#প্রেমের_নাম_বেদনা?
#পর্বঃ১৯
#Arshi_Ayat
আরিয়ান অর্নিকে জোর করে বাসায় নিয়ে এলো।ওকে দেখে আরিয়ানের মা খুশী হলো।আরিয়ান ওর মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল
“মা ওকে অনেক কষ্ট করে আনতে হয়েছে।কিছুতেই আসতে চাইছিলো না।”
আরিয়ানের কথায় অর্নি কিছুটা লজ্জা পেলো।এমন ভাবে না বললেও পারতো।আরিয়ানের মা হেসে বলল
“লজ্জা পেলে কি হবে?সব মেয়েদেরই শ্বশুরবাড়ি আসতে হয়।যাও তুমি গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও তারপর খেতে আসো।”
অর্নি ওপরে চলে গেলো।আরিয়ানও ওর পিছনে পিছনে গেলো।রুমে ঢুকতেই অর্নি বলল
“তখন আন্টিকে ওইগুলো বলতে গেলি কেনো?”
“কোনগুলা?”
“ওই যে আমি নাকি আসতে চাইছিলাম না।”
“হ্যাঁ সত্যিই তো বলছি।”
অর্নি রেগে ওকে তাড়া করতেই ও ওয়াশরুমে ঢুকে হাসতে থাকে।তারপর ওয়াশরুম থেকে জোরে জোরে বলল
“অর্নি আমার তোয়ালেটা দে।”
“তুই এসে নিয়ে যা।”
“আমি আসতে পারবো না।”
“কেনো?”
“আমার সব ওপেন।”
অর্নি এই কথাটা শুনে জোরে জোরে হেসে উঠলো।নেহাল মারা যাওয়ার পর অর্নি এইপ্রথম জোরে জোরে হাসলো।তারপর আরিয়ানের তোয়ালে নিয়ে ওকে দিয়ে ওট খাটে এসে বসলো।একটুপর আরিয়ান গোসল শুধু তোয়ালে পরে শিশ বাজাতে বাজাতে বের হলো।অর্নি ওকে এভাবে দেখে অন্যদিকে ফিরে বলল
“লজ্জা শরম কই গেছে তোর?এভাবে বের হইছিস কেন?”
“কই ঠিকই তো আছে।নিচে তো তোয়ালে আছেই।আর শরীর খালি থাকলে কোনো সমস্যাও নাই।তুই তো আমার বউ ই।”
“সেইজন্য এইভাবে থাকতে হবে?যদি কেউ চলে আসে।”
“ও এইবার বুঝতে পারছি। তুই কি হিংসুক অর্নি!! যাতে আমাকে কেউ না দেখে এইজন্য এমন করছিস।”
“মোটেও না।তোর ফিগার দেখানোর ইচ্ছে হলে রাস্তায় যা।তবু আমার সামনে এভাবে দাড়াবি না।”
“আচ্ছা ঠিকাছে এবার এইদিকে তাকা। ”
“আমি পারবো না।”
“আরে একবার তাকা তো।”
অর্নি একটু সংকোচ নিয়ে তাকাতেই দেখলো আরিয়ান অফ হোয়াইট কালারের শার্ট আর জিন্স পরে আছে।অর্নি ভ্রু কুচকে বলল
“তুই আমার সামনে পাল্টালি কেনো?”
“তুইতো অন্যদিকে তাকিয়ে ছিলি।”
“তবুও যদি তাকাতাম।”
“তাকালে সমস্যা কি।বউই তো তুই।”
অর্নি কিছু বলল না।ওয়াশরুমে গিয়ে হাত মুখ ধুয়ে বেরিয়ে আসলো।আরিয়ান ওর দিকে তাকিয়ে বলল
“কি রে শাওয়ার নিলি না?”
“জামা কাপড় ছাড়া কেমনে?”
“ওহ!!তাইতো।আচ্ছা চল এখন নিচে খেয়ে তোকে নিয়ে বের হবো।”
“কই যাবি?”
“বউয়ের জন্য আলতা কিনতে।”
এটা বলে আরিয়ান হাসতে হাসতে বেরিয়ে গেলো।আর অর্নি আয়ানার সামনে দাড়িয়ে বলল’নাহ!!এভাবে ওকে ঠকানো ঠিক হবে না।আমার উকিলের সাথে দেখা করতে হবে।”
তারপর চুলে একটু হাত বুলিয়ে নিচে নেমে গেলো।খাওয়া শেষে আরিয়ান আর অর্নি দুজনেই বের হলো।মাঝ রাস্তায় আরিয়ান গাড়ি থামাতেই অর্নি বলল
“এখানে থামালি কেনো?”
“ওই দেখ সামনে ফুচকার দোকান।চল খেয়ে আসি।”
“আমি খাবো না।”
“কেনো।এটা তো তোর।”
“আজকাল প্রিয় জিনিস অপ্রিয় হয়ে গেছে।”
আরিয়ান মনে মনে বলল’আমি যেকোনো মূল্যেই তোকে স্বাভাবিক করবো।”
কিন্তু মুখে বলল
“তোকে একটা চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি।”
“কি?”
“কে কতো বেশি ফুচকা খেতে পারে।”
“না আমি চ্যালেঞ্জ নিবো না।”
“আমি জানি তুই হারবি এই জন্যই নিচ্ছিস না।”
আরিয়ানের এই কথাটা অর্নির গায়ে লাগলো ও একটা ভাব নিয়ে বলল
“ওকে চল দেখি কে জেতে।”
“ওকে।”
দুজনই ফুচকা খেতে গেলো।অর্নি টপাটপ ফুচকা মুখে পুরছে।আর আরিয়ান মনে মনে হাসছে আর বলছে তোকে এইভাবেই ঠিক করবো আমি।
খাওয়া শেষে দেখা গেলো অর্নি জিতলো।অর্নি আরিয়ানের সামনে একটা ভাব নিয়ে বলল
“আমার সাথে অনন্ত ফুচকা নিয়ে চ্যালেঞ্জ নিবি না।”
আরিয়ান হাসতে হাসতে বলল
“আরে তুই কি মনে করছিস তুই জিতে গেছিস?আমি তোকে চান্স দিছি।”
অর্নি এবার রেগে গেলো।অর্নি আরিয়ানের পিঠে এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি দিতে লাগলো।আর আরিয়ান হাসতে লাগলো।একপর্যায়ে আরিয়ান ওর হাত ধরে সামনে নিয়ে এলো তারপর বলল
“আচ্ছা অনেক মাইর দিছিস।এখন চল।”
তারপর ওরা শপিং এ এলো।অর্নি একটা লেডিস কর্ণারে ঢুকলো আর আরিয়ান জেন্টস কর্ণারে ঢুকে রিমনকে ফোন দিলো
“হ্যাঁ বল।”
“দোস্ত তুই আর রাদিফ প্লিজ কয়েকদিন আমাদের বাসায় থাক।”
“কেন?”
“আরে অর্নিরে নিয়ে আসছি আজকে বাসায়।তো রাতে ও গেস্ট রুমে চলে যাবে তোরা এসে থাকলে ওকে বাধ্য হয়ে আমার রুমে শুতে হবে।”
“ওহ!!এইকথা আচ্ছা চিন্তা করিস না রাদিফরে নিয়ে আমি চলে আসবো।”
“ওকে।”
আরিয়ান ফোন রেখে একটা বাকা হাসি দিলো তারপর দুটো শার্ট কিনলো।অর্নিও দুটো থ্রি পিছ আর দুটো জিন্স আর টপস নিলো।তারপর বাসায় এসে আরিয়ান ফ্রেশ হতে গেলো আর অর্নি বর্ষাকে মেসেজে বলল
“দোস্ত একটা হেল্প কর।একটা ভালো উকিলে সাথে কথা বল আমার আর আরিয়ানের ডিভোর্সের বেপারে।তারপর আমাকে জানাবি।পারলে কাগজ পত্রগুলো রেডি করে নিস।”
বর্ষা কে মেসেজ দিয়ে অর্নি মেসেজটা ডিলিট করে দিলো।তারপর আরিয়ান ওয়াশরুম থেকে বের হলে অর্নিও গেলে ফ্রেশ হতে।
চলবে…..
(ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।ধন্যবাদ)