#প্রণয়িনীর_হৃদয়কোণে
#আফসানা_মিমি
| অন্তিম পর্ব|
❌ কোনভাবেই কপি করা যাবে না।❌
“ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না
কীভাবে শাস্তি পাবে, টের তুমি পাবে না”
সাদা কইতর নিশ্চয়ই এখন আফসোস করছে! আমাকে বকা দেওয়ার মজা এবার বুঝবে। কাঁচা মরিচের আগাছা ছাটাই করে এখন নিজেরই ঘুম চলে আসছে। কয়েক বার হাই দিতে গিয়েও মুখ বন্ধ করে ফেলেছি। যদি সাদা কইতর দেখে ফেলে! তো জোর করে! থাক বলবো না, আমার শরম করে। চোখ খোলা রাখা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। নিজেকে বকছি এই বলে, ভুলেও চোখ বন্ধ করবি না তুবা! সাদা কইতরকে শায়েস্তা করতেই হবে। ভাবনায় বিভোর থেকেই মরিচে মেশানো হাত চোখে ডলে ফেলি। আহ! চোখ জ্বলছে। নেংটি কইতর কোলে ছিল বিধায় দাঁড়ালাম না। বসে থেকেই নাচানাচি শুরু করলাম। সাদা কইতর এতক্ষণ নিশ্চুপে সোফায় বসে আমার কর্মকাণ্ড দেখছিল। দৌঁড়ে আমার কাছে এসে প্রথমে নেংটি কইতরকে আমার কোল থেকে নামিয়ে সোফায় শুইয়ে দেয় পুনরায় আমার কাছে এসে গালে হাত রেখে আস্তে আস্তে ফু দিয়ে কাছে এসে বসে।
” গুরুজনরা বলে, স্বামীকে অবহেলা নয় ভালোবাসতে হয়। স্বামী থেকে উপরে উঠতে গেলে ব্যাথা পাবে। দেখি চোখ খুলো ফু দেই।”
” সাদা কইতর মনে হচ্ছে আমার জন্য বদ দোয়া করেছিলে।”
” দোয়া তো একটা করেছিলাম। তবে এভাবে যে উপরওয়ালার দরবারে কবুল হবে বুঝতে পারিনি।”
অপলক দৃষ্টিতে সাদা কইতরকে দেখছি। অস্থিরতা চিত্তে আমাকে অবলোকন করছে। এটা কি আমার সেই সাদা কইতর! যে এক সময় শাস্তি দিতে উঠে লাগতো আর সে এখন একটু ভালোবাসা পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। চোখের জ্বালা অনেকেটা কমে গেছে। সাদা কইতরকে এভাবে শায়েস্তা করা যাবে না তাই তার থেকে একটু দূরে সরে গিয়ে কাঁচা মরিচগুলো গুছিয়ে নেই। দরজা খুলে ঘর থেকে বের হতে নিলে সাদা কইতর বলে উঠে,
” পালাচ্ছো আয়মান!”
” পালাবো কেন? আমি এখন বউ না! বউদের কতো কাজ তুমি জানো? আমি গেলাম তুমি ঘুমিয়ে যাও।”
আমি যে এই সময়ে এমন একটা কথা বলব তা হয়তো সাদা কইতর ভাবতেই পারেনি। নিচে এসে হাতের কাছে কোন কাজ পাচ্ছি না। ফ্রিজ খুলে দাঁড়িয়ে রয়েছি। গালে হাত দিয়ে ভাবছি, এই বাড়ির মানুষেরা কি আইসক্রিম, কোকাকোলা খায় না? ফ্রিজে তো কিছুই নেই। আমাদের বাসায় তো সবসময় বাবা আইসক্রিম এবং কোকাকোলা এনে রাখতো। ফ্রিজ বন্ধ করতেই সাদা কইতরকে দেখি দু হাত বুকে গুঁজে দাঁড়িয়ে আছে।
” তোমরা কি কোকাকোলা খাও না? নাকি আমি আসছি বলে সরিয়ে রেখেছো।”
সাদা কইতর অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেয়াল ঘড়িতে সময় দেখে নেয়। আমিও ততার দৃষ্টি অনুসরণ করে দেখি রাত দুইটা বাজে। মনে মনে কিছুটা হাসি এই ভেবে যে, বেচারার সাজিনো,গোছানো বাসর আজ খালি পড়ে আছে। সাদা কইতরের দিকে নজর দেই তখনই সে বলে,
” এই রাতে কেউ কোকাকোলা খাবে যদি জানতাম তাহলে সন্ধ্যায় এনে রাখতাম।”
” এখন তো জানলে। যাও আমার জন্য কোকাকোলা আর আইসক্রিম নিয়ে আসো।”
পাগলামির সীমা সত্যিই অতিক্রম করছি। সাদা কইতরের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। সে রাগাশ্রিত মুখশ্রী করে ধপাধপ পায়ে বাহিরে চলে গেল। আমি হাসছি, মন খুলে হাসছি। আজ সাদা কইতরকে অনেকটাই শায়েস্তা করেছি। এবার নিজেকে পরিপাটি করি। সাদা কইতরের ঘর এখন থেকে আমারও। আমার ঘর, আমার সংসার বলার অধিকার রাখি। ঘরে প্রবেশ করতেই নেংটি কইতরকে কোথাও পেলাম না নিশ্চয়ই সাদা কইতর নেংটি কইতরকে তার ঘরে রেখে এসেছে!
বিশেষ দিনে নাকি শাড়ি পরিধান করলে পাশের মানুষটা খুশি হয়। কিন্তু আমি তো তেমন না। অনেকক্ষণ ভেবে চিন্তে সাদা কইতরকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য পোশাক নিয়ে বাথরুমে ঢুকলাম।
বিশ মিনিট পাড় হয়েছে। সাদা কইতর আসার নাম গন্ধ নেই। কোকাকোলা কিনতে কি শপিং মলে চলে গেছে?
প্রায় এক ঘণ্টা পর সাদা কইতর ফিরে আসে। গেইটের আওয়াজ পেয়েই আমি ঘরের পর্দার আড়ালে লুকিয়ে যাই। সাদা কইতর এসে দুই একবার আমার নাম ধরে ডাকে। পর্দার আড়ালে দাঁড়িয়ে দেখতে পাচ্ছি কেক নিয়ে এসেছে সে। এবার আর আড়ালে থাকা যায়! লাফ দিয়ে বের হয়ে আসি পর্দার আড়াল থেকে। আমাকে দেখামাত্র সাদা কইতর কয়েকমিনিট স্তব্ধ থেকে হু হা করে হাসতে শুরু করল।
লজ্জারাণী হয়তো এই প্রথম আমার দুয়ারে চলে এসেছে। বেশ লজ্জা পেলাম। পুনরায় পর্দার আড়ালে ঢুকে একটু মাথা বের করে বললাম,
” কি ভেবেছিলে। শাড়ি পরিহিতা নারী তোমার জন্য অপেক্ষা করবে?”
” কখনো ভাবিনি। আমি জানি আমার দুষ্টুপাখিকে। সে আমার অনুভূতির মধ্যে জল ঢালবেই। পর্দার আড়াল থেকে বের হয়ে আসো। আমার টি-শার্ট পরে তোমাকে ভালোই বড়ো লাগছে। এবার কেউ তোমাকে দেখে অবিবাহিতা নারী বলবে না।”
ভেবেছিলাম সাদা কইতর রাগ করবে। দুই একটা ঝাড়ি দিবে। কিন্তু এমন কিছু হলো না। অগত্যা ভাবনা বাদ দিয়ে বিছানার উপর বসলাম। সাদা কইতর হাত মুখ ধুয়ে আমার ঠিক পাশটায় এসে শরীর ঘেঁষে বসলো। গোলাপ ফুলের ঘ্রাণে এমনিতেও মাথা ঘোরাচ্ছে। তার উপর সাদা কইতর কাছাকাছি বসে, একদম পাশাপাশি। অনুভূতি প্রখর। মাথা তুলে সাদাকইতরের দিকে তাকাতেই সে হাসিমুখে বলে,
” তাকিয়ে আছো যে! প্যাকেট খুলে দেখলে না! কি এনেছি।”
” গল্প করতে ইচ্ছে করছে।”
আমার মন ভুলানো কথা শুনে সাদা কইতরের মুখে হাসির রেখা ফুটে উঠে। আমাকে অবাক করে দিয়ে সাদা কইতর খাবারের প্যাকেট একপাশে রেখে আমার কোলে শুয়ে পড়ে। কথায় আছে, মানুষকে সুযোগ দিলে মাথায় চড়ে উঠে। সাদা কইতর এটাই প্রমাণ করল। আমার দিকে মিষ্টি হাসি উপহার দিয়ে বলল,
” এবার গল্প করি। আমার অনেক ইচ্ছে ছিল দুষ্টুপাখি আমার সামনে ভদ্র বউ সাজুক। আজ হয়তো পূরণ হবে।”
শুরুতে দুষ্টুমি করলেও আমাদের রাত পাড় হয়েছে সাদা কইতরের হাজারো ভালোবাসাময় ছোঁয়ায়। আজ পাশের মানুষটার ভালোবাসার আকুলতা দেখতে পেয়েছি।
—————————
ঘরে বসে মেকআপ করছিলাম। সাদা কইতরের চিল্লিয়ে ডাকার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি। বিয়ের এত বছরেও মানুষটার জোর কমেনি যখন তখন বকা শুরু করে আর আমাকে শাস্তি দিতে চলে আসে। এবার কি এমন করেছি যে এভাবে চিল্লিয়ে ডাকতে হবে! নেংটি কইতর তো এখন আর আমার ধারে কাছে ঘেঁষে না। বড় হয়ে গিয়েছে যে! এখন শুধু তার ভাইয়ের কথা শোনে। বিয়ের এই তিন বছর খুব কষ্টে আমার দলে এনে রেখেছিলাম। যেই না ব্যাটা সিক্সে উঠল সেই আমাকে ভুলে গেল। আমি যদি বলি, হামি সোনা আমার দলে চলে এসো। উল্টো সে আমাকে বলে, আমি এখন বড়ো হয়ে গিয়েছে ভাবি আম্মু। ভুলেও তোমার দুষ্টুমিতে আর আমাকে যোগদান দিবে বলবে না।
আপনারা বলেন। আমি কি এতটাই দুষ্টু! মানছি আগে অনেক দুষ্টু ছিলাম তাই বলে কি এখনো সেই আগের মতো দুষ্টুমি করি! এখন তো বড়ো হয়ে গিয়েছি আমার কাঁধে বিরাট বড়ো সংসার। ছোট ছোট চার বাচ্চাকে আমার সামলাতে হয়। এই যে এক বাচ্চা এখন আমাকে চিল্লিয়ে ডাকছে আরো দুই বাচ্চা আছে তারা দুজন এখন কোথায় ঘুরতে গেছে। আসবে কবে নিজেও জানিনা। এজন্যই তো শাস্তি পেতে পেতে জীবনটা শেষ হয়ে যাচ্ছে।
আজকাল সাজগোজ করতে শিখেছি। তবে মাথার এই কাকের বাসা বাঁধতে শিখিনি। নিচে নামতেই দেখতে পেলাম সাদা কইতর চিৎকার করে ডেকে যাচ্ছে। আরেকটু সামনে গিয়ে দাঁড়াতে দেখতে পাই মহাশয় কোমর দুই হাত রেখে চোখ বন্ধ করে আমাকে ডাকছে।
” এই যে ষাঁড়ের বাচ্চার কাকার মামু। চোখ জোড়া এবার খুলুন। আমি এসেছি আমাকে দেখুন।”
সাদা কইতর আমার মাঝে কি পেয়েছে জানি না। যখনই আমাকে দেখে মায়াভরা চোখে তাকিয়ে থাকৃ। সাদা কইতরের এসব ব্যবহারে আমার দুষ্টুমি অনেকটাই কমে গেছে। আমাকে দেখে মিষ্টি হাসি দেখা উপহার দেয়। এরপর আমাকে কাছে এসে সুন্দর করে মাথায় ঘোমটা টেনে দেয়। আমি অবাক চোখে সাদা কইতরের কান্ড কারখানা দেখছি।
” একদম দুষ্টুমি করবে না আয়মান। তোমাকে এক জায়গায় নিয়ে যাব। চোখ বন্ধ করো তো!”
আমি তাই করলাম। সাদা কইতরের দিক নির্দেশনায় হাঁটি হাঁটি পা পা ফেলে যাচ্ছি। পদচারণ ফেলে বুঝতে পারলাম সিঁড়ি নিয়ে উপরে উঠছি। তার মানে ছাদে যাচ্ছি। আমি আসার পর পর এই বাড়ির মানুষদের মতো হয়ে গিয়েছি। এই বাড়ির মানুষেরা যেমন ফুলের গাছ পছন্দ করে আমিও তেমন ফুলের গাছ পছন্দ করা শুরু করেছি। তবে আমার শাকসবজি এবং ফলমূল ছাড়িনি। তারা যদি একটা ফুলের টব কিনে তাহলে আমি তিনটা ফলের টব কিনে নিয়ে আসি। এবং সেগুলোকে যত্নাদি করি। রোজ দুই বেলা করে পানি দিয়ে আসি।
চোখ বন্ধ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছি। সাদা কইতর আমাকে দাঁড় করিয়ে কোথায় যেন চলে গেছে। কান খাড়া করে বুঝতে পারলাম পাশে কবুতরের বাকবাকুম ডাক। দূর থেকে সাদা কইরের গলার স্বর কানে আসে, ” এবার চোখ খোলা আয়মান।”
চোখ খুলে তাকালাম আর চোখের সামনে যা দেখতে পেলাম তা দেখে আমার মুখ হা হয়ে আছে।
আমার সামনে কবুতরের বাহার। ছোট বড় সাদা কালো সকল প্রজাতির কবুতর।
শুধু তাই নয়। কবুতর থাকার জন্য ছোট ছোট ঘর। এসব কখন করলো সাদা কইতর! এতো কইতরের মাঝে আমার কইতরকে কীভাবে ডাকবো?
সাদা কইতর আমার চমকানো দেখে মুচকি হাসে। আমার কাছে এসে বলে,
” আমাদের গল্পটা এভাবেই শুরু হয়েছিল। তোমাকে যেদিন থেকে অনুভব করছি সেদিন তোমার প্রথম বলা কথা ছিল, কবুতর নিয়ে। তুমি চেয়েছিলে আমাদের ছাদে অনেক কবুতর হোক এবং তাদৈর থাকার জন্য ঘর হোক। পাশে তোমার সাদা কইতরের জন্যও একটা ঘর হোক। আমার মনপাখির মুখে বলেছে আর সেটা পূর্ণ করব না তা কীভাবে হয়!”
চোখে পানি টইটম্বুর। আমার বাচ্চামো কথা সাদা কইতর এত বছর মনে পুষে রেখেছে! কোন একদিন বলেছিলাম আর সেটা আজ পর্যন্ত মনে রেখেছে। আমাদের জন্য বড়ো একটা আলাদা ঘর তৈরি করা হয়ে ছাদে। লাল, নীল, সবুজ রং দিয়ে সাজানো হয়েছে তাতে। কবুতররা ঘরের চালে বসে আছে। সাদা কইতর আমাকে ঘরের সামনে এনে বসায়। তখন সাদা কইতরের কাঁধে একটি সাদা কবুতর বসা। সাদা কইতর কবুতরকে ধরে আমার হাতে দেয়। প্রথমে ভয় পেলেও শেষে ধরতে পেরেছি। আমাকে জড়িয়ে ধরে বসে আছে আর কিছুক্ষণ পর পর মাথায় ঠোঁট ছুঁয়ে দিচ্ছে।
আবুলের ভাই হাবলু আমাদের বাড়ি থেকে পালিয়েছিল। কোথায় গিয়েছিল কেউ জানতো না। কিছুদিন আগে নাকি বউ সন্তান নিয়ে বাবার কাছে এসে দোয়া চেয়ে গিয়েছে। আমি তখন বাসায় ছিলাম না। সিলেট ঘুরতে গিয়েছিলাম।
বর্তমানে ভাবছি সাদা কইতরকে কীভাবে একটা বিশেষ কথা বলি। কিছুক্ষণ ভেবে সাদা কইতরের উদ্দেশ্যে বলি,
” আমাদের সাদা কইতর আছে, নেংটি কইতর আছে, বাস্তবেও অনেক কইতর আছে। আরেকটা কইতর যদি আমাদের পরিবারে আসে তো তাকে কি বলে ডাকব?”
আমার কথা শুনে সাদা কইতর কয়েক মিনিট ভেবে নেয়। এরপর আমার কথার মর্মার্থ বুঝতে পেরে সাদা কইতর চিৎকার করে উঠে। অতি আনন্দে কথা বলতে পারছে না সে। অবশেষে আমাকে জাপটে ধরে বুকের মাঝে।
” সেই কইতরকে সুন্দর কইতর ডেকো। আমি খুব খুশি আয়মান!”
————————-
হাসপাতালে এসেছি সেই ঘণ্টাখানেক আগে। আমার সুন্দর কইতরটার ঠান্ডা লেগেছে। আহারে বেচারায় নেংটি কইতরের কতটা শার্ট নষ্ট করেছে হিসেব নেই। ডাক্তার বলেছে, সিজন পরিবর্তনে এমনটা হয়ে গেছে। ঔষধ দিয়েছে। এবার ফেরার পালা। সাদা কইতর আমাদের নিতে এসেছে। নিচে অপেক্ষা করছে। আমার মাসুম, ভোলাভালা সুন্দর কইতরকে নিয়ে আমধে আগেতেই নার্সদের দৌঁড়াদৌড়ি দেখতে পাই। হাসপাতাল মানের দুঃখজনক সংবাদ। নিশ্চয়ই কারো পরিজন পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নিয়েছে। এজন্যই নার্সরা ব্যস্ত। ভাবছিলাম কাউকে ডেকে আসল কারণ জিজ্ঞেস করব তার আগেই দেখতে পাই, দুজন ডাক্তার নাকে রুমাল চেপে জামাই সেজে তাড়াহুড়ো করে এদিকেই আসছে। আর তাদের পিছনে তিনচারজন মানুষ। ডাক্তারদের তো আর জিজ্ঞেস করা যায় না! তাই পেছনের একজনকে ধরে জিজ্ঞেস করলাম, কাহিনী কি?
আমার প্রশ্নে লোকটা যা বলল তা শুনে আমার ছেলে হাসা শুরু করল। লোকটার কথা ছিল এমন,
” এক লোক দুই বউ নিয়ে হাসপাতালে এসেছে। দুই বউ নিয়ে আসলেও ভালো হতো! সাথে এনেছে ছয় ছয় টা বাচ্চা। ছয় বাচ্চাদেরই পেটে সমস্যা। পায়খানা হচ্ছে না পাঁচদিন। দুজন ডাক্তার তাদের চিকিৎসা করাতে যায়। তবে চিকিৎসা না করে ফিরে আসে। কারণ, ছয়জন বাচ্চাই নাকি পর পর বায়ু দূষণ করেই যাচ্ছে। আস্তে জোরে তে যেভাবে পারছে গ্যাস ছাড়ছে। এদের জন্য ওয়ার্ডের সকল রোগী গায়েব যাচ্ছে সাথে নার্সরাও।”
অমি নিশ্চিত এরা মইনুল আঙ্কেলের সন্তানাদি। দুই বউয়ের মোট ছয়টা সন্তান। গরুর মতো খায় আর বায়ু দূষণ করে। আমার মনে হচ্ছে ঐ ওয়ার্ডে যদি আ’গু’ন ধরিয়ে দেওয়া হয় তাহলে ব্লা’স্ট হয়ে যাবে।
নিচে আসতেই সাদা কইতর আর নেংটি কইতরকে দেখতে পাই। দুজনেই উচ্চতায় সমান। আমার নেংটি কইতর অনেক বড়ো হয়ে গেছে। আমাকে দেখা মাত্রই দুইভাই মিষ্টি হাসি উপহার দেয়।
” ভাবিআম্মু আমরা এগিয়ে যাই। তুমি ভাইয়ার সাথে আসো। আজ একটা নতুন গাড়ি কিনে দিব তুরাবকে।”
চাচা ভাতিজা মিলে চলে গেল। সাদা কইতর আমার হাত ধরে হাঁটছে। আমি আজ পরিপূর্ণ। আমার কাছে তিনটা কইতর আছে। এরা সবাই আমাকে ভালোবাসে। আমিও এদের অসীম ভালোবাসি।
সমাপ্ত