প্রেমের পাঁচফোড়ন? পর্ব_৩৯

0
2058

প্রেমের পাঁচফোড়ন?
পর্ব_৩৯
#Writer_Afnan_Lara
?
ওয়াও আহানা তোমার মাথার ফুলগুলো তো অনেক সুন্দর,কই থেকে নিলে?
.
আমার মাথার ফুল??মানে?
আহানা মাথায় হাত দিয়ে দেখলো ৫/৬টা ফুল হবে পুরো মাথা জুড়ে,পিছনে ফিরে শান্তর দিকে তাকাতেই সে আরেকদিকে তাকিয়ে গেলো,যেন সে এই কাজটা করে নাই
আহানা হেসে দিয়ে সবার সাথে ব্লু ওয়াটার পার্কের জন্য রওনা হলো,হাঁটতেসে সবাই,শান্ত আহানাকে ডিস্টার্ব করতেসে বারবার
একবার চুল টানছে আবার ওড়না,নয়ত গাল নয়ত কান
.
শেষে আহানা বিরক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো
কি সমস্যা আপনার,ঠিকমত হাঁটতেও দিবেন না নাকি?এরকম করেন কেন?
.
শান্ত কাছে এসে বললো আমার পাতানো বউ আমি ডিস্টার্ব করবো না তো কে করবে?
.
শুনুন আমি আপনার পাতানো বউ না ওকে,এ নামে আমাকে আর ডাকবেন না নাহলে আমি
.
কি?
.
ভাইয়া বলে ডাকবো
.
খবরদার!
.
শান্ত ভাইয়া?
.
শান্ত আহানাকে এক দৌড়ানি দিলো,আহানা তো ছুটে যাচ্ছে প্রাণপণে,তাও শান্ত ধরেই ফেললো শেষমেষ
শান্ত ওকে ধরে ফেলায় ভয়ে আহানা কেঁদেই দিলো,চোখ দিয়ে দুফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়লো তার
ভয় পেলো কেন সে নিজেও জানে না আর চোখের পানি কেন পড়লো সেটাও সে জানে না
শান্ত মুখটা গম্ভীর করে এগিয়ে এসে ওকে জড়িয়ে ধরলো
.
ডান পাশে একটা বিরাট পাহাড়,কিছু দর্শনার্থী সেখান দিয়ে যাচ্ছে আর কেউ কেউ নিচ দিয়ে যাচ্ছে,শান্ত আর আহানা ঝগড়া করতেসিলো বলে সবার পিছনে রয়ে গেছে,নির্জন একটা এলাকা
শান্ত আর আহানা দুজনেই চুপ করে আছে,শেষে আহানা নিজেই নিজেকে শান্তর কাছ থেকে সরিয়ে দূরে সরে দাঁড়ালো
আমাকে জড়িয়ে ধরলেন কেন?
.
তুমি ভয় পেয়েছো তাই,আমার তোমার প্রতি কোনো ইন্টারেস্ট নেই ওকে??সো জড়িয়ে ধরায় আকাশে উড়িয়ে না
শান্ত হেঁটে চললো তারপর আহানা কিসব ভাবতে ভাবতে ওর পিছু পিছু আসতে লাগলো
শান্ত পাশে তাকিয়ে আহানার দিকে চেয়ে তার প্রিয় গান ধরলো

যদি তুমি ভালোবাসো, ভালো করে ভেবে এসো
খেলে ধরা কোনো খানে, রবে না
আমি ছুঁয়ে দিলে পরে, অকালেই যাবে ঝরে
গলে যাবে যে বরফ, গলে না.
আমি গলা বেচে খাবো,কানের আশেপাশে রবো
ঠোঁটে ঠোঁটে রেখে কথা হবে না.
কারো একদিন হবো, কারো একরাত হবো,
এর বেশি কারো রুচি, হবে না.
|| আমার এই বাজে স্বভাব, কোনোদিন যাবে না ||
.
আহানা শান্তর দিকে চেয়ে হেসে বললো এই গানটা আপনার খুব পছন্দ বুঝি?
.
হুম,অনেক!
.
আপনার বাজে স্বভাব টাকি শুনি?
.
দেখি তুমি বলোতো
.
সিগারেট খাওয়া,চিকেন বেশি খাওয়া,আর
.
আর?
.
আহানা হেসে দিয়ে বললো আর আমাকে ২৪ঘন্টা জ্বালানো!
.
তোমাকে তো আমি ১২ঘন্টা জ্বালাই,তাহলে ভালো একটা আইডিয়া দিসো,ফ্রম Now আমি তোমাকে রাতেও জ্বালাবো
.
দরজায় তালা দিয়ে রাখবো?
.
তোমার কাছে আসতে তালা আমার কাছে কিছু না
.
এসে কি করবেন?
.
দেখা যাবে
.
এসে গেছে পার্ক,সবাই ভিতরে ঢুকে পার্কটা ঘুরে দেখছে,বেশ সুন্দর,তবে ম্যাজিক প্যারাডাইস বেশি সুন্দর ছিল!
পার্কে ঘুরাঘুরি শেষে সবাই হোটেলে ফিরে আসলো,আহানা রুমের দরজা ভালো করে আটকালো,শান্তকে বিশ্বাস নাই,সত্যি সত্যি যদি এসে যায়
.
আহানা পরেরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে হেসে দিলো দরজার দিকে তাকিয়ে,কারণ দরজা বন্ধ,তার মানে শান্ত আসেনি,আমি জিতেছি?
খুশি হয়ে সে বিছানা থেকে নামতে গিয়ে তার হাতের মুঠোয় কিছু একটা দেখতে পেলো,একটা আংটি,প্লেইন ডিজাইনের সিলভার একটা হালকা পাতলা রিং,এটা তোহহহ! এটা তো শান্তর
সবসময় শান্তর আঙ্গুলে এটা থাকে,,তার মানে ও কাল রাতে এসেছিল!!উফ কখন এসেছিল,আমি টের পাইনি কেন?
আহানা গিয়ে বারান্দায় দাঁড়ালো,বেশ ভালো একটা ভিউ আসে এখান থেকে,দূরদূরান্তে শুধু সবুজ গাছগাছালি
আহানা হেসে দিয়ে বারান্দা থেকে চলে আসতে গিয়ে থেমে গেলো,বারান্দায় একটা রড খাড়া করা ছিল সেটায় আহানার ওড়না গিট্টু দেওয়া,আহানা নিজের গায়ের দিকে চেয়ে দেখলো ওড়না নেই,এটা শান্তর কাজ!বেয়াদব,আমাকে বোকা বানালো,অসভ্য একটা!
আহানা ওড়নাটা খুলে গায়ে পরে চলে গেলো ফ্রেশ হতে,ফ্রেশ হয়ে হনহনিয়ে হোটেলের রুম থেকে বের হতেই শান্তর সাথে এক ধাক্কা খেলো যেন সে এখানেই দাঁড়িয়ে ছিল
আহানা কোমড়ে হাত দিয়ে কিছু বলতে যাবে তার আগেই শান্ত আহানার হাত টেনে হাতের মুঠোয় ওর রিং চেক করলো, কিন্তু পেলো না
ব্রু কুঁচকে বললো আমার রিং দাও
.
কেন দিব?ওটা এখন থেকে আমার
.
ছেলেদের রিং পরবে তুমি?
.
তো কি হইসে,একটা স্টোন বসায় দিলে মেয়েদের মনে হবে
.
আমি কাল তোমার রুমে এসেছি সেটা বিশ্বাস করাতেই রিং রেখে গেসিলাম
.
শিয়ালের কাছে মুরগী বানা রাখলে এমনই হবে,ঐ রিংয়ের কথা ভুলে যান মিঃ অশান্ত!
.
আহানা হেলেদুলে রুমে চলে গেলো
শান্ত করিডোরটা ভালো করে দেখে নিজেও আহানার পিছন পিছন রুমের ভেতর গেলো,রুমে কেউ নেই,বেবি আর লিজা নিচে গেছে খাবার খেতে
আহানা ব্যাগ হাতে নিয়ে দেখলো শান্ত দরজা লাগাচ্ছে,চোখ কপালে তুলে আহানা রুমের শেষ প্রান্তে গিয়ে বললো আমার কাছে আসবেন না,নিন আপনার রিং
.
ওমা দরজা লাগাতেই এত ভয় পেলে?স্ট্রেঞ্জ!এইটুকুতেই এত ভয়?
শান্ত রিংটা নিয়ে চলে গেলো
আহানা ব্যাগ নিয়ে ওর পিছন পিছন আসতেসে
নিচে খাবারের হোটেলে শান্ত টেনে আহানাকে তার পাশে বসালো
দুজনে ভাগাভাগি করে নাস্তা করছে,আহানা চিকেন কম খায় বলে সে শান্তকে দিয়ে দিসে,আর শান্ত ভাজি কম পছন্দ করে বলে সেটা আহানাকে দিয়ে দিসে
মাঝে মাঝে শান্ত হাঁড় থেকে চিকেন আলাদা করে আহানার পাতেও চিকেন দিচ্ছে
আহানাও ভাজি এক দু চামচ শান্তকে দিচ্ছে
রাফি স্যার মুগ্ধ হয়ে ওদের দেখছে,ওদের বন্ডিংটা বেস্ট,তাকিয়ে থাকার মতো
মাইক্রোতে উঠে দুজনে আবার একসাথে বসলো,২/৩ধাপে ঝগড়া করা হয়ে গেছে অলরেডি
.
আহানা শুনো
.
কি?
.
নওশাদের কল আসছিলো,আজকে ওর ফ্যামিলি রুপাদের বাসায় যাবে,আমাদের তো অবশ্যই যেতে হবে
তুমি বাসায় ফিরে রেডি হয়ে থেকো,আমি তোমাকে নিয়ে ওদের বাসায় যাবো
.
কেন?আপনার সাথে কেন যেতে হবে আমাকে?আমি একাই যেতে পারবো
.
হেঁটে?
.
তো কি হয়েছে?
.
কি হয়েছে মানে?রুপার বাবা জানে আমি নওশাদের বড় ভাই,আর তুমি আমার ওয়াইফ,উনি বলবেন ছেলের পুরো পরিবার তো এসেছে,বড় ভাইয়ের বউ আসলো না কেন,তখন কি করবে তুমি?
.
ওহ,তার মানে আজ আবার এক গাদা মিথ্যা কথা বলতে হবে আমাকে?
.
ফাইন! তুমি চুপ করে থেকো যা বলার আমি বলবো,আর আমার মনে হয় না আজ আমাদের কোনো ডায়ালগ মারতে হবে,যা বলবে নওশাদের বড় আপু আর ওর মা বাবাই বলবে
.
আচ্ছা
ঢাকায় ফিরে আহানা বাসার জন্য রওনা হলো
.
শান্ত বললো দাঁড়াতে
.
কি?
.
তোমার বাসার ঐদিকের একটা মিষ্টির দোকান থেকে মিষ্টি কিনবো,তাহলে চলো আমার সাথে,তোমাকে বাসার সামনে নামাই দিব
.
শান্তর কথাটা আহানার ঠিক হজম হলো না,কারণ ওদের বাসার ঐদিকে যে মিষ্টির দোকান আছে ওগুলা ছোটখাটো,আর শান্ত যা কিনে যা খায় তার সব হাই কোয়ালিটির
তাও আহানা শান্তর সাথে রিকসায় উঠলো
বাসায় ফিরে শান্ত চলে যাওয়ার সময় বললো তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে থাকতে,বিকালে এসে একসাথে যাবে রুপাদের বাসায়
আহানা রুমে ঢুকে ব্যাগটা বিছানায় রাখতেই রুপার কল আসলো,রুপা আহানার বাসায় আসতেসে
এখানে একটা কাজে এসেছিল,ওকে আহানা সাজিয়ে দিতে হবে তাই কাজ সেরে আহানার বাসায় আসতেসে সে
আহানা বললো ঠিক আছে
রুপা প্রায়ই ১০মিনিটেই এসে পড়লো
.
সে একটা নীল শাড়ী পরেছে,ব্লাউজ ৩/৪টা এনেছে,শাড়ীর সাথে ম্যাচিং করে পরেছে একটা,আহানা ওর চুলে খোঁপা করে দিলো ভালো করে,১ঘন্টায় ওকে সাজানো হয়ে গেছে
.
কিরে তুই রেডি হবি না?
.
এই তো এই জামাটা পরেই আসবো
.
শান্ত ভাইয়া যে শাড়ীটা দিয়েছিল ওটা পর না
.
আহানা মুখটা ফ্যাকাসে করে বললো ব্লাউজ তো ম্যাচ হয় না কি করবো
.
আমি তো আজ ব্লাউজ আনছি কতগুলো,একটা মিলিয়ে পর
.
আহানা মুচকি হেসে একটা বেছে নিলো
রুপা বাই বলে চলে গেছে
আহানা শাড়ীটা পরে আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো,রুপার মত সেও চুলে খোঁপা করেছে পরে শান্তর কথা মনে পড়লো,হুম চুল খুলবো না,বেয়াদবটাকে জ্বালাবো আজ,নীল চুড়িগুলো পরে নিলো
তারপর ব্যাগ হাতে নিয়ে ফোনটা ঢুকালো,এরপর রান্নাঘরে গেলো
রান্নাঘরের জানালাটা লাগিয়ে ফিরে আসতে গিয়ে দেখলো একটা বাটিতে বিট কাটার খোসা আর বিটের এক/দুইটা ছোট টুকরা পড়ে আছে
আহানা যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেলো,নিশ্চয় মীম আপু আজ বিট রেঁধেছিল
আহানা বাটিটা নিয়ে আয়নার সামনে এসে আঙ্গুল দিয়ে ঠোঁটে বিটের রস লাগালো,ফু দিয়ে দিয়ে সেটা শুকিয়ে নিলো
ঘাড়ো গোলাপি হয়ে গোছে তার ঠোঁট
রুপার মেকআপ বক্সটা রয়ে গেছে,আহানা সব বের করলো বক্স থেকে
সব বাদ রেখে কাজল নিলো,কাজল দিলো চোখে তারপর সেই কাজল দিয়ে কপালে ছোট্ট করে একটা টিপ বানালো
ব্যস কমপ্লিট! আর কিছু চাই না
বক্সটা গুছিয়ে আহানা নিজের ব্যাগে নিয়ে নিলো রুপাকে দিয়ে দিবে
তারপর রুমের জানালা আটকাতে গিয়ে দেখলো শান্ত বাইকে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে ফোনে কার সাথে যেন কথা বলতেসে
আহানা তাড়াতাড়ি জানালা আটকিয়ে দরজা লক করে ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে আসলো
শান্তকে সামনে থেকে দেখে তো আহানা চমকে থেমে গেলো,একটা সাদা পাঞ্জাবি পরেছে সে,আর একটা কালো সানগ্লাস ,জোস লাগতেসে ওকে
আহানা হা করে তাকিয়ে থেকে এগিয়ে গেলো
শান্ত আহানাকে দেখে ওর কান থেকে ফোনটাই পড়ে যাচ্ছিলো,হাত দিয়ে ফোন ধরে চোখ থেকে চশমাটা খুললো,চশমাটা খুলতেই আহানার ঠোঁটের রঙটা উজ্জ্বল রঙ ধারণ করলো ওর চোখে
আহানাকে এমন সাজে এই প্রথম দেখলো সে
চুল খোঁপা দেখে ব্রু কুঁচকে এগিয়ে গেলো আহানার দিকে
আহানা বললো চলুন যাই,দেরি হয়ে যাবে
.
তোমাকে বললাম না চুলে খোঁপা করবা না?
কথাটা বলে শান্ত এক টান দিয়ে খোঁপার কাঠিটা খুলে নিলো,কাঠিটা পাঞ্জাবির পকেটে ঢুকিয়ে বললো Now পারফেক্ট?
একটা কথা বলোতো!
.
কি?
.
ঠোঁটে এটা কি লাগাইসো,চিক চিক করতেসে না কেন?মেয়েরা তো লিপস্টিক লাগাইলে চিকচিক করে
.
এটা আসলে
.
কি?
.
বিটের রস?
.
হোয়াট!!ও আমি তো ভুলেই গেসিলাম তুমি লিপস্টিক ইউজ করো না
যাক ন্যাচারাল টা ইউজ করসো এর জন্য আমি তোমাকে চা খাওয়াবো,চলো এখন
আহানা গিয়ে বাইকে উঠে বসলো
শান্ত বাইকে উঠে সানগ্লাস পরতে যেয়ে দেখলো দোতলা থেকে তারেক রহমান উঁকি দিয়ে তাকিয়ে আছে
.
শান্ত চশমাটা পাঞ্জাবির কলারে আটকিয়ে হেসে দিলো
উম্মাহহহহহ!
.
তারেক আঙ্কেল চোখ বড় করে বললেন আস্তাগফেরুল্লাহ!!নাউযুবিল্লাহ!!এই পোলা আমাকে চুম্মাহ পাঠায়!
.
আপনাকে না আঙ্কেল!!
.
মানে? তো কাকে?
তারেক রহমান কথাটা বলে পিছনে তাকিয়ে দেখলো তার বউ তার পিছনে দাঁড়িয়ে শান্তর দিকে চেয়ে আছে,আর লজ্জায় লাল টমেটো হয়ে ঢুলতে ঢুলতে আকাশে উড়তেসেন,শান্ত উনাকে ফ্লাইং কিস দিসে,ও মাই গড!
.
এখনকার পোলাপাইন আমাগোরে এক মার্কেটে বিক্রি করে আরেক মার্কেট থেকে কিনেও নিতে পারবে বুঝলা আসমা??এখন যাও রঙ চা বানাও
.
এই আপনি কাকে চুমু দিলেন?
.
তোমার বাসার বলদ মার্কা মালিকের বউরে?
আহানা হেসে বললো উনার সাথে মজা করিয়েন না শেষে আপনার এখানে আসা অফ করে দিবে
শান্ত কথাটা কানেই নিলো না!
বাইক স্টার্ট দিয়ে আহানাকে নিয়ে রুপাদের বাসার সামনে এসে পড়লো
বাসার ভেতর মানুষে ঠেললে ঠেলা যাবে না,মনে হয় উতলায় পড়বে,আজ যে আমরা মেয়ে দেখতে এসেছি তা বুঝায় যাবে না যেন আজই বিয়ে
শান্ত বাইক থেকে নেমে চশমা পরে হাঁটা ধরলো,বাসার ভেতর পা রাখতেই
এক দল মেয়ে দূর থেকে হেসে হেসে বললো এইটা বুঝি বর??ওমা রুপা আপু কত লাকি,এত কিউট একখান বর পেয়েছে,ভাইয়া আপনার কোনো ছোট ভাইটাই আছে নাকি?
শান্ত চশমা খুলে ওদের দিকে তাকিয়ে বললো
বউ!!!ওওওও বউ,তাড়াতাড়ি আসো তো
আহানা শাড়ী ধরে ভিতরে ঢুকলো,মেয়েগুলো মুখ ছোট করে বলাবলি করতেসে ওমা এর বিয়ে হয়ে গেছে? তার মানে বর আরেকজন!!
.
শান্ত সোফায় বসে মেয়েগুলোর দিকে চেয়ে বললো আমার ছোট ভাই তো তোমাগো রুপা বোনের হবু বর,আমার আর ছোটভাই নাই,সরি ফর দ্যাট
.
আহানা ভিতরের রুমের দিকে গেলো রুপাকে দেখতে
ততক্ষণে নওশাদের বাবা মা,বড় আপু আর নওশাদ ও এসে গেছে
নওশাদ ও পাঞ্জাবি পরেছে,নীল পাঞ্জাবি,শান্তর পাশে বসেছে সে,কেউ বলবে না তারা একই মায়ের পেটের সন্তান না,দুজনকেই ভাই মনে হচ্ছে
একটা মেয়ে আহানাকে একশো প্রশ্ন করতেসে,শেষে তো বলেই দিলো বিয়ের কত মাস চলে?
.
আহানা ঢোক গিলে বললো ৪মাস,রুপা মুচকি মুচকি হাসতেসে
.
মেয়েগুলো এবার গেলো শান্তর কাছে
.
তো ভাইয়া বিয়ের সবে ৪মাস হয়েছে এখনই ছোট ভাইকে বিয়ে করাচ্ছেন?
.
কি করবো আপু?নওশাদকে তো আরও পরে করাইতাম বাট রুপার আব্বু তো চান জলদি করাতে,আমরা আর কি করাতে পারি বলো?
(আহানা শুধু ৪মাস কেন বললো!)
আহানা কোথায়?
.
ছাদে গেছে,আপুর জন্য ফুল আনতে
.
ওকে নওশাদ তুই বস আমি আসতেসি
.
শান্ত ছাদের দিকে গেলো,আহানা গাঁদা ফুল ৫টা নিয়েছে,এগুলো দিয়ে গাজরা বানাবে তারপর রুপার মাথায় লাগিয়ে দিবে
এসব ভেবে পিছন ফিরতেই দেখলো শান্ত গাল ফুলিয়ে তাকিয়ে আছে
.
কি?
.
এই তোমার কমন সেন্স নাই?আমাদের বিয়ের ৪মাস হইসে?আরেকটু বাড়াই বলতে পারো নাই?এত কম বললে কেন?
.
এই জন্য মানুষের ভালো করতে নেই,আমি ভালোই ভালোই এত মিথ্যা বলতেসি আর এখন আপনি আমাকেই কথা শুনাচ্ছেন?
.
এসব কি আমার জন্য করতেসো?নাকি তোমার বেস্ট ফ্রেন্ডের জন্য?
.
ফাইন,আমি গিয়ে বলতেসি আমার বিয়ের ১বছর হইসে,আমি ৩মাসের গর্ভবতী,ওকে??
চলবে♥

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে