প্রেমের নাম বেদনা পর্বঃ০৮

0
1332

#প্রেমের_নাম_বেদনা?
#পর্বঃ০৮
#Arshi_Ayat

আরিয়ানের রুম থেকে বের হতেই দেখলো রিমন আর রাদিফ আসছে।ওদের দেখে অর্নি ওদের সামনে গিয়ে দাড়িয়ে বলল

“কেমন আছো তোমরা?”

রিমন হেসে বলল

“ভালো।তুমি?”

“হ্যাঁ ভালোই।যাও আরিয়ান রুমেই আছে মেয়ে পটানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।”

রাদিফ ভ্রুকুচকে বলল

“ওইটা আবার কেমনে নেয়?”

“যাও গিয়ে দেখো কেমনে নেয়।”

রিমন,রাদিফ দুজনেই আরিয়ানের রুমে গিয়ে দেখে ও বডি স্প্রে দিচ্ছে আর চুল গুলো জেল দিয়ে স্টাইল করা।রাদিফ পিছন থেকে এসে বলল

“মামা তোরে আজকে সেই লাগতেছে।”

রিমন খাটে বসতে বসতে বলল

“হ্যাঁ অনেক হ্যান্ডসাম লাগছে সবগুলো ক্রাশ খাবে দেখিস আবার সব মেয়েই পটে না যায়।আমাদের জন্য দু চারটা রাখিস।”

“আমার ওপর ক্রাশ খাবে না তো কার ওপর খাবে?আ’ম আরিয়ান চৌধুরী বুঝতে হবে।”

“বুঝছি।এখন বল প্য্লানের কি খবর?” (রিমন)

“ওরা দুজন দুজনকে পছন্দ করে কিন্তু এখনো কেউ কাউকে বলে নি।শুধু একবার বলতে দে তারপর দেখিস কি করি।”

“আমার মনে হয় তুই ভালো করছিস না।তোর এটা করা উচিত হচ্ছে না।” (রাদিফ)

“তোর এতো জ্বলছে কেনো?” (আরিয়ান)

“দেখ আমার জ্বলছে না কিন্তু ওকে কষ্ট দিয়ে কি লাভ তোর?”

“ওইদিন আমাকে যে সবার সামনে থাপ্পড় মারলো ওইটা কিছু না?”(আরিয়ান)

” তবুও আমার মন সায় দিচ্ছে না।(রাদিফ)

“তুই চুপ থাক তোর কিচ্ছু করতে হবে না যা করার আমি আর রিমন করবো।”

রাদিফ আর কিছু বলল না।রিমন প্রসঙ্গ পাল্টাতে বলল

“আরিয়ান তুই থাক আমরা একটু আন্টির সাথে দেখা করে আসি।”

“ওকে যা।”

রিমন আর রাদিফ আরিয়ানের মায়ের রুমের দিকে গেলো।রুমের সামনে আসতেই শুনতে পেলো

“আরিয়ানকে বলে দেওয়াই ভালো হবে।”

“তুই এতো উতলা হচ্ছিস কেন?”

“উতলা হবো না?যদি এখন আরিয়ান, অর্নি অন্য কাউকে পছন্দ করে ফেলে তাহলে?”

“আরে নাহ করবে না আর তাছাড়া আর মাত্র কয়েকটা মাস ই তো বাকি ওদের শেষ সেমিস্টারের।এরপর বলিস কিন্তু এখন বলিস না।”

“ওদের যে বিয়ে হয়েছে এটা বললে এমন কি সমস্যা আমি বুঝি না আচ্ছা যাও বলবো না।”

রিমন আর রাদিফ দরজার আড়ালে আরিয়ান আর অর্নি দুজনের মায়ের কথাই শুনে নিয়েছে।তারপর রাদিফ রিমনের হাত ধরে বাইরে নিয়ে আসলো আর বলল

“দোস্ত এখন কি করবো?ওরা যে বিবাহিত দুজনের একজনও জানে না।”

“আমিও বুঝতেছি না কি করবো।”

রাদিফ ও নিশ্চুপ রিমনও কিছু বলছে না।হঠাৎ রাদিফ লাফিয়ে উঠে বলল

“দোস্ত বুদ্ধি পাইছি।”

“কি?”

“ওদের কে আমরা প্রেমে ফালামু।”

“কি বলদের মতো কথা বলতেছিস!!প্রেমে কেমনে ফালায়?”

“আরে জোর কইরা ফালামু।”

“কেমনে?”

“মনে কর এখন গিয়া আমরা ট্রুথ ডেয়ার খেলমু আর ওদের কাপল ডান্স দিতে বলমু।মনে ওদের এই চারদিন কাছাকাছি রাখমু।মনে হয় এতে কিছু হতে পারে।”

“হুম আইডিয়া টা খারাপ না কিন্তু তোর কি মনে হয় এটা তে কাজ হবে?”

“হলে হবে না হলে আল্লাহর ওপর।আমাদের চেষ্টা করতে তো দোষ নাই।”

“হুম এটা ঠিক বলছিস।চল এখন তুই গিয়ে অর্নিকে ডাকে আনবি আর আমি আরিয়ানের রুমে যাচ্ছি।”

রাদিফ অর্নিকে ডাকতে গেলো আর রিমন আরিয়ানের রুমে ঢুকতেই দেখলো তিনটা মেয়ে বসে বসে আরিয়ানের সাথে গল্প করছে।রিমনকে আসতে দেখে আরিয়ান বলল

“দোস্ত ওরা আমার কাজিন।শিউলী,রুমি,আইরিন।”

রিমন সবাইকে সালাম দিলো তারপর আরিয়ানের পাশে বসে বলল

“দোস্ত চল সবাই মিলে ট্রুথ অর ডেয়ার খেলি।”

“আচ্ছা খেলা যায়।তাহলে ছাদে চল।”

রিমন, আরিয়ান আর ওর কাজিনরা সহ ছাদে গেলো।এদিকে রাদিফ আসলো অর্নিকে নিয়ে।ট্রুথ অর ডেয়ার শুরু হয়েছে।প্রথমে রিমন দিবে আরিয়ানকে।তো রিমন মুখে একটা দুষ্টু হাসি নিয়ে বলল

“দোস্ত তুই কি ট্রুথ নাকি ডেয়ার?”

“ডেয়ার।”

“ওকে তাহলে তুই গিয়ে অর্নিকে প্রপোজ কর।শুধু আই লাভ ইউ বললে হবে না একটা গান অথবা কবিতা দিয়ে করতে হবে।”

“ওকে।গান গাইবে কিন্তু ওকে ও আমার সাথে ডুয়েট করতে হবে।”

অর্নি মুখ টিপে হেসে বলল

“আচ্ছা যা করবো তুই আগে শুরু কর।”

আরিয়ান শুরু করলো

“শোনো বলি তোমায়,না বলা কথাগুলো আজ বলে দিতে চাই।”

এবার অর্নি শুরু করলো

“বলো কি বলতে চাও,সারাটা জীবন ধরে শুনে যেতে চাই।”

“ভালোবাসি আমি যে তোমায় এই কথাটি ছিলো শুধু বলার।(আরিয়ান)

” ভালোবাসি আমিও তোমায় সব কথা কি মুখে বলে দিতে হয়।”(অর্নি)

তারপর সবাই হাত তালি দিলো আর সবার অগোচরে রিমন ওদের এই ডুয়েট টা ভিডিও করলো।এবার শিউলী দিবে অর্নিকে।শিউলী বলল

“অর্নি আপু তুমি ট্রুথ নাকি ডেয়ার?”

“ট্রুথ।”

“আচ্ছা তুমি কি কাউকে ভালোবাসো?”

অর্নি কিছুটা ভেবে বলল

“ভালোবাসি কি না জানি না তবে ফিল করি ওকে নিয়ে।”

অর্নির উত্তরে আরিয়ান,রিমন,রাদিফ সবাই স্বস্তি পেলো।এরপর অর্নি দিবে রিমন কে।অর্নি রিমনকে বলল

“তুমি কি নিবা?”

“ডেয়ার।”

“ওকে তাহলে তুমি তোমার টাইমলাইনে ‘আমি হিজড়া’ এটা লিখে পোস্ট দাও।”

অর্নির ডেয়ার শুনে রিমন সহ সবার চোখ কপালে।রিমন কাঁদো কাঁদো গলায় বলল

“প্লিজ এটা না,এটা করলে সারাজীবন কুমার থাকতে হবে আমার।”

“ডেয়ার মানে ডেয়ার।করতে হবে আর না করলে হেরে যাবা।”

এবার আরিয়ান বলল

“দোস্ত এটা করিস না।মান সম্মানের ব্যাপার।হেরে যা।”

রিমন কিছু একটা চিন্তা করে বলল

“আচ্ছা দিবো।”

এই বলে ওর ফোন বের করে ফেসবুকে গিয়ে লিখলো ‘আমি হিজড়া এটা লিখে ওয়ানলি মি করে পোস্ট করলো।ওর পোস্ট দেখে সবাই হাসা শুরু করলো সাথে রিমন ও হাসলো আর অর্নি চেচিয়ে চেচিয়ে বলল

“এটা কিন্তু চিটিং।হবে না এটা।”

আরিয়ান হাসতে হাসতেই বলল

“কেনো হবে না?তুই তো বলিস নি যে ওয়ানলি মি করা যাবে না।সো এটা হয়েছে।”

এবার রুমি দিবে রাদিফ কে।তো রুমি বলল

“রাদিফ ভাইয়া তুমি কি নিবা?”

“ট্রুথ।”

“কয়বার স্কুল পালাইছো?”

“আমি তো মাসে দুইবার স্কুলে যেতাম।”

রাদিফের কথা শুনে সবাই হাসা শুরু করলো।রাদিফের পর আইরিন দিবে আরিয়ান কে।আইরিন বলল

“আরিয়ান ভাইয়া তুমি এবার কি নিবা?”

“ট্রুথ।”

“তাহলে বলো এরেঞ্জ ম্যারেজ করবা নাকি লাভ?”

আরিয়ান মুচকি হেসে বলল

“এখনো কাউকে লাভ করি না বাট লাভ ম্যারেজ করার ইচ্ছা আছে।”

অর্নি হেসে বলল

“ওয়াও!!যাক তোর ইচ্ছা পূর্ণ হোক।আমিন”

অর্নির সাথে সাথে সবাই আমিন বলল।

এবার অর্নি দিবে আরিয়ান কে।

চলবে….

(ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে