প্রেমের নাম বেদনা পর্বঃ০৭

0
1638

#প্রেমের_নাম_বেদনা?
#পর্বঃ০৭
#Arshi_Ayat

আরিয়ান রা যখন নারায়ণগঞ্জ পৌঁছালো তখন রাত ১২ টা হবে।

অল্প স্বল্প কথা বলে যে যার রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লো কারণ কাল গায়ে হলুদ।অর্নি শুয়ে শুয়ে নেহালের কথা ভাবছে।আর আরিয়ান ভাবছে নেহাল আর অর্নির প্রেমটা হয়ে গেলে এটা সবাইকে বলে দিবে।

সকাল ৭.০০ টা

অর্নি ঘুম থেকে উঠে নিচে যেতেই ওর মা বলল

“যা তো আরিয়ানকে ডেকে নিয়ে আয়।”

“মা ও তো ঘুমাচ্ছে বোধহয়।”

“তাহলে ঘুম থেকে উঠিয়ে নিয়ে আয়।”

অগত্যা অর্নি আরিয়ানের রুমে গেলো ওকে ডাকতে।গিয়ে দেখে হাত পা ছড়িয়ে ঘুমাচ্ছে।অর্নি গিয়ে জোরে জোরে বলল

“আরিয়ান ওঠ মা তোকে ডাকছে নিচে।”

“……”

“ওই শুনতে পাচ্ছিস?”

“……”

“আল্লাহ গো এইটারে উঠামু কেমনে!!”

তারপর অর্নি আরিয়ানের হাতে একটা চিমটি দিলো কিন্তু কোনো লাভ হলো না গন্ডারের মতো ঘুমাচ্ছেই।এবার অর্নির মাথায় একটা শয়তানি বুদ্ধি এলো ও আরিয়ানের গলায় হাত দিয়ে কাতুকুতু দেয়া আরম্ভ করলো।আরিয়ান ঘুমের ঘোরে ই অর্নির হাত টেনে ওর বুকের উপর ফেললো ওকে।আরিয়ানের এমন কাজে অর্নি হতভম্ব।অর্নি ওর মুখের দিকে কিছুক্ষণ চেয়ে বলল

“কে বলবে এই ছেলেটা যে এতো বজ্জাত!!ঘুমালে কতো কিউট লাগে।”

তারপর আরিয়ানের হাতে একটা জোরে কামড় দিয়ে উঠে পড়লো অর্নি।আর বেচারা আরিয়ান ধড়মড় করে উঠলো তারপর হাতের দিকে চেয়ে রাগে অর্নিকে বলল

“কি হইছে তোর?এমন পাগলের মতো কামড়াচ্ছিস কেনো?”

“তুই ঘুম থেকে উঠছিস না তাই কামড় দিছি।”

“কামড় দেওয়া লাগে ডাকলেই তো হতো।

” ডাকছি কিন্তু তুই উঠিস নাই।”

“আচ্ছা এখন তো উঠছি এখন বল কি হইছে?”

“নিচে যেতে বলছে তোকে।”

“আচ্ছা ফ্রেশ হয়ে আসছি।তুই যা।”

“ওকে।”

আরিয়ান ফ্রেশ হয়ে নিচে নামতেই ওর মা বলল

“যা তো বাবা অর্নিকে সাথে নিয়ে ফুল কিনে নিয়ে আয়।”

আরিয়ান চমকে উঠে বলল

“কিহ!!!আমি?”

“হ্যাঁ এতো অবাক হওয়ার কি আছে।ড্রাইভার গাড়ি করে ফুল নিয়ে আসবে আর তোরা বাইকে করে যাবি।”

আরিয়ান মনে মনে বলল শেষ পর্যন্ত এই দিনও দেখা লাগলো।তারপর আরিয়ান বাইকে বসে অর্নিকে বলল

“উঠে বস।”

অর্নি উঠে আরিয়ানের পেট চেপে ধরলো।আরিয়ান বলল

“এই আমার পেট জড়িয়ে ধরেছিস কেনো?হাত সরা।”

