#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
লেখাঃ মহতামীম হাসান মীম
চিঠি নংঃ ২
প্রিয় অপূর্ণা,
কেমন আছো তুমি? তুমি কি জানো, তোমাকে যেদিন প্রথম দেখেছিলাম সেদিন আমার এই ডেড বডিটাতে আমি হার্টবিট ফিরে পেয়েছিলাম। তোমাকে একপলক দেখবার জন্য সবসময় মনের ভেতরটা হাসফাস করতো মনে হতো দৌড়ে গিয়ে তোমাকে আমার মনের ইসিজি রিপোর্টটা দেখায়।
মগজে তোমায় নিয়ে কতো শতো ভাবনার খেলা চলে তা তোমার ধারণাই নেই।সিটিস্ক্যানটা দেখাতে পারলে বড্ড ভালো হতো। তোমার সাথে যেদিন প্রথম কথা বলেছিলাম সেদিন আমার দু-একটা ছোটখাটো হার্ট অ্যাটাক তো হয়েছিলই।
তোমাকে প্রথম দেখায় আমার বডিতে প্রচন্ড একটা শক লেগেছিলো এটা ভেবে যে দুইশ ছয়টা হাড় দিয়ে গড়া একটা মেয়ে এতো সুন্দর কি করে হতে পারে। তোমার চোখজোড়া একেবারে টেস্টটিউবের কাঁচের মতো স্বচ্ছ আর লম্বা চুলগুলো এক্স-রে রিপোর্টের চেয়েও কালো। তোমার জোড়া ঠোঁটের মিষ্টি হাসিটা আমার বুকে ইঞ্জেকশনের মতো বিঁধেছিলো সেদিন।
তুমি আমার জীবনের প্রতিটা দুঃখে ব্যান্ডেজ করে দিয়ে আমার ক্ষতগুলোকে ভরিয়ে দিয়েছো। তুমি “হানিকল” কফ সিরাপের চেয়েও মিষ্টি, নাপা এক্সটার মতো ব্যাথানাশকারী,এন্টাসিডের মতো জ্বালা প্রশমনকারী।
তুমি আমার কাছে বায়োলজি বইয়ের চেয়েও বেশি প্রিয়।আমার স্টেথোস্কোপটির মতো তোমাকেও আমি সবসময় নিজের করে রাখতে চেয়েছিলাম কিন্তু তুমিতো চলে গেলে বহুদূর। বাইনোকুলার দিয়েও তোমার আর দেখা পেলাম না আমি।
নামটার মতোই ভালোবাসাটাও অপূর্ণ রেখে চলে গেলে তুমি। আমার হার্টটা কাঁচের ন্যায় টুকরো টুকরো হয়ে পড়ে রইলো। তুমিতো ফিরে আসতেই পারতে,জোড়া লাগাতেই পারতে আমার মনটাকে।
আমায় ছেড়ে পরপারে যাওয়াটা কি খুব জরুরী ছিলো? জানো, অপারেশন থিয়াটারের লাল বাতিটার মতোই আমার মনেও লাল বাতি জ্বলছে।সেখানে কারো যাওয়া নিষেধ কারণ তোমার স্মৃতিগুলো ফাস্ট এইড বক্সটাতে খুব যতনে রেখে দিয়েছি তো।
আমার কথা কি মনে পড়ে তোমার?যদি মনে পড়ে তাহলে তারা হয়ে থেকো এই ডাক্তারবাবুর সাথে সবসময়।
ইতি
তোমার মনের ডাক্তারবাবু।