পিয়ানোর সুর
#১৬পর্ব
সন্ধ্যা থেকে কী শুরু হয়েছে কে জানে। ফ্ল্যাটের ভেতর ভূত ঢুকেছে বোধহয়। এই নিয়ে তিন তিনবার কফি নিয়েছি। তিনবারই কফি মগসহ ট্রে উধাও। একবার কফির সাথে স্ন্যাকস হিসেবে পাপড় ভাজা নিয়েছিলাম। সেটা আমার রুমের এটাচ ব্যালকণি থেকে হাওয়া। টি টেবিলে রেখে একটু ওয়াশ রুমে এসেছিলাম। এরমধ্যে এই ঘটনা। বাসায় ড্যাডির দু’জন বন্ধু সস্ত্রীক ফ্যামিলি নিয়ে এসেছে। লাঞ্চে ইনভাইট করেছিল ড্যাড ওনাদের ছেলেমেয়ে সহ। বাবার বন্ধুর একটা মেয়ে বেশ দুষ্ট প্রকৃতির। বয়স কত হবে আনুমানিক বিশ বাইশ। ভীষণ চঞ্চল। পরিচয়ের পর থেকে এটা সেটা আলাপ জুড়ে দেয়ার বাহানায় বার বার কাছে আসছে। আমি কোনোমতে এভয়েড করে কিচেনে গিয়েছি কফি মেক করতে। ঐ কফিই আর পাপড় ভাজার প্লেট ট্রে প্রথম গায়েব হয়।
এদিক-ওদিক খুঁজে লিভিং রুমে এসেছিলাম। মেয়েটি গায়ে পড়ে জিজ্ঞেস করেছিল কিছু হারিয়েছে কিনা, কী খুঁজছি, তার হেল্প নেবো কিনা ইত্যাদি।
পরে শেফকে কোল্ড কফি দিতে বলে আবার রুমে এলাম। একবার সন্দেহ হয়েছে এটি ঐ মেয়ের কান্ড নয় তো!
আমাকে অস্বস্তিতে ফেলে সে’ই এল কফি কুকিজের ছোট্ট ট্রে নিয়ে আমার বেড রুমে। বিরক্তিতে চোখবুঁজে শুয়েছিলাম। অফিসে যাইনি আজ। মন জুড়ে মিথি মিথি রজনীগন্ধার ঘ্রাণ কী অদ্ভুতভাবে আমার রুমের চারপাশে ছড়িয়ে আছে। হুট করে নক না দিয়ে মেয়েটির প্রবেশ আমার রুমে। বলল,
— সৌরভ আপনার কফি।
অস্বস্তি নিয়ে উঠে বসেছি। রুমে নক করে ঢোকা বোধহয় বাঙালীর জন্মগত স্বভাব। বাংলাদেশে না এলে কখনো জানা হত না। ফ্রেন্ডস এন্ড ফ্যামিলির যে’ই হোক বাসায় এলে হুটহাট নক না করে আমার রুমে চলে আসে। দুই বছরে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি ভেবেছি।
কিন্তু এই মেয়ে নক না করে চলে আসায় বিরক্তি অস্বস্তি মিলিয়ে মেজাজ খারাপ। কিছু বলতে পারছি না। ম্যানারলেস এই কাজটিতে এতদিনেও অভ্যস্ত হইনি।
কফির ট্রে হাতে নিয়ে কার্টেসি স্বরূপ বললাম,
— থ্যাংকস মিস….!
— নওরিন। আমার নাম নওরিন।
— ওকে থ্যাংকস নওরিন!
— বসি এখানে?
— কোনখানে?
— কোনখানে আবার! আপনার রুমে দুটো কাউচ আর বেড ছাড়া বসার কিছু নেই। আমার কাউচে বসতে ভাল লাগে না। বেডে বসি, আপনার পাশে বসার জায়গাটায়?
— নো!!
ইলেক্ট্রিক শক খাওয়ার মত দাঁড়িয়ে পড়েছি। কিছুটা বুঝি জোরে বলে ফেলেছি। নওরিন চমকে পিছু হটলো দরজার দিকে। রাগে, অপমানে কটমট করে চেয়ে রইলো কয়েক সেকেন্ড। এরপর চোখে পানি নিয়ে বের হয়ে গেল আমার রুম থেকে। অভদ্রের মত কাজটা করে খারাপ লাগার কথা। আমার ভাল লাগছে। মেজাজ শান্ত হয়ে যাওয়ার মত ভাল। নওরিনের আনা কফি খেতে ইচ্ছে করছে না। ট্রেটা বেড সাইড টেবিলে রেখে ব্যালকণিতে এসে বসেছি একটা বই হাতে। কিচেন ইন্টারকমে কল দিয়ে শেফকে এক কাপ কফি দিয়ে যেতে বললাম।
গতকাল ভোরে সে’ই যে মিথিকে চিলেকোঠায় রেখে এসেছি তারপর থেকে একবারও সে তাদের বারান্দায় আসেনি।
আশ্চর্যের বিষয় হলো ওদের বারান্দার দরজা দু’দিন ধরে বন্ধ। ভয় হচ্ছে মিথির কোনো সমস্যা হলো কিনা। মোবাইল বাজছে। বইটা টি টেবিলে রেখে রুমে এলাম মোবাইল নিতে। আমি হতবাক। বেডসাইড টেবিলে মোবাইলের পাশেই কফির ট্রে রেখেছিলাম। ভেবেছি শেফকে বলব নিয়ে যেতে। কফিসহ ট্রে নেই।
কেউ কী এসেছিল আমার অজান্তে? ভাবতে ভাবতে মোবাইল চেক করে দেখি নাসিম আঙ্কেলের কল। লাইন কেটে গেল একনাগাড়ে বেজে। কলব্যাক করব এমন সময় শেফ কফি আর স্ন্যাকসের ট্রে নিয়ে হাজির। কফি মগ হাতে নিয়ে বাকিটা ইশারায় নিয়ে যাওয়ার জন্য বলে কল করছি নাসিম আঙ্কেলকে। উনি ধরছেন না। কফি মগে এক চুমুক দিয়ে জানালার কার্নিশের ওপর মগ রেখে রুমের ভেতর হাঁটতে হাঁটতে আবার কল দিলাম। আঙ্কেল কল রিসিভ করছে না। থাক পরে ট্রাই করব ভেবে মোবাইল বেডে থ্রো করে কফি মগ নিতে জানালার কাছে এসে দেখি কফি মগ নেই। ঘাড়ের শিরদাঁড়া শির শির করে উঠলো আধিভৌতিক কান্ড দেখে। রুমে চারদিকে চোখ বুলিয়ে সন্দেহজনক কিছু মিললো না।
আবারো রজনীগন্ধার ঘ্রাণ নাকে হালকা মিষ্টি অনুভব ছড়াচ্ছে। মিস ইউ মিথি! কীভাবে জেঁকে বসে আছো আমার চারপাশে বেইবি হ্যয়ার আর ইউ!
তিন মগ কফি গায়েব চিন্তাটা নিয়ে ভাবার সময় পেলাম না ড্যাডি নাসিম আঙ্কেলকে নিয়ে আমার রুমে ঢুকলেন তাড়াহুড়ো করে। হাঁপাচ্ছেন দুজনেই। চোখেমুখে ভয়ের চিহ্ন। নাসিম আঙ্কেলের চোখ ভীষণ লাল। কাঁদলে বা রেগে গেলে যা হয়।
— হোয়াট হ্যাপেন ড্যাড? হাঁপাচ্ছো কেন শ্বাস নাও। বোসো। নাসিম আঙ্কেল আপনিও বসুন।
— বসার সময় নেই বেটা আমাদেরকে থানায় যেতে হবে। আচ্ছা মিথির সাথে তোমার কথা হয়েছে আজ? দেখেছ মিথিকে?
— নো ড্যাড গতকাল ভোরে বাসায় আসার পর এপর্যন্ত মিথিকে রিচ করতে পারিনি। দু’দিন ধরে ব্যালকণিতে আসে না।
মন খারাপ করে কথাটা বলেই লজ্জা পেলাম। সামনেই নাসিম আঙ্কেল ব্যাপারটা মাথায় ছিল না। উনি আমাকে কেমন সুতীক্ষ্ণ নজরে দেখছন।
— গত সন্ধ্যা রাতের পর থেকে মিথিকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না সৌরভ।
— আবার! ও ড্যাড তুমি ফান করছো রাইট? নট এগেইন ড্যাড! সবকিছু নিয়ে ফান কোরো কিন্তু মিথিকে নিয়ে না প্লীজ। কান্ট টলারেট।
— তোমার বাবা ফান করছে না সৌরভ। মিথিকে সত্যিই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কোথাও নেই ও।
নাসিম আঙ্কেলের মুখে মিথি নেই শুনে বদ্ধ উন্মাদের মত টেবিল ল্যাম্প তুলেই ওয়াশরুমের দেয়ালে ছুঁড়ে মারলাম। আর যে কী কী তুলে ছুঁড়ছি ,কী করছি কোনোকিছুরই হুঁশ নেই।
ড্যাড আর নাসিম আঙ্কেল আমাকে দুইদিক দিয়ে শক্ত করে ধরলেন থামাতে। ঐমুহূর্তে রুমে এসে ঢুকলো সুপ্তি। পেছনে ওর মা সাফিয়া আন্টি ও ড্যাডির বন্ধু নোমান আঙ্কেল মানে সুপ্তির বাবা। সারা শরীর রাগে ফেটে পড়লো সুপ্তিকে দেখে।
— মিথির যদি কিছু হয় আমি কাউকে ছাড়বো না ড্যাড! যারা ওকে মেরেছে প্রত্যেকের নামে কেস ফাইল করবো। মাইন্ড ইট!
— কাম ডাউন কিচ্ছু হবে না মিথির। শান্ত হ সৌর!
— ডোন্ট কল মী সৌর ড্যাড। আমার মিথিকে এনে দাও। সৌর ডেস্ট্রয় হয়ে যাবে মিথি ছাড়া। এনে দাও ড্যাড মিথিকে এনে দাও।
বদ্ধ উন্মাদের মত প্রলাপ বকতে বকতে আমার সারা পৃথিবীতে অন্ধকার নেমে এল। অস্ফুটস্বরে ডাকছি,
— মিথি! বেইবি হ্যয়ার আর ইউ! ড্যাড মিথিকে ডাকো।
…
চলবে…….
পিয়ানোর সুর
#১৭পর্ব
সেঝো কাকা এসেছেন বাবার কাছে নালিশ নিয়ে সুপ্তির গায়ে হাত তুললাম কেন। বাবার রাগী কর্কশ কন্ঠস্বর সাফ শুনতে পাচ্ছি আমার রুম থেকেই,
— তোর কপাল ভাল নোমান সুপ্তিকে চটকানা দিয়ে থামছে। তোর বউরে ডাক ওরে ধইরা দুইটা দেই আমি। ওর সাহস কত্ত বড় ও মিথির গায়ে হাত তোলে। আমার ভাগ্নীর চরিত্র নিয়া কথা কয় তোর বউর কলিজা টাইনা ছিঁড়ছ না কেন নোমান!
— মেঝ’দা চ্যাতো কেন? মিথি বেয়াদবি করছে মনেহয়…
— সেয়ানা মাইয়া বেয়াদবি করলে গায়ে হাত তুইলা মারব? ওর মামুরা কী মইরা গেছে! বিচার দিতে আইতে পারত না।
অই ক দেখি কী করছে মিথি ক আমারে।
অক্ষন ডাক
তোর বউ মাইয়ারে আমি বিচার করুম।
গতকাল সকালে আমার সামনে বইসা নাশতা করলো মিষ্টি মাইয়াডা দুপুরের মইধ্যে তিতা কাম কী করছে তোর বউরে ক আইয়া কইতে।
সুপ্তিরে জিগা
মিথিরে কই গায়েব করছে।
দুই দিন হইয়া গেছে মিথি গায়েব। আইজকা রাইত শেষ হউক সকালে তোর বউ মাইয়ার নামে জিডি করতে যামু থানাতে।
বহুত হইছে তোগো কেচ্ছা কাহিনী। তোগো কথায় তাল মিলাইয়া মাইয়াডার মুখটা ঠিকমতো দেখি নাইক্কা।
বলি ও নোমান একবার ভাল কইরা চাইয়া দেখছস মিথি দেখতে পুরা আমগো বইনডার মতন না, ক? দেখতে পুরাই মিতার মত আমগো ভাগ্নী….
এইটুকু বলে বাবা মিথির জন্য হাউকাউ করে কান্না আরম্ভ করলেন। বিচার নিয়ে আসা সেঝ কাকার কন্ঠরুদ্ধ আওয়াজ পেলাম। চোখটা জ্বলে উঠল আমারও।
বড্ড দেরি হয়ে গেল কাকাদের মিথিকে আপন করে নিতে। রক্ত কথা বলে। কথা বলবেই।
ফ্যামিলি পলিটিক্স
রক্তের কাছে কোনো না কোনো সময় হার মানবেই।
গতসন্ধ্যায় আমার জন্য পাত্রী দেখতে সুপ্তি আর তিন কাকীর সাথে মিথিকে সঙ্গে নিয়ে ছিলাম। যেটা ওরা কেউ পছন্দ করেনি।
রেস্টুরেন্টে ঢোকার পর থেকেই সুপ্তি মিথিকে নানান কথা শোনাচ্ছিল।
একটা সময় অসহ্য হয়ে ধমক লাগিয়ে চুপ করিয়েছি সুপ্তিকে।
সেঝ কাকী সইতে না পেরে আমাকে পিঞ্চ করে বলেছিলেন,
— বেশি দরদ উথলে উঠলে
নিজেই বিয়ে করে রেখে দে না শোয়েব। ঘরের মেয়ে ঘরেই থাকলো।
কী হলো কে জানে
প্রায় সাথে সাথে বললাম,
— ঠিক আছে
আমিই বিয়ে করব মিথিকে যদি ফুপ্পা ফুপ্পির আপত্তি না থাকে।
শুনে মা কাকীরা তিনজনেই চুপ। সুপ্তি ঝাঁঝিয়ে উঠল। রেস্টুরেন্টেই চড় মেরে বসল মিথিকে। এর কারণ হলো, সুপ্তি ক্লাশ নাইনে থাকাকালীন একবার আমাকে হঠাৎ প্রপোজ করে বসছিল। একেবারেই বাচ্চা স্বভাবের মেয়ে ভেবে পাত্তা দিইনি। সেই ঝালটাই বুঝি মিথিকে চড় মেরে নিল। অথচ সে নাকি বছর ধরে সৌরভকে ভালোবাসে।
ভেবে অবাক হই
মিথির কত সিনিয়র সুপ্তি।
অথচ বুদ্ধি হাটুতে নিয়ে চলে। মিথিটা ভীষণ শান্ত আর ভারি মিষ্টি।
দেশে এসেছি কতদিন হলো। একবারো চোখে পড়লো না আশ্চর্য!
সুপ্তির চড় খেয়েই মিথি দৌড়ে রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে যায়।
পাত্রীপক্ষ আসার আগেই বিয়ে ক্যান্সেল বলে মা কাকীদের ওভাবে রেখে উঠে আসছি।
রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে মিথিকে এদিক ওদিক কোথাও খুঁজে পাইনি।
বাসায় চলে গেছে ভেবেছি।
কিন্তু বাসায় এসে শুনি মিথি ফেরেনি। আজকে রাতে না ফিরলে সকালে বাবার থানায় যাওয়া ঠেকানো মুশকিল হবে।
পুরো বাড়ী তোলপাড় করে ফেলেছে বাবা। একটু আগে না পেরে মিতা ফুপ্পিকে জানিয়ে দিয়েছে মিথিকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না।
ইনফরমেশন দেয়ার পাশাপাশি
বলে দিতে ভুললেন না
মিথিকে পেলে এবার আমার বউ বানিয়ে চিরদিনের জন্য এবাড়ীর করে রেখে দেবেন। কারো অমত শুনবেন না।
মিতা ফুপ্পি মেয়ের শোকে পাগলপ্রায়। ভোরেই রওনা দেবেন জানিয়েছেন।
আমি বাস স্টপেজ থেকে রিসিভ করতে যাব বাবা বলল।
নাসিম কাকা নিজ দায়িত্বে
ওনার বন্ধুদের নিয়ে মিথিকে খুঁজতে এলাকা চষে ফিরছেন।
আমাদের কারো সাহায্য নেবেন না। কেউ গায়ে পড়ে এগোলে
খবর করে ছাড়বেন হুমকি দিয়ে গেছেন ঘর থেকে বের হবার আগে।
সুপ্তি সেঝো কাকীকে নিয়ে গিয়েছিল সৌরভদের বাসায়।
ওখান থেকে ফিরেই মার খায় আমার হাতে।
ডাইনিংয়ে বাবা আর সেঝো কাকার সামনে
সৌরভ মিথিকে
জড়িয়ে নোংরা সব গালাগালি করছিল সুপ্তি।
একপর্যায়ে
আমার রুমে এসে বলল,
— করবো না বিয়ে সৌরভকে। তুমি আমাকে বিয়ে করে নাও শোয়েব’দা।
এপ্রোচটা ভীষণ নোংরা ছিল সুপ্তির। অনেকটা বাজারি মেয়েদের মত
উগ্র আচরণ।
ঘৃণায় চড় দিয়ে বলেছি,
— হয় মিথি,
না’হলে কেউ না।
তুই তো কস্মিনকালেও না বাজারি মেয়ে একটা। চোখের সামনে থেকে দূর হ।
অপমানে কালো হয়ে গিয়েছিল
সুপ্তির রৌদ্রজ্বল মুখ। আরো কয়েকটি দিতাম কিন্তু
চড়ের আওয়াজ শুনে
সেঝো কাকী এসে সুপ্তিকে একপ্রকার জোর করে আমার রুম থেকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে গেলেন।
অসম্ভব জেদি একগুঁয়ে
স্বভাবের সুপ্তি
অতিরিক্ত আহ্লাদে বিনয়ী বা
নত হতে শেখেনি। তাকে জিততে হবে।
নইলে দুনিয়া এসপার ওসপার। ওর প্রতি অনুভূতি তৈরি হওয়া আমার পক্ষে অসম্ভব। কখনো না।
পাশ্চাত্যের বর্ণিল পৃথিবী
দেখে আসা আমি সবসময় নিজের জীবনসঙ্গী হিসেবে শান্ত মৃদুভাষী
মিষ্টি স্বভাবের মেয়ে পছন্দ। দু’দিন ধরে ভাবনাটা যখনই মাথায় আসে
একটিই মাত্র মুখ
শান্ত নদীর স্রোতের মতন চোখে ভাসে। ছাদের দোলনায় দুলতে থাকা চঞ্চল হরিণ শাবক স্নিগ্ধ মায়াবী মিথিকে।
এর আগে গভীর দৃষ্টিতে মেয়েটিকে দেখা হয়নি। কত মনভুলো বোকা আমি। নিজেরই বাড়ীতে আড়ালে নিজেকে
লুকিয়ে রাখা মিথিটাকে কেন যে শুরু থেকে খেয়াল করিনি। আফসোস!
আজকের রাতটা গতকাল রাতের মতই ভীষণ কালো।
জানালার ফাঁক গলে
জ্যোৎস্না এসে
আমার অন্ধকার ঘরটা ভাসিয়ে নিচ্ছে।
আমি দেখতে পাই না। আমার চোখে মিথি নামক এক নিঃসীম শূন্যতা। কালো কুচকুচে অন্ধকার।
মন গুনগুনিয়ে ওঠে,
“আমি তোমাকেই বলে দেবো
কী একা দীর্ঘ রাত
আমি হেঁটে গেছি
বিরান পথে
ছুঁয়ে কান্নার রঙ
ছুঁয়ে জ্যোৎস্না ছায়া…”
…
চলবে…….
ল