাল্টানোর কথা শুনানোই ঠিক হয়নি!
আহানা তাড়াতাড়ি ভাত খেয়ে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে বের হলো,শান্তদের বাসার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় দেখলো শান্ত বাইক নিয়ে বের হচ্ছে
ওকে দেখে তড়িগড়ি করে একটা পিলারের পিছনে লুকিয়ে পড়লো আহানা
.
শান্ত হেলমেট পরে হেসে দিয়ে বললো একটা পিলার কি আর মোটা হাতিকে লুকাতে পারে?
.
আহানা রেগে তাকিয়ে বললো কি বললেন আমি হাতি?আপনার কথাবার্তার কোনো লাগাম নেই না?
.
শান্ত বাইক স্টার্ট দিয়ে যেতে যেতে বললো
“”””আমার এই বাজে স্বভাব কোনোদিন যাবে না””””
.
আহানা স্বস্তির একটা নিশ্বাস ফেলে ভাবলো যাক বাবা সন্দেহ করে নাই যে আমি এই রোড দিয়ে যাচ্ছি কেন,বাঁচলাম!
তারপর সে ভার্সিটিতে এসে সোজা বটতলায় গেলো
.
তমাল ভাইয়া?শান্ত ভাইয়া কোথায়?
.
শান্ত তো একটা কাজে বাজারে গেছে,কেন কি হইসে?
.
কিছু না
.
আহানা ক্লাসে ফিরে এসে বসলো,রুপা তার বিয়ের খুশিতে আত্নহারা হয়ে গুনগুন করে গান গাইছে
আহানা এক ধমক দিয়ে থামিয়ে দিলো ওকে
.
কিরে?কি হইসে তোর?
.
কিছু না
.
তাহলে আমার উপর দিয়ে রাগ ঝাড়স কেন?
.
বলসি না কিছু না??
.
ভার্সিটির ছুটি হয়ে গেছে কিন্তু শান্তর খবর নাই,আহানা ওকে বকতে বকতে অফিসের দিকে হেঁটে যাচ্ছে
এভাবে আর কত পালাবেন আমার থেকে?
অফিসে আসতেই দেখলো শান্ত রাফি স্যারের সাথে কথা বলতেছে
চলবে♥

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে