প্রতারক part 24

0
1520

প্রতারক part 24
#Roja_islam

পূর্ণি ইচ্ছা মতো অর্ণিকের চুল টানছে। বেচারা অর্ণিক চিৎকার করতেও পারছে না লজ্জায় যে কোনো মেয়ে তার চুল টানছে তাই অর্ণিক ছুটাছুটি করছে। বেচারা বৌ দেখতে এসে পাত্রীর থেকে চুল টান খাচ্ছে বেচারার তো বেহাল অবস্থা!!
.
কিছুক্ষণ আগের ঘটনা। পূর্ণিকে অর্ণিকের সামনে আনতে বলায় রাহুল চিৎকার করে উঠে।
.
— মম আপনি কিন্তু আপনার সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছেন। চলে যান এখান থেকে এসব ভালো লাগছেনা আমার।
— রাহুলের মা খেকিয়ে উঠে। এই তোমারল ভদ্র বাবার শিক্ষা?? আমি তোমার সৎ মা আমার সাথে এসব করাই তোমাকে শিখিয়েছে তোমার বাবা ?? কেনো তোমার বাবা বলেনি আমার কথা শুনতে?? আমি তোমায় বলছি পূর্ণিকে ডাকো। পূর্ণিকে আমি ঐ থার্ডক্লাস ছেলের সাথে বিয়ে দিবোনা। পূর্ণির জন্য অর্ণিক বেষ্ট লাখে এক ছেলে আমার। পূর্ণিকে পছন্দ ও করে। তোমার মতো অর্ণিক ও মেডিকেল এ পড়ছে। হ্যাঁ সেটা ঢাকা মেডিকেল থেকে। তোমার মতো বিদেশেনা। তাও কত ভালো কথা তোমার মধ্যে আর অর্ণিকের মধ্যে পার্থক্য নেই। কিন্তু ঐ হিরার কি আছে……..!
— রাহুলের জেনো কেউ মাথায়, চোখে, মুখে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে যা ধাউ ধাউ করে জ্বলছে।হিরার ব্যাপারে বলার পড় আর চুপ থাকতে পারেনা সে চিৎকার করে উঠে। হ্যাঁ বাবা বলেছে আপনার কথা শুনতে কিন্তু এটা বলেনি। আপনার লোভী চিন্তা ভাবনা পূরণ করতে। আপনি এবং আমি নিজেও জানি অর্ণিকের সাথে কেনো বিয়ে দিতে চাইছেন আপনি। আর একটা কথা ঠিক বলেন নি আমার আর অর্ণিকের মধ্যে পার্থক্য আছে। অর্ণিক ডক্টর হতে চায় টাকা ইনকাম করার জন্য।আর আমি ডক্টর হতে চাই মানুষের সেবা করার জন্য। এটাই পার্থক্য আমাদের মধ্যে। আর সেই পার্থক্য থেকে বলছি। হিরা আর যাই হোক লোভী না!!
— রাহুলের এতো কথা শুনেও দমে যাইনি রাহুলের মা শায়লা চৌধুরী। তিনিও দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলেন। আমি এতো কথা শুনতে চাইনা তুমি পূর্ণিকে ডাকো। আর শোনো ছেলে টাকাই সব তোমার কথায় পেট ভরবেনা বুঝেছো!!
— রাহুলের রাগে হাত পা থরথর কাপছে সে এখানে আর ১ সেকেন্ড থাকলে সব ভস্ম করে দিবে।আর এই মহিলা যে পূর্ণিকে না দেখে কোথাও যাবেনা তা বুঝতে বাকি নেই তাই রাহুল চিৎকার করে পূর্ণিকে ডাকে।
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন


— পূর্ণিইইইইইইইই… পূর্ণি??
.
পূর্ণি আর হীর গল্প করছিলো রাহুল চলে যাওয়ার পড়।পূর্ণির রুম থেকে ড্রইং রুম দূরে এক্টু তাই এতোক্ষণ দুজন কিছু শুনেনি। কিন্তু রাহুলের গলা ফাটানো ডাক কিছুটা আসে পূর্ণির রুমে দুজনেই রাহুলের চিৎকার শুনে চুপ মেরে যায়। হীর বলে উঠে কিছুক্ষণ চুপ থেকে।
.
— রাহুল ডাকছে মনে হয় ভাইয়া এসেছে চল তোকে নিয়ে যাই!!
— হ্যাঁ কিন্তু ভাইয়ার ভয়েসে বুঝা যাচ্ছে রেগে আছে!! কিন্তু কেনো??
— হীর দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো। রাহুল হয় তো ভাইয়াকে মেনে নিতে পারেনি। তাই ভাইকে দেখে রেগে গেছে। এখন চল না হলে রাহুল আরো রেগে যাবে!!
— অন্যমনষ্ক হয়ে পূর্ণি শুধু “হু” বললো।
.
পূর্ণি বুঝতে পারছে বাইরে অন্যকিছু হয়েছে। কারণ হিরাকে তার ভাই কতটা পছন্দ করে সেটা পূর্ণি বুঝে। হিরাকে রাহুল পছন্দনা করলে পূর্ণি হিরার জন্য মরতে বসেছিলো তাও হিরার সাথে বিয়ে ঠিক করতোনা রাহুল। তাতেই বুঝা যায় রাহুল হিরাকে অপছন্দ করেনা বরং পছন্দই করে। সেটা হীর না বুঝলেও পূর্ণি বুঝেছে।
.
হীর পূর্ণি কে নিয়ে ড্রইং রুমে আসতেই দু জন থমকে থায়। এখানের পরিস্থিতি থমথমে। হীরের রাহুলের মাকে দেখে অবাক এর সাথে ভয়ে ঢোগ গিলে। আর পূর্ণি অর্ণিক কে দেখে অবাক এর সাথে বিরক্ত হয়। পূর্ণি ড্রইং রুমে আসতে অর্ণকি বিস্রী ভাবে হাসছে তার দিকে তাকিয়ে। তা দেখে পূর্ণির গাঁ জ্বালা করছে। পূর্ণি রেগে তার ভাইয়ের দিকে তাকায়। রাহুল মাথা নিচু করে সোফায় বসে রাগে ফুসছে।ভাইকে এতো রাগতে দেখে আর কিছু বলে না পূর্ণি।পড়ে যদি রেগে উল্টাপাল্টা করে বসে রাহুল তো…….!
.
রাহুলের মা পূর্ণিকে দেখে উঠে তার কাছে যায় আর হীরের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে। হীর তা দেখে মাথা নিচু করে ফেলে ভয়ে। শায়লা চৌধুরী পূর্ণিকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে।
.
— এই মেয়ে এখানে কি করছে পূর্ণি?? এই মেয়ের ভাই তো তোকে ফাঁসিয়েছেই।এখন এই মেয়েও কি তোর ভাইকেও এবাড়ী ফাঁসাতে আসে??
.
এই কথা শুনে হীরের চোখে পানি চলে আসে। তার বুঝতে পেরে পূর্ণি তার মার দিকে অগ্নিময় চোখে তাকায়।
.
— পূর্ণি রেগে বলে। কি বলতে এসেছেন এখানে সেটা বলুন?? এখানে কে এলো না এলো তাতে আপনার কি??
— ভালোই বেয়াদব হয়েছিস মার মতো দুজন।
— হ্যাঁ আমরা আমার মার বেয়াদব আর আপনি খুব ভদ্র তাই তো আপনার সন্তানি হয়নি!!
— রাহুলের মা এই কথা শুনে চেচিয়ে উঠে। পূর্ণি ইইইইই খুব বাড় বেড়েছিস??
.
পূর্ণি খুব রেগে আছে। হিরা কে ঐদিন তার সৎ মা শুনিয়েছে জেনে তাই পূর্ণি তার সৎ মাকে সহ্য করতে পারছে না।যাই নয় তাই বলে ফেলছে।কারণ এই কথার জন্যই পূর্ণি মরতে বসেছিলো এক্সিডেন্ট আর এক্টু গভীর হলে আজ পূর্ণি মারাই তো যেতো। তাই সব রাগ মার উপর ঝাড়ছে পূর্ণি। রাহুল বুঝতে পারছে পূর্ণি আরো বড় কোনো কথা বলে ফেলতে পারে তাই পূর্ণিকে চোখের ইশারায় চুপ থাকতে বলে। সে চায় না তার বা পূর্ণির ধারা কোনো বেয়াদবি হোক রাহুলের ইশারায়। পূর্ণি চুপ হয়ে যায়। আর পূর্ণিকে চুপ থাকতে দেখে রাহুলের মা বলে উঠে।
.
— আচ্ছা এখন এসব কথা বাদ।শায়লা কথা ঘুরিয়ে বলে। অর্ণিক যা পূর্ণির রুমে আলাদা করে কথা বলে দুজন দুজনকে বুঝে নে। পূর্ণি যা অর্ণিক কে নিয়ে তোর রুমে যা একদম অসভ্যতা দকরবিনা। এই সব থার্ডক্লাস মেয়ে দের সাথে থেকেই এসব শিখেছিস। হীর কে উদ্দেশ্য করে বলে কথা গুলো।
.
রাহুল এই কথা শুনে আর চুপ করে বসে থাকতে পারেনা। রেগে উঠে হীরের কাছে যায় হীর মাথা নিচু করে টলমল চোখে দাঁড়িয়ে আছে। রাহুল আর দেড়ি না করে হীর কে টানতে টানতে আবার ছাদে দিকে নিয়ে চলে যায়।
.
আর এদিকে পূর্ণি রাগে ফুসছে তার সৎমার দিকে তাকিয়ে।যিনি রাহুল আর হীরের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে রক্তচক্ষু নিয়ে। পূর্ণি আর সহ্য করতে না পেরে অর্ণিক এর দিকে তাকায়। অর্ণিক এখনো তার দিকে তাকিয়ে হেসে যাচ্ছে। পূর্ণিও অর্ণিকের দিকে তাকিয়ে কি জেনো ভেবে বাঁকা হাসে তারপর অর্ণিকে। উদ্দেশ্য করে বলে উঠে।
.
— কাম বেবি!! পার্সনালি কথা বলবে না আমার সাথে?? চলো রুমে চলো কাম!!
— অর্ণিক যেমন আকাশের চাঁদ হাতে পেলো। দাঁত বের করে হেসে বললো। আফকর্স চলো।
— ইয়াহ দিস ওয়ে কাম।
.
রাহুলের মা পূর্ণির কথায় ব্যবহার এ খুশী হয়ে পা ঝুলিয়ে সোফায় বসলেন টিভি দেখতে।তিনি মনে মনে খুশী অবশেষে তাহলে অর্ণিকের সাথেই বিয়ে দিতে পারবে পূর্ণির। কারণ আজ রাহুল ও তো উনাকে আটকাতে পারেনি। তাই উনি ভাবছে বিয়েটাও আটকাতে পারবেনা রাহুল। তিনি দিবেনি অর্ণিকের সাথে পূর্ণির বিয়ে হুহ ভেবেই ভেংচি কাটে রাহুলের মা শায়লা চৌধুরী!!
.
আর এদিকে পূর্ণি অর্ণিকে রুমে এনে সুন্দর করে হেসে তার বেডেই বসতে দেয়।তার পড় নিজেও বেডে উঠে অর্ণিকের পিছণ বসে আর খপ করে অর্ণিকের চুল টেনে ধরে। আর তখন থেকেই অর্ণিকের চুল টানছে পূর্ণি। আর মৃদু স্বরে ঝাড়তে লাগে অর্ণিকে।জেনো শায়লা চৌধুরীর কানে এই রুমের কথা না যায়। এদিকে পেছন থেকে চুলে এমন আক্রমনে কিছুই করতে পারছেনা অর্ণিক। পূর্ণি রেগে চুল কিছু ক্ষণ টেনে ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলে উঠে।
.
— বিয়ে করবি আমায়? হুহ জানোস আমি কে?? কি কি করতে পারি?? দেখ আজ কি করি তোর চুল এক্টাও রাখবোনা আমায় তো দূর কাউকেই তুই বিয়ে করতে পারবিনা।টাকলা বানাবো তোকে আজ আমি। বলেই সজোরে টান দেয় পূর্ণি অর্ণিকের চুল।
— অর্ণিক ছুটার চেস্টা বাট চিল্লাচ্ছে না লজ্জার ব্যাপার একটা মেয়ে তার চুল টানছে এভাবে অর্ণিক রেগে বলছে। ছাড়ো পূর্ণি। হোয়াট দ্যা ফ…..!!
— পূর্ণিকে আরো রেগে যায় অর্ণিকের এই কথা শুনে। কি বললি এই কি বললি শালা আর তোর চুল টেনে ছিঁড়ে আমি টেনিস বল খেলবো।
— অর্ণিক চেঁচিয়ে বলে। আরে পাগল নাকি তুমি??? চুল দিয়ে টেনিস বল!! ওহহহ আন্টি প্লিজ হেল্প। বাঁচাও পাগল মেয়ের হাত থেকে আমার চু্লল।
— হিহি এখন আন্টি বাঁচাও। বিয়ে করতে আসার আগে মনে ছিলোনা এসব। বল বাইরে গিয়ে কি বলবি তোর আন্টিকে??
— তুমি পাগল!! আহহ ছাড়ো।
— এইইইত চুপ আমি পাগল। বলে পূর্ণি আরো জড়ে টান দেয়।
— আহহহহহ ছাড়ো।
— তো বল কি বলবি??
— বলবো বলবো তোমায় বিয়ে করবোনা।
— এই তো শোনা বেবি। মাইরের ভয়ে ভূত পালায় আর চুল টানার ভয়ে বুঝি বিয়ে করার ভূত যাবেনা তাকি হয়??
— হ্যাঁ হ্যাঁ এখন ছাড়ো প্লিজ!!
— আচ্ছা ছাড়বো শোন ছেলে হয়েও বড় চুল রাখার জন্য যদিও দুইটা কানের নিচে দেওয়ার দরকার তাও আমার হেল্প হলো বলে। এই তোকে না কিন্তু একদম না তোর চুল কে অনেক ধন্যবাদ। নাও আউট!!!
.
এটা বলেই পূর্ণি ছেড়ে দেয় অর্ণিক কে। অর্ণিক আর দেড়ি করে না তার বড় চুল গুলায় হাত বুলাতে বুলাতে ড্রইং রুমে গিয়ে তার আন্টিকে সোফায় বসে থাকতে দেখে চেঁচিয়ে বলে উঠে।
.
— আন্টি আমি যাচ্ছি আমি এই মেয়েকে বিয়ে টিয়ে করবোনা। এই মেয়ে আমার মান সম্মান কিচ্ছু রাখেনি। তুমি কি যাবে আমার সাথে!! গেলে চলো নাহয় আমি একাই গেলাম।
— অর্ণিকের চিৎকারে শায়লা চৌধুরী হুবুজুবু হয়ে সোফা ত্যাগ করে এসে অর্ণিকের হাত চেপে ধরলো। বাবা বাবা বল আমায় কি হয়েছে রাগছিস কেনো?? তুই কি আমার এতোদিনের ইচ্ছা পূর্ণ করবিনা??
পূর্ণিকি কিছু করেছে??
— এই কথায় অর্ণিক রেগে নিজের মাথা হাত বুলাতে বুলাতে কড়া গলায় বললো। আহহহ আন্টি আমি এখন এসব শুনছি না তুমি যাবেনা কি চলো!!
.
শায়লা অর্ণিকের রাগ দেখে আর কিছু বলতে পারে না সুরসুর করে অর্ণিকের পিছন ছুটে। অর্ণিক রেগে বম হয়ে আছে। তার ভাবতেও অবাক লাগছে সে একটা মেয়ের কাছে এভাবে হেনস্ত হলো।রাগে তার এই শখ করে বড় করা চুল গুলা কেচ কেচ করে কেটে ফেলতে ইচ্ছে করছে। এই গুলার জন্যই তো পূর্ণি এমন করতে পারলো!! সে এখন লজ্জায় বলতেও পারছেনা শায়লা চৌধুরী কে পূর্ণি তার সাথে কি করেছে।ভেবেই অর্ণিক রেগে নিজের চুল এবার নিজেই টানে গাড়ীতে বসে বসে।
.
.
.
