পূর্ণিমা_সন্ধ্যায়
পর্ব_১৮
Tasneem Tushar
তিয়াশা যখন কিচেনে দাঁড়িয়ে পৌষীকে ঝাড়ি দিচ্ছে, ঠিক তখন পেছন থেকে এসে দু’চোখে চেপে ধরে কেউ। তিয়াশা ভীত কন্ঠে জিজ্ঞেস করে,
“আরে… কে? কে আমার চোখ ধরলো?”
তিয়াশা তার চোখের উপরে হাতরিয়েও কিছু বুঝতে পারছেনা।
“কি মুশকিল চোখ ছাড়ুন। এই পৌষী বলছিস না কেন কে?”
পৌষী মিটিমিটি হেসে চলেছে আর তিয়াশা ক্ষেপে যাচ্ছে। চোখ থেকে হাত সরিয়ে সাথে সাথে প্যাট্রিসিয়া বলে উঠে,
“ভাউ…”
তিয়াশা চমকে উঠে ঘুরে দাঁড়িয়ে বলে,
“প্যাট, তুই কখন এলি?”
“মাত্রই এলাম। ম্যাথিউ বললো আসতে।”
“কিন্তু ম্যাথিউ এর সাথে উনি কেন এসেছেন? ম্যাথিউ নিয়ে এসেছে?”
“তুই নিজেই জিজ্ঞেস কর। আয়, আমার সাথে।”
বলে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে তিয়াশার হাত ধরে ড্রইংরুমের দিকে প্যাট্রিসিয়া। তিয়াশা বলে উঠে,
“আরে বাবা ছাড় না, এই অবস্থায় কেমনে যাই। দেখতেই তো পাচ্ছিস মাথায় এখনো টাওয়াল দেয়া।”
“আরে ধুর বন্ধুই তো। চল।”
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
ড্রইংরুমে এসে প্যাট্রিসিয়ার পিছনে নিজেকে লুকানোর চেষ্টা করছে তিয়াশা। প্যাট্রিসিয়া তিয়াশার হাত ধরে টেনে সামনে এনে দাড় করায়। তিয়াশা মাথা নিচু করে একবার আড় চোখে তাকিয়ে দেখে নিয়ে ইতস্তত কণ্ঠে বলে,
“আসসালামু আলাইকুম। ভালো আছেন? ”
ম্যাথিউ তখন উচ্চস্বরে হেসে বলে,
“কিরে টি, যেভাবে কথা বলছিস, মনে হচ্ছে তোকে দেখতে এসেছে।”
তিয়াশা ম্যাথিউ এর দিকে চোখ গরম করে তাকিয়ে মাইর দিতে যেয়েও সোফায় বসা অতিথির দিকে তাকিয়ে নিজেকে সামলে মুখে হাসি ফোটায়।
আদনান ঠোঁটে মুচকি হাসি এনে বলে,
“হুম, দেখতেই তো এসেছি। তো মিস তিয়াশা এতক্ষনে দেখা পাওয়া গেলো তোমার?”
তিয়াশা স্মিত হেসে (লেখিকা-তাসনীম তুষার) মাথার টাওয়াল চুল থেকে সরিয়ে হাতে নিয়ে পেছনে লুকোতে লুকোতে বলে,
“আসলে…।”
“আসলে কিছুনা, বসো তো। একটু স্বাভাবিক হও। এত ইতস্তত করলে চলবে? আমরা তো বন্ধুই তাইনা?”
তিয়াশা হেসে বলে,
“আপনি কেমন আছেন? হঠাৎ এখানে?”
“ওই যে ম্যাথিউ যেমনটা বললো, তোমাকে দেখতে এসেছি।”
তিয়াশা সজোরে হেসে দিলে আদনান বলে উঠে,
“কি বিশ্বাস হলো না?”
“আচ্ছা অনেক হয়েছে। মজা ছাড়ুন। বলুন কেমন আছেন?”
“ভালো। তুমি কেমন আছো?”
“আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আচ্ছা একটু বসুন আমি আসছি।”
বলেই সে কিচেনে অতিথিদের জন্য নাস্তার ব্যাবস্থা করতে (লেখিকা-তাসনীম তুষার) যেতে নিলে দেখে তার মা নীলিমা হাবিব ও পৌষী চা নাস্তার ট্রে নিয়ে ড্রইংরুমে প্রবেশ করছে।
“বাবা, তোমাদের জন্য সামান্য আয়োজন। একটু মিষ্টি মুখ করো। তারপর কথা।”
“আন্টি এত কিছু কেন করতে গেলেন?”
“এটা এমন কিছু নয়, সামান্য চা নাস্তা।”
“কষ্ট করে এখানে নিয়ে না এসে আমাদের ডাকলেই পারতেন আন্টি।”
“আহা বাবা, কোনো কষ্টই না। খাও।”
নীলিমা হাবিব খাবার এগিয়ে দিয়ে চারপাশে তাকিয়ে বলে,
“আরেকজন যে এসেছে সে কোথায়?”
প্যাট্রিসিয়া তখন বলে উঠে,
“উনি একটু বাইরে গিয়েছে। কি যেন দরকার।”
নীলিমা হাবিব তিয়াশার দিকে তাকিয়ে বলে,
“যা তো মা ডেকে নিয়ে আয় ছেলেটাকে।”
তিয়াশা ভ্যাবাচেকা খেয়ে বলে,
“কাকে ডাকবো মা?”
“এত কথা বলছিস কেন? যা না, বাইরে আছে। ভেতরে নিয়ে আয়।”
তিয়াশা অসহায় দৃষ্টিতে একবার তার মায়ের দিকে তাকিয়ে মনে মনে গজগজ করতে করতে বাসার দরজার সামনে যায়। সকাল সকাল একটু শান্তি পাচ্ছি না। একটার পর একটা ঘটনা ঘটেই চলেছে বলেই দরজা খুলে কাউকে দেখতে পায়না সে।
বাড়ির সামনে ঘাসে বাঁধানো একটি উঠোন। সীমানায় একটি বড় গাছ। তিয়াশা হেটে গাছের দিকে হাঁটতে থাকে।
অন্যদিকে তিয়াশাকে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যাক্তিটি এতক্ষন তাদের ড্রইংরুমের (লেখিকা-তাসনীম তুষার) জানালা দিয়ে দেখছিল। যেইনা তিয়াশা বের হয়েছে অমনি সে দ্রুত গাছের আড়ালে যেয়ে দাঁড়ায়।
তিয়াশা গাছের নিচে এসে দেখে একটি ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। পেছনদিক দেখতে পাচ্ছে শুধু।
“এক্সকিউস মি। শুনছেন?”
ছেলেটি সেভাবে দাঁড়িয়ে থেকেই মুচকি হেসে বলছে,
“জ্বি, বলুন?”
“ভেতরে আসুন।”
“একজন অপরিচিতকে না দেখে শুনেই ভেতরে যেতে বলছেন?”
“আম্মু চিনে আপনাকে। আসুন।”
“কেন, আপনি চিনতে চান না?”
তিয়াশা চিন্তায় পরে যায়। কি করবে সে বুঝতে পারছেনা।
“উম…আম্মু চিনে, তার মানে হয়তো আমিও চিনি।”
“উহু এটা বললে তো হবেনা। আপনি না চিনে আমাকে আপনার ঘরে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন, ব্যাপারটা কেমন হয়ে যাচ্ছেনা?”
ইশ এই লোকটা কিসব বলছে মনে মনে ভাবছে তিয়াশা। রাগ উঠছে তার। (লেখিকা-তাসনীম তুষার) আসলে আসবে, না আসলে না আসবে। এত সাধতে পারবোনা। ধুর। আম্মু যে কেন পাঠালো, বলেই সে হাত পা ছুড়ে হাটতে হাটতে ছেলেটির সামনে যেয়ে দাঁড়ায়। কোমড়ে দুইহাত দিয়ে মাথা উঁচু করে তাকিয়ে দেখে হা করে অবাক হয়ে তাকিয়ে রয়। মুখ দিয়ে যে তার কোনো কথা বের হচ্ছেনা।
ছেলেটি তিয়াশার চোখের সামনে তুড়ি মারলে, তিয়াশা স্তম্ভিত ফিরে পায়। তিয়াশা তোতলাতে তোতলাতে বলে,
“আ…আপনি…?”
চলবে…
আগের পর্বের লিংক:
পর্ব ১৭: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/permalink/939698966460823/