?প্রথম ভালোবাসার অনুভূতি?
লেখিকাঃ?হ্যাপী?
পার্টঃ০৫
মা তুমি
কেনো আমি আসায় কী তোর খুব সমস্যা হলো,,
না মা এইসব কী বলছো(শাহীন)
একদম চুপ আমি তোর কাছে এটা আশা করি নি,,
আম্মুর চিৎকার শুনে আমি আর আব্বু ছুটে ছাদে আসি ভাইয়া আর ইমু দুজনেই দেখে আমি বুঝে গেছি মার রাগ হবার কারন,,, মা আসলে তুমি যা ভাবছো তা না ভাইয়া আর ইমু আসলে(আমি)
চুপ তুই আমাকে বুঝাবি আমি কিছু বুঝি না,,
আরে যা হবার তা হয়ে গেছে এইবার রুমে আসো মাথা ঠান্ডা করে যা বলার বলবে(বাবা)
না যা বলার এখানেই বলবো ইমু তোমার বাবা মা কবে দেশে আসবে
আন্টও এই সপ্তাহের মধ্যেই আসবে,(অনেকটা ভয়ে)
মা এই বাসার ব্যপার এই বাসায় শেষ করলে হয় না (আমি)
না ইমুর বাবা মার সাথে কথা না বলে আমি আমার বাড়ির বউকে কীভাবে আনবো আমার বাসায় বলেই জোরে হাসতে লাগলো
আমরা সবাই অবাক
চলো নিচে যাই,,বলেই বাবা মা নিচে চলে গেলো
আমি তো ভয় পেয়ে গেছিলাম যাইহোক এবার তোমাদের লাইন ক্লিয়ার,, অল দা বেস্ট মাই সুইট ভাবি,, আমি চলে এলাম
ইমু লজ্জা পেয়ে এখনো মাথা নিচু করে রেখেছে,,
এইবার মাথা তুলো সবাই তো চলে গেলো বলে ইমুকে খুব ভালো করে জরিয়ে ধরছে
ইমু ও শাহীন কে জিরিয়ে ধরেছে,,খুব ভালোবাসি পাগলি তোরে
আমিও খুব ভালোবাসি
হ্যাপীর কিছুতেই ঘুম আসছে না,,এই দুইবছর ও খুব ভালো করে বুঝতে পেরেছে যে ও অচেনা মানুষকে খুব বেশি ভালোবেসে ফেলেছে কিন্তু কতদিন যাবৎ কল দিচ্ছে বাট ফোন অফ ঐ রাতের ব্যবহারের জন্য সরি বলে কয়েকটা এসএমএস করে দিয়েছে,,,?প্রথম ভালোবাসার অনুভূতি ?বুঝতে মনে খুব বেশি লেট হয়ে গেছে,, তাই হারিয়ে ফেললাম এমনকি তার নামটা ও জানা নেই
দিনগুলো ভালোই কেটে গেলো ইমু আর শাহীন ভালোবাসা আর খুনশুটিতে,,, এমন একদিন নেই যে হ্যাপী অচেনা মানুষের ফোনে কল দেয় নি,, ভালোবাসাটা মনে হয় দিন দিন বেড়ে চলছে এর মধ্যে ওদের রেজাল্ট আউট হয়েছে দুজনেই ভালো রেজাল্ট করছে জিপিএ ৫,,
হঠাৎ একদিন আমি আর মা বসে আছি৷, বাসার কলিং বেল বাজলো
এমন টাইমে কে এসেছে দেখতো হ্যাপী
দেখছি,,,,বাবা ভাইয়া তোমরা এতো তারাতাড়ি কোনো সমস্যা
আগে ভিতরে আসতে দে(ভাইয়া) এসেই দুজনেই কিছুক্ষন চুপ করে বসে আছে কেউ কোনো কথা বলছে না
কী রে শাহীন চুপ করে আছিস কেন কি হয়েছে
আসলে মা,,,
শাহীন যা বলার আমি বলছি,,, আমার সব শেষ সালেহা,,বেশি লোভ করতে গিয়ে আমি সব হারালাম,,কাল আমার সব কিছু নিলামে উঠবে,, বাবার কথা শুনে আমি আর মা বসে পড়লাম মাথায় কিছুই কাজ করছে না,,বাবা কীভাবে হলো এইসব কাঁপা কাঁপা গলায় বললাম
আমি যেই ডিল টা নিছিলাম ওটা অনেক টাকার ব্যবসা ছিলো,,কিন্তু সব লছ হয়ে গেলো আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম,, বলেই বাবা কান্না শুরু করে দিলো আমাদের কারো মুখে কোনো কথা নাই,,সবাই যেন স্তদ্ধ হয়ে গেছি,,হঠাৎ বাবা অজ্ঞান হয়ে গেলো আমি চিৎকার দিয়ে বাবা কী হয়েছে তোমার,,ভাইয়া বাবা কোনো কথা বলছে না কেনো,,মা আমি বাবার পাশে বসে কান্না করেই যাচ্ছি,,
ভাইয়া বাবাকে হসপিটালের নেয়ার ব্যবস্থা করছে
কিছুক্ষণের মধ্যে আমরা বাবাকে হসপিটালের নিয়ে আসলাম বাবাকে এখন আইসিও তে নেওয়া হয়েছে,,,ইমু বাবার কথা শুনে হাসপাতালে এসেছে, আমারা সবাই বাহিরে ওয়েট করছি মা আমি তো কান্না করেই যাচ্ছি,,,
ডাক্তার বের হলো,, বাবা কেমন আছে ডাক্তার বাবার কিছু হয়নি তো(শাহীন)
আপনার বাবার অবস্থা খুব খরাপ আপনাদের সবাইকে একবার দেখা করতে যেতে বলেছে, আমার হাতে আর কিছু করার নেই, আপনার বাবা হার্টঅ্যাটাক করেছে আর ও হে ইমু নামের কেউ আছে তাকে ও যেতে বলেছে
আমরা সবাই আস্তে আস্তে কেবিনে ঢুকলাম কারো পা যেনো চলছে না,,মা বাবার পাশে বসেছে আমি ভাইয়া আর ইমু পাশে দাঁড়িয়ে আছি
আমি তোমাদের কিছু কথা বলতে চাই
বাবা এখন থাক না পরে বলো আগে তুমি সুস্থ হও(আমি)
না রে মা আমার যে বেশি টাইম নাই হাতে যা বলছি শুন,,,
মা কান্না যেনো আরো বেশি বেরে গেছে
সালেহা আমি তোমাকে ভালোবসে বিয়ে করেছি তারপর থেকে তোমার বাবার বাড়ির কেউ তেমার কোনো খবর নেই নাই তুমিও আমার কাছেই ছিলে কখনো বুঝতে দাও নি যে তোমার কষ্ট হয়,,আর দেখো এখন আমিও তোমাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছি,, তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও,,,
প্লিজ তুমি চুপ করো,,আমার কোনো কষ্ট নাই আর তোমার কিছু হবে না বলে কান্না করেই যাচ্ছে (মা)
শাহীন বাবা আমি তোর জন্য ভালো করতে গিয়ে তোকে নিঃস্ব করে দিয়ে গেলাম,, তোর উপর তোর বোন আর মার দায়িত্ব দিয়ে গেলাম,,আর পারলে তোর এই অপরাধী বাবাকে ক্ষমা করে দিস।
বাবা তুৃমি কোনো অপরাধ করো নি যা হবার হয়ে গেছে আমরা আবার নতুন করে সব শুরু করবো আগে তুমি সুস্থ হও
হ্যাপী আমি তোকে ডাক্তার হবার স্বপ্ন দেখিয়ে স্বপ্ন পূরণ করতে দিতে পারলাম না,,,শাহীন এখন তোদের চালাতেই কষ্ট হয়ে যাবে কী করে তোকে ডাক্তারি পড়ার খরচ চালাবে বল
বাবা আমি কিছু চায় না,,আমি শুধু তোমাকে চায়,,আর তুমি এখন অসুস্থ,, ডাক্তার তোমাকে কম কথা বলছে, তুমি কথা বলো না,,
নারে মা আমার হাতে বেশি টাইম নাই আমাকে বলতে দে,,ইমু মা আমার কাছে আসবি
আংকেল আপনি একটু শান্ত হোন সব ঠিক হয়ে যাবে
নারে মা কিছু ঠিক হবে না মা আমার ছেলের এখন কিছু নেই তুই ওকে ছেড়ে চলে যাবি না তো
কী বলছেন আংকেল এইসব
আমি আমার ছেলে কে চিনি ও এই অবস্থায় কখনো চাইবে না তুই ওর পাশে থেকে তুই নিজে কষ্ট পাস,,ও তোরে খুব বেশি ভালোবাসেরে মা,,তুই আমার ছেলের হাতটা কখনো ছাড়বি না কথা দে
আমি কথা দিলাম আমি সব সময় শাহীনের পাশে থাকবো
সালেহা সবাইকে নিয়ে সাবধানে থাকবে বলেই বাবা চোখ দুটো বন্ধ করে নিলো,,,কয়েকঘন্টার মধ্যে সব কেমন শেষ হয়ে গেলো মাথার উপর থেকে বাবা নামক ছায়াটাই হারিয়ে ফেললাম,, মা সাথে সাথে গেন হারিয়ে ফেলেছে,,মাকে ও হসপিটালে একটা কেবিনে সেলাইন দিয়ে রাখা হয়েছে,, বাবাকে কবর দিয়ে ভাইয়া এসে বসে আছে কারো মুখে কোনো কথা নেই, আমি ভাইয়ার পাশে বসে ভাইয়াকে জরিয়ে ধরে কান্না করেই যাচ্ছি সাথে ভাইয়া ও,,আমাদের পাশে ইমু ভাইয়ার কাঁধে হাত রেখে কান্না করে যাচ্ছে,,,,
পরের দিন সকালে,,,,