পূর্ণি তার রুমে হেসেই যাচ্ছে। এক নাগারে তার ভাবতেই খুশী লাগছে অর্ণিকের সাথে সে কি করলো। ব্যাটাকে আচ্ছা শাস্তি দিয়েছে অন্যের বৌ দেখতে আসার।পূর্ণি ভাবছে অর্ণিকের তাকে দেখার সাধ মিটে গেছে একদম। পূর্ণির হাসির মধ্যেই কেউ তাকে পেছন থেকে ঝাপ্টে ধরলো কোমর জড়িয়ে। পূর্ণি চিৎকার করতে যাবে পারলো না ব্যক্তি টি তার মুখ চেপে ধরেছে। পূর্নি শুধু ছুটাছুটি কর যাচ্ছে। আর কিছু বলার চেষ্টা করছে।
.
— উম্মম্ম, উম্ম, উম্ম!!
— শুসসসস চুপ!!
.
.
রাহুল দাঁড়িয়ে আছে রেলিং ঘেষে। হীর নিঃশব্দে কাঁদছে রাহুলের পাশেই রাহুল বুঝতে পারছে হীর কান্না করছে। কিন্তু কিছু বলতে পারছেনা আজ তার মার জন্যই… তো কাঁদছে হীর তাই রাহুল চুপ করে আছে। এভাবে অনেক ক্ষণ যাওয়ার পড় রাহুল চিৎকার করে উঠে।
.
— কাঁদছ কেনো?? কেউ এক্টু কিছু বললেই কাঁদতে হয়?? শোনো দুনিয়া মানুষ অনেক কিছুই বলবে বাট। তুমি কি তা তুমি নিজে তো জানো এটাই এনাফ। আর নিজের সেই জানা থেকে হয় তাদের উত্তর দাও না হয় চুপ থাকো কিন্তু সামান্য কথায় কাদার কি আছে??? চোখের পানি হিরের মতো দামী বুঝেছ!!তাই যার তার জন্য কাঁদতে নেই!!
— হীর নাক টেনে শ্বাস নিয়ে প্রশ্ন করে। আপনার মা রাজী নয়। তবে কেনো বিয়ে দিচ্ছেন পূর্ণির ভাইয়ার সাথে??
— রাহুল দীর্ঘশ্বাস ফেলে। হীরের হাত টেনে নিজের মুখোমুখি দাড় করায়।হীর ফ্যালফ্যাল করে ভেজা চোখে তাকিয়ে থাকে রাহুলের দিকে। রাহুল হীরের হাত ধরেই মাথা নিচু করে বলে উঠে। হীর মম আমার সৎমা। আমার আম্মু আমি যখন ক্লাস ফাইভ এ পড়ি তখনি মারা যায়। আর আমার সৎ মা আমার আম্মুর বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলো শায়লা আন্টি যিনি এখন আমার সৎমা। হ্যাঁ বাবা মার বেস্টিকেই বিয়ে করেছিলো। বাবা ভেবেছিলো যেহেতু আম্মুর বান্ধবী শায়লা আন্টি সেই দিক থেকে হলে বান্ধবীর ছেলে মেয়ে কে মানে আমাকে আর পূর্ণিকে ভালোবাসবে আগলে রাখবে। কিন্তু না উনি একজন বিবাহিত পুরুষকে বিয়ে করেছিলেন শুধু মাত্র টাকার জন্য। আন্টি অনেক কালো ছিলো তাই উনার বিয়ে হতো না। বাবা ভেবেছিলো এক কাজে দুই কাজ হবে। শায়লা আন্টিও সংসার পাবে আমরাও মা এর আদর কিন্তু। টার্স্ট মী হীর আমি পূর্ণি মা বাবা চলে যাওয়ার পড় কাউর আদর পাইনি বাকি সব কিছু পেলেও। আমি পড়াশোনার জন্য বাইরে যেতে চাইনি পূর্ণিকে ছেড়ে। কিন্তু বাবার সপ্ন ছিলো আমিও বাবার মতো বড় ডক্টর হবো। তাই যেতে হয়েছে। আর তারপর পূর্ণিকে খুব জ্বালিয়েছে উনি সব থেকেও পূর্ণিকে কষ্ট দিয়েছেন উনি এমনকি হাত ও উঠিয়েছে। আর দেখো এখন পূর্ণি কে তার ভালোবাসার মানুষ টার থেকেও দূর করতে চাইছে। কি চায় উনি আমি বুঝিনা হীর!!
— হীর অবাক হয়ে বললো। আপনার মা বাবা হঠাৎ কিভাবে মারা গিয়েছে??
— হঠাৎ না আম্মুর পূর্ণি হওয়ার পড় থেকে কি জেনো হয়েছিলো আমায় কেউ বলেনি ছোট ছিলাম তাই। আর বাবা শায়লা আন্টিকে বিয়ে করার পড় থেকে শায়লা আন্টি বাচ্চা হতোনা তাই প্রায় সময় বাবার সাথে ঝগড়া করতো। বাবা শান্ত মানুষ ছিলো কিন্তু একদিন সন্ধ্যেয় শায়লা আন্টি আবারো নানা কিছু বলে বাবাকে। ঐ সময় আমি এইটে পড়ি আমার সব মনে আছে। বাবা ঐ দিন চুপ থাকতে পাড়েনা। আসলে শায়লা আন্টি মা হতে পারবেনা সেটা বাবা জান্ত কিন্তু বাবা উনাকে বলতে চায়নি। কিন্তু ঐদিন বাবা চিৎকার করে সব বলে আর আন্টির উপর হাত ও উঠায়। ঐদিন ভোরেই বাবা আমায় ডাকে তার কাছে। পূর্ণিকে শায়লা আন্টিকে দেখে রাখতে বলে। আর এটাও বলে শায়লা আন্টিকে মা ভাবতে উনার কথা শুনতে। এসব বলেই বাবা শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে আমার চোখের সামনে। এই টুকু বলে থামে রাহুল তার চোখ ভিজে গেছে নিজেকে সামলে। আবার নিজেই বলতে শুরু করে। জানো হীর আমি শায়লা আন্টিকে মা ভাবতে চেস্টা করেছি বহুবার কিন্তু উনি সব সময় পূর্ণিকে আঘাত করতো।যখনি উনাকে আমি আপন ভাবতাম। আর বোনের কষ্ট দেখে আমার মন থেকে শুধু একটা কথা আসতো। সৎমা আপন মা হতে পারেনা বাবা। শুধু ভাবাই যায় আপন করা যায়না.. যায় না।
.
বলেই রাহুল মুখ ঘুরিয়ে নিঃশব্দ কেঁদে দেয়। হীরের কল্পনার বাইরে ছিলো রাহুলের মনেও বিন্দু পরিমাণ কষ্ট আছে। যে ছেলেটা তাকে এতো বুঝায়,এতো ভরসা দেয়, এতো রুঢ তার বিহেভিয়ার সেও মনে মনে কষ্ট পায় কিছু না কিছু নিয়ে। হীরে চোখ দিয়ে টপ টপ পানি পড়ছে রাহুল এই রূপ দেখে যা হীরে অজানা ছিলো রাহুলের মতো কেউ ও কাঁদতে পারে, তারো কষ্ট থাকতে পারে তা হীর ভাবেনি। রাহুল লুকাতে চেষ্টা করলেও হীর দেখেছে রাহুলের চোখে পানি। আসলে মানুষ মাত্রই ভুল, মানুষ মাত্রই কষ্ট,মানুষ মাত্রই সুখ,দুঃখ, আশা,ভরসা। কষ্ট নেই বুকের গহীনে এমন মানুষ পৃথিবীর বুকে নেই। কাউর কষ্ট একে অন্যের থেকে তুচ্ছ বা বড় এই যা। কিন্তু কষ্ট সবারি থাকে। রাহুলের মতো স্ট্রং পারসোন এর মানুষের মনেও থাকে!!
.
হীর এক্টু এগিয়ে গিয়ে রাহুল এর পিঠে হাত রাখতেই। রাহুল ঘুরে হীরকে জড়িয়ে ধরে। শান্ত স্বরে বলে উঠে।
–……….
.
.
.
চলবে।
[ বড় করে লিখার চেষ্টা করছি। যেহেতু তাড়াতাড়ি শেষ করতে চাই। তো রাতে লিখতে লিখত্র লেইট হয়ে যায়। কারণ ফোন নষ্ট আমার তাই কড়া এডিট করতে হয়। আর সময় ও লাগে প্রচুর। তাই রাত দিন লিখে আমি সকাল ঘুম থেকে উঠে গল্প পোষ্ট করবো এখন থেকে। তাই রাতে আর কেউ ওয়েট করবানা মেজেজ ও দেওয়া লাগবেনা ☺। ধন্যবাদ ?]
Roja Islam

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে