#পারফেক্ট_কাপল
#পর্বঃ৪
#ইনান
আজ ভার্সিটিতে একশ বছর ফুর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠান । সবাই নীল রং এর শাড়ি পড়েছে । আমিও নীল রং এর শাড়ি পড়েছি । কিন্তু সমস্যা একটাই বসার জায়গা পাচ্ছি না ।
“বইন দাড়িয়ে থেকে আমার পা ব্যথা করছে ।
“আরে জায়গা না পেলে আমি কী করব
“সেটাও কথা
তখন হঠাত্ রিমি বলে
“ঐ দেখ তিনটা সিট খালি
আমি আর ইশা সেদিকে তাকালাম ।আর খুশি মনে চেয়ারের দিকে এগিয়ে গেলাম । কিন্তু যখন চেয়ার গুলোর কাছাকাছি গেলাম তখনি কোথা থেকে অগ্নি, রিয়াদ আর আরিশ এসে বসে পরে । সাথে আমাদের মুখটা কাদো কাদো হয়ে গেলো । ওরা আমাদের দিকে তাকিয়ে টেডি হাসলো আমরা মুখ বাকিয়ে চলে আসলাম ঐখান থেকে ।
সারা অনুষ্ঠান দাড়িয়েই দেখলাম আমি । রিমি আর ইশা চলে গেছিল রেডি হতে ওরা নাচবে তাই । এখন আমার পা ব্যাথা করছে । কুড়িয়ে কুড়িয়ে হাটছি তখনি কোথা থেকে অগ্নি এসে আমায় কোলে তুলে নেয় । আচমকা এমন হওয়াই আমি ভয় পেয়ে যাই ।
“আরে কী করছেন নামান আমায়
“না
“মানে কী ?
“কিছু না
“নামান আমাকে
“চুপ থাকো নয় তো ফেলে দিবো
আমি চুপ হয়ে গেলাম কারণ এই ছেলে আমাকে ফেলে দিতে পারে এটা নিশ্চিত । কোলে তুলে আমাকে গাড়িতে বসিয়ে ও গাড়িতে উঠে গাড়ি চালাতে থাকে ।
গাড়ি এসে থামে বাসার সামনে । গাড়ি থেকে নামতেই অগ্নি নেমে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে । আচমকাই হওয়াই আমি পুরো ফ্রিজড হয়ে গেলাম । কি করছে অগ্নি এগুলো । ও আমাকে ছেড়ে দিয়ে টেডি হেসে চলে যায় । আমি কিছুক্ষণ ঐখানেই একই ভাবে দাড়িয়ে আছি । তারপর এদিক ওদিক তাকিয়ে বাসায় চলে যাই
অন্যদিকে
অগ্নি ড্রাইভ করছে আর মুচকি মুচকি হাসছে । আজকে সে নিধিকে ডোজটা বেশিই দিয়ে দিছে ।
“আহারে জানটার চেহারা দেখার মতো হয়েছিল । আজকের এই লুকে আমার সামনে না আসলেই পারতে তাহলে আর আমি তোমার উপর ফিদা হতাম না । আজকের পর থেকে দেখবা আমার ভালোবাসা । বি রেডি বেবি ।পারফেক্ট কাপল হবই আমরা
এটা বলে বাকা হেসে ড্রাইভে মন দেয় । আজকে যখন নিধি নীল শাড়ি পড়েছিল তখন তাকে পরীর মতো লাগছিল আর তখনি আমাদের হিরো ওর প্রেমে পরে ।
এদিকে
বাসায় এসে নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম । আমি এখন ও একটা ঘোরের মাঝে আছি । কী হলো কিছুই বুঝতে পারলাম না । তখনি নিয়ান এসে আমার মাথায় জোরে মেরে বসে বিছানায় উঠে বসে ।
“কী মাথায় মারলি কেন ?
“তোকে আব্বু ডাকছে ।
“কেন ?
“আমি জানি নাকি
আমি আর কিছু না বলে আব্বুর রুমে গেলাম ।
“আব্বু আসবো
” আরে আয়
আমি ভিতরে গিয়ে আব্বুর পাশে বসলাম । আব্বু আমার দিকে তাকিয়ে একটা শ্বাস নিয়ে বলে
“আমি তোমাকে না জানিয়ে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি
“কী সিদ্ধান্ত ?
“আমি তোমার বিয়ে ঠিক করেছি ।
“হোয়াট!
“হুম আমার বন্ধুর ছেলে খুব ভালো
“তুমি আমাকে না জানিয়ে এটা কেন করলে ।
“আমি যা করেছি ভেবে চিন্তেই করেছি ।
“আমি এখন বিয়ে করবো না ।
“আমি শুধু তোমায় জানালাম । তোমার মত জানতে চাই নি । তুমি এখন আসতে পারো ।
“আব্বু…
“নিধি রুমে যাও
আমি রেগে রুমে চলে আসলাম । মানে কী আমাকে না জানিয়েই বিয়ে ঠিক করে ফেলল ।
.
.
.
অগ্নি বিরক্ত নিয়ে তার বাবার দিকে তাকিয়ে আছে । তার বাবা রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ।
“ড্যাড আমি এখন বিয়ে নিয়ে ভাবছি না
“কিন্তু আমি ভেবে নিয়েছি আর কথাও দিয়ে দিয়েছি
“মানে কী আমাকে না জানিয়ে এটা করলে কেন ?
“কারণ মেয়েটা খুব ভালো
“আমি রাজি না
“আমি তোমার মত জানতে চাই নি । কালকে মেয়ে দেখতে যাবো রেডি থেকো ।
“ড্যাড
“আমি আর কিছু শুনতে চাই না গো ।
অগ্নি ঐখান থেকে চলে গেলো । ওর রাগ লাগছে খুব কিন্তু ও ওর বাবার মুখের উপর কিছু বলতেও পারবে না । কী আর করা । কিছুক্ষণ বসে ভাবলো অগ্নি কী করা যায় । তখনি তার মুখে হাসি ফোটে উঠলো
“আরে কালকে পাত্রীর সাথে আলাদা কথা বলে বিয়ে ভেঙে দিলেই তো হবে
এটা বলেই আনন্দে একটা লাফ দিলো
.
.
.
সকালে
সারা রুম জুড়ে পায়চারি করছি । আজকে নাকি আমাকে দেখতে আসবে । এদিকে আমি কী করবো কিছুই ভেবে পাচ্ছি নি । হঠাত্ মাথায় একটা আইডিয়া আসলো পাত্রের সাথে তখন আলাদা কথা বলব তখন কিছু একটা বলে বিয়ে ভেঙে দিব ইয়াহু ।
আমি নাচতে নাচতে ওয়াশরুমে চলে গেলাম । এখন নিজেকে একটু হালকা লাগছে । ফ্রেশ হয়ে বের হতেই দেখি আম্মু বসে আছে শাড়ি নিয়ে
“আম্মু এখানে বসে আছো কেন ?
“তোকে রেডি করতে এসেছি ।
“মানে ?
“ওরা ১১ টার দিকে এখানে আসবে এখন বাজে ১০ টা
“ওহ
“হুম এখন আয় তোকে রেডি করে দেই
আমি আর কিছু না বলে চুপ করে গিয়ে বসে পড়লাম রেডি হতে । আমাকে রেডি করে আম্মু চলে গেল । তার কিছুক্ষণ পর আমার বাদর ভাই আসল রুমে
“আপু আজকে তোকে পুরাই পেত্নির মতো লাগছে ।
“ঐ তুই যা এখান থেকে
“না যাবো না । আচ্ছা তুই শ্বশুর বাড়িতে চলে গেলে তোর রুমটা আমি নিবো ।
” কেন ? তুই নিবি কেন ? আর আমি আর আসবো নাকি একদম আমার রুমের দিকে নজর দিবি না ।
“আপু প্লীজ দিয়ে দে
“না
“প্লীজ এমন করছিস কেন রাজি হয়ে যা না প্লীজ
“তুই আমার রুমে কেন আসতে চয়ছিস ?
“আসলে তোর রুম থেকে আমার গার্লফ্রেন্ডের রুমটা ভালোভাবে দেখা যায় তাই বলছিলাম আর কি
আমি নিয়ানের কথা শুনে অবাক । ২০ বছর বয়সে আজ পর্যন্ত প্রেম করলাম না আর ও ১৩ বছর বয়সে গার্লফ্রেন্ড আল্লাহ আমেরে উঠায় নাও , উঠায় নাও ।
চলবে।