প্রেমেপড়েছিঅদৃশ্য_কিছুর
পার্ট: ৬
আব্বুকে খুন করলো আম্মু আর সবাই জানলো আব্বু স্টোক করে মারা গেছেন, তারপর আব্বুর লাশ বাসায় আনা হয় জানাজা পরে দাফন করা হয় কিন্তু আমার লাশ স্টোর রুমেই পঁচে যায় কেউ খুঁজেনি আমার লাশ আমাকে কেউ জানাজা পড়ে দাফন করেনি কারন সবাই জানতো আমি টাকা নিয়ে ফালিয়েছি
একমাস পর আম্মু উনার বয়ফ্রেন্ড কে বিয়ে করে এই বাসায় থাকতে শুরু করে, মাঝে মধ্যে আমার আত্মা ছাদে দেখে আম্মু ভয় পেয়ে যায় তারপর এই বাসা ছেড়ে চলে যায়
সেই থেকে চার বছর ধরে আমি এই বাসায় আছি, স্টোররুমে আমার লাশ পচে পচে কঙ্কাল হয়েছে আর আমি চিলকোঠোর ঘরে থাকতে শুরু করেছি, আমার লাশ দাফন করা হয়নি তাই আমার আত্মা এই বাসা থেকে মুক্তি পায়নি তাই আমি এই বাসায় আছি চার বছর যাবত
তোমার আব্বু আম্মুর কাছ থেকেই এই বাসা কিনেছেন তারপর তোমরা এখানে আসলে….
ওর কথাগুলো শুনে চোখের পানি আটকে রাখতে পারলাম না, কথাগুলো বলে সাইয়ান চোখের পানি মুছতে মুছতে আমার দিকে থাকালো
–এই পাগলী তুমি কাঁদছ কেন
–আচ্ছা তোমার আম্মু এখন কোথায়
–আছেন উনার নতুন স্বামীর সাথে আব্বুর সম্পত্তি নিয়ে সুখে জীবন কাটাচ্ছেন
–তুমি তো প্রতিশোধ নিতে পারতে
–উনাকে আমি মায়ের আসনে জায়গা দিয়েছি মায়ের উপরে কি প্রতিশোধ নেওয়া যায়
–তুমি উনাকে মা ভাবো আর উনি কিনা
–জানো অর্পি আমার এই সুন্দর পৃথিবীতে বাঁচার খুব ইচ্ছে ছিল আম্মু যদি একবার বলতো সব সম্পত্তি দিয়ে দিতাম শুধু বিনিময়ে আমার জীবনটা চাইতাম
–প্লিজ কেঁদো না
–খুব কষ্ট হয় অর্পি কিন্তু জানো যখন থেকে তুমি এই বাসায় এসেছ আর আমাকে জ্বালাতন করতে শুরু করেছ তখন থেকে এসব কষ্ট ভুলে গিয়েছি তোমার সবকিছু এখন আমার ভালো লাগে
–ভালোবাস আমাকে
–(নিশ্চুপ হয়ে রইল হয়তো এমন প্রশ্নের জন্য প্রস্তুত ছিল না)
–কি হল বল
–আসলে অর্পি
–সত্যি কথা বলতে ভয় পাও কেন
–কারন আমরা যে দুজন দুই জগতের মানুষ আমাদের সম্পর্ক করা সম্ভব না
–কেন সম্ভব না আমরা চাইলে ঠিকি সম্ভব
–তারমানে তুমিও…
–হ্যা সাইয়ান আমিও তোমাকে ভালবাসি
–কিন্তু অর্পি আমাদের মিল যে সম্ভব না
–পরেরটা পরে ভাবা যাবে
–আমাকে ছেড়ে চলে যাবে না তো
–ছেড়ে যাওয়ার জন্য তো ভালোবাসি নি
–যখন তোমার আব্বু আম্মু জানতে পারবে তখন তো ঠিকি ছেড়ে যাবা
–যাবো না বিশ্বাস রাখো
–আমি তোমাকে অর্পিতা নামে ডাকতে পারবো না অর্পি বলে ডাকবো
–এতক্ষণ তো অর্পি বলেই ডাকছ
–তুমি খেয়াল করেছ
–হ্যা
রাতে রান্না করে দুজন খেলাম তারপর বারান্দায় গিয়ে সাইয়ান এর কাঁধে মাথা রেখে বসলাম আর ও গান শুরু করলো, গান শুনতে শুনতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি বুঝতেই পারিনি
সকালে আমার মাথায় কারো হাতের আলতো ছোঁয়ায় ঘুম ভাঙ্গলো চোখ খুলে দেখি সাইয়ান মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে আর আমার দিকে থাকিয়ে হাসছে
–হাসছ কেন
–আমার পরিটা কে দেখে
–ভালই তো তুমি আত্মা আর আমি পরি হিহিহি
–এত্তো কিউট একটা মেয়ে হয়ে কিভাবে যে একটা ভূতের প্রেমে পরলা আমার মাথায় আসে না
–আর আসতে হবেও না
–আজ তো তোমার আম্মু আব্বু চলে আসবে আমরা কথা বলবো কিভাবে
–লুকিয়ে লুকিয়ে
–আমি কিন্তু এই বাসার বাহিরে যেতে পারিনা কথা বললে এই রোমেই ডেকো
–ঠিক আছে এখন যাও আমি ফ্রেশ হয়ে কলেজে যাবো
–আজ কলেজে না গেলে হয় না
–অনেক দিন ধরে যাই না আম্মু শুনলে বকা দিবে
–ঠিক আছে যাও
ফ্রেশ হয়ে কলেজে চলে গেলাম, দুইটা ক্লাস করেই বাসায় ফিরে আসলাম ক্লাসে একদম মন বসছে না তাই
বাসায় এসে দেখি আম্মু আব্বু চলে এসেছেন, আব্বু আজ অফিসে যাননি তাই দুপুরে আম্মু অনেক কিছু রান্না করলো আর আমি আম্মুকে রান্নায় হেল্প করলাম, রান্না শেষ করে গোসল করে সবাই মিলে খেলাম, খেয়ে সবাই মিলে অনেক সময় আড্ডা দিলাম তারপর রুমে গেলাম, এতক্ষণ ধরে সাইয়ান এর সাথে একটু কথাও হয়নি তাই রোমে এসেই দরজা বন্ধ করে ওকে ডাকলাম, ডাকার সাথে সাথে এসে খাটে বসল কিন্তু মুখটা গোমরা করে
–মুখটা এমন মলিন কেন
–কলেজ থেকে সেই কখন আসছিলা আর এখন আমার সাথে কথা বলছ
–আম্মুকে রান্নায় হেল্প করছিলাম তো
–হুম
–প্লিজ রাগ করে না
–পাপ্পি দাও তাহলে রাগ কমবে
–ওলে আমাল লোমান্তিক ভূতরে
–হ্যা আমি অনেক রোমান্টিক, যখন কলেজে পড়তাম তখন আমার পিছনে মেয়েদের লাইন ছিল
–তাই বুঝি
–হ্যা
হঠাৎ আম্মু দরজায় টোকা দিলো, দরজা খুলে দিয়ে সাইয়ান এর পাশে এসে বসলাম কারন আম্মু সাইয়ান কে দেখতে পাবে না
আম্মু: একা একা কথা বলছিলি কেন
আমি: কই নাতো
–একদম মিথ্যে বলবি না আমি স্পষ্ট শুনেছি
–কি শুনেছ
–তুই কার সাথে যেন কথা বলছিলি
–ফোনে বলছিলাম
–ওহ আচ্ছা যাই
আম্মু চলে গেলো যাক এবারের মতো বেছে গেলাম, সাইয়ান এর দিকে থাকিয়ে দেখি ও হাসছে
–হাসছ কেন
–খুব সুন্দর মিথ্যে বলতে পারো তাই
–তোমার জন্যই তো বললাম
–হুম কিন্তু কতোদিন এভাবে মিথ্যে বলবে
–জানিনা তবে যতোদিন প্রয়োজন বলে যাবো
–ভালোবাসি পরি
–ভালোবাসি লোমান্তিক ভূত
চলবে?
(আপুরা সাইয়ান এর প্রেমে পড়ে আর লাভ নাই?
অর্পির সাথে প্রেম হয়ে গেছে?
এখন যে সাইয়ান এর প্রেমে পড়বা সে অর্পির সতিন হইবা?)