“ওমা না ধরলে তো পড়ে যাবো।”

“গেলে যাবি।কিন্তু ধরবি না।

” আচ্ছা কাধে এক হাত দেই প্লিজ।”

“আচ্ছা ধর।”

অনেক্ষণ ঘুরে ফুল কিনে গাড়িতে তুললো দুজনে মিলে তারপর গাড়ি পাঠিয়ে দিলো বাসায়।আর ওরা দুজন একটা হোটেলে ঢুকে ব্রেকফাস্ট শেষ করে বের হলো।বের হতেই বৃষ্টি শুরু আরিয়ান দ্রুত ওর শার্ট টা খুলে ফেললো তারপর অর্নির মাথা আর নিজের মাথার উপর ধরে বলল

“হোটেলে চল আবার।”

ওরা দ্রুত পায়ে হোটেলের দিকে এগিয়ে আসছিলো কাছাকাছি আসতেই শুনতে পেলো পাশের একটা চায়ের দোকান থেকে

Hum tere bin ab reh nehi sakte
Tere bina keya wajood mere

Tujse juda ghar ho jaayenge
To khud se he ho jayenge juda

Kuyki tumi he ho ab tumi he ho
Jinde gi ab tumi he ho

এই গানটা বাজছিলো।আরিয়ান আর অর্নি নিজেদের দিকে চাওয়া চাওয়ি করলো।দুজনের মনেই একই প্রশ্ন এটা কি কাকতালীয়??বৃষ্টি পড়ছে সাথে একটা মেয়ে যাকে আমি পছন্দই করি না তাকে আমার শার্ট দিয়ে ঢাকতে ঢাকতে নিয়ে যাচ্ছি তার ওপর এই গানটা বাজছে!!অর্নির মনেও একই চিন্তা।তবুও দুজনে হোটেলের সামনে পৌছুলো।কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি থামলে ওরা বাইকে উঠলো।আরিয়ান খালি গায়ে বাইক চালাচ্ছে আর অর্নি আরিয়ান শার্ট টা এক হাতে নিয়ে আরেকহাতে ওর কাধ ধরে রাখলো।তারপর বাড়িতে এসে দুজনেই কাপড় পাল্টালো।অর্নি ওষুধ খেয়ে আরিয়ানের ঘরে গিয়ে দেখলো আরিয়ান চুলে জেল লাগাচ্ছে।অর্নি পিছন থেকে এসে ওর পিঠে একটা চাপড় দিয়ে বলল

“কি রে এতো মান্জা মারছিস কেনো?”

“আরে একটু পর থেকেই তো সুন্দরী মেয়েরা আসবে তাই আর কি একটু জেল লাগাচ্ছি চুলে।”

“ও মাইয়া পটানের ধান্দা।”

“হ…..বিয়া বাড়িতে মাইয়া পটাইতে ই যায় পোলারা খাইতে না।”

“ও তাইলে তুই মাইয়া পটাবি।দাড়া আন্টিরে কইতাছি।”

“এহ!!নিজে মিঙ্গেল হইয়া যাইবা আর আমি সিঙ্গেল হইয়া ঘুরমু!!নো ওয়ে।আজকেই মিঙ্গেল হমু দেখিস।”

“আচ্ছা আগে হ তারপর দেখমু।আর এই নে তোর শার্ট।”

“এমনে দেছ কেন??ধুয়ে দিবি।”

“আমি ধুয়ে দিমু কেন?”

“তোরে যে এতো কষ্ট কইরা বৃষ্টির তে বাচাইলাম তাই।”

“পারমু না নিজেরটা নিজে ধুয়ে নিস আর নাইলে আজকে যারে পটাবে তারে দিয়া ধোয়া।”

“এহ!!তুই ধুয়ে আন।ওরে দিয়ে ধোয়াবো কেন?”

“পারবো না।”

এটা বলে মুখ ভেংচি দিয়ে শার্ট টা ওর খাটে রেখে অর্নি চলে গেলো।

চলবে….

(ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আর গঠনমূলক মন্তব্য করবেন।)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে