#প্রাণেশ্বরী
#Writer_Asfiya_Islam_Jannat
#পর্ব-০২
“তোমার এই অবস্থা কেন প্রাণ? কি হয়েছিল? আর তুমি বাংলাদেশে কবে আসলে? আমাকে জানালে না কেন?”
নয়নে মুখশ্রী স্পষ্টভাবে অক্ষিকাচে ভেসে উঠতেই প্রাণের ঘুম ছুটে গেল। সে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলো নয়নের উদ্বিগ্ন,শঙ্কিত চেহেরাটির দিকে। অতঃপর ধীরে ধীরে গতরাতের তিক্ত স্মৃতিগুলো মন-মস্তিকে হানা দিতেই বক্ষস্থল দুমড়ে মুচড়ে উঠলো। ক্ষোভের অগ্নিশিখা দা’পা’দা’পি করে ছড়িয়ে পড়লো শিরায়-উপশিরায়। নেত্রযুগল হয়ে উঠল ঈষৎ র’ক্তি’ম। বিতৃষ্ণায় দৃষ্টি ঘুরিয়ে নিল প্রাণ, ঘৃণায় শরীর কেঁপে কেঁপে উঠছে যেন। প্রাণকে মুখ ঘুরিয়ে নিতে দেখে নয়ন বলে উঠে, “কি হলো কথা বলছো না কেন? তোমার এই অবস্থা কিভাবে হলো? আর হঠাৎ না কাউকে কিছু না জানিয়ে বাংলাদেশে চলে আসলে যে? সব কি ঠিক আছে? শুটিংয়ে কোন প্রবলেম হয়নি তো?”
কথাটা বলে নয়ন প্রাণের এক হাত মুঠোয় পুরে নিয়ে বলে, “কথা বল প্লিজ। তুমি আদৌ জানো কাল সারাদিন তোমায় মোবাইলে পাইনি বলে কতটা চিন্তিত ছিলাম আমি? ডু ইউ হ্যাভ এনি আইডিয়া? না তোমাকে কলে পাচ্ছিলাম, না তোমার এসিস্ট্যান্ট শিলাকে। মাথায় কিসব অশুভ চিন্তায় ঘুরছিল জানো? না ঠিক মত শুটিং করতে পেরেছি, না ঘুমাতে পেরেছি। রাতেও তোমার চিন্তায় ছটফট করেছি শুধু। কতবার যে ফোন লাগিয়েছি তার হিসেব নেই। সকালে যখন শিলা ফোন করে জানালো তুমি বাংলাদেশে, বিশ্বাস কর এক মুহূর্ত বিলম্ব করেনি৷ সোজা তোমার কাছে চলে এসেছি।”
নয়নের দিকে না তাকালেও তার বলা প্রত্যেকটা কথা খুব মনোযোগ দিয়ে শুনলো প্রাণ। বুঝলো, নয়নের বলা প্রত্যেকটা শব্দ,বর্ণ,বাক্য মিথ্যে এবং বানোয়াট। সাদা মিথ্যে যাকে বলে। তার কথায় সত্যতা নামক বস্তুটি নেই কিয়দাংশ পরিমানও। আদৌ কখনো ছিল কি-না কে জানে? অথচ সে যদি কালরাত স্বচক্ষে সত্যের দর্শন না করত, প্রতিবারের মত অনায়াসে নয়নের কথা বিশ্বাস করে তাকে নিজের বাহুবন্ধনে আবদ্ধ করে নিত। আবেগে ভেসে ভালোবাসি বলে উঠত। কথাটা ভেবেই প্রাণের ঠোঁটের কোণ ঘেঁষে ফুটে উঠলো শ্লেষের হাসি। নয়ন সেই হাসি খেয়াল করলো না তেমন নিজের মত পুনরায় বলে উঠল, “একবার জানালে কি খুব ক্ষতি হতো তুমি আসছ? আমি নিজে গিয়ে তোমায় নিয়ে আসতাম। কেন জানালে না আমায় জান? আর কথা বলছো না কেন তুমি? কোন কারণে কি রাগ করে আছো আমার উপর? বল!”
একপলক নয়নের মুঠোয় নিজের হাতটির দিকে তাকিয়ে, ছাড়িয়ে নিল সে। এসব ন্যাকামো আর নিতে পারছে না সে, ইচ্ছে তো করছে এখনই নয়নের গালে চারটে চ’ড় লাগিয়ে তাকে গ’লা ধা’ক্কা দিয়ে নিজের বাড়ি থেকে বের করে দিতে। কিন্তু এসব করে যে কোন বিশেষ লাভ হবে না তা প্রাণ জানে। বরং অল্পতে বেঁচে যাবে। সে তো নয়নের কঠো’রতম শা’স্তি চায়, দেখতে চায় তাকে সর্বক্ষণ ম’র’ণযন্ত্র’ণায় কাতরাতে। এত সহজে তো ছাড় দিবে না সে তাকে। প্রাণ নিজেকে যথাসাধ্য চেষ্টা করে শান্ত করার। শোয়া থেকে উঠে বসে ঠোঁটের কোণে কৃত্রিম হাসি ঝুলিয়ে বলে, “তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলাম তাই গতকাল সকালে রওনা দিয়েছিলাম ভার্জিনিয়া থেকে৷ ভেবেছিলাম গভীর রাতে এসে তোমাকে চমকে দিব বাট মাঝ রাস্তায় ট্যাক্সির এ’ক্সি’ডে’ন্ট হয়ে যাওয়ায় সেটা আর সম্ভব হলো না।”
কথাটা শুনে নয়ন কিছুটা ঘাবড়ে গেল ঠিকই কিন্তু পর মুহূর্তে নিজেকে সামলে আবেগমিশ্রিত কন্ঠে বলতে শুরু করে, “কি যে কর না তুমি। কে বলেছে আমায় এত ভালোবাসতে? এতটা পাগলামি কেউ করে? এখন হলো তো এ’ক্সি’ডেন্ট। নেক্সট টাইম এমন পাগলামি করলে খবর আছে তোমার। আমার কাছে তুমি এবং তোমার ভালোবাসা সবচেয়ে বেশি মূল্যবান। আর কিছু না। তোমার উপর কোন আ’ঘা’ত আমি সহ্য করতে পারবো না প্রাণ।”
কথাটা বলে নয়ন প্রাণের সান্নিধ্যে এসে তাকে নিজের বাহুদ্বয়ে আবদ্ধ করতে চাইলে প্রাণ কিছুটা সরে আসে। প্রাণের এমন কান্ডে নয়ন ভ্রু কুঁটি একত্রিত করে তাকায়। দৃষ্টিতে স্পষ্ট কৌতূহল৷ প্রাণ ধীর কন্ঠে বলে, “সারা শরীরে প্রচন্ড ব্য’থা, তাই।”
নয়ন কথার বিপরীতে কিছু বলার পূর্বেই পিছন থেকে জেসিকার কণ্ঠ ভেসে এলো, “আরেহ এসব কিভাবে হলো? তুই ঠিক আছিস তো প্রাণ?”
কথাটা বলেই জেসিকা কিছুটা অস্থির ভঙ্গিতে এগিয়ে এলো। নয়নের বিপরীত পাশে বসে একপলক নয়নের দিকে তাকিয়ে পুনরায় প্রাণের দিকে মনোযোগ দিল, “কি অবস্থা করেছিস নিজের, ইশশ!”
প্রাণ জেসিকার পাণে শ্লেষাত্মক চাহনি তাক করে বলে, “তুই এত সকালে এখানে? মানে আমার ব্যাপারে জানলি কিভাবে?”
জেসিকা স্মিথ কন্ঠে বলে, “নয়নের কাছ থেকে জেনেছিলাম তুই বাংলাদেশে চলে এসেছিস তাই দেখা করতে এসেছিলাম। আর এখানে এসে দেখলাম তোর এই অবস্থা।”
প্রাণ ইচ্ছে করেই বিষয়টা ঘাটতে চাইলো না তাই ছোট করে বলল, “অহ আচ্ছা।”
জেসিকা নিজের মুখ খোলার পূর্বেই আকস্মিক নয়ন বলে উঠলো, “আমি জানি তোমরা দু’জন কত ক্লোস তাই আগে ভাগে আমি ওকে জানিয়ে দিয়েছিলাম।”
প্রাণ আড়চোখে একবার জেসিকার দিকে তাকিয়ে নয়নের দিকে তাকিয়ে বলল, ” ভালো করেছ।”
জেসিকা এবার উদগ্রীব হয়ে বলে, “এখন বল এসব কিভাবে হলো?”
প্রাণ নয়নকে যেই ঘটনা বলেছিল ঠিক সেটাই পুনরাবৃত্তি করে জেসিকাকে বলল। দুইজনের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ কথা চলার পর প্রাণ বলে উঠে, “আ.. জেসিকা একটু আশামাকে ডেকে দে না। ওয়াশরুম যাব আমি।”
প্রাণের কথা শুনে পাশ থেকে নয়ন বলে উঠে, “আশামাকে কেন ডাকতে হবে? আমি তোমায় ওয়াশরুম নিয়ে যাচ্ছি।”
প্রাণ নাকচ করে বলল, “খামাখা এত কষ্ট করার দরকার নেই। নিজের শ্রম,শক্তি বাঁচাতে শিখো, পরবর্তীতে কাজে আসবে। এখন আশামাকে ডেকে দাও, সে নিয়ে যাবে নে।”
নয়ন সম্পূর্ণ কথা অগ্রাহ্য করে ধমকের সুরে বলে, “বেশি কথা বল তুমি। বলছি তো আমার সাথে যেতে।”
প্রাণ অমিনেষ দৃষ্টিতে তাকালো, নয়নে এমন আচরণ আর অভিব্যক্তি দেখে যে কেউ নিঃসন্দেহে বলে উঠবে, প্রাণকে সে চোখে হারায়। প্রতি মুহূর্ত তার চিন্তায় কাটায়। অথচ এই কথায় সত্যতা নেই বিন্দুমাত্র৷ সবটাই নিপুন অভিনয়, এটা এখন প্রাণের চেয়ে ভালো কে জানে? তবে এই মিথ্যের খাতায় এখন সেও নাম লেখাতে প্রস্তুত, দেখতে চায় সে জল কতটুকু গড়ায়।
নয়ন দ্বিতীয় বার একই কথা বলতে প্রাণ আর কথা বাড়ায় না, নয়নের হাত ধরেই এগিয়ে গেল ওয়াশরুমের দিকে। প্রাণ ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে আসতে পুনরায় ওকে ধরে বিছানায় বসিয়ে দিল। এর মাঝে আশা বেগম এসে সবাইকে নাস্তার কথা বললে নয়ন ব্যস্ত ভঙ্গিতে বলে, “প্রোডিউসার ফোন করেছিল আশামা, ঘন্টাখানেকের মাঝে একটা শুটিং আছে জানিয়েছে। আমার এখনই বেরুতে হবে, অন্য আরেকদিন তোমার হাতের নাস্তা খাব নে। আজ আসি!”
নয়নের কথা শেষ হতে না হতেই জেসিকা বলে উঠে, “আমিও এখন বেরুব আন্টি। এগারোটায় একটা মেডেলিং শো আছে আমার।”
প্রাণ নিষ্পলক দুইজনের দিকে তাকিয়ে থাকলো, বললো না কিছু। জেসিকা নয়নের দিকে তাকিয়ে বলে, “নয়ন তুমি কোনদিকে যাবে?”
“উত্তরার দিকে, কেন?”
জেসিকা মৃদুস্বরে বলে, ” তাহলে আমাকে একটু কষ্ট করে বনানীতে নামিয়ে যেতে পারবে? আমার গাড়িতে কিছু প্রবলেম দেখা দিচ্ছিল বলে এখানে আসার পর সেটা ড্রাইভারকে দিয়ে সার্ভিসিং-এ পাঠিয়ে দিয়েছি।”
নয়ন নিজের পোশাক একবার ঝেড়ে নিয়ে বলে, “আচ্ছা চল, আমি নামিয়ে দিব নে।”
জেসিকা এবার প্রাণের দিকে তাকিয়ে বলে, “আমি তোর উডবির সাথে গেলে তোর আবার কোন সমস্যা হবে না তো?”
প্রাণ কিয়ৎপরিমাণ হেসে বলে, “আজব তো! তুই তো আর আমার ভালোবাসায় ভাগ বসাচ্ছিস না, জাস্ট হ্যাল্প চাইছিস৷ তাতে সমস্যা কেন হবে?”
কথাটা শুনে নয়ন বিষম খেয়ে উঠে কিছুটা। টপিক চেঞ্জ করার জন্য গলাটা ঝেড়ে বলে উঠে, “প্রাণ আমি এখন আসি, রাতে যদি ফ্রি হতে পারি তাহলে আসব আমি।”
প্রাণ কোন দ্বিরুক্তি করলো না, হালকা মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো। এদিকে জেসিকা কিছুটা ফুঁসে উঠলেও সেটা চেপে গেল। ঠোঁটে কৃত্রিম হাসি ঝুলিয়ে প্রাণ আর আশা বেগমের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে গেল নয়নের পিছে পিছে। আর তাদের যাওয়ার পাণেই প্রাণ তাকিয়ে রইলো নিষ্পলক। আনমনে বিরবির করে উঠলো, “কি নিখুঁত,নিদারুণ অভিনয়! প্রশংসা না করে থাকতেই পারলাম না। তবে চিন্তা নেই খালি মুখে শুধু প্রশংসা করে যাব না, সময় হলে উপহারও দিয়ে যাব।”
কথাগুলো আওড়ানোর মাঝে আঁখিপল্লব হতে টুপ করে জড়ে পড়লো দু’ফোটা অশ্রুকণা। আশা বেগম প্রাণের কাছে এসে খুব আদুরে হাতে অশ্রুটুকু মুছে দিয়ে বললেন, “মূল্যবান সম্পদগুলো এভাবে ঠুনকো বস্তুর উপর অপচয় করতে নেই। তারা কখনো মর্যাদা দিতে জানে না।”
কথাটা শুনে প্রাণ দৃষ্টি তুলে আশা বেগমের দিকে স্থির করল, একটু আগে যখন নয়ন আর জেসিকা ছিল তখন সে খেয়াল করে আশা বেগমের ক্ষো’ভপূর্ণ,ঘৃ’ণিত চাহনি। অভিব্যক্তিতে ছিল রা’গা’ন্বি’তভাব স্পষ্ট। তবে সেটা প্রকাশ্যে আসতে দেয়নি সে, খুব সুক্ষ্মভাবে তাদের সামনে নিজেকে সংযত করে দাঁড়িয়ে ছিল সে। তাকে দেখেই ভে’ঙে গুড়িয়ে যাওয়া মানবীটি নতুন দমে সাহস সঞ্চার করতে পেরেছিল প্রতারকদের সামনে টিকে থাকার। নিজের মনোবল মজবুত করার। আজ এই মানুষটি পাশে না থাকলে বোধহয় মিনিটেই চিত্তের ন্যায় চূ’র্ণবি’চূ’র্ণ হয়ে যেত তাদের সম্মুখে, হেরে যেত খুব বিশ্রীভাবে৷ প্রাণ দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বলে, “খুব শীঘ্রই অধমের পতন হবে আশামা। সবকিছুর হিসাব নিয়ে ছাড়ব আমি, সবকিছুর!”
আশা বেগম প্রাণের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলেন, “সব হবে, চিন্তা করিস না। অন্যায় করে কেউ কি পাড় পেয়েছে আজ অব্দি? পাই নি। তাই আপাতত এই বিষয় রাখ, আমি খাবার আনছি খেয়ে নে।”
প্রাণ নাকচ করে বলে, “খেতে ইচ্ছে করছে না আশামা।”
আশা বেগম রো’ষা’নল দৃষ্টিতে তাকিয়ে ক’ঠো’র কন্ঠে বললেন, “কোন কথা না, নাস্তা আনছি আমি, খায়িয়ে দিব। কোন কথা না।”
কথাটা বলেই আশা বেগম রুম থেকে বেড়িয়ে গেলেন। মিনিট কয়েক পরই প্লেটে নাস্তা সাজিয়ে নিয়ে আসলেন প্রাণের জন্য। অতঃপর খুব যত্নে সম্পূর্ণ খাবারটুকু খায়িয়ে দিলেন প্রাণকে। খাওয়া শেষে বললেন, “বড় সাহেব ফোন করেছিলেন, তোর সাথে কথা বলতে চাইছিলেন।”
প্রাণের ম্রিয়মাণ কন্ঠ, “হঠাৎ বাবার মেয়ের কথা মনে পড়লো কি করে? বিশেষ কিছু আছে নাকি সামনে?এছাড়া তো তার আমার কথা মনে পড়ার কথা না।”
“আমাকে বলেনি কিছু৷ তুই একবার সময় করে ফোন দিয়ে নিস।”
প্রাণ কোন প্রত্যুত্তর করল না, আনমনে জানালার বাহিরে তাকিয়ে নীলাভ আকাশের সমান্তরালে মিশে যাওয়া সবুজ পাতার আঁকেবাঁকে কিছু খুঁজে বেড়ালো। আশা বেগম দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে একটা ঔষধ প্রাণের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলে, “খেয়ে নে।”
প্রাণ এবার বিরক্তিতে মুখ কুঁচকে বলে, “আবার কেন?”
আশা বেগমের সোজাসাপটা জবাব, “আমি বলেছি তাই।”
আশা বেগমের এমন কথায় প্রাণ এবার দ্বিরুক্তি করতে পারলো না, চুপচাপ খেয়ে নিল ঔষধটা। তা দেখে আশা বেগম স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন।
___
গাড়ির ভিতরকার পরিবেশ বেশ রমরমে। জেসিকা মোবাইলে ট্রেন্ডি কিছু পাশ্চাত্য সংগীত ছেড়ে আনমনে গুনগুন করেই চলেছে। নয়ন সেটা দেখে কিছুটা বিরক্ত নিয়ে বলল, “তোমাকে এখন আসতে নিষেধ করেছিলাম না আমি? তাও কেন আসলে?”
নয়নের কথা শুনে জেসিকা গান বন্ধ করে দিল। কিছুটা ন্যাকা সুরে বললো, “তুমি জানো আমার ভালো লাগে না প্রাণের সাথে তুমি সময় কাটাও। ইনসিকিউরড ফিল হয় আমার, সহ্য করতে পারি না আমি। রেস্টলেস হয়ে পড়ি। মনে হয় ও তোমাকে আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিবে। তোমাকে আমি চিরদিনের জন্য হারিয়ে ফেলব। তাই আজও নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি আমি।”
“কিন্তু বুঝার চেষ্টা কর এমন করলে প্রাণের সন্দেহ হলে হতেও পারে। এমনেও একটুর জন্য বেঁচে গিয়েছি আমরা। ওর কাছে আমার বাসার চাবি ছিল বুঝতে পারছো? আর তুমি আমি কিন্তু কাল আমার বাসাতেই ছিলাম, বায় এনি চান্স যদি প্রাণ আমার বাসায় চলে আসতো বুঝতে পারছো কি হতো? সব শেষ হয়ে যেত। সব!”
জেসিকা নয়নের বুকে মাথা রেখে বলে, “কিন্তু কিছু হয়নি তো তাই না? সো চিল। আর এমনেও প্রাণের এ’ক্সি’ডে’ন্টে হয়ে ভালোই হয়েছে। সি ডিজার্ভস ইট।”
নয়ন কিছুটা দ্বিধা নিয়ে বলল, “তবুও! আমার কেন জানি লাগলো, প্রাণ আজ কেমন জানি একটু অন্যরকম আচরণ করছিল, তোমার কি এমন লাগেনি?”
জেসিকা আক্রোশ ভরা কন্ঠে বলে, “ওর কথা বলা বন্ধ করবে তুমি? সবসময় প্রাণ,প্রাণ শুনতে ভালো লাগে না আমার। অসহ্য! আর ও তোমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নাকি আমি?”
নয়ন নিজের কথাগুলো সামলে নিয়ে বলে, “অবশ্যই তুমি। রাগ করে জান, ওর নাম আমি আর নিচ্ছি না।”
জেসিকা গাল ফুলিয়ে বলে, “হুহ!”
নয়ন বেশ কিছুক্ষণ এদিকে -সেদিকের কথা বলে জেসিকার মন ভালো করতে। মন ভালো হওয়ামাত্র জেসিকা বলে উঠে, “বেবি আমার না প্রচন্ড খুদা লেগেছে, চল না কোথাও গিয়ে ব্রেকফাস্টটা করে নি।”
নয়ন হেসে বলে, “এজ ইউর উইশ মাই হাইনেস।”
#চলবে….
[কপি করা সম্পূর্ণরূপে নিষেধ।]