পাঁচ বছর রিলেশন আমার শিহাব এর সাথে।আর আজ আমি সেই ভালোবাসার মানুষ টার বিয়ে নিজ চোখে দেখতে যাচ্ছি। কিভাবে আমাকে ঠকিয়ে অন্য মেয়েকে বিয়ে করবে তা দেখতে চাই। বুকে পাথর রেখে ড্রেসিং এর সামনে গেলাম। আমি ওতো সাজি না। কিন্তু আজ ভাবছি ডাবোল মেকআপ করবো।চোখে ফোলা মুখে দুঃখনি ভাব লুকাতে হবে। কিন্তু ডাবল মেকআপ কেমনে করে তা তো আমি জানি না!! কষ্ট পেলাম। কিন্তু হাল ছাড়লাম না। নিজের বুদ্ধি দিয়ে নিজের মত সাজ কমপ্লিট করলাম। তারপর একটা লাল শাড়ী গায়ে জরালাম।শিহাবের পছন্দের রঙ লাল ছিলো।তাই লাল ই পড়লাম তার বিয়েতে। আয়নায় নিজেকে দেখছি না ডাবল মেকআপ এ খারাপ লাগছে না। মাকে মিথ্যে বললাম বান্ধবীর বিয়েতে যাচ্ছি। চিৎকার করে যদিও বলতে ইচ্ছে করলো। আম্মু যেই ছেলে তোমার মেয়ের মন ভেঙেছে তার বিয়েতে যাচ্ছি দোয়া করিও জেনো তার বিয়ে নিজ চোখে দেখতে পারি আর ঠকবাজ টাকে নতুন জীবনের শুভেচ্ছা দিতে পারি।কিন্তু কিছুই বলতে পারিনি চোখের পানি লুকাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম।
.
একটা রিকশা নিয়ে চলে গেলাম শিহাব দের কমিউনিটি সেন্টারে। যেখানে শিহাবের বিয়ে হচ্ছে। লোক জন ভিড় ঠেলে স্টেজের কাছটায় গেলাম। সবাই যে যার মতো ইনজয় করছে । শিহাব কে দেখতে পেলাম না কোথাও। না তার বৌ তাই আমি হাটাহাটি করছিলাম। আর কাল সকালের কথা ভাবছি।
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
কাল সকালেও শিহাব ভালো ছিলো আমার সাথে সব সময় এর মতো নরমাল। সকালে ঘুম থেকে উঠেও ওর কল পাই।ঘুম ঘুম কণ্ঠে হ্যালো বলতেই!
— গুডমর্নিং জান।
— গুডমর্নিং।
— কয়টা বাজে?
— উঠছি তো!
— ফার্স্ট ব্রেকফাস্ট করে কল দাও কথা বলবো।
— ওকে।
— কয় মিনিট লাগবে?
— শিহাব প্লিজ সব সময় তোমার দেওয়া টাইমে করতে পারিনা কাজ কমপ্লিট। তাই আজ ৩০ মিনিটস লাগবে।
— নো ওয়ে হীর!! ১০ মিনিটস এ কল দিবা আমি এতো ক্ষণ ওয়েট করতে পাড়বো না সরি।
— প্লিজ শিহাব …..
— বায়!! ১০ মিনিটস পড় কথা হচ্ছে!!
.
যাহহ কেটে দিলো। সব সময় আমাকে তার টাইম মেনে কাজ করতে হবে??? যেমন আমি ওর অফিসে জব করি হুহ। যাই হোক ১০ মিনিটে কল তো দিতেই হবে তা না হলে আবার প্রবলেম।বলবে আজ ঠিক টাইমে ফোন দিতে পারিসনি। কাল সকালে খেয়ে কল দিবি।তার আগে না তুইতুক্কারি শুরু করবে।তখন আরো প্রবলেম উফফ পারিনা আর।
.
সকাল পার হলো ভালো মতোই। বিকেলবেলা কল দিয়ে বললো। ক্যাফে আসতে। আমিও বাধ্য মেয়ের মতো গেলাম দেখা করতে। যদিও সব সময় লেইট লতিফ শিহাব কিন্তু। আজ তাড়াতাড়ি চলে এসেছে ক্যাফে পৌঁছে দেখি সে বসে আছে। খুশী হয়ে গেলাম। দৌড়ে গিয়ে তার সামনে বসলাম।
— আজ সূর্য কোন দিকে উঠেছে শিহাইব্বা??
–…….
— কি হলো?? চুপ করে আছো কেনো???
— উঁহু!!
— কিছু কি হয়েছে??
.
আমার এতো প্রশ্নে শিহাব ঠাশ করে বলে উঠলো।
— হীর!! আমি বিয়ে কড়ছি!!
— মানে??
— মানে কাল আমার বিয়ে!!
.
আমি কেনো জেনো কিছুই বলতে পাড়লাম না। ৫ বছরে শিহাবের সাথে আমার কুটিবার ঝগড়া হয়েছে কিন্তু এরকম কথা সে দুষ্টামি করেও বলেনি। আমার বুক টা ধুকধুক করছে। সারা শরীলে রক্ত টগবগ করছে ভয় টেনশন আর….। শিহার সব সময় খারাপ কাজ করুক আর ভালো। কিন্তু আমাকে জানিয়ে করবে। আজও কি তাই সত্যি শিহাব বিয়ে করবে??শিহাব মাথা নিচু করে আছে। আমিও ঠাস করে বললাম।
— দাওয়াত দিবে না!!
— হীর!!
.
এবার আমি কেঁদেই দিলাম।
— প্লিজ বলো মজা করছ। আর এই রকম বিদঘুটে মজার জন্য আমি তোমাকে কঠিন শাস্তি দিবো শিহাব। প্রমিস!!
.
আমার চোখ দিয়ে এবার বন্যা বইছে। শিহাব আমার কান্না দেখে চোখ মুখ শক্ত করে বললো।
— আমি মিথ্যে বলছিনা হীর সব সত্যি!! কাল আমার বিয়ে। দাওয়াত চাই তো কাল আমাদের কমিউনিটি সেন্টার এ চলে এসো দাওয়াত রইলো।
.
বলেই উঠে হন হন করে চলে গেলো শিহাব। আমি ওর এভাবে চলে যাওয়া মেনে নিতে পারিনি। পুরো ক্যাফে ভর্তি মানুষের সামনে হাউমাউ করে কেঁদে দিলাম। এই ক্যাফে তেই আমি শিহাব রোজ আসতাম দেখা করতে তাই পরিচিত হয়ে গেছে অনেকটা। ক্যাফেরি এক ভাইয়া আমার অবস্থা দেখে এগিয়ে আসলো। অনেক বুঝালো। আমি কান্না থামাতেই পারছিলাম না। কান্না করতে করতেই দৌড়ে বেরিয়ে যাই ক্যাফে থেকে। সারা রাস্তার মানুষ আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো। আমার সে দিকে বিন্দু পরিমাণ খেয়াল নেই আমি মরা কান্না করছি। মরেছেই তো আমার ভালোবাসা মরে গেছে আজ। সব শেষ করে দিয়েছে শিহাব। আমি এমন অবস্থায় কি করবো মাথায় না ধরায়। আমি আমার বেস্ট ফ্রেন্ড এর বাড়ী চলে যাই দরজা খুলতেই। নিতু কে জরিয়ে খুব কাদি কিন্তু নিতু অন্য সময় এর মতো আমাকে কেনো জেনো শান্তনা দিচ্ছে না ওর চোখে চরম বিরক্তির ছাপ। নিতুর মাও কেমন কপাল কুঁচকে রেখেছে জেনো আমায় সহ্য হচ্ছে না। আমি এরকম টা আশা করিনি। তাই বেরিয়ে আশি। এতো অসহ্য লাগছিলো বলে বুঝাতে পারবোনা। বুকে ব্যথা করছিলো। বাসায় এসে চুপিচুপি নিজের রুমে ঢুকে কাঁদতে কাঁদতে থাকি চিৎকার করে। আর রাত গিয়ে দিন গিয়ে। আমার ভালোবাসার বিয়ের রাত চলে আশে।
.
এখন ব্যস বিয়েটাই দেখার পালা। যদিও জানাই আছে সিনেমার মতো বিয়ে তো আর আটকাবে না কেউ। ছেলেরা পারেও কাল ব্রেক আপ আজ বিয়ে। এক্টু পর দেখতে পেলাম শিহাব আমার দিকেই আসছে।আমি নিরিবিলি এক জায়গায় বসে। আমি আমার মতো কোল্ড ড্রিঙ্ক খাচ্ছি। ওকে বুঝাতে চাই না আমি দুঃখীনি। শিহাব এসেই বললো।
— কেনো এলে এখানে সারা রাত ফোন দিয়ে ডিস্টার্ব করে হয়নি।
— ওহ দেখেছো তাহলে?? আচ্ছা আচ্ছা। সরি আর দিবো না। আর এখানে এসেছি বিরিয়ানি খেতে।তোমার বিয়ের বিরিয়ানি মিস করতে চাই না।তুমি তো জানো বিরিয়ানি কত পছন্দ আমার।
— হীর যাও এখান থেকে।
— বৌ না দেখে যাচ্ছি না।দেখতে হবে না কার জন্য তুমি আমায় ঠকালে।
— হী……..!
.
শিহাব কিছু বলবে আমাকে এর মধ্যে পাশ থেকে একজন মেয়ে কণ্ঠ শুনতে পাই।চিনা চিনা লাগছে কণ্ঠ টা।
— বৌ দেখতে চাস। এই দেখ বৌ তোর শিহাবের বৌ আমি!!
.
আমি পাশ ফিরে মেয়েটাকে দেখে। বিস্মিত আকস্মিক ভাবে হতভম্ব। আমার পায়ের নিচে মাটি অবশিষ্ট নেই। আমি পরে যেতে নেই মাথা ঘুরে। শিহাব ধরতে এলে বাধা দেই। নিজের চোখের পানি মুছে নিজেকে যথাসম্ভব ঠিকঠাক করে বলি।
— তোদের দু জনি আমার ভালোবাসার মানুষ ছিলি। এভাবে প্রতারণা না করলেও পারতিস।
আর নিতু তুই!! তুই একটা মেয়ে হয়ে আর একটা মেয়ের সাথে এমন না করলেও পারতি।চলি ভালো থাকিস। আর শিহাব অসংখ্য ধন্যবাদ আমার মন এভাবে ভাঙার জন্য।
.
আমি চলে আশি ওদের সামনে থেকে। শিহাবের চোখে অপরাধ বোধ আর চোখে পানি চিকচিক করছিলো। কিন্তু নিতু এক পৈশাচিক হাসি দিচ্ছিলো। তবে আমি বুঝে গিয়েছি শিহাব ও আমায় ভালোবাসে না। নিতুর মতোই দুদ কলা দিয়ে সাপ পুষেছি। ভালোবাসলে এরকম কোনো দিন আমার সাথে করতে পারতো না শিহাব।
.
যদিও অনেক স্ট্রং হয়ে গিয়েছিলাম বিয়ে দেখবো প্রতারক টার কিন্তু।নিতুকে দেখে আমি প্রথমের থেকে বেশী ভেঙে পরলাম। হেটে চলার শক্তি টুকু নেই। আমার ডাবল মেকআপ আমার চোখের বন্যায় ধুয়ে মুছে গেছে সব।অনেকেই তাকিয়েছি সব অপেক্ষা করে বাসায় ফিরে যাই কোনোরকম। দু তিন বার আত্মহত্যা করার চেষ্টা করি। এই যেমন হাত কাটা স্লিপিং পিল এক সাথে অনেক গুলা খাওয়া কিন্তু মার জন্য বেঁচে যাই।ফ্যামিলি তে ভাইয়া মা ছাড়া কেউ নেই ভাইয়া মা কান্নাকাটি করে অনেক জিজ্ঞেস করে কেনো আমি এসব করছি তখনো বলতে পারিনি কিছুই। কেটে যায় দুটি মাস। ডিপ্রেশন কাটিয়ে দেই দুটিমাস আজ এতো গুলা দিন পর ভার্সিটি যাবো। আসলে আগেই যেতাম কিন্তু শিহার আর নিতুর মুখোমুখি হতে চাইনি। জীবনে সব কিছু সহ্য করা যায় হয়তো। কিন্তু প্রতারণা শিকার হলে সেটা অন্যকথা মিনে নিতে কষ্ট হয়। আর সেটা যদি প্রিয়জন রা দেয় তাহলে তো কথাই নেই। এই দু মাসে শিহাব কে যতো ভুলতে চেয়েছি ততোই মনে পরেছে। আর সব থেকে বেশী মনে পড়েছে বাবার কথা। শিহাবের সাথে রিলেশন চলা কালিনি। বাবা মারা যায়। ঐসময় ও আমি ডিপ্রেশন এ ভুগি। শিহাবি আমায় হেল্প করে ডিপ্রেশন থেকে বাঁচতে!! কিন্তু আজ সেই আমার ডিপ্রেশন এর কারণ। আমি বাবাকেই বেশী ভালো বাসি। বাবা একবার বললে আমার কলিজাও হাজির। আজ যদি বাবা বলতো। মা সব ভুলে যা। আমি হয়তো ভুলে যেতাম কিন্তু এখন তো কেউ জানেইনা আমি কেনো ডিপ্রেশন এ আছি।বাবাকে মিস করি বাবা আমার মন বুঝতো যাই হোক আমায় সাপোর্ট করতো সব সময়।
.
ভার্সিটি গিয়ে সব ভুলে মন দিয়ে ক্লাস করলাম। চিনা জানা ফ্রেন্ড গুলা তাকিয়ে ছিলো আমার দিকে আমি জানি তার কারণ। চুপচাপ ক্লাস করে বেরিয়ে আসছিলাম। হঠাৎ কেউ সামনে এসে দাঁড়ালো মুখ তুলে তাকিয়ে দেখি। লনি!!
— কি দিলোতো ছ্যাঁকা। বলেছিলাম না এমনি হবে???
— ওরা যা করেছে ঠিক করেছে লনি। প্লিজ সামনে থেকে সরে যাও।
— এক্সসেপ্ট মি হীর!!
— নো ওয়ে!!
.
পিছন থেকে দিনা আমাদের ক্লাসমেট এসে আমাকে ধরে বললো।
— প্লিজ লনি। কেনো কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দিচ্ছিস?? ও অবস্থা দেখছিস না?? বুঝতে পারছিস না??
— ওকে বল দিনা আমাকে একটা চান্স দিতে।
— এসব পরে লনি ওকে টাইম দে। যেতে দে এখন।
— ফাইন!! গেলাম তবে আমার আসবো হীর। আর আমার উত্তর হ্যাঁ চাই ই চাই।
.
বলেই লনি চলে যায় আমি দিনাকে ধরে কেঁদে দেই। আমাকে ফাঁকা ক্লাস এ নিয়ে বসায় দিনা। পানি দিলে আমি ঢকঢক করে খেয়ে নেই গলা শুকিয়ে কাঠ মনে হচ্ছিলো।
— জানিস হীর। তোর সাথে চোখ মিলাতে আমাদেরই লজ্জা লাগছে কি করে করলো এমন নিতু, শিহাব।
.
ওর কথা শুনে আমি এবার শব্দ করে কেঁদে দিলাম। দিনা কিছু বলতে পারছিলো না। কিছুক্ষণ পড় বললাম।
— আমি বাসায় যাবো দিনা আসি।
— শোন কিছু বললার ভাষা নেই তবে এটাই বলবো ভুলে যা সব। নতুন করে শুরু কর হীর। আমি জানি তুই পারবি।
— আমি পারবোনা দিনা আমি পারবোনা। এতো শক্তি আমার নেই আর সেটা শিহাব ভেঙে ফেলেফে।
.
দৌড়ে বেরিয়ে আসি ভার্সিটি থেকে বাসায় এসে আবার আগের মতো চুপচাপ হয়ে যাই রুম থেকে কেউ বের করতে পারেনা । মা আমার উপর চরম বিরক্ত। সেটা সব সময়ি। মার আমার চলা ফেরা খাওয়াদাওয়ার স্টাইল কোনোকিছুই পছন্দ না।মা আর আমি শত্রুদের মতো ঝগড়া করি। কিন্তু এই দু তিন মাসে মা এটা সেটা বললেও আমি চুপচাপ ছিলাম ঝগড়া করার মন মানুষিকতা নেই।মা ও আমার এই চুপ চাপ মেনে নিতে পারেনা। মা শুধু কাদে মার অবস্থা দেখে নিজেকে এক্টু নরমাল করেছি এখন আমি অনেক টা ভালো দেখতে গেলে কিন্তু মনের কষ্ট মনি জানে।
.
ঘুম থেকে উঠে দেখি কেমন অন্ধকার লাগছে রুম তাই উঠে বারান্দায় গেলাম। দেখি আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে আছে।চারদিক শিরশির ঠান্ডা বাতাস এদিকওদিক বইছে। অনেক দিন পর বিকেল টা মন ছুঁয়ে যাচ্ছে। ভাবলাম ছাদে গেলে কেমন হয়। যেই ভাবা সেই কাজ। বাড়ী টা মোট ছয় তালা ভাড়া থাকি আমরা এ বাড়ীতে অনেক বছর। বেশী আসিনা ছাদে আশা হয়ে উঠেনা ব্যস্ততায়। কিন্তু আজ ছাদে এসে মনে হলো কি মিসটাই না করেছি। ছাদে দু হাত মেলে ঘুড়ছি। মাথা এক্টু ঘুরে উঠায় বাচ্চামোটা বাদ দিলাম। আশপাশ টা দেখতে লাগলাম। ছাদটা অন্যসব ছাদের মতোই স্পেশাল কিছুনেই তবে উপরের খোলা আশার আর নিচে আমি উফফ। সামনেই একটা বিল্ডিং এই ছাদ থেকে সব স্পট দেখা যায়। আর আশেপাশে ছোটবড় বিল্ডিং এর অভাব নেই শুধু সবুজ গাছপালা ছাড়া। এসব দেখতে দেখতে হঠাৎ ঝুম বৃষ্টি পড়তে লাগলো। ঝুম বৃষ্টি গা ছুঁয়ে দিতে লাগলো। আমি যেমন নেচে উঠলাম সেই খুশীতে ভাবী নি ভিজবো। কিন্তু খুব শান্তি লাগছে ভিজে যেমন দুঃখ গুলা বৃষ্টির পানির সাথে ধুয়ে মুছে যাচ্ছে। হাত মেলে ভিজতে লাগলাম। প্রায় অনেক্ষন ভিজার পড়। কাউর কণ্ঠ এলো কানে।
.
— ঢং করে বৃষ্টিতে ভিজে কাকে শরীল দেখাচ্ছো??
.
কথাটা কানে যাওয়া মাত্র আমার লোমলোম দাঁড়িয়ে গেলো আৎকে উঠলাম আমি।এভাবে অপমান কেউ করেনি আমায়। আমি তৎখনাৎ পিছন ফিরে দেখি। কালো টিশার্ট, ট্রাউজার পোড়া একটা ফর্সা ছেলে ছাদের দরজায় দাঁড়িয়ে। যার চুল গুলো লেপ্টে আছে কপালে বৃষ্টির পানিতে। চোখ মুখ লাল হয়ে আছে। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ছেলেটার দৃষ্টি ফোলো করে নিজের দিকে তাকাতেই আৎকে উঠলাম। আমার পেট বরাবর তাকিয়ে আছে ছেলেটা একদৃষ্টে। বৃষ্টিতে ভিজার কারনে পিংক গেঞ্জি ভেদ করে শরীল দৃশ্যমান আমার। চরম লজ্জায় আর অসস্তিতে পড়ে গেলাম । আমি দৌড়ে চলে আসবো সেই ব্যবস্থাও নেই দরজার দাঁড়িয়ে ছেলেটা। আমি নিজেকে ঢেকে ঢুকে নিলাম যত টুকু পাড়ি। তাতে কি অসস্তি কাটে??তাও দরজার দিকে পা বারাতেই দেখি ছেলেটা নড়েচড়ে দাঁড়িয়ে সিগারেট জ্বালালো। যা দেখে আমি আর এগুনোর সাহস পাচ্ছিনা।
.
ভাবতে লাগলাম কে বলেছিলো ছাদে আসতে। এসেছিলাম এসেছিলাম এই সিগারেট খোর কই থেকে আসলো?? বৃষ্টির মধ্যেও ছেলেটা বেশ আয়েশ করে সিগারেট ফুঁকছে। উফফ অসহ্য গন্ধ কিছুক্ষণের মধ্যে ছাদটা ভরে গেলো।এদিকে এবার বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে থাকতে শীত লাগছে তাই না পেরে বললাম।।
— নিচে যাবো সরুন।
— টেক্স লাগবে।
— কিসের টেক্স??
— আমার ছাদে এসেছো আবার নিচে যাবে তাই!!
.
রাগ হলো ফাউল কথা শুনে তাই রেগে বললাম।
— আশ্চর্য!! ছাদকি আপনার একার?
— এই বাড়ী এই ছাদ এই ছাদে থাকা সব কিছুই আমার!!
.
এমন কথা শুনে থতমত খেয়ে গেলাম। আমি এবার এই পাগলের ভয়ে বললাম।
— ঠিক আছে আপনার ছাদে আর আসবো না।আর মেয়েদের সম্মান দিয়ে কথা বলবেন এখন শীত লাগছে যেতে দিন।
.
কথা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই ছেলেটা…
.
প্রতারক
#Roja_islam
#part 1
[বি:দ্র – আপনাদের ভালো না লাগলে লিখবো না।]