প্রেমের পাঁচফোড়ন? পর্ব_১৫

0
2512

প্রেমের পাঁচফোড়ন?
পর্ব_১৫
#Writer_Afnan_Lara
?
আমি সত্যিটা জানতে চাই,আমি জানতে চাই তোমার এমন করে কান্নার কারণ কি?
.
কেন?জেনে কি করবেন?আপনার কি তাতে?একটা রাস্তার মেয়ে রাস্তায় কাঁদলে সেটায় আপনার কি যায় আসে?
.
শান্ত এগিয়ে এসে আহানার দুহাত ধরে টেনে বললো কি বললে?রাস্তার মেয়ে?নিজেকে রাস্তার মেয়ে বলতে লজ্জা করে না তোমার?
.
কেন লজ্জা করবে,সত্যি কথাই তো বললাম,আমি রাস্তার মেয়ে,যাদেরকে মানুষ সামনে ফেলেই ছিলে খেতে চায়
.
শান্তর চোখ মূহুর্তেই রক্তবর্ণ ধারন করলো,সে হাত ছেড়ে দিলো আহানার
.
আহানা শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে শান্তর দিকে তাকিয়ে
.
শান্ত একটা ঢোক গিলে চোখ নরমাল করে আবারও আহানার দিকে তাকালো
.
কেন কাঁদছিলে?আমি সত্যিটা জানতে চাই,টেল মি Damn ইট!!!
.
আপনি সত্যিটা জানতে চান তাই না?জানতে চান?ঠিক আছে
.
আহানা এগিয়ে এসে শান্তর কাছে গিয়ে দাঁড়ালো,হাত দিয়ে কাঁধ থেকে জামা টেনে নিচে নামিয়ে ফেললো
.
হাতে আঁচড়ের দাগগুলো স্পষ্ট হয়ে উঠে আছে
.
দেখুন!এটা হলো সত্যি
.
শান্ত চুপচাপ আহানার হাতের দিকে তাকিয়ে আছে,তার নিজের হাতটা মুঠো করে
আহানা জামা ঠিক করে আরেকদিকে ফিরে দাঁড়িয়ে পড়লো,ওড়না ঠিক করতে করতে চলে গেলো সেখান থেকে আর একটিবারও শান্তর দিকে তাকালো না সে
শান্তর চোখ দিয়ে আগুন ঝরছে,নিজেকে ঠিক করে বাইকে উঠে বসলো,বাইকের আয়নায় তাকে দেখে সে নিজেই চিনতে পারলো না,চোখ মুখ দিয়ে আগুনের লাভা বের হচ্ছে মনে হচ্ছে,সে এখন কি করবে সে নিজেও জানে না
আহানা পিউকে পড়িয়ে আকাশদের বাসার দিকে আস্তে আস্তে যাচ্ছে,ভয় করছে খুব
যাওয়ার সময় ছেলেগুলোকে দেখলো না সে,আসার সময় তাদের আবারও দেখতেই আহানা থেমে গেলো,আজ কি করে বাঁচবে,বিকাল সাড়ে ৫টা বাজে মনে হয়,তেমন লোক ও নজরে পড়তেসে না,ছেলেগুলো দাঁত কেলিয়ে চেয়ে আছে ওর দিকে
আহানা নড়তেসে না,কি করবে সেটার হাজারও ভাবনা মাথায় ঘুরে যাচ্ছে তার
৫মিনিট দাঁড়িয়ে থেকে ঢোক গিলে হাঁটার জন্য পা বাড়াতেই একটা রিকসা সামনে এসে পড়লো
.
আপা যাবেন নাকি?
.
রিকসায় একটা ৫বছরের বাচ্চা মেয়ে বসে আছে,সে বললো তার একা বাসায় যেতে ভয় করে,আহানা যেন তার সাথে উঠে,আহানাকে কোনো ভাড়া দিতে হবে না
.
এই সুযোগ আল্লাহ দিয়েছে,আমাকে বাঁচানোর জন্য
আহানা আর সাত পাঁচ না ভেবে রিকসায় উঠে পড়লো মেয়েটার হাত চেপে ধরে আছে সে,রিকসাটা ছেলেগুলোর সামনে দিয়ে যাওয়া ধরতেই ছেলেগুলো পথ আটকালো
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
আহানার কলিজা কাঁপতেসে,বড় বড় করে শ্বাস নিশ্বাস নিচ্ছে সে,ছেলেগুলো আহানার হাত ধরে ওকে টেনে নামাতে যেতেই রিকসার পিছনে কেউ একজনকে দেখে সবাই একসাথে রিকসার পিছনে তাকিয়ে রইলো তারপর হঠাৎই একটু পিছিয়ে গেলো
রিকসাআলা রিকসা ঘুরিয়ে রাস্তামত চলে যেতে থাকলো
আহানা বুঝতেসে না হঠাৎ ছেলেগুলো ওকে ছেড়ে দিলো কেন
আহানা আল্লাহকে ডাকতে ডাকতে মেয়েটাকে চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে বসে আছে
মেয়েটা মেইন বাজারে আসতেই নেমে গেলো,তারপর আহানাকে টাটা দিয়ে একটা ৩তলা বাসার ভেতরে ঢুকে গেলো
আহানা নেমে যেতে নিতেই রিকসাআলা বললো মেয়েটা বাকি পুরো ভাড়া দিয়ে দিসে আহানা যেন তার বাসার ঠিকানা দেয় তাকে সেখানে নামিয়ে দিবে
আহানা অবাক হয়ে হ্যাঁ বলে দিলো
.
আজ তো বেঁচে গেলাম কিন্তু কাল!
বাসায় ফিরে জানালার ধারে বসে আছে আহানা,বৃষ্টি আসবে মনে হয়,বাতাসের গতি বেড়েই চলেছে,আবার মাঝে মাঝে কমে,আবারও বাড়ে,উঠানে রোদে দেওয়া ওড়নাটা উড়তেসে বারবার,ক্লিপ না লাগালে হয়ত উড়ে যেতো স্বাধীনভাবে
আহানা জানালায় মাথা ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করে রাখলো
আজ আর খায়নি সে কিছু,মন নেই,খিধা আছে
পরেরদিন ভোরবেলা সেই ছিঁড়া জামাটার দিকে চেয়ে আছে আহানা,এটা আজ পরতে হবে,গায়েরটা তো ধুয়ে দিয়েছি,কিন্তু ছিঁড়া জায়গাটা কি করবো,জামাটা পরে নিয়ে ওড়না ভালো করে পেঁচিয়ে জায়গাটা ঢেকে নিলো সে তারপর বের হলো বাসা থেকে,মিষ্টিদের বাসায় এসে লিফট থেকে বেরিয়েই দেখলো শান্ত ওর বাসার দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে
.
আহানা একবার তাকিয়ে মিষ্টিদের বাসার ভেতর চলে গেলো,মিষ্টিকে পড়িয়ে বের হয়ে দেখলো শান্ত দরজার বাইরে এখনও হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,হাতে সিগারেট
আহানা সিগারেটের দিকে তাকিয়ে দেখতেসে তারপর ওর নজর গেলো শান্তর হাতের দিকে,হাতে ব্যান্ডেজ করা,আহানা ব্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে সেদিকে
শান্ত ব্যাপারটা খেয়াল করে হাত লুকিয়ে আরেকদিকে তাকিয়ে সিগারেট খাওয়ায় মন দিলো
আহানা কিছু না বুঝে হেঁটে চলে আসলো সেখান থেকে
ভার্সিটিতে এসে ক্যামপাসে বসে আছে সে,ভেবে যাচ্ছে আজ নিজেকে কি করে বাঁচাবে
.
কিরে?গরমের মধ্যে ওড়না এমন চাদরের মত করে পরেছিস কেন?খোল
.
না,আমার শীত করছে,বৃষ্টি হওয়ার পরেরদিন আমার শীত লাগে
.
এটা আবার কেমন কথা?
.
রুপার কথায় আহানা কোনো জবাব দিলো না
আহানা এখন শান্তর দিকে তাকিয়ে আছে আর শান্ত বাইকে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে,আহানা শান্তর এমন চাহনি দেখে চোখটা নামিয়ে নিলো
.
কিরে শান্ত?তুই আবার মাইরপিট করেছিস?
.
না
.
তাহলে তোর হাতে ব্যান্ডেজ কেন?
.
হকি খেলেছি তাই হাতে লেগেছে
.
শান্ত ভাই সহজে হকি খেলে না,যখন খেলে তখন বিপক্ষ দলের হাঁড় আস্ত থাকে না,তা কার সাথে হকি খেলেছিস?
.
কলেজে পড়ুয়া কিছু নিব্বার সাথে
.
বেঁচে আছে তো?কোন হসপিটালে এখন?
.
এদের হসপিটালে ভর্তি করাইনি টাকা দিয়ে দিসি
.
তুই পারিস ও বটে,তা এমন রাগ ঝাড়লি কেন,কি এমন করেছে?
.
যা করেছে তা আমার সহ্য হয়নি তাই মেরেছি
.
তোর থেকে জীবনে ঠিকঠাক প্রশ্নের জবাব পাই না আমরা
.
শান্ত হাতের ব্যান্ডেজটা খুলে ফেলে দিলো,কাল রিকসাআলাকে সে পাঠিয়েছিল, আর বাচ্চা মেয়েটা হলো তমালের বোন,তমালকে ফোন করে ওর বোনকে এনে রিকসায় বসিয়ে আহানার কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিল,সব শিখিয়ে পড়িয়ে,কাল পুরোটা সময় শান্ত আহানাকে ফলো করেছে,ছেলেগুলো যখন আহানার রিকসা আটকেছিলো ঠিক তখনই শান্ত সিউর হয়ে গেছে এরাই তারা যারা আহানার গায়ে আঁচড় দিয়েছে তারপর তারা আহানাকে আবারও ডিস্টার্ব করতে যাবে তখনই রিকসার পিছনে শান্তকে দেখতে পেলো হাতে হকিস্টিক,শান্ত তখন জ্যাকেট খুলতেসিলো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে,ছেলেগুলো শান্তকে দেখে থেমে গেলো,কারন সে ইশারা করেছিল আহানাকে যেতে দিতে
আহানা চলে যেতেই শান্ত হকিস্টিক দিয়ে ৫জনের মধ্যে একজন একজন করে গলা টেনে টেনে জিজ্ঞেস করেছে আহানার হাত ধরতে গেছিলো কে,একজন সামনে এসে বললো আমি করেছি,তো?কি করবে?
শান্ত তার হাত ধরে ঘুরাতেই হাতটা বাঁকা হয়ে গেলো তার,সে নিচে বসে ছটফট করতে লাগলো যন্ত্রনায়,শান্ত জাস্ট হাতটা ঘুরিয়ে দিয়েছে যার কারনে হাতের হাঁড় নড়ে গেছে তার,বাকিরা দৌড়ে পালাতে যেতেই শান্ত ওদের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো,খুববববব ভালো করে বুঝিয়ে দিলো ৫জনকে যে আহানাকে কিভাবে সম্মান করতে হবে,আহানার সব দায়িত্ব তাদের উপর দিয়ে দিলো শান্ত,এটাও বললো আর কোনোদিন আহানার কোনো সমস্যা হলে এবার তো হাত পা ভেঙ্গে দিয়েছে পরেরবার মাথা ফাটিয়ে দিবে
.
শান্ত?ইফ আই এম নট রং তুই এসব আহানার জন্য করেছিস?
.
কাম অন নওশাদ!আমি ওর জন্য কেন করবো,আমি এলিনার জন্য করেছি
.
ওহ আচ্ছা
.
আহানা কৃষ্ণচূড়া গাছটার নিচে এসে উপরের দিকে তাকিয়ে আছে
উপর থেকে ফুল এসে তার মুখে পড়তেসে,আহানা চোখ বন্ধ করে অনুভব করতে লাগলো এই অনুভূতি
হঠাৎ খেয়াল করলো আর ফুল পড়তেসে না,চোখ মেলতেই দেখলো শান্ত তার মুখের উপর হাত দিয়ে রেখেছে
.
আহানা চমকে শান্তর দিকে ফিরে তাকালো
.
ফুলগুলো কিউট তাই না?দেখো না সব তোমার আশেপাশেই পড়ে,আমি হাত দিলে আমার হাতে পড়ে না,তাই বুদ্ধি করে তোমার মুখের উপর হাত দিয়ে এই এতগুলো ফুল কালেক্ট করতে পারলাম
.
আহানা কিছু বললো না,সোজা হাঁটা ধরলো,তারপর থেমে পিছন ফিরে শান্তর হাতের দিকে তাকালো,শান্ত হাতটা পকেটে ঢুকিয়ে লেকের দিকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে ততক্ষণে
.
আহানা সেখানে আর থাকলো না বেশিক্ষণ,চলে আসলো সেখান থেকে
আজ আবারও আকাশদের বাসায় যাচ্ছে সে,ছেলেগুলো দাঁড়িয়ে আছে,যাওয়ার পথেই দেখা হলো,বুক কেঁপে যাচ্ছে,কি করবো এখন আমি
ছেলেগুলো অসহায়ের মত আহানার দিকে তাকিয়ে আছে,একজনের হাতে ব্যান্ডেজ,আরেকজনের পায়ে,আরেকজনের ঘাড়ে
আহানা নিচের দিকে তাকিয়ে চলে গেলো,ওমা কেউ কিছু বললো না,স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে আহানা কেটে পরলো সেখান থেকে,আসার সময় আকাশদের বাসা থেকে বের হতেই দেখলো একটা রিকসা দাঁড়িয়ে আছে
.
৫টা ছেলের মধ্যে যে আহানার হাতে আঁচড় দিয়েছিলো সে দাঁত কেলিয়ে বললো আপু রিকসায় উঠেন,আপনাকে বাসায় পোঁছে দিবে
আহানা ভয় পেলো কারন এটা তাদের ষড়যন্ত্র ও হতে পারে
আহানা হেঁটে চলে যেতে লাগতেই ছেলেটা চোখ বড় করে আহানার সামনে এসে মাটিতে বসে পড়ে বললো আপু প্লিস রিকসায় উঠেন,আপনাকে সোজা বাসায় দিয়ে আসবে
.
নাহ,দরকার নেই
.
আপু প্লিস,আপনার পায়ে পড়ি আমি,আপু,আল্লাহর কসম আমি আর জীবনেও আপনার ক্ষতি করবো না আপু
আহানা চোখ তুলে পাশ দিয়ে হেঁটে চলে গেলো
ছেলেটা মাথার ঘাম মুছতে মুছতে আবারও আহানার সামনে গিয়ে বসে আহানার পা ধরতে যেতেই আহানা পিছিয়ে গেলো
.
প্লিস রিকসায় উঠুন প্লিস,আপনার কোনো ক্ষতি কেউ করবে না,আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি,আজ আপনি রিকসায় না উঠলে আমার মাথা ফেটে যাবে
.
মানে???
.
না কিছু না,আপনি প্লিস রিকসায় উঠুন,ভাড়া আমি দিয়ে দিছি
আহানা ছেলেটার জন্য রোড ক্রসই করতে পারছে না,শেষে বাধ্য হয়ে রিকসায় উঠলো
রিকসায় বসে ভাবতেসে ছেলেটা এমন কেন করতেসে,পথে আর কোনো বিপত্তি আসেনি,আহানা ঠিকমত বাসায় ফিরে আসলো,বুঝতেসে না এমনটা কেন হচ্ছে তার সাথে,ছেলেগুলো কোনো প্ল্যান করছে না তো আমাকে ফাঁসানোর??
নাহহহ এরকম ভাবে চলতে পারে না,রান্নাঘরে এসে এসব ভুলে গিয়ে হাসলো আহানা,কারন কাল সে বেতন পাবে,পিউ আর আকাশের মায়ের থেকে,কাল নতুন মাসের এক তারিখ,কি ভালো লাগতেসে,সেই টাকা তো তারেক রহমানকে দিয়ে দিতে হবে আবার,তাও ভালো,আমাকে তো আর বাসা থেকে বের করে দিতে পারবে না,এটাই অনেক
ওমা কাঁচা মরিচ শেষ,শুধু ভাত আর নুন আছে
মরিচের গুড়া এক চামচ ভাতে ছিঁটিয়ে খেতে বসলো সে
চাল ও তো কমে এসেছে,চাল কিনবো কি করে,হাতে এক পয়সাও নেই,যা কাল পাব পুরোটায় তারেক আঙ্কেলকে দিয়ে দিতে হবে,কানের দুল এগুলা বিক্রি করে ২০টাকা দিয়ে আবারও ২কেজি চাল পাবো,কিন্তু কথা হলো ঐ ছেলেটার জন্য আমি বিক্রি করতে পারবো না,১০০টা প্রশ্ন করে আর শেষে কোথা থেকে আমার দুলটা এনে হাজির করে ফেলে উফ!!
ভোরে উঠে রেডি হয়ে বের হলো আহানা,কাল ঐ ছেলেটার কথা মনে পড়ে হাসতে হাসতে যাচ্ছে সে,মনে হয় জ্বীন ধরছে ছেলেটাকে তাই আর মেয়েদের ডিস্টার্ব করার জায়গায় পা ধরতে আসে
আহানা হাসতে হাসতে মিষ্টিদের বিল্ডিং এর ভিতরে গেলো
শান্ত বারান্দায় দাঁড়িয়ে আহানার হাসি স্পষ্ট দেখতে পেয়ে সেও হাসলো,দূর থেকে আহানার আসা দেখা যায়,ছেলেগুলোকে একদিন চা খাওয়াবো,আমার কাজ করে দিচ্ছে ভালো মতন
.
আহানা মিষ্টিকে পড়িয়ে বের হয়ে শান্তর বাসার দরজার দিকে তাকালো,শান্ত দরজা আটকিয়ে ওপাশে দাঁড়িয়ে আছে
আহানা দরজার এপাশে আর ওপাশে শান্ত,দুজন দুজনকে দেখছে না,কিন্তু দুজনের মনের ভেতর একই অনুভূতি♥
.
আহানা চলে গেলো ওখান থেকে,শান্ত গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো,আগে সকাল ১০/১১টা ছাড়া তার ঘুম ভাঙ্গতো না আর এখন কিনা ভোর ৬টায় সে উঠে যায়,unbelievable!!
.
হ্যাঁ জানি unbelievable! তুমি মজা নিতেসো মা?নওশাদ,রিয়াজ আর সূর্য ও মজা নেয় আর তুমি বাকি ছিলে!!হুহহ
শুনো আমি কিন্তু এবার বাবাকে দেখতে যাবো,আর তোমাকেও,তোমার কবরে আমি রজনীগন্ধা ফুল দিয়ে আসবো,তোমার তো প্রিয় ফুল সেটা তাই না?
মায়ের ছবিতে হাত বুলাতে বুলাতে কথা বলে যাচ্ছে সে
.
আর কি লাগবে বলো?গোলাপি চুড়ি আনবো?পরবে?তোমার তো খুব প্রিয় ছিল
বিবাহ বার্ষিকির দিন বাবা যখন অফিস থেকে আসতো তখন তোমার জন্য গোলাপি চুড়ি নিয়ে আসতো,তোমার নাকি সবচেয়ে প্রিয় ছিল সেই রঙ সেই মুগ্ধতা
তোমার জন্য এবার তোমার ছেলে নিয়ে আসবে এসব
মুখটা ফ্যাকাসে করে শান্ত কেঁদে দিলো,কাঁদতে কাঁদতে বললো মা আমাকে ক্ষমা করে দিও,আমি বাবাকে ভালো রাখতে পারলাম না,বাবাকে তার নতুন স্ত্রী একটুও ভালোবাসে না,আমি পারলাম না তার পাশে থেকে তার ডেইলি ডিপ্রেশন দূর করতে,তারা আমাকে বের হয়ে যেতে বাধ্য করেছে মা,তুমি তো বুঝবা ব্যাপারটা তাই না?
আমার সাথে যেমন কথা বলো বাবার সাথেও কি বলো?রাগ করে থেকো না মা
বাবার সাথেও কথা বলিও,বাবার কোনো দোষ নেই,বাবা আজও আমাকে আর তোমাকে ভালোবাসে,পরিস্থিতির স্বীকার হয়ে আবারও বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি
আমি চাকরি পেয়ে সবার আগে তোমার জন্য গোলাপি চুড়ি আর রজনীগন্ধা কিনে নিয়ে যাব আর বাবার জন্য ক্রিম কালারের পাঞ্জাবি,ভালো হবে না?হুম হবে,তুমি বেঁচে থাকতে তোমাকে আমি খুশি উপহার দিতে পারিনি যখন এখন দিতে কি সমস্যা,আর এটাও জানি আল্লাহর কাছে থেকে তুমি কিভাবে সুখী হবে,তোমার কবরের পাশের আশ্রমের যত অনাথ শিশু আছে আমি সবাইকে পেট পুরে খাবার খাওয়াবো ইনশাল্লাহ,এতে করে দোয়া করবে তারা তোমার জন্য
চলবে♥

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে